নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
যুক্তফ্রন্ট এবং ড. কামাল হোসেন সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াকে আওয়ামী লীগ এবং ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্টি- এমনটাই মনে করছে জামাতসহ কয়েকটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল। তারা মনে করছে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি এবং ২০ দল যদি নির্বাচনে যোগ না দেয়, তাহলে ‘তথাকথিত জাতীয় ঐক্য নির্বাচনে গিয়ে বর্তমান সরকারকে বৈধতা দেবে। ভারতের নীলনকশা অনুযায়ী এই সংগঠনটি গড়ে উঠেছে বলেও ঐ দলগুলোর মূল্যায়ন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জামাতের কেন্দ্রীয় নেতারা ২০ দলের ইসলাম পছন্দ দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে এই অভিমত প্রকাশ করেছে।
গত বুধবার দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জামাতের নীতি নির্ধারনী সংস্থা মজলিশে শুরার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে, ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক বদরুদ্দোজাকে আওয়ামী লীগ ও ভারতে এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জামাত মনে করে, ২০ দল ভাঙতে এবং বিএনপিকে জামাত থেকে আলাদা করতেই, আওয়ামী লীগ এদের মাঠে নামিয়েছে। জামাতের মজলিশে শুরায় অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, সরকার বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে, এখন এদের নিয়োগ দিয়েছে।’ মজলিশে শুরায় মন্তব্য করা হয়, ‘ড. কামালদের প্রতিপক্ষ কে, সরকার না জামাত? জামাতের রাজনৈতিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ‘বিএনপি এবং ২০ দলকে বাইরে রেখে আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে তারা যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্যকে আনতে চায়। ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ভারতের ইঙ্গিতে এবং আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় মাঠে নেমেছে। এরা আসলে আওয়ামী লীগের বি টিম। চতুরতার সঙ্গে সরকারের সমালোচনা করে এরা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। কিন্তু এদের মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনে গিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে আরেকবার বৈধতা দেওয়া। জামাত তার রাজনৈতিক মূল্যায়ন রিপোর্ট নিয়ে খেলাফত মজলিশ, ইসলামী ঐক্যজোট, ওলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টিসহ ২০ দলভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছে। তারা জামাতের মনোভাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছেন, ‘যুক্তফ্রন্ট আওয়ামী লীগ ভারতের যৌথ প্রযোজনা।’
খেলাফত মজলিসের একজন নেতা তাদের নীতি মূল্যায়ন জানাতে গিয়ে বলেন,‘বাংলাদেশে আবার সেক্যুলার রাজনীতি চালু করতেই ড. কামালরা মাঠে নেমেছে। ইসলামকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করাই এদের লক্ষ্য। এজন্যই এরা ২০ দল ভাঙার খেলায় মেতেছে। এরা বিএনপিকেও ভাঙ্গবে। নির্বাচন এলেই এদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে যাবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জামাত অনতি বিলম্বে ২০ দলের বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানকে দেওয়া চিঠিতে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য অনতি বিলম্বে ২০ দলের বৈঠক ডাকা প্রয়োজন।’ জানা গেছে, ২০ দলের বৈঠকে জামাত সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।