নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৯
সরকারের সঙ্গে কাজ সমন্বয়ের জন্য আওয়ামী লীগ শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। নির্বাচনী ইশতেহার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, সরকার নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করছে কিনা তা তদারকি ও মনিটরিংয়ের জন্য আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করছে। এই কমিটিতে শুধু আওয়ামী লীগের লোকজনই নয়, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করা হবে। এই কমিটির প্রধান কাজ হবে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে, সেই আলোকে সরকার পরিচালিত হচ্ছে কিনা, মন্ত্রণালয়গুলো অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করছে কিনা তা তদারকি করা।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে এবং এই কমিটির ‘টার্মস অ্যান্ড প্রেফারেন্স’ এর খসড়া তৈরি করেছে। এই খসড়াটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাবে এবং তিনি যদি অনুমতি দেন তাহলে তারসঙ্গে প্রয়ামর্শক্রমেই কমিটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
খসড়া টার্মস অ্যান্ড প্রেফারেন্সে যা বলা হয়েছে-
১. আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছে সেই ইশতেহারের আলোকে আশু মেয়াদী, স্বল্প মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী কি কি করণীয় তা সুনির্দিষ্টকরণ।
২. নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমগুলো সুনির্দিষ্টকরণ।
৩. মন্ত্রণালয়গুলো যে বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, যে নিত্যনৈমত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেগুলো যেন নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ন হয়।
৪. কোন মন্ত্রণালয়ের কাজ নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা কিংবা নির্বাচনী ইশতেহারের পরিপন্থী হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নজর রাখা।
৫. নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে যদি কোন সদগতি হয় বা নির্বাচনী ইশতেহার দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কি কি করণীয় তা এই কমিটি নির্ধারণ করবে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে,আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে এই কমিটির চেয়ারম্যান হতে পারে অথবা প্রধানমন্ত্রীকেই এই কমিটির চেয়ারম্যান হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের অন্য একটি সূত্র বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু সরকার প্রধান সেহেতু তিনি এই কমিটিতে আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ, সিনিয়র, দায়িত্বশীল নেতাকে এই কমিটির প্রধান হিসেবে রাখতে চাইছেন। এই কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ যারা কোন মন্ত্রিত্বে নেই এবং সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন তাঁদের, এছাড়া নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে যেসকল বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অবদান রেখেছে তাদেরকেও এই কমিটিতে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই কমিটি প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এই কমিটিটি খুব বড় করা যাবেনা। বরং কমিটিকে ছোট করে এটার সঙ্গে প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ের জন্য আলাদা আলাদা উপকমিটি করা প্রয়োজন।’ এই কমিটির কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে ওই উপদেষ্টা বলেছেন যে, ‘এই কমিটি মূলত গবেষণামুলক কাজ করবে। মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো তাঁরা পর্যবেক্ষণ এবং পরিবেক্ষণ করবে। মন্ত্রণালয়গুলোতে তাঁরা সুপারিশ করবে। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবে। বৈঠকের মাধ্যমে তারা নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করবে।’
বিভিন্ন দেশে নির্বাচন ইশতেহার অঙ্গিকার পূরণের জন্য এরকম কমিটি করার দৃষ্টান্ত রয়েছে। ভারতের মোদি সরকার তাঁর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য শক্তিশালী কমিটি করেছে। যে কমিটির প্রধান যেকোনো মন্ত্রীকে তলব করতে পারে, যেকোন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন, যেকোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের জন্য পরামর্শ ও উপদেশ দিতে পারেন। এছাড়া এই কমিটিতে প্রাক্তণ আমলা, ‘থিংক ট্যাংক’ সুশীল সমাজের লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশিভাবে ২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বারাক ওবামা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার পর তিনিও তাঁর নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের জন্য একই ধরনের কমিটি গঠন করেছিলেন। গণতান্ত্রিক বিশ্বে ক্ষমতাসীন দল এবং সরকারকে আলাদা করা হয় এবং সরকারকে রাজনৈতিক দলের জবাদিহিতার আওতায় আনা হয়। সেই আলোকেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।