নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৮
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেই মহাজোটের ঐক্য ধরে রাখলো। ৭০টি আসন ছেড়ে দিলো শরিকদের জন্য। এই আসন ছাড়তে গিয়ে ত্যাগ স্বীকার করলেন দলের অনেক জনপ্রিয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন ছাড়াও বিভিন্ন কারণে, দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলের স্বার্থে, দলের জন্য কাজ করার অনুরোধ করেছেন।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন বঞ্চিতদের একটি বার্তাই দিয়েছেন, তা হলো ‘দল জিতলে সব কিছুই হবে। মূল্যায়নও করা যাবে। কিন্তু দল হারলে কিছুই থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বঞ্চিতদের জন্য একগুচ্ছ পুরস্কার রেখেছেন। তবে শর্ত হলো, নির্বাচনে তাঁর এলাকায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে হবে।
সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকায় এবার সবচেয়ে বড় অঘটন হলো দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নাম বাদ যাওয়া। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এদের একজন যিনি ফরিদপুর এলাকা থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, তাকে নির্বাচনের পর দলের প্রেসিডিয়ামে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আরেকজন যুগ্ম সম্পাদক যিনি ঢাকার একটি আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বুঝিয়েছেন, সান্ত্বনা দিয়েছেন, মায়ের মমতায় স্নেহ করে বিদায় দিয়েছেন।আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, দল জিতলে ঐ যুগ্ম সম্পাদককে মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে।
একজন সাংগঠনিক সম্পাদক যিনি মাদারীপুর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এই সাংগঠনিক সম্পাদক দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সভাপতির ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন। ৯৬-২০০১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নির্বাচন নয়, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শরীয়তপুর থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তাঁকে দলীয় কার্যক্রমে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টনের জন্য প্রয়াত মহিউদ্দিন আহমেদের ছেলেকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে। মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত পছন্দের। নির্বাচনে জয়ী হলে তাঁকে দলের অথবা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার ভাবনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী নিজেও মনে করেন মনোনয়ন না পাওয়া একজন রাজনীতিবিদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তবুও দলের স্বার্থে যাঁরা ত্যাগ স্বীকার করবে, তাদের দলও পুরস্কৃত করবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।