ইনসাইড পলিটিক্স

১৫ আগস্টের সম্প্রসারণই ২১ আগস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০৩ পিএম, ২০ অগাস্ট, ২০১৮


Thumbnail

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফেরার পর থেকেই তাঁকে হত্যা করার জন্য উঠেপড়ে লাগে দেশবিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়। সে হামলায় দৈবিকভাবে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২৪ জন নিহত হন।

তিন দশক আগে শেখ হাসিনার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও দেশ বিরোধীদের আক্রোশের শিকার হতে হয়েছিল। শেখ হাসিনা বারবার বেঁচে গেলেও বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশবিরোধী, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবিশ্বাসী চক্রের হাতে নিহত হন স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নায়ক। বস্তুত, ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের সম্প্রসারণই ছিল ২০০৪ এর ২১ আগস্ট।

বঙ্গবন্ধু হত্যার উদ্দেশ্য কেবল একজন ব্যক্তিকে হত্যা করাই ছিল না, এই হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানে পরিণত করা। বাংলাদেশকে ব্যর্থ, অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর গভীর দুরভিসন্ধি থেকেই বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। আর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে দায়ী ’৭১ এর পরাজিত শক্তি।

সাধারণত জামাত-শিবিরকেই কেবল ’৭১ এর পরাজিত শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির প্রতিনিধি। বিএনপি গঠিত হয়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তিদের সংঘবদ্ধ করেই। বাংলাদেশ বিদ্বেষ আর পাকিস্তানের মৌলবাদী চরিত্র আত্তীকরণের প্রক্রিয়া দেখেই তা নিশ্চিত হওয়া যায়। ` ৭৫ এর মূল সুবিধাভোগীও বিএনপি আর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যায় পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাত্র ১০ দিন পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ ধরেই জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পথ উন্মুক্ত হয়। রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর জিয়াউর রহমান পুরোপুরি পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করতে শুরু করেন।

অবসরে যাবার আগ পর্যন্ত ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীতে একের পর এক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। এই জিয়াই পুরস্কৃত করেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের।

জেনারেল জিয়াউর রহমান, যিনি মেজর জিয়া নামেই সমধিক খ্যাত, ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সামরিক অধ্যাদেশ জারি করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক প্রণীত দালাল আইন বাতিল করেন। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান হতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র মুছে দেন জিয়া। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের শর্তাদি বাতিল করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অনুমতিও প্রদান করেন তিনি। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়া ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ জিয়ার নির্দেশেই সম্ভব হয়।

মেজর জিয়ার মৃত্যুর পরও বিএনপি তাঁদের পাকিস্তানপন্থী রাজনীতি থেকে সরে আসেনি। মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কূটনীতিকের মর্যাদা দেন, পুরস্কার স্বরূপ তাঁদের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত করে পাঠান। পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই খুনিদের পদন্নোতি করেন। মেজর জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাংলাদেশে পুনর্বাসন করেছিলেন, তাঁদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আর বেগম জিয়া এই যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমপি বানিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন বেগম জিয়া।

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর দীর্ঘ ছয় বছর বাংলাদেশে আসতে পারেননি শেখ হাসিনা। অবশেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক, আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যেই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা ও বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনায় একাত্তরের পরাজিত শক্তি আতংকিত হয়ে পড়ে৷ সেই আতংকের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা দেশে আসার পর থেকেই তাঁকে একের পর এক হত্যা চেষ্টা করা হয়।

দেশে ফেরার বছরই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা চালায় ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসীরা।

শেখ হাসিনার ওপর দ্বিতীয় হামলা হয় ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারিতে, চট্টগ্রামে। সেদিন লালদীঘি ময়দানে আট দলীয় জোটের সমাবেশ ছিল। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে জনসভাস্থলে যাওয়ার পথে শেখ হাসিনার ট্রাক মিছিলে সশস্ত্র হামলা হয়।

এর পরের বছর ১৯৮৯ এর ১১ আগস্ট রাতে ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসী কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডিস্থ ৩২ নম্বরের বাসভবনে গুলি বর্ষণ করে ও গ্রেনেড হামলা চালায়।

১৯৯১ এর  ১১ সেপ্টেম্বর গ্রিনরোডে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ভোটের পরিস্থিতি দেখতে যান শেখ হাসিনা। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে লক্ষ্য করে বিএনপির কর্মীরা গুলিবর্ষণ করে ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়।

১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদী ও নাটোর রেল স্টেশনে প্রবেশের মুখে শেখ হাসিনাকে বহনকারী রেল গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়।

এর পরের বছর ১৯৯৫ এর ৭ ডিসেম্বর  শেখ রাসেল স্কয়ারের নিকট সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শেখ হাসিনার উপর গুলি বর্ষণ করা হয়।

শেখ হাসিনাকে আরেকবার হত্যার চেষ্টা চালানো হয় ১৯৯৬ এর ৭ মার্চ সন্ধ্যায়। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তৃতার পর হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস থেকে সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়।

১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্রকন্যাসহ ৩১ জনকে হত্যার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা সংবলিত ইমেইল আদান-প্রদানের খবর পাওয়া যায়। এই ই-মেইলের হোতা ছিলেন ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক শোয়েব চৌধুরী।

২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুত্ফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠের এক সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার কথা ছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কলেজের পাশে ৭৬ কেজি ও তিনদিন পর ২৩ জুলাই হেলিপ্যাডের কাছ থেকে ৪০ কেজি ওজনের দুটি শক্তিশালী পুঁতে রাখা হয়। সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা এই দুটি বোমা উদ্ধার করে।

পরের বছরও বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ২০০১ সালের ২৯ মে খুলনার রূপসা সেতুর কাজ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জঙ্গিরা সেখানে বোমা পুঁতে রাখে যা গোয়েন্দা পুলিশ উদ্ধার করে।

২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে সিলেট গেলে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে হুজি। কিন্তু শেখ হাসিনার জনসভাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে রাত ৮ টার দিকে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হলে ঘটনাস্থলেই দুই জঙ্গি নিহত হওয়ায় এই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।

বিএনপি-জামাত জোট সরকার গঠন করার পরের বছরই তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর তিন তিনবার প্রাণঘাতী হামলা করা হয়। প্রথমবার হামলা করা হয় ২০০২ সালের ৪ মার্চ। সেদিন নওগাঁয় বিএমসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়।

এরপর ২০০২ সালেরই ২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা সাতক্ষীরার কলারোয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালায়।

শেখ হাসিনার ওপর পরবর্তী হামলা চালানো হয় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট।  কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর একটি যাত্রীবাহী বাস আড়াআড়ি ফেলে রেখে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ দলীয় অনেক নেতাকর্মী আহত হন। ওই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জু।

২০০৪ সালের ২ এপ্রিল গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে গুলিবর্ষণ করে বিএনপি-জামাত।

সে বছরই বিএনপি-জামাত জোট সরকার শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এক ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। সেই ঘটনায় শেখ হাসিনা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই এক-এগারোর অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বিশেষ সাব-জেলে বন্দী থাকাকালীন শেখ হাসিনার খাবারে ক্রমাগত বিষ মিশিয়ে তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

২০১১ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্রীলংকার একটি সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্র সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করে। কিন্তু আততায়ীদের দল গাড়ি করে কলকাতা বিমানবন্দরে যাবার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে ভেস্তে যায় শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাটি।

২০১৪ সালে প্রশিক্ষিত নারী জঙ্গিদের মাধ্যমে মানববোমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৫০জন নারী ও ১৫০ জন যুবককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও প্রশিক্ষণরত অবস্থায়ই পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে ওই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়।

পরের বছর ২০১৫ এর ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার সময়ে কাওরানবাজারে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা করে জঙ্গি দল জেএমবি।

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রাণ সংশয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন প্রধানমন্ত্রীবাহী বিমানের ইঞ্জিনে অয়েল (লুব্রিকেন্ট) সিস্টেমের একটি নাট-বোল্ট অর্ধেক খোলা ছিল যা করাচির আকাশসীমা পার হওয়ার পর সবাই খেয়াল করে। এতে ওই বিমানের ইঞ্জিন তেলশূন্য হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বড় দুর্ঘটনার সম্মুখে পড়েন। এই দুর্ঘটনার পেছনে বিমান কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মীর হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমণ্ডি ৩২ এ শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে আগস্টের মিছিলে জঙ্গি গোষ্ঠী আত্মঘাতী বোমা হামলার চেষ্টা চালায়। যদিও পুলিশি বাধায় তা আর সফল হয়নি।

`৭৫ এ যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাঁদেরই অপভ্রংশ ২০০৪ এ শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। ২০০৪ এর অপরাধীরা `৭৫ এর অপরাধীদেরই রাজনৈতিক উত্তরাধিকার। তবে ‘৭৫ এর তুলনায় ২০০৪ এর চক্রান্ত ছিল আরও বেশি গভীর। কারণ ওই ঘটনায় একজন ব্যক্তিকে হত্যা করতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র সংযুক্ত হয়েছিল। কোনো ব্যক্তিবিশেষকে হত্যা করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্রের নজির পুরো পৃথিবীর ইতিহাসেই সম্ভবত নেই। এখন যারা সংলাপের কথা বলে তাঁরা এই ঘটনাগুলো বেমালুম ভুলে গেছে বা ভুলে যাওয়ায় ভান করছে৷ যে সুশীল সমাজকে শেখ হাসিনাকে বারবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার তাগিদ দেয় তাঁদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা কি পারবেন আপনার পিতার খুনির সঙ্গে এক টেবিলে বসে সংলাপ করতে? আপনারা কি পারবেন আপনার পুরো পরিবারের হত্যাকারীদের সঙ্গে সংলাপে বসতে? আপনারা কি পারবেন আপনাকে ২১ বার হত্যাচেষ্টা চালানো কারো সঙ্গে সংলাপে বসতে?

`৭৫ এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে বিভক্তির রেখা সৃষ্টি হয় তা বাড়তে বাড়তে চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ২০০৪ এর ২১ আগস্টে। বিএনপির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী হত্যাকারী দল, একটি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী দলের সঙ্গে আসলেই ঐক্য করা সম্ভব কী না তা আওয়ামী লীগের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির লক্ষ্যই হলো চক্রান্তের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা: কাদের

প্রকাশ: ০৯:৩৮ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির লক্ষ্যই হলো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে যে কোনো উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নস্যাৎ করা। সেজন্য তারা লাগাতারভাবে মিথ্যাচার-অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপরাজনীতি করে।

শনিবার (৪ মে) রাতে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি নেতৃবৃন্দ অসংলগ্ন ও লাগামহীন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছে অভিযোগ করে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: এখন কাদের কাকে নির্দেশ অমান্যকারী বলবেন

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক যে কোনো বিষয়কে ফাঁদ মনে করে, আর সে কারণেই তারা চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে হালকা হিসেবে জনগণের সামনে তুলে ধরার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গণতান্ত্রিক যে কোনো বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, প্রথা, বিধি-বিধান ও নির্বাচন তাদের কাছে ফাঁদ বলে মনে হয়।  তিনি বলেন, বিএনপিকে এদেশের মানুষ ভালো করেই চেনে। বিএনপির তথাকথিত আন্দোলন এবং তাদের নেতাদের হাঁক-ডাকে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। 

ইতিহাস থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতৃবৃন্দ ইতিহাস থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার কথা বলেছেন! বন্দুকের নলের মুখে জোরপূর্বক রাষ্ট্র ক্ষমতাদখলকারী একজন গণধিকৃত ব্যক্তিকে বিএনপি গণনায়কে রূপান্তরিত করার অপচেষ্টা করছে। বিএনপির এই অপচেষ্টা জনগণ কখনো গ্রহণ করেনি। জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার প্রশ্নই আসে না।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রকৃত ইতিহাস তার আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হবে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী এবং গণতন্ত্র হত্যাকারী একজন স্বৈরশাসক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় থেকে যাবে।’

আরও পড়ুন: বিএনপির সরব নেতারাও এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বাঙালি জাতির কাছে একজন সামরিক স্বৈরশাসক হিসেবেই অভিহিত হবেন। আওয়ামী লীগ কখনো ইতিহাস বিকৃতিতে বিশ্বাস করে না। বরং জিয়াউর রহমান জোরপূর্বক রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টা করেছে। বিএনপির শাসনামলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিকৃত ও মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করা হয়েছে। এমনকি ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ পর্যন্ত বাজাতে দেওয়া হয়নি। 


বিএনপি   ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ২য় ধাপের পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় দলের পাঁচ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

শনিবার (৪ মে) বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরিত নোটিশের মাধ্যমে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কার হওয়া পাঁচ নেতাকর্মী হলেন, পঞ্চগড় জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও বোদা উপজেলার বিএনপির সদস্য সচিব এবং বোদা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কলস মার্কার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লাইলী বেগম, একই উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বিএনপির সদস্য ও চশমা মার্কার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোরসালিন বিন মমতাজ রিপন, বোদা ময়দান দিঘী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাবিব আল-আমিন ফেরদৌস, দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও চশমা মার্কার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিম এবং দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও কাপ-পিরিচ মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী রহিমুল ইসলাম বুলবুল।

নোটিশে বলা হয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হলো। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।

পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম কাচ্চু জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি ও সকল নেতাকর্মী বর্তমান সরকারের সকল নির্বাচনকে বর্জন করেছে। এ বিষয়ে আমাদের আন্দোলন চলমান। কিন্তু এর মাঝে যারা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে না মেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের বহিষ্কার করেছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর করা হচ্ছে।


বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তারেকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেতাদের

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে যারাই প্রার্থী হবে তাদেরকেই বহিষ্কার করা হবে। তারেক জিয়ার এই নির্দেশনার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। হেভীওয়েট নেতারা বলছেন, এধরনের সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক এবং ঢালাওভাবে এধরনের সিদ্ধান্ত দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী, বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদেরকে দলের সিনিয়র নেতারা আশ্বস্ত করেছেন এ বিষয়টি তারা দেখবেন। আর এই আশ্বাসের কারণেই উপজেলা নির্বাচন থেকে বিএনপির প্রার্থীরা সরে যাচ্ছেন না। তারা বুঝতে পেরেছেন এ সিদ্ধান্তটি পুনঃবিবেচনা করা হবে পুর্নমূল্যায়ন করা হবে।

আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরাও তারেকের ওপর বিরক্ত

প্রথম দফায় বিএনপির ৬৩ জন স্থানীয় পর্যায়ের নেতা উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে মাত্র ৫ জন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন। দ্বিতীয় দফায় বিএনপি থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৭৩ জন। তাদের মধ্যে থেকে মাত্র ৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। আর তৃতীয় দফায় বিএনপির ৬৮ জন স্থানীয় পর্যায়ের নেতা উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন।

অন্যান্য নির্বাচনগুলোতে যেমন বিএনপি নেতাদের হুমকির পর পরই প্রার্থীরা তাদের মনোন য়ন প্রত্যাহার করেন, এবার তা হচ্ছে না। দলের নির্দেশনা অমান্য করেই উপজেলা নির্বাচনের মাঠে বিএনপির প্রার্থীরা রয়েছেন। এর পেছনে একটি বড় কারণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বিভক্তি। বিএনপির যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা মনে করছেন, এই নির্বাচন তাদের মধ্যে একটি সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে। নির্বাচনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রার্থী হিসেবে বহাল থাকতে পারলে তাদের জন্য জয় সহজ হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। এই কারণেই দলের নির্দেশনা অমান্য করছেন।

আবার কেউ কেউ ভিন্ন চিন্তা থেকে নির্বাচন করছেন। তারা মনে করছেন যে, একের পর এক নির্বাচন বর্জনের কারণে নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে, সংগঠন দূর্বল এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরকম বাস্তবতায় যদি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যায় তাহলে কর্মী সমর্থকদের কাছে যাওয়া যাবে। দল সংগঠতিত করার জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। আর এই সুযোগ সৃষ্টি করতেই তারা উপজেলা নির্বাচন করছেন।

আরও পড়ুন: বিএনপির সরব নেতারাও এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন

বিভিন্ন প্রার্থীরা জানিয়েছেন, যখন তাদেরকে বহিষ্কারাদেশ পাঠানো হয়েছে তখনই তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। একাধিক প্রার্থী দাবী করেছেনে, তারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের প্রতি নমনীয় এবং সহানুভূতিশীল বলে দাবী করেছেন অন্তত ৩ জন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দাড়ানো প্রার্থী। দলের মহাসচিব তাদেরকে বলেছেন, ঠিক আছে, নির্বাচন করে জিতে আসুন তারপর দেখা যাবে।

আরও পড়ুন:  খালেদার বিদেশে চিকিৎসা: পর্দার আড়ালে কী হচ্ছে?

অন্যদিকে কয়েকজন নেতা রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তবে, রুহুল কবির রিজভী তাদেরকে মোটেও উৎসাহিত করেননি। কয়েকজন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং মির্জা আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তারা দুজনই তাদেরকে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা দেন। যদি তারা মনে করেন, তারা নির্বাচনে জয়ী হবেন তাহলে তারা নির্বাচন করতে পারেন এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে অনেক নেতাকে।

আর একারনেই উপজেলা নির্বাচন থেকে বিএনপি প্রার্থীরা সড়ে যাচ্ছেন না। তারা মনে করছেন যে, নির্বাচনে যদি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়, তাহলে শেষ পর্যন্ত তাদেরকে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়া হবে।  


বিএনপি   তারেক রহমান   মির্জা ফখরুল   মির্জা আব্বাস   রুহুল কবির রিজভি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোন মন্ত্রী-এমপিদের কপাল পুড়বে?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা দলগতভাবে নির্বাচন করবে না। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেননি এবং দলীয় প্রতীকও ব্যবহার করছে না। উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রথম ধাপের মনোনয়ন পত্র দাখিলের সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, উপজেলায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগের হাতে গোনা দু’একজন। যেমন, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ছাড়া বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিরাই এ সিদ্ধান্ত মানেননি। তাদের আত্মীয় স্বজনরা প্রার্থী হয়ে আছেন। ইতিমধ্যেই আত্মীয় স্বজনের একটি নতুন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:  উপজেলায় বেপরোয়া মন্ত্রী-এমপিরা

গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, স্ত্রী-পুত্র নিয়ে পরিবার। এর বাইরে যদি কেউ নির্বাচন করে তাহলে তাদেরকে আত্মীয় স্বজনের মধ্যে ধরা হবে না। একই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এটিও বলেছেন যে, অনেকের আত্মীয় স্বজনরা ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের নেতা। কোথাও কোথাও তারা আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান রয়েছেন। তাদেরকে বাঁধা দেওয়া যায় কিভাবে সে প্রশ্ন আওয়ামী লীগ সভাপতি তুলেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, স্ত্রী, ভাই, বোন সবাইকে নির্বাচনে প্রার্থী করা ঠিক না। এর বাইরে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বঞ্চিত হবে। আর এই প্রেক্ষিতেই এ স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন কোন আলোচনা করছে না।

আরও পড়ুন: স্বজন বলতে স্ত্রী-সন্তানকে বুঝিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনটাকে সুষ্টু, অবাধ এবং অর্থপূর্ণ করার জন্য কৌশলগত কারনেই এখন কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। তবে উপজেলায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় দেখা হবে। যেসমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা কতগুলো সুনির্দিষ্ট অপরাধ করবেন তাদেরই কপাল পুড়বে। কোন কোন ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ উপজেলায় মন্ত্রী এমপিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দিবেন তার একটি ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:  এখন কাদের কাকে নির্দেশ অমান্যকারী বলবেন

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে মন্ত্রী-এমপিদের কপাল পুড়বে। যেমন..

১। যদি ঢালাওভাবে আত্মীয় স্বজনদেরকে উপজেলায় প্রার্থী করা হয়। যেমনটি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, স্ত্রী, পুত্র একসাথে যদি নির্বাচনে প্রার্থী হয় তাহলে সেই মন্ত্রী এমপিদেরকে কালো তালিকা ভুক্ত করা হবে।

২। যদি কোন মন্ত্রী-এমপি তাদের পক্ষের প্রার্থীদের নির্বাচনে জেতানোর জন্য প্রভাব বিস্তার করে তাহলে তাকে কালো তালিকা ভুক্ত করা হবে।

৩। যদি মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের বা অন্য কোন প্রার্থীর উপর চড়াও হয় বা সহিংসতা করে বা ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সেক্ষেত্রে যেসমস্ত মন্ত্রী এমপিদের স্বজনরা এসমস্ত কাজে জড়িত থাকবেন তাদের কপাল পুড়বে।

৪। যদি মন্ত্রী-এমপিরা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চায় তাহলে সেক্ষেত্রেও তাদের কপাল পুড়বে।

আরও পড়ুন: প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে কৌশলী আওয়ামী লীগ

তবে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন, চটজলদি কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। তাদের তালিকা তৈরি করা হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথাসময়ে যথাযথভাবে সিদ্ধান্ত শৃঙ্খলা লঙ্ঘণকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা করবেন।


উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   মন্ত্রী-এমপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আরও ৬১ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৫:২৭ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় আরও ৬১ জন নেতাকে দলের সব ধরনের পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। শনিবার (৪ এপ্রিল) বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ২য় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির যেসব নেতারা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

২য় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বহিষ্কার হওয়া চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে- রংপুর বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, ঢাকা বিভাগে ৬ জন, ফরিদপুর বিভাগে ২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন, সিলেট বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, কুমিল্লা বিভাগে ২ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন।

বহিষ্কার হওয়া সর্বমোট চেয়ারম্যান প্রার্থী ২৬ জন। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৯ জন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৬ জন। ২য় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বহিষ্কার বিএনপি প্রার্থী ৬১ জন।

এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে অংশ নেওয়ার শুরুতে ৭৩ জনসহ সবমিলিয়ে ৮০ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।


বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন