নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০১৮
বর্তমানে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, কথাবার্তা বলছেন। বিরোধী দল বিএনপিকে নিয়েও সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা আছে তাঁদের। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে তিনটি শর্ত দিয়েছেন কূটনীতিকরা।
প্রথম শর্তটি হলো, অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য যা যা সহযোগিতা দরকার বিএনপিকে তা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতিবাজদের দলটির নেতৃত্ব থেকে বাদ দেওয়া। এই উদ্দেশ্যে বিএনপির বাতিলকৃত ৭ ধারা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। দলটির ৭ ধারা (ঘ)-তে বলা আছে, উন্মাদ, দুর্নীতিবাজ, এ রকম কেউ নেতা হতে পারবেন না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে জেলে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন দুর্নীতি মামলার কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে পলাতক আছেন। মূলত তাঁদেরকে নেতৃত্বে রাখতেই ধারাটি বাতিল করেছিল বিএনপি। কিন্তু কূটনীতিকরা এই ধারার পুনর্বহাল চাচ্ছেন এবং খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার মতো দুর্নীতিবাজকে তাঁরা বিএনপির নেতৃত্বে দেখতে চান না বলে জানিয়েছেন। অন্তত আপৎকালীন সময়ের জন্য হলেও যাতে দুর্নীতিবাজদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনা হয় সে জন্য বিএনপিকে চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর কূটনীতিকরা।
এই প্রসঙ্গে খোদ পাকিস্তানের মতো দুর্নীতি ভারাক্রান্ত দেশের উদাহরণই টানা যায়। মুসলিম লীগ প্রধান নওয়াজ শরিফকে পাকিস্তানের আদালত পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ‘প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য’ ঘোষণা করার পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এমনকি মুসলিম লীগ প্রধানের পদ থেকেও তাঁকে সরে দাঁড়াতে হয়। বাংলাদেশে খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার ক্ষেত্রেও এমনটাই চাইছেন কূটনীতিকরা।
কূটনীতিকদের দেওয়া দ্বিতীয় শর্তটি হলো, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য যে সকল মৌলবাদী দলের গাঁটছাড়া বাধা আছে তা ছাড়তে হবে। এই বিষয়ে বিএনপিকে জোর চাপ দিচ্ছেন কূটনীতিকরা।
আর তৃতীয় যে শর্তটি বিএনপিকে কূটনীতিকরা দিয়েছেন সেটি হলো, তাঁরা বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব চায় এবং নতুন নেতা হিসেবে তাঁদের পছন্দ কোনো স্বচ্ছ ইমেজের ভালো মানুষ বা ভদ্রলোককে। এসব বিবেচনায় বিএনপির অভিজ্ঞ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিংবা মোশাররফ হোসেনকেও তাঁরা নেতৃত্বে চাইছেন না। এক্ষেত্রে তাঁদের পছন্দ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানকে। সাবেক এই সেনাপ্রধানের একটি স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। এছাড়া জেনারেল মাহবুবকে নেতৃত্বে আনতে চাওয়ার পেছনে আরেকটি বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেটি হলো, মাহবুবুর রহমানকে নতুন নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরও সায় আছে। ফখরুল ও মাহবুব দুজন সম্পর্কে ভায়রা ভাই হন। জেনারেল মাহবুবের স্ত্রী নাগিনা মাহবুব বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বড় বোন। এই আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে মির্জা ফখরুলকে জেনারেল মাহবুবের বিরুদ্ধে যাবেন না বলে মনে হয়।
কূটনীতিকরা চাইছেন, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরপরই যাতে স্বচ্ছ নেতৃত্বের হাত ধরে বিএনপি নতুন অবয়ব লাভ করে। এই বিষয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিংও করছেন তাঁরা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।