নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ০১ অগাস্ট, ২০১৮
ঢাকার সংসদীয় আসন সংখ্যা ২০ এর মধ্যে বেশিরভাগই ঢাকা মহানগরের মধ্যে। কোনো এমপিকে তাঁর নির্দিষ্ট এলাকায় সব ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্যই দায়ভার বহন করতে হয়। কিন্তু গত তিনদিন ধরে রাজধানীতে চলা শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে মহানগরের কোনো এমপিকেই একটি বারের জন্যও দেখা যায়নি। কোনো এমপিই নিজ এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের স্তিমিত করার ব্যাপারে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেননি। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে তাদের কাজ কি? নিজের এলাকায় অরাজকতা, বিশৃঙ্খলায় এগিয়ে আসা কি এমপিদের কাজ নয়?
প্রত্যেক এমপি কোনো নির্দিষ্ট এলাকার সব ধরনের কাজের জন্য দায়িত্বে থাকেন। রাজধানীর কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো এমপির অধীনের থাকে ওই এলাকার প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কমিটি। এসব নির্বাহী কমিটির সভাপতি থাকেন এমপি মনোনীত প্রার্থী। গত তিন দিন ধরে চলা শিক্ষার্থীদের জন্য কত কিছুই তো করতে পারতেন এমপিরা। নির্বাহী কমিটিকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারতেন, তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলতে পারতেন। শান্ত করতে পারতেন শিক্ষার্থীদের। আশ্বস্ত করতে পারতেন, শেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনতে পারতেন শিক্ষার্থীদের। কিন্তু এর কোনোটিই করতে দেখা যায়নি। এমপিরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে আজকের পরিস্থিতি হয়তো সৃষ্টিই হতো না। এমপিরা যদি এলাকার এমন জরুরি অবস্থায়ও না এগিয়ে আসেন, জনগণের প্রয়োজনে যদি পাশেই না থাকেন, তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে তাদের কাজ কি? এলাকায় কি প্রয়োজন একজন এমপির?
এ তো গেল এমপিদের দায়িত্বহীনতার কথা। মন্ত্রীরাও কি কম যান। কয়েকজন মন্ত্রী চার-দেয়ালের মধ্যে আলোচনা করে বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছেন। মাঠে কেন যাচ্ছেন না মন্ত্রীরা। আন্দোলনকারীরা সব স্কুলের কোমলমতি শিশু। এদের কাছ থেকে ভয়ঙ্কর কি আশঙ্কা করেন মন্ত্রীরা। তাদের কাছে গিয়ে একজন মন্ত্রীকেও কেন কথা বলতে দেখা গেল না গত তিন দিনেও?
এক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত কয়েকদিন ধরে কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু পুরো বিষয়টির দায়িত্ব কি শুধুই তাঁর একার। সড়কের ঘটনা এর মূল দায়িত্ব সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের। কিন্তু কোথায় তিনি? মিডিয়াবন্ধব বলে পরিচিত সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়কের অবস্থা দেখতে সারাদেশ ঘুরে বেড়ান, সব বিষয়েই বক্তব্য বিবৃতি দেন। কিন্তু গত তিনদিনের একবারের জন্যও রাজধানীর সড়কে কেন দেখা গেল না? সড়ক মন্ত্রী এত কথা বলেন, এত মানুষকে বুঝান, কিন্তু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বুঝাতে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর জন্য একটি বারের জন্যও কেন রাজপথে এলেন না সেতুমন্ত্রী? অন্যান্যদের মতো তারও কি শিশুভীতি আছে?
তিন দিন ধরে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এমপি ও মন্ত্রীদের ভূমিকা না দেখা গেলেও ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু বসে নেই। কোমল মতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলে তারা কিন্তু ঠিকই এগিয়ে গেছে। এরই মধ্যে বিএনপি স্কুল শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও সমর্থন দিয়েছে। আন্দোলনগুলোর কাছে গিয়ে দেখলে বোঝা যায় শিক্ষার্থী নয় বহিরাগত কিছু মানুষ তাদের চালিত করছে। মিডিয়ার ক্যামেরা দেখলেই এরা সরে পড়ছেন। ক্যামেরা সরে গেলেই আবার হাজির হচ্ছেন ইন্ধনদাতা হিসেবে।
এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনেকে আহত হয়েছে। পুরো রাজধানী হয়ে পড়েছে অচল। এমপি-মন্ত্রীদের কাণ্ডজ্ঞানহীনতার খেসারত আর কতদিন দিতে হবে রাজধানীবাসীকে। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না হলে শিক্ষার্থীদের ওপর ষড়যন্ত্রকারীদের প্রভাব আরও বাড়বে। অজান্তেই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্ষতির পথে পা বাড়াবেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো হাত গুটিয়ে বসে থেকে আর কত ক্ষতি হতে দেবেন দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী-এমপিরা?
Read in English- https://bit.ly/2voCgLK
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।