নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হতে না হতেই নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি যৃক্তফ্রন্ট থেকে আসা দুটি দলকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএনপি নেতারা শুধু ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করছে। আজ আ. স. ম. আবদুর রবের উত্তরার বাসায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের মান্না বলেন, ‘যা আলাপ আলোচনা সিদ্ধান্ত সবকিছু যৌথ বৈঠকেই নেওয়া উচিৎ। এমনিতেই আমাদের মধ্যে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’ এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মান্নাকে ‘টেলিফোনে আলাপে সংযম’ দেখানোর পরামর্শ দেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ফোনে এত কথা বলবেন না।’ মান্না এসময় প্রশ্ন তোলেন, ‘আপনারা গতকাল আলাদাভাবে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেছেন কেন?’ জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ব্যক্তিগতভাবে কার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবো না করবো তা কি ফ্রন্টকে জানিয়ে করতে হবে’ পরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সবাইকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ঐক্য ভাঙতে নানা চেষ্টা হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠিত হলেও বিএনপির আগ্রহ শুধু ড. কামাল হোসেনেই। অধিকাংশ বিএনপি নেতারা রব এবং মান্নার ওপর বিরক্ত। বিএনপির একজন নেতা খোলামেলা ভাবেই বলেছেন, ‘আমাদের দরকার ছিল ড. কামাল হোসেনকে। তাঁকে নিতে গিয়ে কিছু আপদও নিতে হয়েছে।’ বিএনপির সূত্র থেক পাওয়া খবরে জানা যায় যে, তারেক জিয়া নির্বাচনের জন্য বিএনপিতে একজন অভিভাবক চেয়েছিলেন। তারেক অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বিশ্বাস করতে পারতেন না কখনোই। তারেক জানেন, আগামী নির্বাচন বিএনপিকে বেগম জিয়া এবং তাঁকে ছাড়াই করতে হবে। বিএনপির জনপ্রিয়তা আছে, কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ফিগার নেই। এ কারণেই, একজন নেতার খোঁজে ছিল বিএনপি। বিএনপি নেতারা মনে করেছেন, সব কিছু বিবেচনায় ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর চেয়ে ড. কামাল তাদের জন্য সুবিধাজনক। এজন্যই তাঁরা কায়দা করে অধ্যাপক চৌধুরীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠন করে গত ১৩ অক্টোবর। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হবার তিনদিন পর আজ এর প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দুই দিনে বিএনপির সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের অন্তত ৪টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এমনকি, গত রাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক থেকেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁকে টেলিফোন করে বলেন, ‘স্যার আপনাকে একটা সুখবর দেই। ২০ দলীয় জোট আপনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রোববার গায়েবি মামলা নিয়ে বিএনপির নেতারা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। ঐ বৈঠক চলাকালেই মান্না মির্জা ফখরুলকে ফোন করে কথা বলতে চাইলে, বিএনপি মহাসচিব ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেন। জানা গেছে, বিএনপি এবং ড. কামাল আলাদাভাবে বসে নির্বাচনকালীন সরকার, ঘোষণা ইত্যাদি চুড়ান্ত করছে। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘ড.কামাল হোসেনই এখন আমাদের অভিভাবক। সব বিষয়ে তাঁর পরামর্শ নিচ্ছি।’ ঐক্যফ্রন্টে ড. কামালের সাহায্যে মান্না আর রবকে ইতিমধ্যেই কোণঠাসা করে ফেলেছে বিএনপি। এরপর ড.কামালকেই করা হবে ২০ দলের নেতা, এমনটাই শোনা যাচ্ছে বিএনপির অন্দর মহলে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।