নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপি যখন দুই জোটকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তখন আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশই হোঁচট খেয়েছিল। আওয়ামী লীগের অনেকেই নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু আজ যখন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট মনোনয়ন জমা দিলো তখন আওয়ামী লীগের উচ্ছ্বাস সবার চোখে পড়েছে। বিএনপি নিজেরাই যে মনোনয়ন জট তৈরি করেছে, তা আগামী একমাসে কীভাবে কাটবে সে এক বিরাট প্রশ্ন। বিএনপি ৩০০ আসনের বিপরীতে নিজেরাই প্রার্থী দিয়েছে ৮০০। বিএনপির মূল শরিক ২০ দলীয় জোট থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে ১১৯ জন। আর অন্য শরিক জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২১০ জন প্রার্থী আজ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। মোট ১২শ প্রার্থীর জঞ্জাল সরিয়ে ৩০০ প্রার্থী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে খুঁজে বের করা যেন সাগর সেঁচে মুক্তো বের করার মতোই এক অসাধ্য কাজ। যারা একবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন, তারা কি আর মাঠ ছাড়বেন? আওয়ামী লীগ তাঁর নিজের জন্য সবচেয়ে বেশি যেটা নিয়ে ভয় পাচ্ছিল, তা ছিল দলের অন্তঃকলহ। অথচ এখন প্রতিপক্ষের শিবিরে গড়ে ৪ জন প্রার্থী দেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো উল্লসিত হতেই পারে।
অবশ্য বিএনপির নেতারা বলছেন, একাধিক প্রার্থী দেওয়ার কারণ ভিন্ন। অধিকাংশ নির্বাচনী এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থী হয় দণ্ডিত অথবা তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত যদি তিনি নির্বাচন না করতে পারেন, তার বদলে বিকল্প প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাহলেও যোগ্য প্রার্থীর অভাব প্রকট হবে। শেষে যিনি বিএনপির টিকেট পাবেন, তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে কতোটা পারবেন, সে এক প্রশ্ন বটে।
বিএনপির প্রার্থী তালিকা দেখে আওয়ামী লীগের খুশির আরেক কারণ হলো, সেই বিতর্কিত ব্যক্তিদের প্রতিই বিএনপির আস্থা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু বিএনপির মনোনয়নে তারা আরও বিরক্ত। যাদের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ, সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ, বিভিন্ন কারণে যারা বিতর্কিত, এবারের নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্ব তাদের উপরই আস্থা রেখেছে।
রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি যে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেনি এই মনোনয়ন তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলছেন, আওয়ামী লীগ বর্তমান এমপিদের ওপরই আস্থা রেখেছে। আওয়ামী লীগের কাছে সুযোগ ছিল ক্লিন ইমেজদের ভালো প্রার্থী দেওয়ার। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচন ভালো হয়নি। তাঁর মতে, ‘বিএনপির সামনেও সুযোগ ছিল নতুন রূপে আত্ম প্রকাশ করার। অবিতর্কিত প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার এক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বিএনপির মনোনয়ন হয়েছে খুবই খারাপ।’
দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থী তালিকা দেখে বলাই যায় আওয়ামী লীগ মনোনয়নের দৌড়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে। বিএনপির চেয়ে তুলনামূলক ভালো প্রার্থী দিয়েছে দলটি। একারণেই বিএনপির তালিকা দেখে আওয়ামী লীগের কর্মীরা উচ্ছ্বসিত হতে পারে। স্বস্তি আসতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।