ইনসাইড পলিটিক্স

আহারে জনগণ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ০৫ অগাস্ট, ২০১৮


Thumbnail

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাজপথে। এই শিক্ষার্থীরা স্কুলের, কলেজের। উত্তরায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে রাজপথে অবস্থান নিয়েছে। ঢাকায় শুরু আন্দোলনের। তারপর তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি খুবই সহজ-সরল এবং ন্যায়সংগত। তারা নিরাপদ সড়ক চায়। নির্বিঘ্নে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্কুলে যেতে চায়, আবার স্কুল থেকে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চায়। এই দাবিতে বৃষ্টিতে ভিজে তারা রাজপথে অবস্থান নিয়েছে। আমার মনে হয় না, শিক্ষার্থীদের এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার মতো কেউ আছেন। আমার মতো সবাই বলবেন, শিক্ষার্থীরা সঠিক দাবি নিয়েই রাজপথে এসেছে। কিন্তু সময় যতই গড়াচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উৎসাহীর অভাব নেই। তাদের উৎসাহের কারণ শুধু শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতি নয়, এই অতি উৎসাহী মহল এই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ওপর ভর করে অন্য কিছু হাসিল করতে চায়। সোজা কথায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনের দিকে নিয়ে যাওয়ার এক প্রাণান্ত চেষ্টা অনেকের। প্রশ্ন হলো, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে কি সরকার পতন করা যাবে?

আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ১০ বছর টানা ক্ষমতায়। টানা ক্ষমতায় থাকার যেমন স্বস্তি আছে, তেমন অস্বস্তিও আছে। স্বস্তির দিক হলো সময় নিয়ে, দীর্ঘ পরিকল্পনা করে কাজ করা যায়। যেমনটা আওয়ামী লীগ করেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন তার বড় উদাহরণ। বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। অর্থনীতিতে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতির পরও একটা ছন্দ এসেছে। আর অস্বস্তি হলো, টানা ক্ষমতায় থাকলে একটা অতিআত্মবিশ্বাস পেয়ে বসে। নিজেদের বড় ভাবার অহমিকা গ্রাস করে। চারপাশের সবাইকে ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ ভাবার রোগ হয়। কোনো কিছুকে গুরুত্ব না দিয়ে, নিজেদের ভাবনাই একমাত্র সঠিক ভাবনা এমন এক প্রবল জেদ জ্বরে আক্রান্ত হন ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের একজন ছাড়া সবার দীর্ঘ ক্ষমতায় থাকাজনিত উপসর্গ দৃশ্যমান। যিনি এই রোগে আক্রান্ত নন, তার নাম শেখ হাসিনা। আমরা গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণাত্মক বক্তব্যগুলো লুফে নিই, হেডলাইন করি। কিন্তু তার অনেক সতর্কতামূলক বক্তব্য আমরা উপেক্ষা করি। কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলের আওয়ামী লীগ নেতাদের ঢাকায় গণভবনে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। যেখানে তিনি বলেছিলেন এক অভূতপূর্ব গুরুত্বপূর্ণ কথা। তার বক্তব্য ছিল এরকম ‘জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের মন জয় করেই ভোটে জিততে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।’ কিন্তু মনোনয়নযুদ্ধ, নগদ প্রাপ্তি, নানামুখী বাণিজ্যের দুষ্টচক্রে এই মূল্যবান বক্তব্যটা আওয়ামী লীগের কজন হৃদয়ে ধারণ করেছেন তা নিয়ে আমার গভীর সংশয় রয়েছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী ক্ষমতাব্যাধিতে আক্রান্ত। এই ব্যাধিতে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। জনগণ তাদের কাছে হয় উপেক্ষিত। তাই হঠাৎ এমন আন্দোলন দেখে এদের কেউ কেউ আতঙ্কিত, কেউ উদ্বিগ্ন, কেউ শঙ্কিত। জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এদের করণীয় অজানা। অথচ তারা যদি তাদের দলের সভাপতির কথা শুনে জনগণের সঙ্গে মিশে থাকত, তাহলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা, এমপি, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগকে দেখা যেত। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। নিরাপদ সড়ক এখন জনগণের প্রাণের দাবি। কে চায় রাস্তায় দুর্ঘটনার নামে এমন হত্যাকাণ্ড দেখতে, কে চায় এমন মৃত্যুর মিছিল দেখতে? তাই জনগণের হৃদয় থেকে উৎসারিত সংগঠন আওয়ামী লীগেরই তো প্রথম উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো। আওয়ামী লীগের এমপিরা তার এলাকায় ছাত্র অবস্থানে নেতৃত্ব দিতে পারতেন। ছাত্রলীগ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি দিতে পারত। যুবলীগ কর্মসূচি শেষে বড় ভাই হিসেবে তাদের ঘরে ফেরার দায়িত্ব নিতে পারত। স্বেচ্ছাসেবক লীগ আন্দোলনে যেন জনমানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ না হয় সেজন্য সড়ক ব্যবস্থাপনা তদারকি করতে পারত। কিন্তু কেউ কিছু করেনি। কোনো এমপি ছাত্রছাত্রীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে পারেননি আমি তোমাদের অভিভাবক। দু-একজন অবশ্য ব্যতিক্রম। যেমন নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমান। তিনি দেখালেন শেখ হাসিনার আদর্শ আসলে কী? আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে ঘরে ফেরালেন। শামীম ওসমান যে কাজটি করেছেন, তা সব এমপির অবশ্যপালনীয় ছিল। কিন্তু এমপি সাহেবরা অত্যন্ত ব্যস্ত। সরকারের মেয়াদের শেষ প্রান্তে তাদের নিজের পুত্র-কন্যাকে দেখারই সময় নেই, তারা কি দেখবেন এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের? জলাতঙ্ক রোগে যেমন মানুষ পানির ভয় পায়, তেমন ক্ষমতারোগে জনগণকে এড়িয়ে যান রাজনীতিবিদরা।

দীর্ঘ ক্ষমতা থাকাজনিত রোগের একটি বড় লক্ষণ হলো— কাণ্ডজ্ঞানহীন বিনোদন, দায়িত্বহীন উচ্চারণ। নিরাপদ সড়কের এই যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাজপথে এভাবে হয়তো অবস্থান নিত না, যদি না ওই অবান্তর হাসির উদ্ভব না হতো। অন্য অর্থে বলা যায়, এক হাসিই শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করেছে। যিনি ওই ক্লোজআপ হাসি হেসেছিলেন, এরপর তিনি ক্ষমা চেয়েছেন, নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাড়িতেও গেছেন, কিন্তু ততক্ষণে জল বহুদূর গড়িয়েছে। গুলি একবার ছুড়লে তা কি আর ফেরত নেওয়া যায়? সর্বনাশা হাসির ছোবলে আজ জনজীবন বিপর্যস্ত। আহা জনগণ! মন্ত্রী হাসেন জনগণের কপাল পোড়ে। হাসির কারণে সৃষ্ট যৌক্তিক আন্দোলন রাজপথে প্রথম দুই দিন ছিল নেতৃত্বহীন স্বতঃস্ফূর্ত। এ দুই দিনে শিক্ষার্থীরা পাশে পায়নি জনপ্রতিনিধিদের, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটিকে। ফলে এমন একটা আন্দোলনের ঢাউস ফল খেতে কার না লোভ হয়? বিরোধী পক্ষ এবং সুশীলদের দীর্ঘদিনের খায়েশ সরকারকে একটা ল্যাং মেরে কাদায় ফেলা। তাই এতিম আন্দোলনে জনসহানুভূতি দেখে বিএনপি-জামায়াত ও সুশীলদের চোখ-মুখ চিকচিক করে উঠল। তারা তো আর নৌপরিবহনমন্ত্রীর মতো বোকা নন। খুশির উল্লাসে বাঁধভাঙা হাসি চেপে সরকার পতনের খোয়াবে বিভোর হলেন। শুরু হলো বোকা বাক্সে বকবকানির উৎসব। জনগণের নামে শুরু হলো জনঅত্যাচার।

সুশীলসমাজের দুই মুখপত্র দৈনিক (একটি বাংলা, একটি ইংরেজি) যেন পেয়ে গেল মোক্ষম অস্ত্র। আন্দোলনে উসকানি দিতে যা তথ্য-উপাত্ত লাগে তা বড় হরফে মুদ্রিত হতে লাগল। তিন দিন পর বিএনপি মহাসচিব জানালেন ‘আমরাও আছি’। বিএনপির অনেক নেতা তো গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাও দিয়ে দিলেন। জনগণকে থোড়াই কেয়ার। কিন্তু সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বিচক্ষণ, দূরদর্শী এবং একজন মানবিক রাষ্ট্রনায়ক। তিনি দ্রুত একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। নিহত দুই শিক্ষার্থী পরিবারের জন্য দিলেন আর্থিক অনুদান। এ প্রসঙ্গে একটি কথা বলে রাখা দরকার। মৃত্যুশোক যে কী করুণ, বীভৎস ও বেদনাদায়ক তা শেখ হাসিনার চেয়ে কজনই বা বেশি বোঝেন। এই আগস্ট মাসেই এক মহাপ্রলয়ে তিনি একজন ছাড়া সব প্রিয়জনকে হারিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার ব্যাপারে জনমনে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট। তিনি যা বলেন তা করেন। কথা দিলে তিনি কথা রাখেন। এজন্য তার প্রতি জনগণের আস্থা প্রবল। এমনকি তার প্রবল প্রতিপক্ষও তার নিষ্ঠা, কর্মতৎপরতা এবং দায়িত্বশীলতা নিয়ে আড়ালে-আবডালে বিস্ময় প্রকাশ করেন। কাজেই তিনি দ্রুত একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণের পর আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মনে এক ধরনের স্বস্তি এলো। শিক্ষার্থীরা এবার ঘরে ফিরবে। জনজীবন স্বাভাবিক চলবে। আবার কর্মচাঞ্চল্যে ভাসবে দেশ। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১০ বছরে আন্দোলন, ভাঙচুর, হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের সংস্কৃতি থেকে দেশকে মুক্তি দিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪-এর পর সহিংসতার রাজনীতি বনবাসে গেছে। হরতাল-অবরোধ মানুষ ভুলে গেছে। মানুষ এখন কাজ করতে চায়। তাই শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার জন্য উন্মুক্ত কর্মমুখর মানুষ। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। কে বা কারা নয় দফা অথবা সাত দফা দাবিও তৈরি করে ফেলেছে। ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে কোমলমতি শিশুদের আবেগকে উসকে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অতঃপর ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব তুলে নিল। রাজপথে দাঁড়িয়ে তারা গাড়ির লাইসেন্স চেক করা শুরু করল। আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলছি, এই পথ ভুল পথ। এটা যৌক্তিক নয়। এই আন্দোলনে নাম ফলাতে অনেক সেলিব্রেটি বুঝে না বুঝে ‘অভিভূত’ হচ্ছেন, কেউ বা স্যালুট জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন তারা আমাদের শিক্ষা দিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আবেগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, একজন অভিভাবক হিসেবে আমি বলতে চাই, রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন কিংবা গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের কাজ নয়। কাল যদি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলেন, আমরা এখন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা দেখব— তখন কী ফল দাঁড়াবে? কিংবা তথ্য মন্ত্রণালয় যদি বলে, গণমাধ্যমে কী রিপোর্ট হয়, তার সোর্স কী এসব আমরা পরীক্ষা করব, তাহলে সেটি যে রকম ভয়াবহ ঘটনা হবে, এটিও তেমন এক ভয়াবহ তৎপরতা। আমি অবাক হয়ে যাই, যারা সুশাসনের কথা বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা বলে মুখে ফেনা ছড়ান, তারাই কোমলমতি শিশুদের এই পাকামিতে আশকারা দিচ্ছেন। ‘পুলিশবাহিনী’ একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের লাইসেন্স তল্লাশির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় এই বাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে। আমি খুশি হতাম যদি শিক্ষার্থীরা পুলিশবাহিনীকে দিয়ে কাজটা করাত। নিজে সরেজমিন ঘুরে দেখলাম, শিক্ষার্থীদের এসব পরীক্ষার জন্য তালিম দিচ্ছেন কিছু অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি। এরা শিক্ষার্থী নন, এরা অভিভাবকও নন— এরা কারা? এরা হলো তারা, যারা সরকারকে ফেলে দিতে চায়। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে পরিবহন সংকটে জনগণের অবস্থা যে বেহাল তার খবর কে নেবে?

আমরা আজকাল প্রায়ই দেখি জঙ্গিরা শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। শিশুদের সামনে রেখে, তাদের গায়ে বোমা লাগিয়ে জঙ্গিরা কুিসত, হিংস্র অপকর্ম করে। বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের নামে এমনকি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করার নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে একটি মহল। এই প্রশ্ন আমার মতো অনেকের। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্ত গণরায়ের মাধ্যমে এই সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিল। ২০১৪-এর ৫ জানুয়ারি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে। একটি নির্বাচিত সরকারকে হটানোর মাত্র দুটি স্বীকৃত গণতান্ত্রিক রীতি রয়েছে। একটি হলো নির্বাচন, অন্যটি হলো জাতীয় সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পাস। কিন্তু এ দুই পদ্ধতির বাইরে অন্য কোনো পদ্ধতিতে সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা এক ঘৃণ্য রাষ্ট্রদ্রোহ। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, গত ১০ বছরে এই সরকারকে হটাতে তৃতীয় পক্ষের ওপর সওয়ার হওয়ার চেষ্টা হয়েছে। প্রথম আমরা এটা দেখলাম, হেফাজতের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে। তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তো মিষ্টি বিতরণ করল এই আনন্দে যে সরকারের পতন ঘটছে। বেগম খালেদা জিয়া মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থানকারীদের ‘মেহমান’ হিসেবে সম্বোধন করে তাদের জন্য খাবার-দাবার নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়চিত্তের পদক্ষেপ বিএনপির স্বপ্নভঙ্গ ঘটায়। এরপর আসে হলি আর্টিজানের ঘটনা। অনেকে আশায় বুক বেঁধেছিল এবার হয়তো সরকারের পতন হবে। কিন্তু তাদের আশার গুড়ে বালি। সরকার টিকে গেল। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে দিয়ে একটি সিভিল সোসাইটি ক্যু এর চেষ্টাও ভেস্তে গেছে। কিছু সুশীলের হৃদয় ভেঙে বিচারপতি সিনহা এখন দূরদেশে। আওয়ামী লীগেকে হটানোর আরেক চেষ্টার নাম ছিল কোটা আন্দোলন। এই আন্দোলনের প্রতিও আছে বিএনপি, জামায়াত ও সুশীলদের ত্রিমাত্রিক প্রেম। এই আন্দোলন যখন পথহারা হলো তখন এলো শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই আন্দোলন নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও সুশীলসমাজের বক্তব্যগুলো অভিন্ন, একই সূত্রে গাঁথা। তারা এই আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছে। এই চেষ্টায় তারা নিজেরাই বোধশূন্যহীন দানবে পরিণত হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়। পাঠকের বিবেচনার জন্য মাত্র একটি উদাহরণ বিনীতভাবে উপস্থাপন করছি। কদিন আগে দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সর্বাত্মক অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে প্রচুর মাদক ব্যবসায়ী মারা গেছে। এ সময় আমাদের সুশীলসমাজ রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে উঠেছিল। তারা বলেছিল, ‘এভাবে বিনা বিচারে কাউকে হত্যার অধিকার রাষ্ট্র কাউকে দেয়নি। একজন খুনিরও আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে।’ বাংলাদেশে সর্ববিষয়ে পণ্ডিত কিছু ব্যক্তির ‘মানবাধিকার গেল’ চিৎকারে কাকের তারস্বরও ম্লান হয়ে গিয়েছিল। এখন পাঠক লক্ষ্য করুন, কোমলমতি শিশুদের হাতে যে নয় দফা দাবিনামা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, (যেগুলো অধিকাংশ শিক্ষার্থী বলতে পারবে না) তার প্রথম দাবিই হলো বাসের চালকের অবিলম্বে মৃত্যুদণ্ড। অর্থাৎ কোনো বিচার-আচার দরকার নেই। এক্ষুনি ওই চালককে ফাঁসি দিতে হবে। এটা কি তাহলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হবে না? তাহলে যারা এতদিন বলল, খুনিরও আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে, তারা নয় দফাকে অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি করে কোন নৈতিক ও আদর্শিক অবস্থান থেকে? এই প্রশ্নটি বিবেকবান প্রতিটি মানুষের কাছে।

অর্থাৎ আসল উদ্দেশ্য নিরাপদ সড়ক নয়, আসল উদ্দেশ্য দেশে একটি অস্থির অবস্থা তৈরি করা। যে অস্থির অবস্থা সরকারের পতনকে ত্বরান্বিত করবে। এজন্য যখন যেখানে সুবিধা সেদিকেই ঝুঁকছে একশ্রেণির মানুষ। তারা মাদকবিরোধী অভিযানে সরকারকে পর্যুদস্ত করার চেষ্টা করছে। আবার ড্রাইভারকে বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড দিতে বলছে।

আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে অস্থির এসব কিছু মানুষ। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে পারত। শিক্ষার্থীরা দেখিয়েছে চাইলেই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করা যায়। কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে না গিয়ে বিএনপি-জামায়াত অন্যের ঘাড়ে চড়ে ফায়দা হাসিলের যে চেষ্টা করছে, তাতে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রকটভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, প্রকাশ হচ্ছে তাদের জনবিচ্ছিন্নতা। তবে বিএনপি-জামায়াতের জন্য আমার কোনো দুঃখবোধ নেই। কারণ, বিএনপির রাজনীতির মূলকথাই হলো যে কোনো প্রকারে ক্ষমতায় যাওয়া। তাই তারা অন্যের আন্দোলনের ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করতেই পারে। কিন্তু আমার দুঃখ এবং করুণা হয় দেশের শিক্ষিত কয়েকজন মতলববাজ সুশীল বুদ্ধিজীবীর জন্য। যারা সমাজের বিবেক হিসেবে পরিচিত। তারা যখন শিশুদের জিম্মি করে তাদের মনোবাসনা পূরণ করতে চান, তখন লজ্জায় আমি সংকুচিত হয়ে যাই। যে জঙ্গিরা শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, তাদের সঙ্গে আজ যারা এই আন্দোলনকে উসকে দেওয়ার জন্য নানা উত্তেজক বক্তব্য দিচ্ছেন নানা টকশোয়, কাগজে লিখছেন জ্বালাময়ী ভাষায়— পার্থক্য কী? দুই পক্ষই কি মানবতার, শান্তির শত্রু নয়? অনেকেই যে কথাটা প্রায়ই ভুলে যান, যে কথাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার বলেন তা হলো, ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’। জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। জনগণ ছাড়া শুধু ষড়যন্ত্র করে সরকার পতন ঘটানো যাবে না, যায় না। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের রাজনৈতিক দল ও সমাজের জ্ঞানপাপীদের জনগণের ওপর আস্থাটাই নেই। জনগণের নামে যারা আমরা কথা বলছি, তারা সবাই জনগণকে জিম্মি করছি, জনগণকে দুর্ভোগে ফেলছি। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কিংবা সরকার পতনের ষড়যন্ত্র যা কিছুর ভোগান্তির একমাত্র শিকার আমরা জনগণ। সব দেখে-শুনে তাই বলতে ইচ্ছা করে— ‘আহারে জনগণ!’


বাংলা ইনসাইডার/ডিকে

(লেখাটি আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে)



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের পাঁচ ‘না’

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপিতে তারেক জিয়ার নাম হয়েছে ‘মি. না’। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন সব কিছুতেই ‘না’ বলছেন। কোন আলোচনা ‘না’ কোন সমঝোতা ‘না’। নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তাও ‘না’। তার কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়েও তিনি ‘না’ সূচক বক্তব্য দিচ্ছেন। আর এই ‘না’ এর অত্যাচারে বিএনপি এখন অতিষ্ঠ। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, সাম্প্রতিক সময় একাধিক স্পর্শকাতর বিষয়ে তারেক জিয়ার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আর তারেক জিয়ার এই নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই বিএনপি এখন আরও স্থবির হয়ে পড়েছে। 

যে সমস্ত বিষয়ে তারেক জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ‘না’ বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে;

১. নেতৃত্ব ছাড়া: গত কিছুদিন ধরে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছিল বিভিন্ন মহলে। যেহেতু তিনি লন্ডনে থাকেন সেজন্য নির্বাহী দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তিনি যদি কোন আলঙ্কারিক দায়িত্ব যেমন প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে দলে যারা নেতৃত্বে থাকবেন তারা দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বিবেচনা থেকে আন্তর্জাতিক মহল এবং দেশেও তারেকের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এটিকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, কোন অবস্থাতেই তিনি নেতৃত্ব ছাড়বেন না। অর্থাৎ আপাতত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। 

২. ফখরুলের পরিবর্তনে ‘না’: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার এবং তার স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। এর জন্য তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলে মহাসচিবের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছিলাম। কিন্তু তারেক জিয়া তাকেও ‘না’ করে দিয়েছেন। তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন করা যাবে না। 

৩. কাউন্সিল ‘না’: বিএনপির অনেকে দলকে চাঙ্গা করার জন্য, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য দ্রুত একটি কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠানের জন্য তাগাদ দিচ্ছিলেন। বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বলা হচ্ছিল যে, অনেক নেতাই এখন অসুস্থ, অনেক পদ শূন্য। এই কারণে দলের নতুন নেতৃত্বের সামনে আনা দরকার, আনা দরকার দলের গতিশীলতা। আর এ কারণেই দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা জরুরি। কিন্তু তারেক জিয়া আপাতত কাউন্সিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

৪. স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ: বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে পাঁচটি শূন্যপদ রয়েছে। স্থায়ী কমিটি এমনিতেই কার্যকর, যারা অকার্যকর, যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন তাদের অনেকে অসুস্থ, বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। সে কারণে স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের সময়ের দাবি। কিন্তু আপাতত স্থায়ী কমিটির শূণ্যপদ পূরণ করার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। কারণ তিনি ব্যাখ্যা করেননি বটে, তবে আপাতত বিএনপির স্থায়ী কমিটির শুন্যপদ গুলো পূরণ হচ্ছে না।

৫. জোটে ‘না’: বিএনপি চেয়েছিল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে। বিশেষ করে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে। আর এ কারণে বিএনপি অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিল, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তারা একটি অভিন্ন বা যৌথ কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে সে জোট হয়নি। এখন আবার বিএনপি শরিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এটি তারেক জিয়ার নির্দেশে করা হচ্ছে। তারেক জিয়া অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না। আর এ কারণে তিনি জোটগত ভাবে আন্দোলনের ব্যাপারেও ‘না’ সূচক বার্তা দিয়েছেন। 

আর এ সব ‘না’ এর কারণে বিএনপি এখন নেতিয়ে পড়েছে।


তারেক জিয়া   বিএনপি   আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে যারা বেশি পেয়েছে তারাই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে

প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা যোগ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত পেয়েছেন তারাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন, দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। যুগে যুগে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বাস্তবতা। 

খন্দকার মোশতাক কখনোই আওয়ামী লীগের এত বড় নেতা হওয়ার কথা ছিল না। যোগ্যতার বাইরে বঙ্গবন্ধু তাকে সামনের দিকে এনেছিলেন এবং খুনি মোশতাক তার চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, অযোগ্যরা সবসময় বিশ্বাসঘাতক হয়। সবাই মোশতাকের মতো বড় মাপের বিশ্বাসঘাতক না হলেও বিভিন্ন সঙ্কট দেখা গেছে, আওয়ামী লীগে যারা অযোগ্য, আওয়ামী লীগ যারা যত বেশি পেয়েছে তারাই দলের শৃঙ্খলার প্রতি ততটা বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। 

এক এগোরোর সময় হঠাৎ করে বড় হয়ে যাওয়া নেতারাই আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ কারণ হয়ে গিয়েছিল। আর এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন সেই সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছে তাদের একটি বড় অংশই হলো অনেক বেশি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা। 

আমরা যদি এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের হিসাব খতিয়ে দেখি তাহলে দেখব যে, বেশির ভাগই আছেন যারা অনেক বেশি আওয়ামী লীগ থেকে পেয়েছেন। এদের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন ২০০০ সালের দিকে। যোগদান করেই তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, নির্বাচন করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পেয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবেও তিনি এখন দায়িত্ব পালন করছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগে এত কিছু পেয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর এই সৌভাগ্যের প্রতিদান তিনি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে তার খালাতো ভাই হারুন অর রশীদ হীরাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে।

শাজাহান খান আরেকজন যিনি আওয়ামী লীগে এসে প্রাপ্তির ঝুড়ি পূর্ণ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মন্ত্রী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা হিসেবে তিনি পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য  দখল করেছেন। আর এবার নির্বাচনে তিনি তার ছেলে আসিফুর রহমান খানকে প্রার্থী করেছেন। 

একরামুল করিম চৌধুরী সেই বিরল ভাগ্যবান আওয়ামী লীগের নেতা যিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং স্থানীয় এলাকা দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও আওয়ামী লীগ সভাপতির আপাত্য স্নেহের কারণে এখনও রাজনীতিতে টিকে আছেন। আর তার প্রতিদান তিনি দিলেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে শাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে।

সাহাদারা মান্নান আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা কৃষিবিদ মুহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সহধর্মিণী। কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এক এগোরার সময় সংস্কারপন্থী ছিলেন। বাংলাদেশের পচাঁত্তর পরবর্তী রাজনীতিতে শেখ হাসিনা যাদেরকে টেনে তুলে পাদপ্রদীপে এনেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মান্নান অন্যতম। আর ২০০৬ সালে সংস্কারপন্থি হওয়ার পরও শেখ হাসিনা তাকে বগুড়া থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগে তিনি কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। বরং তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে মনোনয়ন দিয়ে শেখ হাসিনা তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। আর সেই সহানুভূতির পুরস্কার হল সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

বাংলাদেশে যদি সৌভাগ্যবান কোন আওয়ামী লীগার থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুয়ে বসে দিন কাটিয়েছেন। তবু শেখ হাসিনা তার সব অত্যাচার সহ্য করেছেন। অর্থনীতির বারোটা বাজানোর পরও আ হ ম মোস্তফা কামালকে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। আর তার পুরস্কার তিনি দিয়েছেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। তার আপন ছোট ভাই এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

জাহিদ মালেক হলেন আওয়ামী লীগের ভাগ্যবান এক ব্যক্তি, যিনি রাজনীতিতে কোনো রকম ত্যাগ তিতিক্ষা না করেই অনেক কিছু পেয়ে গেছেন। বিশেষ করে তার বাবা ছিলেন স্বৈরাচারের দোসর এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কর্নেল মালিকের মতো স্বৈরাচারের দোসরদেরকে ছাত্র জনতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেই কর্নেল মালেক পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং তার সূত্র ধরে জাহিদ মালেক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান মানিকগঞ্জ থেকে। তিনি ২০১৪ সালে প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালে পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিরও সদস্য। অথচ তিনি কিনা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাইকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন।

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতা এবং জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী আ কম মোজাম্মেল হক। তিনি এতোই ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনা তাকে দুবার দলের জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হিসেবে অলঙ্কৃত করেছেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কতটুকু সফল হয়েছেন সেটি সাধারণ জনগণ ভালো মতোই জানেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পর একজন জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হয়েও তিনি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাতিজা মুরাদ কবীরকে কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রার্থী করেছেন। 

এরকম তালিকা অনেকে দীর্ঘ। যারাই যত বেশি সুযোগ পেয়েছেন তারাই তত বেশি দলের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এটাই আওয়ামী লীগের একটি বড় ট্রাজেডি।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহীদের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   মির্জা ফখরুল   ড. মঈন খান   নজরুল ইসলাম খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

৩০ এপ্রিল কী হবে আওয়ামী লীগে

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ। 

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একটা নিরপেক্ষ অবস্থান রাখতে চেয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। শুধু দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নয়, আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন তাদেরকে মন্ত্রী-এমপিরা সমর্থন দেবে না এবং আওয়ামী লীগ দলগত ভাবে কোন প্রার্থী দেবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগের এই নির্দেশনা অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপিরা মানেননি। তারা তাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন এবং যারা আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করেননি তারা নিজস্ব ব্যক্তিকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন এলাকায় আধিপত্য রক্ষার জন্য। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একাধিকবার নির্দেশনা দিলেও সেই নির্দেশনা মানেননি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা। এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের ৩০ এপ্রিলের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এ নিয়ম আওয়ামী লীগের মধ্যে নানারকম চর্চা হচ্ছে। 

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা কারা কারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা নির্বাচন করছেন, স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছেন সেই তালিকা তৈরি করেছেন। আগামী ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে এই তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দেওয়া হবে। 

দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র গুলো বলছে, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে থাকবে। বিশেষ করে নির্বাচনকে যেন কেউ প্রভাবিত করতে না পারে, নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি কোনো ছাড় দেবেন না- এই বার্তাটি প্রধানত দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দেওয়া হবে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে নিজেদের স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে পর্যায়ক্রমে। আওয়ামী লীগ আকস্মিকভাবে তাদেরকে বহিষ্কার করা বা চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার মধ্যে দিয়ে যাবে না। বরং প্রথমে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং যে সমস্ত নেতারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থী দিয়েছেন তাদের কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন করার বিষয়টিও সামনে আসতে পারে। এ ছাড়া যারা মন্ত্রী এবং এমপি তাদের জন্য এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের বার্তা দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছেন। তবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো তাৎক্ষনিকভাবে সবাইকে বহিষ্কার করা বা দলে থেকে বের করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ তিনি নেবেন না। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য হলো উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করা। নির্বাচনে যেন ভোটার উপস্থিতি বাড়ে সেটি নিশ্চিত করা। এই বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে উপজেলা নির্বাচনে যেন মানুষ ভোট দিতে যায় সে বিষয়ে জনগণকে উদ্ধ করার পর জোর দিবেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ যেন উপজেলা নির্বাচনের যাকে ইচ্ছা মানুষ ভোট দিক সে বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়া হয় সেই নির্দেশনা দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ   কার্যনির্বাহী কমিটি   উপজেলা নির্বাচন   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ, পুলিশের বাধায় নেতাকর্মীরা

প্রকাশ: ০১:১৬ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।

পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।

তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।


নয়াপল্টন   বিএনপি   বিক্ষোভ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন