নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের আগের শেষ সাতদিন প্রশাসনকে নিজেদের পক্ষে আনতে কাজ করছে বিএনপিপন্থী সাবেক এবং বর্তমান কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা। বর্তমানে প্রশাসনের তিনজন সচিব, চারজন অতিরিক্ত সচিবসহ একাধিক প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তার সমন্বয়ে বিএনপি একটি টিম করেছে। এই টিমের প্রধান কাজ হলো সারাদেশে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং বিএনপির পক্ষে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা।
গুলশানের একটি বাড়িতে বিএনপিপন্থী প্রাক্তন আমলারা নিয়মিত বসছেন। সাবেক সচিব ব্যারিস্টার হায়দার আলীর নেতৃত্বে এই টিমকে তথ্য এবং উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেন বর্তমান কয়েকজন হন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, সারাদেশে নির্বাচনের দায়িত্ব পাওয়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অর্ধেকের বেশি হয় বিএনপির পক্ষে অথবা নিরপেক্ষ বলে বিএনপির এই কমিটি পর্যবেক্ষণ করেছে।
সংগৃহীত তালিকা মূল্যায়ন করে বিএনপির আমলারা বলছেন, রিটার্নিং অফিসারের মাত্র ১০ থেকে ১৫ ভাগ সরাসরি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করবে। আরও ১০ থেকে ১৫ ভাগ প্রচ্ছন্নভাবে আওয়ামী লীগকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করবে। এর বাইরে ৭০ ভাগ রিটার্নিং অফিসারই নির্বাচনে হয় নিরপেক্ষ থাকবে অথবা বিএনপির প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ হিসেবে কাজ করবে। বিএনপিপন্থী আমলারা দলের শীর্ষ নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, সঠিক সময়ে প্রশাসন সঠিক দায়িত্ব পালন করবে। পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিকতার কারণে তারা এখন ‘আওয়ামী পন্থী’ হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করছে। বিএনপি আমলাদের টিম মনে করছে, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হলে অথবা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন তারা ‘যথাযথ ভূমিকায়’ অবতীর্ণ হবে।
বিএনপির আমলারা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। সচিবালয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে থাকা কয়েকজন কর্মকর্তাও নানা অজুহাতে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। প্রশাসনে বিএনপির পক্ষে কাজ করা এই আমলারা মনে করছে, সিভিল প্রশাসন নিয়ে কোন সমস্যা নয়। মাঠ প্রশাসনে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকারীরা বিএনপির পক্ষেই থাকবে। কিন্তু সমস্যা হলো পুলিশ প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।
বিএনপির আমলাদের মূল্যায়ন হচ্ছে, ৮০ শতাংশ নির্বাচনী এলাকাতেই আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনী আওয়ামী লীগের পক্ষে অথবা সহানুভূতিশীল হিসেবে কাজ করছে। বিএনপিপন্থী আমলারা মূল্যায়ন করে দেখেছে যে, পুলিশ প্রশাসনই নির্বাচনে বিএনপির জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। মাঠ পর্যায়ে পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে বলেও বিএনপির প্রাক্তন আমলারা মনে করছে। যে কয়েকজন বিএনপিপন্থী বা বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, তারা হয় নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে অথবা বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় তাদের পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। যেখানে আসলে তাদের তেমন কিছুই করার নেই।
তবে, বিএনপিপন্থী আমলারা মনে করছেন, সেনাবাহিনী নামলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। এ সময় মাঠ প্রশাসন সেনা সহায়তা নিয়ে অনেকটা শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে পারবে বলেও তারা মনে করছেন। বিএনপিপন্থী আমলারা মনে করছেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পুলিশের ক্ষমতা কমে যাবে, তখন পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে না।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।