নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৯ এএম, ২৯ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে পর্যন্ত ‘তথ্য সন্ত্রাস’ চলবে বলে অবস্থাদৃষ্টে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল দেশে বিদেশের অনেক পত্রিকায় একটা খবর প্রচারিত হয় যে বঙ্গবন্ধুর নাতনি ব্রিটিশ এম পি, টিউলিপ সিদ্দিকী ফটোগ্রাফার শহীদুল আলমের মুক্তি চেয়েছেন। কি মজার এই খবর, খুবই মুখরোচক আর স্কুপ নিউজ বলা চলে! বিভিন্ন মিডিয়া ঘেঁটে পাওয়া তথ্যে কী দেখা যায় একটু জেনে নিই।
লন্ডনের দ্য টাইমস পত্রিকাতে টিউলিপের খবর প্রচারিত হয় যুক্তরাজ্য সময় রাত ১২:০১ টায় (১ নং স্ক্রিনশট দেখুন)।
ঠিক একই সময়ে সবার আগে এই খবর প্রচার করে ব্রিটিশ টাইমের সাথে ৪ ঘণ্টা এগিয়ে থাকা পাকিস্তানের পাকিস্তান ডিফেন্স (Pakistan Defence) এর ওয়েব সাইটে ভোর ৪:০১ টায় । যেটা মূল স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় আর তার একটু পরেই সেই খবর ব্রান্ডিং করে প্রচার শুরু হয় একই ওয়েব সাইটে পাকিস্তান সময় ভোর ৫:৫২ টায় (২ নং স্ক্রিনশট)।
টাইমসের পুরো নিউজ তাদের সাইটে সাবস্ক্রাইবাররা ছাড়া পড়তে না পারলেও পাকিস্তানি ডিফেন্স সাইটে পুরো নিউজটাই কপি পেস্ট করে দেওয়া আছে। তাহলে কি নিউজটা ভাইরাল করার উদ্দেশ্যেই এখানে পুরো পোস্টটা দেওয়া হয় যার পিছনে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য কাজ করেছে!
অবাক করা ব্যাপার হলো, এর পরেই নিউজটা আসে বাংলাদেশে অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭:৫৬ টায়। আর সেখান থেকেই অন্যান্য পত্রিকাতে নিউজ আসা শুরু হয়।
এবার দেখি সংবাদের ধরনটা কেমন ছিলঃ
দ্য টাইমস (The Times) টিউলিপকে কোট করে বলেছে, ‘deeply distressing and should end immediately’
‘must uphold international standards of justice in treating its own citizens’ টিউলিপ যা বলেছে তাতে বিন্দুমাত্র অবাক হওয়ার কিছুই নাই কারণ তিনি একটি দলের রাজনীতি করেন যে দলের একটি আলাদা বিদেশ নীতি আছে আর সেই নীতির বাইরে কথা সেই দলের কেউই বলতে পারেন না। উনি তাঁর খালামনিকে আহ্বান করে কিছু বলেছে তার প্রমাণ কই? কূটনৈতিক এই কথার ধরনকে ভিন্ন রূপে অনুবাদ করে নেওয়াটা আসলে কাদের উদ্দেশ্য? সাংবাদিক উপরের কথার আগে পিছে নিজের মন্তব্য জুড়ে দিয়ে নিউজ করেছে যা নিউজ না থেকে ভিউজ হয়ে গেছে। যে কথা বলা হয়নি সেটা সরাসরি নিউজে আসে কী করে! এটা বুঝতে আমার মতো অনেকেরই কষ্ট হবে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো পাকিস্তানের ডিফেন্সের ওয়েবসাইটে মার্কেটিং করা খবর থেকে আজকাল খবর যোগাড় করতে হয় বাংলাদেশের অনলাইন পত্রিকার। অনেকের কাছেই এটা ভাবনার বিষয় হয়েছে যে, ইংল্যান্ডের পত্রিকার ‘টুইস্ট করা’ সংবাদ একই সময়ে কিভাবে পাকিস্তানের ডিফেন্সের ওয়েবসাইটে যায়। আর সেই একই শিরোনামে বাংলাদেশের অনলাইন পত্রিকাতে খবরের শিরোনাম করা হয় কাদের স্বার্থে? একটু তলিয়ে দেখা দরকার যে, এর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের বিস্তার কতদূর, আর কতদুর তারা যেতে চায়। সাবধানতা দোষের কিছু না।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
ই-মেইল: arefinbhai59@gmail.com
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।