নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক এক অধ্যায় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট। এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে ঘাতকের দল। দীর্ঘ সময় পরে হলেও ১৫ আগস্টের সেই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকা সেনাসদস্যদের বিচার হয়েছে বাংলার মাটিতে। ঘাতকদের কারও ফাঁসি হয়েছে, কারও হয়েছে যাবজ্জীবন। কয়েকজনের শাস্তি কার্যকর হয়েছে। ঘাতকদের কয়েকজন আছেন বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে। এদের দেশে এনে শাস্তি কার্যকরের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু একটি প্রশ্ন এখন উঠতেই পারে হত্যাকারীদের বিচারেই কি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে?
বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাজনীতি নিয়ে কাজ করেন এমন বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার যে দীর্ঘ ষড়যন্ত্র এবং এর সঙ্গে যুক্ত থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হয়নি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে অনেকেই জড়িত ছিলেন। কেউ ছিলেন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কেউ আবার পরোক্ষভাবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে থাকা অনেকেই আবার ঘুরেফিরে আওয়ামী লীগেই ঢুকে বসে আছেন।
এখন আওয়ামী লীগের মধ্যেই দাবি উঠেছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার করতে হবে। বিচারের কাঠগড়ায় তুলতে হবে ষড়যন্ত্রকারীদের। একই সঙ্গে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে যারা লাভবান হয়েছে। সুযোগ থাকা সত্বেও যাঁরা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেনি তাঁদেরও বিচারের দাবি উঠেছে। বিচার করতে হবে বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সময়ে গঠিত মোশতাকের মন্ত্রিসভায় থাকা ব্যক্তিদের। এদের সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জোরালো হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি আছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচারের জন্য একটি কমিশন গঠন করার।
ইতিহাসবিদদের মতে, ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই মোশতাকের মন্ত্রিসভায় ছিলেন। এদের অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই। কিন্তু যাঁরা বেঁচে আছেন তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
ইতিহাসবিদদের মতে, বঙ্গবন্ধু হত্যার ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে তারই ঘনিষ্ঠ সহচরদের মন্ত্রী হওয়ার ঘটনা খন্দকার মোশতাক সরকারের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল। মোশতাকের ৮১ দিনের শাসনামলে সঙ্গী ছিলেন বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার ২১ সদস্য। মোশতাকের উপরাষ্ট্রপতি হলেন মোহাম্মদউল্লাহ। আর মন্ত্রিসভার সদস্যরা হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর, পরিকল্পনামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী, অর্থমন্ত্রী ড. আজিজুর রহমান মলি্লক, শিক্ষামন্ত্রী ড. মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আবদুল মান্নান, কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মোমিন, এলজিআরডি মন্ত্রী ফণিভূষণ মজুমদার, নৌপরিবহনমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, গণপূর্ত ও গৃহায়নমন্ত্রী সোহরাব হোসেন। প্রতিমন্ত্রীরা হলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমান, ভূমি ও বিমান প্রতিমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, রেল ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী নূরুল ইসলাম মঞ্জুর, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, শিল্প প্রতিমন্ত্রী নূরুল ইসলাম চৌধুরী, ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্ষিতিশ চন্দ্র মণ্ডল, পশু ও মৎস্য প্রতিমন্ত্রী রিয়াজউদ্দিন আহমদ ভোলা মিয়া, যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ আলতাফ হোসেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা-পরবর্তী কারারুদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা আমীর হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগদানকারী সদস্যদের ফের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, সে দিন যদি জাতীয় চার নেতার মতো অন্য মন্ত্রীরা মোশতাকের মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করতেন তাহলে রাজনীতির ইতিহাস ভিন্ন হতে পারতো। কলঙ্কের কালিমা জাতিকে এতকাল বহন করতে হতো না। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে ৩৮ বছর লাগত না।
৭৫’র ১৫ আগস্টে সেনাপ্রধান ছিলেন কে এম শফিউল্লাহ। ওই সময় তিনি চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন। সেনাপ্রধান হিসেবে সন্দেহাতীত ভাবে ব্যর্থ শফিউল্লাহর সমালোচনা করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতারাই। ইতিহাসবিদদের মতে, দক্ষ সেনাপ্রধান হলে ১৫ আগস্ট আসতই না। অথচ এই কে এম শফিউল্লাই ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপিও হন। বর্তমানে শফিউল্লাহ সেক্টরস কমান্ডার ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন এইচ. টি. ইমাম। ৭৫ পরবর্তী সময়ে তিনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বলেই মনে করেন অনেকে। খুনি মোশতাককে শপথ পড়ান এইচ. টি. ইমাম। অবশ্য এজন্য তিনি নিজেও ভুগেছেন অনেক। কারাবরণ করতে হয়েছে। ১৫ আগস্ট ও এর পরবর্তী ভূমিকার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছেই নিন্দিত এইচ. টি. ইমাম কিছুদিন আগেও সরকারের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট বড় আমলা ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর। বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সময়ে তাঁর ভূমিকা নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে। জিয়াউর রহমানের খাল কাটা তত্ত্বের ওপর গবেষণা করে ডক্টরেট ডিগ্রিও নিয়েছেন এই মহিউদ্দিন খান আলমগীর। অথচ মহিউদ্দিন খান আলমগীরই পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী হয়েছেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর। বর্তমানে আওয়ামী লীগের এমপি মহিউদ্দিন খান আলমগীর একাধিক ব্যাংকসহ নানা প্রতিষ্ঠান বাগিয়ে নিয়েছেন। নানা সময় সরকারের ভাবমূর্তির ১২ টা বাজিয়ে ৭৫ পরবর্তী বিতর্কিত ক্যারিয়ারের মহিউদ্দিন খান আলমগীর আওয়ামী লীগেই বহাল তবিয়তে।
এরা ছাড়াও ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা তাঁদের যে ভূমিকা পালন করার ছিল তার ছিটেফোঁটাও পালন করতে পারেননি। অথচ এদের উপরই বঙ্গবন্ধু আস্থা রেখেছিলেন। আওয়ামী লীগের এই নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন দিয়ে বিশ্বাস করতেন। অথচ বঙ্গবন্ধুর সেই বিশ্বাসের কোনো মূল্য দিতে পারেননি তাঁরা। ইতিহাসবিদদের মতে, বঙ্গবন্ধু যাদের উপর আস্থা রাখতেন, বিশ্বাস করতেন তাদের মধ্যে একমাত্র কাদের সিদ্দিকী ছাড়া কেউই বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী সময়ে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি, রাখার প্রচেষ্টাও দেখা যায়নি অনেকের মধ্যে। তোফায়েল আহমেদ ছিলেন ৭৫ এর ১৫ আগস্টের সময় রক্ষীবাহিনীর দায়িত্বে। অথচ ওই সময় কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেননি তিনি। অনেকের মতে, গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল তোফায়েল আহমেদের।
বিশ্লেষকদের মতে, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগে তিন ধরনের লোক ছিল: প্রথম দলে ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মোশতাকের সঙ্গে যাঁরা হাত মিলিয়েছিল। দ্বিতীয় ধরনের আওয়ামী লীগ নেতারা হত্যাকাণ্ডের পর মোশাতককে সমর্থন করেননি, কিন্তু এর কোনো প্রতিবাদও করেনি বা করতে পারেনি। আর তৃতীয় দলে ছিলেন যারা নিজেদের অবস্থান থেকে সুযোগ অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকেই সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন দ্বিধাবিভক্ত। আবার অনেকে বঙ্গবন্ধুর রক্ত মাড়িয়ে গিয়ে যোগ দিয়েছেন মোশতাকের মন্ত্রিসভায়। হয়েছিলেন জাতির পিতার হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের দোসর। বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচারে সবাইকেই আইনের মুখোমুখি করতে হবে। হত্যাকারীদের বিচারেই শুধু নয়, হত্যার ষড়যন্ত্রকারী, তাদের দোসর সবার বিচারেই শুধুমাত্র কলঙ্গমুক্ত হবে জাতি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিনের পতাকা ছাত্রলীগ
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান
পদে প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুর ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্র
বাতিল করেন।
জানা যায়, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সদর
ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে সেতুমন্ত্রীর
ভাইসহ চারজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন-
১। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন
২। উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ
গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল
৩। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান
সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল
৪। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি তিনজনের মনোনয়ন
বৈধ হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর
তথ্য গোপন করায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সংশোধন
পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর আপিলের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন বলেন, ‘আমার নামে যে মামলা
ছিল তা আমার জানা ছিল না। এ ছাড়া আয় বিবরণীর হিসাব দেওয়া হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা
তা খেয়াল করেননি। আপিল করার সুযোগ আছে। আমি আপিল করবো। আশা করি আমার মনোনয়ন বৈধ হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই মন্ত্রী। স্বজন বলতে সন্তান-স্ত্রীকে
বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটা ক্লিয়ার করেছেন। আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবও সেটা
ক্লিয়ার করেছেন। আশা করি স্বজনের ভুল ব্যাখ্যা থেকে সবাই সরে আসবে’।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তফসিল
অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ হবে
আগামী ২৯ মে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান
পদে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি সবার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের শাহদাত হোসেন
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির
স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই বলে
জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (৫ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির
ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশের
কর্তাব্যক্তিরা আমাদের দেশে মানবাধিকার যে চোখে দেখে, নিজের দেশে সেই দৃষ্টিতে দেখবে
না কেন?
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের
সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই। তবে সত্য বললে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তো কিছু করার নেই।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রতিবাদ দমনে যে আচরণ করা হয়েছিল, একই রকম নির্মম আচরণ এখন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের মানবাধিকার
নিয়ে তারা কথা বলে। আমরা কি এসব নিয়ে কথা বলতে পারবো না? আমাদের দেশে তারা যে দৃষ্টিতে
মানবাধিকার দেখে সে দৃষ্টিতে নিজের দেশে দেখবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব
নেই এমন কথাতো আমরা বলিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুদ্ধের কারণে
বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা বাংলাদেশেও আছে। বাংলাদেশ এ প্রভাব থেকে মুক্ত নয়।
যেমন, দ্রব্যমূল্যের যে চাপ তা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন
করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে—এ ভাবনা থেকে আওয়ামী
লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে অন্যান্য
দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ান আব্দুস সবুর, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ
দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি ওবায়দুল কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম
ধাপের ভোট। নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ২২ উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসি। এক্ষেত্রে শুরুতেই পাঁচটি উপায়ে ভোটারের পরিচিত নিশ্চিত করতে
হবে।
কোনো কারণে যদি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের
ছাপ ম্যাচিং না হয় তাহলে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে ওই
ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়ভার
সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে বহন করতে হবে।
সম্প্রতি নির্বাচন পরিচালনা-২ (অধিশাখা)-এর উপসচিব আতিয়ার রহমানের
সই করা বিশেষ পরিপত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের সবশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুসারে
নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বৈধ ভোটারকে উপস্থিত হতে হবে। তবে ভোট দেওয়ার আগেই সহকারী প্রিজাইডিং
অফিসার ৫টি উপায়ে ভোটার শনাক্ত করবেন।
সেগুলো হচ্ছে…
১। স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে।
২। স্মার্ট কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে।
৩। ১৭ ডিজিটের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে।
৪। ১২ ডিজিটের ভোটার নম্বর ব্যবহার করে।
৫। আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে।
আর এসবের যে কোনো একটি উপায়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর
ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ ম্যাচিং না হলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি (সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার) প্রথমে ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে
পরবর্তীতে নিজের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে ভোটারকে শনাক্ত করবেন। এক্ষেত্রে সহকারী
প্রিজাইডিং অফিসার উক্ত ভোটারকে শনাক্তকরণের সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করবেন বলেও পরিপত্রে
উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এই উপায়ে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মোট ভোটারের সর্বোচ্চ ১
শতাংশ ভোটারকে শনাক্ত করে ইলেক্ট্রনিক ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন। আর যেসব ভোটারের আঙ্গুলের
ছাপ ম্যাচিং হবে না এবং সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ইলেক্ট্রনিক
ব্যালট ইস্যু করবেন, সেসব ভোটারের জন্য আলাদা লগ পোলিং কার্ডে সংরক্ষণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি যদি অবৈধভাবে ভোট প্রদানের অপচেষ্টা করেন
এবং উক্ত ব্যক্তির সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অবৈধ ভোটার হিসেবে প্রমাণিত
হয়, তাহলে তথ্য প্রযুক্তি আইন এবং (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ অনুযায়ী
সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এছাড়া, যে সকল ভোটারকে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের
ছাপ দিয়ে শনাক্ত করবেন সে সকল ভোটারের তালিকা নির্ধারিত রেজিষ্ট্রারে ভোটারের নাম
ও ভোটার নম্বর লিখে স্বাক্ষর গ্রহণ করবেন এবং নিজেও সই করবেন।
প্রসঙ্গত, ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট
হবে আগামী ৮ মে। এতে সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, কাজীপুর, পাবনা জেলার
সাঁথিয়া, সুজানগর, বেড়া, যশোর জেলার মনিরামপুর, কেশবপুর, পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর
সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর, হরিরামপুর, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া,
ভেদরগঞ্জ, জামালপুর জেলার জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর, মতলব
দক্ষিণ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাধারণ
নির্বাচন ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।
এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ভোট ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায়
ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট ৬ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
নির্বাচন কমশিন ইভিএম প্রিজাইডিং অফিসার
মন্তব্য করুন