নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০১৮
গত ছয়মাস ধরে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। বিভিন্ন ইস্যুতে মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দিচ্ছে, যা সরকারের সমালোচনারই নামান্তর। সর্বশেষ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে কথিত হামলার ঘটনা ওয়াশিংটন পর্যন্ত গড়িয়েছে। সরকারের প্রতি মার্কিন মনোভাব ক্রমশ: নেতিবাচক হিসেবে প্রকাশ হচ্ছে। এরকম প্রেক্ষাপটে, সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আবদুল মোমেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবারই মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে ডেকে নেন। দুজন প্রায় দুঘণ্টা বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী আগামী সপ্তাহেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। ড. রিজভী এখন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। এখানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কর্মসূচি রয়েছে। এটা শেষ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্র যাবেন বলে জানা গেছে। এদিকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আবদুল মোমেন আগামী মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন।
সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি গত কিছুদিন ধরেই পরিকল্পিতভাবে মার্কিন প্রশাসনে বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত। তাঁরা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে নানা অভিযোগ করে আসছে। যারা সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিষোদগার করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ড. কামাল হোসেন এবং সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তি। সরকারের ধারণা, এদের বাইরেও বিএনপি-জামাত সরকার বিরোধী প্রচারণা করছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে। সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানদের কাছেও বিএনপি-জামাতের পক্ষ থেকে নিয়মিত পিটিশন দাখিল করা হচ্ছে।
সরকারের একাধিক নেতা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চমৎকার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে দুই দেশের সম্পর্কে কিছু অনভিপ্রেত বিষয়ের উদ্ভব হয়েছে। সরকারের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলেছেন, ‘মার্কিন নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের পরাজয়ের পর আমরা আশা করেছিলাম দুই দেশের সম্পর্কের নতুন মদদ পাবে। কিন্তু একটি মহল সরকারের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
দেখা গেছে, মাদক বিরোধী অভিযানের সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত কঠোর ভাষায় এই অভিযানের সমালোচনা করে। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পর মার্কিন দূতাবাস থেকে এই নির্বাচনে জনরায়ের প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করা হয়। সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে মার্কিন মনোভাব ছিল সরকারের বিরুদ্ধে। এরপর মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে কথিত হামলার ঘটনা। সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, নির্বাচনের আগে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে চায় না। আর সে কারণেই সম্পর্ক উন্নয়নে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।