নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাবে বিএনপি? কিন্তু কখন? এ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা ঐক্যমতে আসতে পারেননি। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া তাঁর কর্মীদের পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে বলেছে। ড. কামাল হোসেন বলেছেন, মাটি কামড়ে থাকতে। ভোটের দিন অভাবনীয় কিছু হবে। কিন্তু বিএনপির প্রার্থীরা মাঠ থেকে চাপ দিচ্ছে। মাঠে হাতে গোনা কয়েকজন বাদে বিএনপির সব প্রার্থীরাই কেন্দ্রীয় নেতাদের খবর পাঠাচ্ছেন যে, নির্বাচনের মাঠে থাকা বিএনপির জন্য ‘অসম্ভব’ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন বিএনপি কি করবে?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সামনে তিনটি বিকল্প পথ খোলা রয়েছে। এগুলো হলো-
১. নিয়মতান্ত্রিক রাজনিতি: বিএনপির সামনে প্রথম এবং সহজ বিকল্প হলো শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা। যে ফলাফলই হোক তা মেনে সংসদে গিয়ে সরকারের সমালোচনা এবং আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, এর ফলে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আত্মপ্রকাশের সুযোগ পাবে। আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। সংসদীয় গণতন্ত্রে একটি ভালো বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। কিন্তু এই বিকল্পে বিএনপির যাবার সম্ভাবনা এখনও কম।
২. ভোটের আগে বর্জন: বিএনপির বেশির ভাগ নেতা কর্মী এখন এই পথের কথাই ভাবছে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছে, ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোন দিন নির্বাচন বর্জনের ডাক আসতে পারে। নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চায়। কিন্তু সময় যতোই গড়াচ্ছে, ততই আন্দোলনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে উঠছে। বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ বলছে, নির্বাচন বর্জন করা হয়তো যাবে। যেকোন সময় একটা ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করা যায়। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার ক্ষমতা বিএনপির নেই বলেই মনে করছেন বিএনপির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ। সেক্ষেত্রে নতুন আন্দোলন বিএনপিকে নতুন সংকটে ফেলবে।
৩. ভোটের পর আন্দোলন: বিএনপির অধিকাংশ শরীকরা এখন এই বিকল্প নিয়েই আগ্রহী। জাতীয় ঐক্যফন্টের একাধিক নেতা বলছেন, নির্বাচনে জিততে গেলে সরকারকে বড় রকম কারচুপি করতেই হবে। সেক্ষেত্রে জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। তখন ভোট কারচুপির প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তুললে তা জনসমর্থন বেশি পাবে। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ নেতারা এ ব্যাপারে সায় নেই। তারা মনে করছে, নির্বাচনের পর সরকার আরো কঠোর হবে। এখনই বিএনপি রাস্তায় দাঁড়াতে পারে না। আর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ আন্দোলনের কোন সুযোগই দেবে না।
বিএনপির সামনে খোলা এই তিন পথের কোন পথে বিএনপি যাবে- তা দেখা যাবে অল্প ক’দিনের মধ্যেই।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।