নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত হয়েছে, পাশাপাশি চলছে এর খুঁটিনাটি কাজ। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে দলটি। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, গত দশ বছরে সারাদেশে যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছে, সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা এবং সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কিছু উন্নয়ন পরিকল্পনাসহ স্বল্প উন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা। সেই সঙ্গে এই নির্বাচনী ইশতেহারে ২১০০ সালের বাংলাদেশের একটি রূপপরিকল্পনাও উপস্থাপনা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল বক্তব্যগুলো হচ্ছে:
১. দারিদ্র, হতাশাগ্রস্ত ও ব্যর্থ রাষ্ট্র থেকে গত এক দশকে আধুনিক, উন্নত ও স্বনির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে গত ১০ বছরে সারা দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দলটির যে অর্জন তা তুলে ধরা হবে।
২. পদ্মা সেতু প্রকল্প, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেলসহ প্রধান প্রধান মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরা হবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে। সেই সঙ্গে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশে কি ধরনের পরিবর্তন আসবে, দেশের মানুষ কি কি সুবিধা পাবে তার উপর আলোকপাত করা হবে। যথা সময়ের মধ্যেই যেন এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হয়, দেশের প্রতিটা মানুষ যেন সহজেই এসব প্রকল্পের সুবিধাগুলো পায় সেজন্য আরেকবার আওয়ামী লীগকে ভোটের আহ্বান জানানো হবে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে।
৩. গত দশ বছরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারসহ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরা হবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে। সেই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করাসহ জঙ্গি-মুক্ত বাংলাদেশ করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করা হবে।
৪. নির্বাচনী ইশতেহারে মাদককে সামাজিক অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, সেই সঙ্গে মাদকমুক্ত আগামী বাংলাদেশ গড়তে রূপপরিকল্পনারও উল্লেখ করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের সকল পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে আগামীতে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তবে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করা হবে।
৫. দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা উল্লেখ করা হবে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। হাওয়া ভবন, সিএনজি দুর্নীতিসহ বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়কালে দুর্নীতির সকল খাতগুলো উল্লেখ করা হবে। গত দশ বছরে সকল ক্ষেত্রেই দুর্নীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার উল্লেখপূর্বক আগামীতে ক্ষমতায় আসলে দুর্নীতি রোধে আরও উন্নয়নের কথা উল্লেখ করা হবে।
৬. তারুণ্যের জয়গান গাওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে। তরুণদের জন্য যেসকল সুযোগ-সুবিধা গত ১০ বছরে সরকার ইতিমধ্যেই দিয়েছে তা উল্লেখ করা হবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসলে তরুণদের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আত্মকর্মসংস্থানের উদ্যোগ গ্রহণ, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে তরুণদের প্রশিক্ষণের কথাও উল্লেখ করা হবে।
৭. বর্তমান সরকারের আমলেই নারীর ক্ষমতায়নের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক দশকে সরকার নারী জাগরণে যেসকল কর্মসূচী গ্রহণ করেছে তা উল্লেখপূর্বক, আগামীতে ক্ষমতায় আসলে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের পক্ষ থেকে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তার বিবরণীর উল্লেখ থাকবে নির্বাচনী ইশতেহারে।
৮. প্রতিটা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করে গ্রামের মানুষগুলোকে আধুনিক শহুরে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নীতি-কৌশল এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয়।
৯. গত এক দশকে আওয়ামী লীগ দেশের দারিদ্র হ্রাসে এক বিপ্লব ঘটিয়েছে। সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্রের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে এসেছে। আগামীতে ক্ষমতায় আসলে এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া ও উন্নত দেশ গড়ার অঙ্গীকার করছে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে।
১০. বিগত দশ বছরে সমাজ থেকে বৈষম্য হ্রাসে আওয়ামী লীগ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোর কথা উল্লেখ করা হবে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। তৃতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় আসে তবে সমাজ থেকে বৈষম্য হ্রাস করতে দলটি কি কি পদক্ষেপ নিবে তারও উল্লেখ করা হবে।
১১. ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ এদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ সুবিধাবঞ্চিতদের মানুষদের জন্য যেসকল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তার বর্ণনা থাকবে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। পাশাপাশি সমাজে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নত করতে আগামীতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বর্ণনাও থাকবে।
১২. ‘কারও সঙ্গেই বৈরিতা নয়, সকলের সঙ্গেই বন্ধুত্ব’ আওয়ামী লীগ তার পররাষ্ট্র নীতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতি অনুসরণ করছে। বিগত এক দশকে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে তার বিশদ বিবরণ থাকবে দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে। সেই সঙ্গে, সমুদ্রজয়, সিট মহলের সীমানা বণ্টন সহ দ্বিপাক্ষিক ও বৈষয়িক দিকগুলোতে সরকারের সাফল্য তুলে ধরা হবে। এছাড়াও নির্বাচনী ইশতেহারে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনও করা হবে।
১৩. বাংলাদেশ বর্তমানে সাম্প্রদায়িকটার দেশ। সকল ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের যে নীতি বর্তমান সরকার গ্রহণ করেছে, সেই নীতিতেই এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকাশ করছে।
এছাড়াও নির্বাচনী ইশতেহারে আরও কিছু কর্মসূচি ও অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ থাকবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এখন শুধুমাত্র খুঁটিনাটি কিছু কাজ চলছে। নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের পরের সপ্তাহের সুবিধাজনক যে কোন দিনেই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবো বলে আশা করছি আমরা।’
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।