নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ অগাস্ট, ২০১৮
শেখ হাসিনার প্রতিই আস্থা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামীকাল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি সময় বের করতে বললেন। কাল শুরু হওয়া বিমসটেক সম্মেলনে এই দুই নেতাই যোগ দিচ্ছেন। ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরে প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যে কর্মসূচি প্রণয়ন করে তাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে তার বৈঠক ছিল না। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে তৈরি করা কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হলে, সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়। কূটনীতিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে, এই বৈঠকটি করতে আগ্রহী ছিল না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রহেই শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের মধ্যে নানামুখী তৎপরতা রয়েছে। একটি অংশ অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর পক্ষে। এই অংশ মনে করে, বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কীভাবে এই নির্বাচন হবে, তা ঠিক করবে বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকার। অবশ্য এই অংশটি মনে করে নির্বাচন হওয়া উচিত অংশগ্রহণমূলক। নির্বাচনে যেন জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়। ভারতের নীতি নির্ধারকদের আরেকটি অংশ মনে করে, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনেও ভারতের উচিৎ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেওয়া। তাঁরা ২০১৪ তে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত যে অবস্থান নিয়েছিল, তারই পুনরাবৃত্তি ঘটানোর পক্ষে। এর পক্ষে তাঁদের প্রধান যুক্তি হলো শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান। ভারতের নীতি নির্ধারকদের প্রভাবশালী এই অংশ মনে করেন, শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণেই ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কোণঠাসা হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক যে নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে, তা শেখ হাসিনা সরকারের কারণে। এই মতের সমর্থকদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের থিংক ট্যাংকের একটি অংশ আওয়ামী লীগ বিএনপির বাইরে একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান চায়। এই অংশের মধ্যে রয়েছে ভারতের প্রভাবশালী সিভিল আমলারা। এদের সঙ্গে ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। এদের যুক্তি হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের অতিমাত্রায় ভারতমুখী নীতি বাংলাদেশের জনগণকে ক্রমশ ভারত বিরোধী করে তুলছে। এটা ভারতের জন্য শুভ ফলদায়ক নয়। এরা মনে করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বনেতা হিসেবে উত্থানও ভারতের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। এছাড়াও ‘ভারতকে যা দিয়েছি, তা কখনো ভারত ভুলবে না।’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে তাঁরা ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে ড. কামাল হোসেন এবং বি. চৌধুরীর নেতৃত্বে তৃতীয় শক্তির উত্থানের ক্ষেত্রে ভারতের এই অংশের প্রচণ্ড সমর্থন আছে। এরাই শেখ হাসিনা-মোদি বৈঠকের প্রধান বিরোধিতাকারী ছিলেন। তবে, একটি ব্যাপারে ভারতের নীতি নির্ধারকরা একমত, তা হলো তারেক জিয়াকে নেতৃত্ব থেকে এবং জামাতকে জোট থেকে বাদ না দিলে বিএনপিকে তাঁরা কোনোরকম সমর্থন এবং সহায়তা দেবে না। ভারত বিএনপিকে এটাও জানিয়ে দিয়েছে যে, এই দু’টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেই যেন তারা ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
তবে, কাঠমান্ডুতে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে মোদি তাঁর সরকারের নানা মতের লোকজনকে একটা বার্তাই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন। আর সেটি হলো, শেখ হাসিনাতেই মোদির আস্থা। এই বৈঠক তাই যতটা না বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির জন্য বার্তা, তাঁর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ভারতের নীতি নির্ধারকদের জন্য।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।