নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০১৮
উত্তরায় বাসচাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থী। উত্তাল দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চারদিন ধরে বন্ধ ক্লাস এবং শিক্ষা কার্যক্রম। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে সব দাবী মেনে নিলেন। নিহত দুই শিক্ষার্থী পরিবারকে ডেকে জানালেন সমবেদনা। তাঁদের দিলেন আর্থিক অনুদান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিনভর শিক্ষার্থীদের দাবী দাওয়া মেনে নেয়ার জন্য কাজ করছেন। সড়ক যোগাযোগ এবং সেতুমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করছেন। বসে নেই আইনমন্ত্রীও। এডভোকেট আনিসুল হকও শিক্ষার্থীদের জানালেন নতুন আইনের কথা। তিনি এটাও বলেছেন, এই আইন পাশ হলেই শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণ হবে। শুধু নির্বাক একজন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরেই উত্তপ্ত দেশ। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সবসময়ই বলেন, তিনি নাকি শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। ঘরোয়া আলাপচারিতায় তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে গেলেই তিনি সবচেয়ে প্রশান্তি পান। অথচ ৫দিনে শিক্ষার্থীদের রাজপথ দখলের ঘটনায় তিনি দর্শক। তিনি যেন মুখে কুলুপ এটেছেন। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতারা বলেন ‘শিক্ষামন্ত্রী নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন।’ শুধু শিক্ষামন্ত্রী একা কেন? বাংলাদেশে শিক্ষার দেখভাল করার জন্য দুটি মন্ত্রনালয়ে আড়াইজন মন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা নামে রয়েছে আলাদা একটি মন্ত্রণালয়। যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছে দেশের তাবত প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জনাব মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি তো প্রায় নিখোঁজ। গত এক সপ্তাহে তিনি মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিভাগ আছে, যার নাম কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। এই বিভাগেও একজন আধামন্ত্রী রয়েছেন। তার নাম কাজী কেরামত আলী। তিনিও পর্দার আড়ালে।
প্রশ্ন উঠেছে, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কি কোন ভূমিকা নেই? শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কি তাঁর সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ফিরিয়ে আনার জন্য একবার আহবান জানাতে পারতেন না? শিক্ষামন্ত্রী কি নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাসায় যেতে পারতেন না? শিক্ষামন্ত্রী কি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিতে পারতেন না? তিনি কি শিক্ষার্থী অভিবাবকদের নিয়ে একটা সমাবেশ ডাকতে পারতেন না?
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কাজ কি? শুধু এমপিও ভুক্তির নামে লুটপাট আর নিয়োগ বদলি বাণিজ্য? বছরের শুরুতে ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়ে আত্মপ্রচারণার উৎসব? নাকি জিপিএ ৫ বিতরণ?
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে গত ৫দিনে সারাদেশে নানা আলোচনা। সবার প্রশ্ন, এই ঘুম ভাঙ্গবে কবে?
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।