ইনসাইড পলিটিক্স

মান্নার মূর্খতা: বাংলাদেশ-পাকিস্তান তুলনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:০৪ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা প্রায়ই দায়িত্ব-জ্ঞানহীন কথাবার্তা বলেন। বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতে এসে অশিক্ষিত-মূর্খদের মতো তথ্য-উপাত্ত প্রদাণ করেন তাঁরা। এর সর্বশেষ উদাহরণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। সম্প্রতি নাগরিক টেলিভিশনের টকশোতে পাকিস্তান সম্বন্ধে মান্না কিছু কথাবার্তা বলেছেন যা হয় তাঁর মূর্খতা প্রসূত অথবা তিনি নব্য পাকিস্তান প্রেমী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তবে যে কারণেই তিনি এসব কথা বলে থাকুন না কেন, পাকিস্তানের উন্নয়ন সম্পর্কে তাঁর দেওয়া তথ্যগুলো যে নির্জলা মিথ্যা তা সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই প্রমাণিত হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না সম্প্রতি নাগরিক টেলিভিশনের টকশোতে এসে পাকিস্তান বন্দনায় মুখর হয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মান্নার এহেন মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। কারণ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূচক বলছে, অর্থনীতি, সামাজিক অগ্রগতিসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

নাগরিক টেলিভিশনের টকশোতে বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ বলে বহুল ব্যবহৃত বাক্যাংশকে চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশ কোন দেশের রোল মডেল বলেন তো? পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। যাকে আমরা সবচাইতে সমালোচনা করি।’মান্নার এমন মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে সঞ্চালক তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করেন ‘পাকিস্তানের অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো?’উত্তরে মান্না বলেন, ‘হ্যাঁ, ডেফিনেটলি। তাদের গ্রোথ ইয়ে টিয়ে সব দিক থেকে অনেক বেশি স্টেবল এবং তাদের ইনস্টিটিটিউশনগুলো অনেক বেশি স্টেবল।’

বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছর পাকিস্তান নামক এক অদ্ভুত রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল বাংলাদেশ বা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে ওই ২৪ বছরে পূর্ব পাকিস্তানে বলতে গেলে কোনো রকম উন্নয়নই হয়নি। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের মোট জাতীয় বাজেটের সিংহভাগ বরাদ্দ থাকত পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০পর্যন্ত ২০ বছরে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাক্কালিন ব্যয় ছিল ১১,৩৩৪ কোটি রূপি আর পূর্ব পাকিস্তানের প্রাক্কালিন ব্যয় ছিল ৪,৫৯৩ কোটি রূপি। তাছাড়া ১৯৪৭- ১৯৭০ সাল পর্যন্ত মোট রপ্তানি আয়ে পূর্ব পাকিস্তানের অংশ ছিল ৫৪.৭%। কিন্তু রপ্তানি আয় বেশি করলেও পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আমদানি ব্যয় বরাদ্দ ছিল মাত্র ৩১.১%। রপ্তানি উদ্বৃত্ত অর্থ পশ্চিম পাকিস্তানের আমদানির জন্য ব্যয় করা হতো। আর জন্মলগ্ন থেকে পাকিস্তানের তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গৃহীত হয় যার প্রত্যেকটিতেই পূর্ব পাকিস্তানের চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল দ্বিগুণ।

রাজনৈতিক ভাবেও পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করেছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। পূর্ব পাকিস্তানি নেতাদের সরকার গঠনের সুযোগ না দিতে অন্যায়ভাবে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন বাতিল করে সরকারকে উচ্ছেদ করে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের কথা থাকলেও পশ্চিমা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে তা বানচাল হয়ে যায়।

এছাড়া প্রশাসনিক ও সামরিক ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তানিদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। ১৯৬২ সালে পাকিস্তানের মন্ত্রণালয়গুলোতে শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার ৯৫৪ জনের মধ্যে বাঙালি ছিল মাত্র ১১৯ জন আর ১৯৬২ সালে সিভিল সার্ভিসে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ২০.৮%। বিদেশে ৬৯ জন রাষ্ট্রদূতের মধ্যে ৬০ জনই ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের।  এছাড়া ১৯৫৫ সালের এক হিসেবে দেখা যায়, সামরিক বাহিনীর মোট ২২১১ জন কর্মকর্তার মধ্যে বাঙালি ছিল মাত্র ৮২ জন। ১৯৬৬ সালে সামরিক বাহিনীর ১৭ জন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ১ জন ছিল বাঙালি। এ সময় সামরিক অফিসারদের মধ্যে বাঙালি ছিলেন মাত্র ৫%।

শিক্ষা ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের সঙ্গে বৈষম্য করেছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা। পাকিস্তান শাসনামলের ১৯৫৫-১৯৬৭ সালের মধ্যে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দের মধ্যে পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ২০৮৪ মিলিয়ন রুপি আর পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ছিল ৭৯৭ মিলিয়ন রুপি।

সেই শোষণ-নিপীড়নের নাগপাশ ছিঁড়ে নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হলে আবার শুরু হয় বাংলাদেশের উল্টোযাত্রা। অবশেষে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বদলে যেতে শুরু করে দৃশ্যপট। গত ১০ বছরে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পাকিস্তানকে যোজন যোজন ব্যবধানে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

মানব উন্নয়ন সূচক

ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন- ২০১৮ অনুযায়ী মানব উন্নয়ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। চলতি বছর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান গতবারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে ১৩৬তম যেখানে ১৫০ এ অবস্থান করছে পাকিস্তান।

শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। গেছে।বাংলাদেশের মানুষের গড়ে গড় আয়ু এখন ৭২ দশমিক ৮ বছর আর পাকিস্তানে ৬৬ দশমিক ৬ বছর। এছাড়া মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, স্কুলে পাঠগ্রহণসহ প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে। নবজাতক-মৃত্যু ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসেও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এক হাজার জীবিত শিশু জন্মগ্রহণ করলে বাংলাদেশে ২৮ দশমিক ২ জন নবজাতক মারা যায়। পাকিস্তানে এই সংখ্যা প্রায় তিন গুণ, ৬৪ দশমিক ২। একইভাবে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ভালো করেছে। বাংলাদেশে ১ হাজার জীবিত শিশুর মধ্যে পাঁচ বছর বয়স হওয়ার আগেই ৩৪ দশমিক ২ জন মারা যায়। পাকিস্তানে তা দ্বিগুণের বেশি, ৭৮ দশমিক ৮ জন।

শিক্ষাক্ষেত্রেও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার এখন ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ আর পাকিস্তানে ৫৭ শতাংশ।

ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন- ২০১৮ অনুযায়ী, নারীর ক্ষমতায়নেও এগিয়ে বাংলাদেশ। ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বেশি।

বৈশ্বিক মানবসম্পদ সূচক বা হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্স

বিশ্বব্যাংকের তৈরি করা বৈশ্বিক মানবসম্পদ সূচক বা হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্সেও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্বব্যাংকের ১৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের ওপর জরিপ করে তৈরি করা এই বৈশ্বিক মানবসম্পদ সূচকে দেশগুলোর স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বেঁচে থাকার অন্যান্য অনুষঙ্গগুলো বিবেচনা করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া একজন শিশু বড় হয়ে কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীল হওয়ার সম্ভাবনা ৪৮ শতাংশ যা পাকিস্তানে ৩৯ শতাংশ। বাংলাদেশে ১০০ জনের মধ্যে ৯৭ জন শিশুই ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশে চার বছর বয়সী শিশু স্কুল শুরু করলে ১৮ বছর হওয়ার আগে স্কুলজীবনের ১১ বছর শেষ করতে পারে। পাকিস্তানে ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে ৯৩ শতাংশ শিশু। আর পাকিস্তানে চার বছর বয়সী শিশু স্কুল শুরু করলে ১৮ বছর হওয়ার আগে শেষ করতে পারে স্কুল জীবনের ৮ দশমিক ৮ বছর।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচক

ক্ষুধা নির্মূলের ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের সাফল্যই বেশি। চলতি বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে (জিএইচআই) ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৬ তম। আর পাকিস্তানের অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে ২০ ধাপ পিছিয়ে থেকে ১০৬ এ। সূচক অনুযায়ী, খাদ্য সংকটে ভারত এবং পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে অভুক্ত মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক কম। অপুষ্টি, খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা, কৃশকায় বা শীর্ণকায় শিশু ও শিশুমৃত্যুর হারের ওপর ভিত্তি করে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও জার্মানী ভিত্তিক সংস্থা হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড যৌথভাবে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করে থাকে।

উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশের সূচক

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) প্রকাশিত ‘সুষম প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বের উন্নয়নশীল অর্থনীতির ৭৯টি দেশের তালিকায় পাকিস্তান ৪৭তম অবস্থানে রয়েছে। পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে ৩৮তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। জীবনযাত্রার মান, পরিবেশগত স্থিতিশীলতা ও ঋণ থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষার ওপর ভিত্তি করে বৈশ্বিক এ সূচক তৈরি করেছে ডব্লিউইএফ।

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচক

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকেও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এই সূচকে ১২৮তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের অবস্থান ১৪১।

ব্র্যান্ড ভ্যালু

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বৈশ্বিক ব্র্যান্ড মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান ‘ব্র্যান্ড ফিন্যান্স’ প্রকাশিত ‘নেশন ব্র্যান্ডস ২০১৭’ শিরোনামের প্রতিবেদনে দেখা যায় ব্র্যান্ড ভ্যালুতে পাকিস্তানের চেয়ে ৬ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্বের কোনো দেশকে মূল্যায়নের অন্যতম মাপকাঠি ব্র্যান্ড ভ্যালু। সেই মাপকাঠিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৪তম আর পাকিস্তানের ৫০। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিনিয়োগ, সমাজ এবং পণ্য ও সেবা এই তিনটি বিষয়কে ২৬টি মানদণ্ডে বিবেচনা করে একটি দেশের ব্র্যান্ড যাচাই করা হয়। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ

উদীয়মান অর্থনীতির দেশ

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক প্রতিবেদনে অন্তর্ভুতিমূলক উন্নয়ন সূচকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৪ আর পাকিস্তানের অবস্থান ৫২। সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৩ দশমিক ৯৮ যেখানে পাকিস্তানের স্কোর অনেকটাই কম, ৩ দশমিক ৫৫। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত বার্ষিক এই সূচক তৈরিতে ১০৩টি দেশের অর্থনীতির তিনটি পৃথক স্তম্ভ বিবেচনায় আনা হয়েছে৷ সেগুলো হলো, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সমতা বিধান৷

জিডিপি

গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) বা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সূচক। জিডিপিতেও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানি ওয়েবসাইট দ্যা কান্ট্রি ইকোনমির তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে পাকিস্তানের জিডিপির হার ছিল ৫.৭ শতাংশ আর বাংলাদেশে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে জিডিপির পরিমাণ ছিল ৭.৪ শতাংশ।

জেন্ডার ডেভেলপমেন্ট

জেন্ডার ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সেও (জিডিআই) পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। জিডিআই এ বাংলাদেশের স্কোর শূন্য দশমিক ৮৮১। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের স্কোর শূন্য দশমিক ৭৫০।

কর্মসংস্থান

বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। পাকিস্তানে এই হার ৫২ শতাংশ।

নিরাপত্তা

বাংলাদেশে হত্যার শিকার হয় শতকরা ২ দশমিক ৫ জন। আর পাকিস্তানে এই হার প্রায় দ্বিগুণ, ৪ দশমিক ৪ জন।

পরিবেশের ভারসাম্য

বাংলাদেশ মাথাপিছু ০.৫ টন কার্বনডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে। আর পাকিস্তান নির্গমন করে থাকে ০.৯ টন কার্বনডাই অক্সাইড। বায়ু দূষণের প্রভাবে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৪৯ জন যা পাকিস্তানে যা ১৭৩ দশমিক ৬ জন। দূষিত পানি ও পয়নিষ্কাশন অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশে মৃত্যু হয় লাখে ১৮ দশমিক ৬ জনের। এই হার পাকিস্তানে ১৯ দশমিক ৬ জনের।

শুধু তাই নয় ক্রিকেট, ফুটবল অর্থাৎ খেলার মাঠেও পাকিস্তানকে নিয়মিত ধরাশায়ী করছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত আর পাকিস্তান সারা বিশ্বে পরিচিত ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে। খোদ পাকিস্তানি টিভিতে সে দেশীয় বুদ্ধিজীবীরা হাহাকার করে বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশের মতো বানিয়ে দাও।’ অথচ মাহমুদুর রহমান মান্না টিভি চ্যানেলে কী অবলীলায় মিথ্যাচার করলেন। একে মান্নার ভীমরতি ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে। বাংলাদেশের মাটিতে রাজনীতি করে বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন মিথ্যাচার আর পাকিস্তান প্রীতির নিদর্শন সত্যিই দুঃখজনক।

বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে বিশেষ করে আইএসআই এর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বিএনপির। ভারত সুনির্দিষ্টভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে আইএসআইয়ের পেইড এজেন্ট বলেছে। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে প্রমাণিত হয়ে গেছে তারেকের পরিকল্পনায় সংঘটিত সেই গ্রেনেড হামলায় আইএসআই সম্পৃক্ত ছিল। তাদের সাহায্যেই কাশ্মীর থেকে আর্জেস গ্রেনেড এসেছে। এমন অবস্থায় মান্নার পাকিস্তান প্রীতি দেখে তাঁকে বাংলাদেশে আইএসআই এর নব্য এজেন্ট মনে করলে ভুল হবে না বলেই ভাবছে দেশের রাজনীতি সচেতন নাগরিকরা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ    



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলন ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

প্রকাশ: ০৯:০৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

২৬ এপ্রিল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এরপর একই দিনে আওয়ামী লীগও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দেয়। তবে প্রকৃতির বৈরি আচরণের কারণে আপাতত পিছু হঠছে বিএনপি। চলমান তাপদাহ ও হিট অ্যালার্টের কারণে এই সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করেছে দলটি।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। এর মধ্য দিয়ে আবার সরকার পতন আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনা ছিল দলটির। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণার অংশ হিসেবেই এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। 

দলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলমান তাপদাহ কমে এলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্থগিত হওয়া সমাবেশ কর্মসূচি করবে বিএনপি। একই সঙ্গে চলমান বিভিন্ন সংকট বিশেষ করে লোডশেডিং ইস্যুতে আন্দোলন করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। ইতোমধ্যে জাতীয় নির্বাচন বর্জনের মতো উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে লিফলেট বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি। এভাবে ধীরে ধীরে জনসংযোগ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে দলটি। তবে অতীতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনকে স্বাগত জানানো হলেও এবার তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিভিন্ন ইস্যুতে বিশেষ করে লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুতের দাম ইত্যাদি ইস্যুতে আন্দোলনে স্বাগত জানিয়েছিল সরকার। তবে এবার সরকার হয়তো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে এমন ধারণা কারও কারও। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে এ ধারণা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর আমি পুলিশকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। অথচ ধৈর্য ধরতে গিয়ে তাদেরই মার খেতে হয়েছে। তাদের হাসপাতালে আক্রমণ করা হয়েছে, গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। তো আমার মনে হয় আমাদের পুলিশ এখন আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা চাইলে গ্রহণ করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে দেশের বাইরে বসেও আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করে করুক, তাতে আমরা বাধা দিচ্ছি না। এখন আন্দোলন দমাতে আমেরিকান স্টাইল ফলো করা যেতে পারে। আমেরিকান পুলিশ যেভাবে আন্দোলন ও আন্দোলনকারীদের দমন করে, আমার মনে হয় আমাদের দেশের পুলিশ তা অনুসরণ করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে কিনা সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। এখন দেখার বিষয় বিরোধী দলগুলো সেরকম আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে কিনা আর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে সেক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কী হয়।

আন্দোলন   সরকার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলনের আহ্বান

প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে সোমবার (৬ মে) বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।  

রোববার (৫ মে) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এ আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।  

এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশের ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ। এসব কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, কালকের (সোমবার) সমাবেশ বাংলাদেশের পাঁচ কোটি ছাত্র-জনতার সংহতি সমাবেশ। পৃথিবীর সব স্বাধীনতাকামী রাষ্ট্রের পক্ষে ও মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কালকের সমাবেশ হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হেনস্তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে, মারধর ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করার কারণে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ এসব অব্যাহতি ও হেনস্তার বিরুদ্ধে।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   ফিলিস্তিনের পতাকা   ছাত্রলীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মামলা গোপন করায় ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের মনোনয়নপত্র বাতিল

প্রকাশ: ০২:০৭ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

রোববার (৫ মে) দুপুর ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।

জানা যায়, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে সেতুমন্ত্রীর ভাইসহ চারজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন-

১। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন

২। উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল

৩। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল

৪। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী

ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি তিনজনের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সংশোধন পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর আপিলের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন বলেন, ‘আমার নামে যে মামলা ছিল তা আমার জানা ছিল না। এ ছাড়া আয় বিবরণীর হিসাব দেওয়া হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা তা খেয়াল করেননি। আপিল করার সুযোগ আছে। আমি আপিল করবো। আশা করি আমার মনোনয়ন বৈধ হবে’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই মন্ত্রী। স্বজন বলতে সন্তান-স্ত্রীকে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটা ক্লিয়ার করেছেন। আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবও সেটা ক্লিয়ার করেছেন। আশা করি স্বজনের ভুল ব্যাখ্যা থেকে সবাই সরে আসবে’।

প্রসঙ্গত, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি সবার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।


উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের   শাহদাত হোসেন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রী-এমপি স্বজনদের বিরত রাখা দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার (৫ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের দেশে মানবাধিকার যে চোখে দেখে, নিজের দেশে সেই দৃষ্টিতে দেখবে না কেন?

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই। তবে সত্য বললে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তো কিছু করার নেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ দমনে যে আচরণ করা হয়েছিল, একই রকম নির্মম আচরণ এখন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে তারা কথা বলে। আমরা কি এসব নিয়ে কথা বলতে পারবো না? আমাদের দেশে তারা যে দৃষ্টিতে মানবাধিকার দেখে সে দৃষ্টিতে নিজের দেশে দেখবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব নেই এমন কথাতো আমরা বলিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যুদ্ধের কারণে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা বাংলাদেশেও আছে। বাংলাদেশ এ প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। যেমন, দ্রব্যমূল্যের যে চাপ তা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।

সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে—এ ভাবনা থেকে আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ান আব্দুস সবুর, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।


মন্ত্রী-এমপি   ওবায়দুল কাদের   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আঙুলের ছাপ না মিললে প্রিজাইডিং অফিসার দিতে পারবে ভোট

প্রকাশ: ১০:৪১ এএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের ভোট। নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ২২ উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসি। এক্ষেত্রে শুরুতেই পাঁচটি উপায়ে ভোটারের পরিচিত নিশ্চিত করতে হবে।

কোনো কারণে যদি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ ম্যাচিং না হয় তাহলে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে ওই ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়ভার সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে বহন করতে হবে।

সম্প্রতি নির্বাচন পরিচালনা-২ (অধিশাখা)-এর উপসচিব আতিয়ার রহমানের সই করা বিশেষ পরিপত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের সবশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুসারে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বৈধ ভোটারকে উপস্থিত হতে হবে। তবে ভোট দেওয়ার আগেই সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৫টি উপায়ে ভোটার শনাক্ত করবেন।

সেগুলো হচ্ছে…

১। স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে।

২। স্মার্ট কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে।

৩। ১৭ ডিজিটের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে।

৪। ১২ ডিজিটের ভোটার নম্বর ব্যবহার করে।

৫। আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে।

আর এসবের যে কোনো একটি উপায়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ ম্যাচিং না হলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি (সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার) প্রথমে ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে পরবর্তীতে নিজের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে ভোটারকে শনাক্ত করবেন। এক্ষেত্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার উক্ত ভোটারকে শনাক্তকরণের সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করবেন বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এই উপায়ে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মোট ভোটারের সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে শনাক্ত করে ইলেক্ট্রনিক ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন। আর যেসব ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ ম্যাচিং হবে না এবং সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ইলেক্ট্রনিক ব্যালট ইস্যু করবেন, সেসব ভোটারের জন্য আলাদা লগ পোলিং কার্ডে সংরক্ষণ করতে হবে।

এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি যদি অবৈধভাবে ভোট প্রদানের অপচেষ্টা করেন এবং উক্ত ব্যক্তির সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অবৈধ ভোটার হিসেবে প্রমাণিত হয়, তাহলে তথ্য প্রযুক্তি আইন এবং (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এছাড়া, যে সকল ভোটারকে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে শনাক্ত করবেন সে সকল ভোটারের তালিকা নির্ধারিত রেজিষ্ট্রারে ভোটারের নাম ও ভোটার নম্বর লিখে স্বাক্ষর গ্রহণ করবেন এবং নিজেও সই করবেন।

প্রসঙ্গত, ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে। এতে সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, কাজীপুর, পাবনা জেলার সাঁথিয়া, সুজানগর, বেড়া, যশোর জেলার মনিরামপুর, কেশবপুর, পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর, হরিরামপুর, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, জামালপুর জেলার জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ভোট ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট ৬ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।


নির্বাচন কমশিন   ইভিএম   প্রিজাইডিং অফিসার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন