নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২২ জুলাই, ২০১৮
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে অনুষ্ঠেয় ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা। দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দুটি সভারই মূল আলোচ্য বিষয় একই, এক সপ্তাহ ব্যবধানে শুরু হতে যাওয়া শোকের মাস আগস্ট।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভার মূল আলোচনার বিষয় হবে আগস্ট মাসে শোকের আবহ ধরে রাখা। গত কয়েক বছর আগস্ট মাসে শোকের আব থাকেনি বরং উৎসবে পরিণত হয়েছে। এটা বঙ্গবন্ধুর জন্যই এক ধরনের অসম্মানের। এমন আয়োজন বন্ধে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর।
প্রতিবছর আগস্ট মাস আসলেই আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন এমন ভাবে উদযাপন করে, যেখানে শোকের মাসে উৎসবের আবহ তৈরি হয়। নানা অঙ্গসংগঠন উচ্চ শব্দে মাইক্রোফোন ব্যবহার করে, কাঙালি ভোজের ব্যবস্থা করে। এসবের ফলে শোক আর শোক থাকে না। শোকের ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট হয়ে যায়। শোক পরিণত হয় উৎসবে। এই উদযাপন বঙ্গবন্ধু প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বদলে অবমাননা করা হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে এমন উদযাপন যেন ক্রমাগত বেড়েছে।
এছাড়া শোকের মাসে রাজধানীসহ সারা বাংলাদেশে নানা ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়ে। এসব ব্যানার-ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এমন ভাবে ছাপানো হয়, যা সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না। কিন্তু নিজেদের ছবি বিশাল করে ছাপানো হয়। এমন ব্যানার-ফেস্টুনে শোক দিবসের বদলে আত্মপ্রচারণাই বেশি।
এবার শোকের মাস এমন একটা সময়ে, যখন নির্বাচন আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। সেজন্য শোকের মাসে এবার আয়োজনও বেশি হবে। আর এই আয়োজনে লাগাম টেনে ধরতেই আওয়ামী লীগের পরপর দুটি শীর্ষ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভা দুটিতে শোক দিবসের অনিয়ন্ত্রিত আয়োজনের লাগাম টেনে ধরতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। সভাগুলো থেকে নেতাকর্মীদের মূলত তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
প্রথম নির্দেশনা হলো, আগস্ট মাস উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজনের নামে জনগণের কাছ থেকে কোনো চাঁদাবাজি করা যাবে না। চাঁদাবাজির কারণে নির্বাচনের এই বছরে দলের ইমেজ কোনো ভাবে নষ্ট হোক-তা চায় না আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব।
দ্বিতীয় নির্দেশনা হলো, যত্রতত্র ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো যাবে না। এগুলো লাগানো সীমাবদ্ধ থাকবে। আর ব্যানার-ফেস্টুন তৈরি করার পর তা কেন্দ্রীয় কমিটি ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে নির্দিষ্ট স্থানে লাগাতে হবে। এসব ব্যানার-ফেস্টুনে যেন শোকের আবহ থাকে, কোনো প্রকার আত্মপ্রচারণা যেন না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিবছর একই দিনে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে, যেখানে সমন্বয়হীনতা দেখা যায়। তাই তৃতীয়ত নির্দেশনাটি হলো, যে সংগঠন যে অনুষ্ঠানই করুক না কেন তা কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে, স্থানীয় হলে স্থানীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে, জেলা হলে জেলা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে করতে হবে। যাতে অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ, কর্মসূচির মধ্যে সমন্বয় থাকে। এর পাশাপাশি মাসব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির যে কর্মসূচি তারও অনুমোদন হবে সভা দুটিতে।
জানা গেছে, এবার শোকের মাস যেন আগের বছরগুলোর মতো উৎসবে পরিণত না হয়, সেজন্য কঠোর নজরদারি রাখবে আওয়ামী লীগ।
বাংলা ইনসাইডার/বিপি/জেডএ
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।