নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০২ পিএম, ১৫ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু স্বাধীন দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করে যেতে পারেননি বঙ্গবন্ধু। একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে স্বাধীনতার মাত্র চার বছর পরই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হন তিনি। হত্যাকাণ্ডের প্রায় চার দশক পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ১২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ৫ জনের ফাঁসি ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের রায় মাথায় নিয়ে আরও ছয় খুনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক আছেন। পলাতক খুনিদের মধ্যে দুজনকে ফেরাতে সরকারের কূটনৈতিক ও আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু বাকি চারজনের অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না সরকার।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ছয় খুনি হলেন লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, মেজর (অব.) নূর চৌধুরী, রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান, লে. কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী ও ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ। এদের মধ্যে এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী কানাডায় এবং এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এটি স্পষ্ট।
ধারণা করা হচ্ছে, বাকি চার পলাতক খুনির মধ্যে মেজর ডালিম কেনিয়ার পাসপোর্ট নিয়ে আছেন পাকিস্তানে, লে. কর্নেল আবদুল রশিদ ও রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং মেজর নূর চৌধুরী ও লে. কর্নেল রাশেদ চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। এছাড়া গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক খুনিদের মধ্যে শরিফুল হক ডালিমকে স্পেনে এবং মোসলেম উদ্দিনকে জার্মানিতে দেখা গেছে। আর ষষ্ঠ খুনি আবদুল মাজেদকে সেনেগালে দেখার কথা শোনা গেছে। কিন্তু এই তথ্যগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এই খুনিদের যখন যে দেশে দেখা গেছে, তার ভিত্তিতে গোপনীয়তার সঙ্গে সে দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে সব দেশের পক্ষ থেকে জবাব আসলেও পাকিস্তান কোনো জবাব দেয়নি বলে জানা গেছে। পলাতক খুনিরা এখন বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে সরকারের একটি সূত্র।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে দেশটির কেন্দ্রীয় আদালতে এ বছরের জুলাইয়ে মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ। আর এ এম রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে চলছে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া। আইনি পরামর্শক সংস্থা স্কাডেন এলএলপিকে এ কাজ সম্পন্ন করতে নিযুক্ত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কূটনৈতিক পথে নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর জন্য কানাডাকে বারবার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু কানাডার আইনে মৃতুদণ্ড নিষিদ্ধ হওয়ায় নূর চৌধুরীকে ফেরত না পাঠানোর বিষয়ে পরিস্কার অবস্থান নেয় কানাডা। তাই বিষয়টি সুরাহার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বাংলাদেশ। জানা গেছে, ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ফেরতের বিষয়ে ঝুঁকি মূল্যায়নের প্রক্রিয়া বা প্রি-রিস্ক রিমুভাল অ্যাসেসমেন্টের (পিআরআরএ) পিটিশন দাখিল করেন নূর চৌধুরী, যার আবেদনে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ফিরে এলে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। তাই তিনি কানাডায় বসবাসের অনুমতি প্রার্থনা করেন। নূর চৌধুরীর ওই আবেদনের সুরাহা হয়নি। বাংলাদেশ কানাডার আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার মাধ্যমে যদি এই আবেদনের সুরাহা হয় তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার একটি সম্ভাবনা তৈরি হবে।
রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে যোগাযোগ চলছে বলেও জানিয়েছে একটি কূটনৈতিক সূত্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, কূটনৈতিক পথে এই নিয়ে এগোনোর তেমন সুযোগ নেই। এরপরই বাংলাদেশ রাশেদ চৌধুরীকে ফেরাতে আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী স্কাডেন এলএলপি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
কবে নাগাদ এই দুই খুনিকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে সে প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমি কোনো সময় নির্ধারণ করে দেব না। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু এটা এখন খুব কঠিন হয়ে গেছে। আমেরিকারটা অতটা না, কানাডারটা কঠিন হয়ে গেছে। সে জন্যই আমরা অনেক রকম পন্থা অবলম্বন করছি-আইনি পন্থা, আলাপ-আলোচনার পন্থা। এগুলো চালিয়ে যাচ্ছি।’
পশ্চিমা দেশগুলোতে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সমর্থন কমছে। এই কারণে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের কূটনৈতিক পথে দেশে ফিরিয়ে আনা ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকারের একাধিক সূত্র। অতীতে পরিস্থিতি এমন না থাকলেও তৎকালীন সরকারগুলো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এই পর্যন্ত ২০০৭ সালে বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় একমাত্র এ কে এম মহিউদ্দিনকে দেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দায়ে ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বজলুল হুদা, আর্টিলারি মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহারিয়ার রশিদ খান ও ল্যান্সার মহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আরেক আসামি আজিজ পাশা ২০০২ সালেই জিম্বাবুয়েতে মারা যান।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।