নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮
‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পরস্পর বিরোধী অবস্থান নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির পক্ষে মত দিয়েছে। অন্যদিকে ভারত মনে করছে, তৃতীয় বিশ্বে নির্বাচনে এ ধরণের ঘটনা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ ধরণের ছোটখাটো ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এই দুই দেশের কূটনীতিকদের আলোচনায় এই মতদ্বৈততার খবর পাওয়া গেছে। কূটনীতিক সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ঢাকাস্থ দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসন্ন নির্বাচন এবং বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর করণীয় নির্ধারণে নিয়মিত বৈঠক করছে।
১৬ ডিসেম্বর ছুটির দিনেও দুই দেশের কূটনীতিকরা আলোচনায় বসেছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই আলোচনায় মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালনায় চলমান সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিশেষ করে ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক আবু সাইয়ীদ, লতিফ সিদ্দিকী এবং মাহাবুব উদ্দিন খোকনের উপর হামলার ঘটনা নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করছে বলেও মন্তব্য করা হয়। মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছে যে এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে জনগণ নির্বিঘ্নে এবং নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। মার্কিন দূতাবাস বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সরকারের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করে। বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে সে ব্যাপারে তাগিদ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণেরও প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মার্কিন দূতাবাস। কিন্তু ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস এর ঠিক উল্টোমত দিয়েছে। ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন হচ্ছে। সব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যেহেতু দীর্ঘ ১০ বছর পর প্রধান প্রধান দলগুলো অংশ নিচ্ছে, তাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। ভারতীয় দূতাবাস মনে করে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নির্বাচনে সহিংসতা ‘অনাকাংখিত বাস্তবতা’ভারতের নির্বাচনেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে। কিন্তু সামগ্রিক নির্বাচনের উপর এটা কোন প্রভাব ফেলে না।
ভারতীয় দূতাবাস মনে করে, এই অঞ্চলের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রদানের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। এসব ছোট খাটো সহিংসতার ঘটনা তাদের বিচলিত করে না। ভারতীয় দূতাবাস মনে করে, ‘একটি দেশের নির্বাচন সেই দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়। তাই ছোট খাট বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাই ভালো। তাদের মতে, নির্বাচনের শেষে দেখতে হবে জনগনের আকাংখার প্রতিফলন নির্বাচনে ঘটেছে কিনা। ভারত মনে করে, এই উপমহাদেশে জন আকাংখার বিরুদ্ধে ভোটের ফলাফল তৈরী করা প্রায় অসম্ভব। মার্কিন দূতাবাসের বিপরীতে, ভারত আরো অপেক্ষা এবং দেখার নীতি অবলম্বন করতে চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে বসতে চাইলেও ভারত এতে আগ্রহ দেখায়নি। ভারতের বিরোধীতার কারনেই, নির্বাচনে সহিংসতা বন্ধে ঢাকায় কর্মরত সব দেশের একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলেও জানা গেছে। ঐ যৌথ বিবৃতিতে সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।