ইনসাইড পলিটিক্স

সিরাজগঞ্জ ও পাবনার ১১ আসন: নৌকা ৬, ধানের শীষ ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০১ এএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

পদ্মাপাড়ের দুই জেলা সিরাজগঞ্জ ও পাবনা। সিরাজগঞ্জ জেলায় নির্বাচনী আসন রয়েছে ৬টি। আর পাবনায় নির্বাচনী আসন ৫টি। সিরাজগঞ্জের ৬ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২১ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৩। এর মধ্যে নারী ভোটার ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৪ এবং পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৮ হাজার ৫৩৯। অন্যদিকে পাবনায় মোট ভোটার ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৩২৭। এর মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৪ এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৩। বাংলা ইনসাইডারের প্রেডিকশন হলো, এই দুই জেলার ১১ আসনের মধ্যে নৌকা ৬টি এবং ধানের শীষ ৫টি আসনে জিতবে।

সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চার ইউনিয়ন)

সিরাজগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেভিওয়েট নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। কনকচাঁপা সুগায়িকা হলেও রাজনীতির মাঠে তিনি একেবারেই নবীন। তাছাড়া এই আসনটিতে বিএনপি একেবারেই দুর্বল। অতীতে এই আসন থেকে ধানের শীষের কোনো প্রার্থী জয় পান নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ এখানে অত্যন্ত শক্তিশালী। ১৯৯১ সাল থেকে এই আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে। আর মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের পোড় খাওয়া সৈনিক। এ পর্যন্ত ৭টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৫টিতেই জয় পেয়েছেন তিনি। সবকিছু মিলিয়ে এই আসনে নৌকার জয় নিশ্চিত বলেই মনে করছি আমরা।

সিরাজগঞ্জ-২ (কামারখন্দ এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছয় ইউনিয়ন)

এই আসনে আওয়ামী লীগের হাবিবে মিল্লাতের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির রোমানা মাহমুদ। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর স্ত্রী। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও স্বামীর পরিবর্তে রোমানা ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন। ওই নির্বাচনে মাত্র ২ হাজার ১২১ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারেও এই আসনে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে প্রার্থীদের। তবে ধানের শীষই এখানে শেষ হাসি হাসবে বলে মনে করছি আমরা। কারণ হাবিবে মিল্লাত এই আসনের বর্তমান এমপি হলেও নিজের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে রোমানা মাহমুদ নিশ্চিতভাবেই বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ভোট পাবেন। পাশাপাশি স্থানীয়দের একটি বড় অংশ সহানুভূতিশীল হয়ে তাকে ভোট দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এসব কারণে ধানের শীষই এই আসনটির দখল নিতে যাচ্ছে বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।

সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা)

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে এবার বিএনপির প্রবীণ নেতা আবদুল মান্নান তালুকদারের বিরুদ্ধে লড়ছেন আওয়ামী লীগের নবীন প্রার্থী আবদুল আজিজ। আবদুল মান্নান এই আসন থেকে তিনবারের নির্বাচিত এমপি। অন্যদিকে আবদুল আজিজ এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক। পরিচ্ছন্ন ইমেজের কারণে এলাকায় তার জনপ্রিয়তা আছে। এই এলাকায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ২২ জন। মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারাও আজিজের পক্ষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিপরীতে বিএনপির নেতা কর্মীরা এখানে অনেকটাই নিষ্প্রভ। একারণে এখানে নৌকার জয় দেখছি আমরা।

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া উপজেলা)

এই আসনে আওয়ামী লীগের তানভীর ইমামের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের রফিকুল ইসলাম। তানভীর ইমাম এই আসনের বর্তমান এমপি। অন্যদিকে রফিকুল ইসলাম এর আগে ২০০৮ সালে এই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি। তবে এবার এই এলাকায় তিনি জয় পাবেন বলে মনে করছি আমরা। কারণ এলাকার বিএনপির সমর্থন রয়েছে। বিএনপির জামায়াত এখানে একাট্টা হয়ে লড়ছে। এ কারণে এখানে নৌকার ধানের শীষের জয় দেখছি আমরা।

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি ও চৌহালি উপজেলা)

সিরাজগঞ্জ-৫ এ এবার ভোটেযুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই নবীন প্রার্থী। নৌকার হয়ে লড়ছেন আবদুল মমিন মণ্ডল। আর বিএনপির কাণ্ডারী আমিরুল ইসলাম খান। ভোটের মাঠে নৌকার আবদুল মমিন মণ্ডলই শক্তিশালী অবস্থানে আছেন। এলাকার বর্তমান সাংসদ তাঁর বাবা আবদুল মজিদ। পারিবারিকভাবেই তারা প্রভাবশালী। অন্যদিকে আমিরুল ইসলাম বিএনপির মনোনয়ন পেলেও এই আসনে জামায়াতের আমিরুল ইসলামও ভোটের মাঠে আছেন। এ কারণে জামায়াত ও বিএনপির ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। এ কারণে আওয়ামী লীগের মতিন মণ্ডলই এখানে জয় পাবেন বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।

সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর উপজেলা)

সিরাজগঞ্জ-৬ এ আওয়ামী লীগের হাসিবুর রহমানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এম এ মুহিত। হাসিবুর রহমান এলাকার বর্তমান এমপি। এলাকায় তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। অন্যদিকে এম এ মুহিত সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ডা. এম এ মতিনের পুত্র। তিনি এবারই প্রথম নির্বাচনে লড়ছেন। হাসিবুর রহমান এক মেয়াদে সাংসদ হয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এই আসনে তাঁর শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে। প্রচার প্রচারণাতেও তিনি এগিয়ে আছেন। বিপরীতে এম এ মুহিত এখানে অনেকটাই ম্রিয়মাণ। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এখানে নৌকার জয় দেখছি আমরা।

পাবনা-১(সাঁথিয়া এবং বেড়া উপজেলার অংশবিশেষ)

পাবনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল হক। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গণফোরামের আবু সাইয়ীদ। এই লড়াইকে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে। আবু সাইয়ীদ সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে গনফোরামে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংসদ নির্বাচিত হন। সেসময় আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ওয়ান-ইলেভেনের সময় তিনি সংস্কারপন্থী হওয়ায় পরবর্তীতে দলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কমতে শুরু করে। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেন। কিন্তু নৌকার প্রার্থী শামসুল হক টুকুর কাছে হেরে যান। আবু সাইয়ীদ পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতা। এলাকায় তাঁর প্রভাব ও জনপ্রিয়তা আছে। তাছাড়া এবার তিনি ধানের শীষের হয়ে নির্বাচন করায় তিনি বিএনপিরও ভোট পাবেন। এসব কারণে এই আসন থেকে ধানের শীষ জিতবে বলে মনে করছি আমরা।

পাবনা-২ (সুজানগর ও আমিনপুর উপজেলা)

এই আসনে আওয়ামী লীগের আহমেদ ফিরোজ কবিরের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সেলিম রেজা। আওয়ামী লীগ এবার এই আসনে প্রার্থী বদল করেছে। ফিরোজ কবির এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। অনভিজ্ঞ ফিরোজ কবির এলাকায় আলোড়ন তুলতে পারছেন না। অন্যদিকে সেলিম রেজা এই আসনের সাবেক সাংসদ। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা আছে। এ কারণে এখানে ধানের শীষ জিতবে বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।

পাবনা-৩ (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলা)

এই আসনে আওয়ামী লীগের মকবুল হোসেনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের আনোয়ারুল ইসলাম। এই আসনে নৌকা জয় পেতে ব্যর্থ হবে বলে মনে করছি আমরা। কারণ মকবুল হোসেনকে নিয়ে নিজ দলের মধ্যেই বিভক্তি রয়েছে। আওয়ামী লীগের ১১ জন নেতা একাট্টা হয়ে মকবুল হোসেনকে মনোনয়ন না দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে এই এলাকায় জামায়াত এবং বিএনপির প্রভাব রয়েছে। এ কারণে এই আসনটি ধানের শীষের দখলে যাবে বলে মনে করছি আমরা।

পাবনা-৪ (আটঘরিয়া ও ঈশ্বরদী উপজেলা)

এই আসনটি ১৯৯৬ সালে থেকেই আওয়ামী লীগের দখলে আছে। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুর রহমান। তিনি এই আসনে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। গত তিন মেয়াদে তিনি এই এলাকার সাংসদ। অন্যদিকে বিএনপি এখানে খবই দুর্বল। এই আসনে এবার দলটির মনোনয়ন পেয়েছেন হাবিবুর রহমান। তাঁর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় না নামায় ঈশ্বরদী উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত এবং পৌর কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বিএনপিতে দলীয় কোন্দল থাকায় এই আসনে নৌকার জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছি আমরা।

পাবনা-৫ (পাবনা সদর উপজেলা)

পাবনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের গোলাম ফারুকের প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের ইকবাল হোসেন। গোলাম ফারুক এই এলাকার বর্তমান সাংসদ। ২০০৮ এর নির্বাচনেও তিনি এই আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন। গত ১০ বছরে তিনি এলাকায় ব্যাপক কাজ করেছেন। এলাকায় তাঁর প্রভাব ও জনসমর্থন আছে। অন্যদিকে জামায়াতের ইকবাল হোসেন একেবারেই নতুন প্রার্থী। এলাকায় খুব একটা শক্ত অবস্থানে নেই তিনি। এ কারণে এই আসনে নৌকা জয় পাবে বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/এমআর

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত: ইসি রাশেদা

প্রকাশ: ০৩:১৪ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত। কোনো প্রভাবশালী (এমপি) নির্বাচনে প্রভাব খাটালে, কমিশন প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কারণ, ভোটারবিহীন নির্বাচনে কোনো আনন্দ নেই, সৌন্দর্য্য নেই।

শনিবার (৪ মে) সকালে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থী ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে বিভাগীয় প্রশাসন।

রাজশাহীর স্থানীয় সংসদ সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, আপনারা দয়া করে আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনার মান ইজ্জত, মর্যাদা আপনিই রক্ষা করবেন। প্রার্থীরা এমপিদের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে কারও সুবিধা নিলে দয়া করে সরে আসেন। এরকম অবস্থা যদি দাঁড়ায়, যদি অভিযোগ আসে তাহলে প্রার্থিতা বাতিলও হতে পারে।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার ও রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।

এছাড়া উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই মতবিনিময় সভায় রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ এবং জয়পুরহাট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


উপজেলা নির্বাচন   প্রভাবমুক্ত. ইসি রাশেদা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারি চাকরিজীবী রাসেল আবারও বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের পদে

প্রকাশ: ০২:৩৮ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বৃহস্পতিবার ( ২ মে ) যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এতে মো. রফিকুল ইসলামকে সভাপতি, মুখলেসুর রহমানকে সহসভাপতি এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল খানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। রাসেল খান বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচয় দেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় ১০ বছর পর গঠিত যুবলীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রাসেল খান নামের এক সরকারি চাকরিজীবীকে। তিনি উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হিসেবে এক যুগ ধরে কর্মরত। এর আগেও যুবলীগের একই পদে ছিলেন রাসেল খান।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।

যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। সে সময় সম্মেলনে সরকারি চাকরিজীবী রাসেল খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখন সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় রাসেল খানের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন পদবঞ্চিতরা। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।

উপজেলা যুবলীগের দুজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাকরির পাশাপাশি সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের দলীয় পদে থাকলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। যুবলীগ নেতা হয়েও তিনি নিয়মিত দাপ্তরিক কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারাও অনেকটা অসহায়।

অভিযোগের বিষয়ে রাসেল খান বলেন, আবারও সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের দোয়ায় রাজনীতি করে যাচ্ছি।’ সরকারি চাকরির পাশাপাশি রাজনীতি—দুটি কাজ কীভাবে একসঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন, প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে চাননি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, আমি শহরে আসছি। এক ঘণ্টার মধ্যে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।’ এই বলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের যুবলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবী কেউ যদি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চান, তবে সেখানে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে সরকারি দপ্তরের কোনো বিধিনিষেধ আছে কি না, সেটি আমার জানা নেই।’

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তফা কামাল বলেন,  সরকারি চাকরি করে সরাসরি রাজনীতির কোনো পদপদবিতে থাকা যায় না। তাঁর (রাসেল খান) বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’


উপজেলা যুবলীগ   সরকারি   চাকরি   রাসেল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার পতনে বিরোধী দলগুলো একাত্ম : ড. মঈন খান

প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ষড়যন্ত্র করছে না। বরং আন্দোলনে একাত্ম। ডান-বাম সবাই তারা প্রকাশ্যে বলছে এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা প্রহসনের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হয়েছে।

 শনিবার (৪ মে) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধি জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিশেষ মোনাজাত করেন নেতারা।

 ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বিএনপির এই আন্দোলন ক্ষমতায় যেতে নয়, ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তনের জন্য। বিএনপি সেই লক্ষ্যে রাজপথে আছে এবং রাজপথে থাকবে।

 এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড রিয়াজ উদ্দিন খান নসু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, ওলামা দলের সাবেক আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, ওলামা দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা আবুল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা ক্বারী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেইনসহ সাবেক কমিটির শতাধিক নেতাকর্মী।

 প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

 আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নতুন প্রজন্মের মন থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকারের সেই অপচেষ্টা সফল হবে না। কারণ জিয়াউর রহমান এদেশের সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের একটি পরিচিত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন করেছিলেন।

 

তিনি বলেন, আবারও ১৯৭৫ সালে সিপাহী জনতার বিপ্লবে দেশের জনগণ দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কখনো ক্ষমতার জন্য লড়াই করেননি। আমরা শুধু নই গোটা দেশের মানুষ তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন।

 

মঈন খান বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে ফের নতুন বাকশাল কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এখানে গণতন্ত্র নেই, মানুষের বাকস্বাধীনতা ও নারীর স্বাধীনতা নিরাপত্তা নেই। আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ সামনে রেখে এগিয়ে যাব এটাই হোক আমাদের প্রত্যয়।


বিএপি   সরকার   পতন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফের বাড়ছে বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মী

প্রকাশ: ০৯:১৬ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎভাবে লাগাতার আন্দোলনে নামে বিএনপি। মূলত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে একদফা দাবিতে টানা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যায় বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোটগুলো। এ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি তারা। একপর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক দল। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন করে বিএনপি। নানামুখী তৎপরতার পরও নির্বাচন ঠেকাতে না পারা বিএনপির আন্দোলনে ভাটা পড়ে। সেই থেকে ধীরে চলছে বিএনপি। নেই রাজপথের কঠোর কোনো কর্মসূচি। সম্প্রতি দলীয় কিছু কর্মসূচিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে বলে দলটির অভিযোগ। বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজপথে জোরালো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও পুরোনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজার ঘটনা দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলছে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য হামলা-মামলা ও গুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। এটা সবাই জানেন যে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সরকার কিন্তু বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। মামলা-মোকদ্দমা আজও শেষ হয়নি। এখনো প্রতিদিন হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত মামলা আছে। গভীর রাতেও গ্রামে-গঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির মকবুল ইসলাম টিপু, ওমর নবি বাবু, মাহবুবুর রহমান টিপু, রফিকুল ইসলাম ময়না, মোহাম্মদ রবিন, মোহাম্মদ সালেহ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিনে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (ভিপি মিজান), জেলা বিএনপি নেতা মোহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর জুরাইন থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মনির মুন্সী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব বাবুসহ গাড়ি চালককে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক আটকের পরও অস্বীকার এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহেদকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।

গত ২৪ এপ্রিল খুলনা জেলা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা খান জুলফিকার আলী জুলু, রুপসার থানার মোল্লা সাইফুর রহমান, পাইকগাছার এনামুল হক, মো. সাহাবুদ্দিন ইজাদার, মো. সাইফুল ইসলাম পাইক, স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. জাকির হোসেন তালুকদার, মো. লায়েকুজ্জামান লাকু, মো. কামাল উদ্দিন, মো. ফরহাদ হোসন, জাসাসের মো. খালিদ লস্কর, ছাত্রদলের জাকারিয়া, মো. তরিকুল ইসলাম রনি, মো. আলমগীর শেখ, যুবদলের ইমরান হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সোহেল গাজী, মো. সোহেল গাজী, মো. ফারুক হোসেন, আমিনুল মল্লিক, মো. শিহাব সরদার, বাদশাহ সরকার, মো. আল আমিন শেখ প্রমুখ।

গত ২১ এপ্রিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ নেতাকর্মীর জামিন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গোলাম হোসেন, মো. মোরসালিন, আবদুল আজিজ, সাবের হোসেন, কালাম, হান্নান খান, আবু কাউসার ভূঁইয়া, হুমায়ুন, আনিসুর রহমান শিপলু, সানি ও ইয়াসিন, মোস্তাক আহমেদ, মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন সিরাজ, সেন্টু আহমেদ সাকি, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, মোহাম্মদ মঈন, যুবদলের ওমর ফারুক, রাজু বল্লম রাজু, মো. রকি, বিএনপি নেতা মো. বিল্লাল, মো. ফালান, মোহাম্মদ রনি, মামুন, সাগর ও শাওন। ১৭ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা সেলিম আহম্মেদ সালেম, কুতুব উদ্দিন এবং রেজাউর রহমান রাজুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তার আগে গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য লতিফুল্লাহ জাফরু, বংশাল থানার মো. মাকসুদ হোসেন এবং মোহাম্মদ আরিফ হাসানের জামিন নামঞ্জুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলার আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদলের মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলার মো. মমিনুল ইসলাম, মো. আরমান আলী, মো. মমিন, মো. হাসিনুর রহমান পায়েল এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবুল মনছুর খান দিপক। এর আগে গত ১ মার্চ বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর সদর ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির ৫২ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৮ মার্চ তারা ছাড়া পেয়েছেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিনা কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে যেতে হচ্ছে। কারাগার যেন তাদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দীর্ঘ তিন-চার মাস কারাগারে থেকে বেরোলেন। এখনো কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। তাদের জন্য দিনের আলো ও মুক্ত বাতাস গ্রহণ যেন নিষিদ্ধ। এদের প্রায়ই কারাগারের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এভাবে নেতাকর্মীদের কারাগারে ঢুকানো, গুম ও খুন করা এই কর্মসূচি যেন সরকারের শেষ হচ্ছে না। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। কারণ তিনি জানেন তার জনসমর্থন নেই। সরকার যতই বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন করুক না কেন, একদিন এর বিচার হবেই। সব অন্যায়ের রেকর্ড আছে। তাদের শেষ রক্ষা হবে না।

জানা গেছে, ঈদের আগে সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তফা কামাল হৃদয়, এসএ খোকন, উত্তরা থানার আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান আত্মসমর্পণের পর কিছুদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ অনেকে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, গত বছরের ২৬ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় তার স্বামী খোকনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। একই মামলায় এ পর্যন্ত অনেক আসামির জামিন হলেও খোকনকে জামিন না দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ খোকন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, পায়ে পানি ধরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। অবিলম্বে স্বামী খোকেনর মুক্তি দাবি করেন শিরিন সুলতানা।

সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ বলেন, মিথ্যা মামলায় পুলিশি হয়রানির কারণে আমি তো ঘরে থাকি না। তবু কেউ কেউ আমার বাসার সামনে ও বিল্ডিংয়ের ছাদে, কেউ আবার ভাঙাড়ি সেজে, মনিটরিং করে। আমি তো চোর বা ডাকাত নই। আমার দল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং জুলুমের বিপক্ষে লড়ছে। আমি সেই দলেরই (বিএনপি) একজন।


বিএনপি   কারাবন্দি   নেতাকর্মী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরাও তারেকের ওপর বিরক্ত

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের জন্য বিএনপি কমবেশি অন্তত ৫০ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় বৈঠক করেছিল। এই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। 

২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপি তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন ভালোই জমিয়ে তুলেছিল। এই সময় এই দলগুলোকে নিয়ে একটি জোটবদ্ধ আন্দোলন করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত জোটবদ্ধ আন্দোলন হয়নি। বরং সবাই তাদের নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির হঠকারিতা এবং ভুল রাজনীতির কারণে আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। 

নির্বাচনের পর শরিকদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে নির্বাচনের পরও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছিলেন শরিকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আন্দোলনের সঙ্গীদের বিশ্বাস করতে পারেননি। আর এই অবিশ্বাসের কারণে এখন শরিক দলগুলো মোটামুটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। বিএনপির সাথে তাদের যোগাযোগ আলগা হয়ে গেছে। আর সে কারণেই এখন বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে তাদের উৎসাহ নেই। অনেকেই এখন ঘরে উঠেছেন এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে তারা বিরক্ত হয়েছেন। এবং বিএনপির সঙ্গে নতুন করে যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই আন্দোলনের অন্যতম অংশী ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি অত্যন্ত সরব ছিলেন এবং এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তিনি বিএনপির অন্যতম পরামর্শক হিসেবে বিবেচিত হতেন। কিন্তু এখন তিনি লাপাত্তা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, মাহমুদুর রহমান মান্না তারেক জিয়ার ওপর অত্যন্ত বিরক্ত এবং বিএনপির কৌশল নিয়েও তিনি হতাশ। আর এ কারণেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। একই অবস্থা জেএসডির নেতা আ স ম আবদুর রবের। আবদুর রব মনে করছেন যে, বিএনপির রাজনীতির কৌশলই ভুল ছিল এবং এখন এই কৌশলের মাসুল দিতে হচ্ছে গোটা দেশকে। বিএনপি একদিকে যেমন সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না, অন্যদিকে শরিকদেরকেও বিশ্বাস করছে না। আর এ কারণে বিএনপির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন এই নেতা।

শরিকদের মধ্যে অন্যতম ছিল ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ। তারাও এখন নিজের আলাদা অবস্থান থেকে রাজনীতি করছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তারা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে নুর বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। 

শরিকদের যারা বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছিল তাদের মধ্যে একমাত্র জোনায়েদ সাকি ছাড়া কেউই বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছেন না। বরং বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। 

অন্যদিকে বিএনপির আদর্শিক জোট জামায়াত মাঝখানে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কিন্তু আবার ঘনিষ্ঠতায় ছেদ ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান অভিযোগ হলো তারেকের উদ্ভদ বিভ্রান্তিমূলক এবং অরাজনৈতিক সূলভ সিদ্ধান্ত। শরিকদের মধ্য থেকে একাধিক নেতা বলেছেন, তারেক জিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক পরিপক্কতার অভাব রয়েছে। হুটহাট তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিণতি এবং সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নেন। একজন রাজনৈতিক নেতার যে গুণাবলি থাকা উচিত তা কিছুই তার মধ্যে নেই। আর এ কারণেই শরিকরা এখন বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। একদিকে যেমন বিএনপির দলের মধ্যে হতাশা অন্যদিকে শরিকরাও এখন বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছে না।


বিএনপি   তারেক জিয়া   মাহমুদুর রহমান মান্না  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন