নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৯
‘আওয়ামী লীগের কর্মী ভাইয়েরা, কোনদিন তোমরা আমার কথা ফেলো নাই। জীবনে কোনদিন কনটেস্ট করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বা প্রেসিডেন্ট হই নাই। জীবনভর তোমরা আমাকে সর্বসম্মতিক্রমে নেতৃত্ব দিয়েছো। তোমরা আমার কথায় রক্ত দিয়েছো, আজ শেষ দিনে , কেননা আমি সভাপতির পদ ছেড়ে যাচ্ছি! তোমরা আমার কথা মনে রেখো। আমার কথা ভুলো না।’
এই ভাষণটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে জাতির পিতা এই নীতি নির্ধারনী ভাষণ দিয়েছিলেন। দলীয় গঠনতন্ত্র ছিলো যে ‘প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিসভার সদস্যগণ দলের কর্মকর্তা পদে থাকতে পারবেন না। ফলে, এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ ছাড়েন বঙ্গবন্ধু। এই কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সভাপতি হন এএইচ এম কামরুজ্জামান। গণতন্ত্রের এ এক অনন্য নজির। এটাই জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের প্রথম ঘটনা ছিলো না। ১৯৫৬ সালেও মন্ত্রীত্ব এবং দল- এই দুইয়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু দলকে বেছে নিয়েছিলেন। দলের সাধারণ সম্পাদক পদ বহাল রাখতে তিনি মন্ত্রীত্ব বিসর্জন দিয়েছিলেন।
জাতির পিতার রাজনৈতিক আদর্শের এটি ছিল এক বড় দিক। তিনি দল এবং সরকারকে সবসময় আলাদা করতে চেয়েছেন। এজন্য তিনি দলের নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ছেড়ে দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির পদ।
৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর নানা বাস্তবতায় সেটি আর সম্ভব হয়নি। কিন্তু টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ কি জাতির পিতার সেই আদর্শের পথেই হাঁটছে?
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং উপদেষ্টা কমিটির মধ্যে থেকে এবার মন্ত্রী করা হয়েছে সব থেকে কম। ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় এবং উপদেষ্টামণ্ডলী থেকে স্থান পেয়েছেন মাত্র ১৪ জন। এর মধ্যে প্রেসিডিয়াম থেকে মাত্র ১ জন (ড. আবদুর রাজ্জাক)। উপদেষ্টামণ্ডলী থেকেও মাত্র ১ জন (স্থপতি ইয়াফেজ ওসমান)। সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সম্পাদকমণ্ডলী থেকে এবার বেশি মন্ত্রী করা হয়েছে। সম্পাদকমণ্ডলী থেকে ৪জন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে ৩ জন। প্রথমত, মন্ত্রিসভায় সিনিয়রদের অর্থাৎ প্রেসিডিয়াম এবং উপদেষ্টমণ্ডলীকে না রাখার একটা প্রবণতা। দ্বিতীয়ত, দলের কেন্দ্রীয় কমিটিকে যথাসম্ভব সরকার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা। এটা স্পষ্ট যে, টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষার পক্ষেই হাঁটছেন। এজন্য তিনি তার সব বক্তৃতায় বলছেন, ‘যারা আমাকে ভোট দিয়েছে, যারা দেয়নি আমরা সবার জন্য কাজ করবো।’ তিনি দলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে না, দেশের মানুষের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করতেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রিসভাকেও তিনি দলের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এই প্রেক্ষিতেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্ন উঠেছে। তিনি কি তাঁর পিতার পথেই হাঁটবেন?
আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন হওয়ার কথা। এই কাউন্সিলে কি তিনি জাতির পিতার মতো ঘোষণা দেবেন? আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ কি তিনি ছেড়ে দেবেন? প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতিকে যারা দীর্ঘদিন ধরে চেনেন তারা বলছেন, এটা অসম্ভব নয়। কারণ, তিনি এবার নিজেকে দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি থেকে তিনি একজন রাষ্ট্রনায়কে আবির্ভূত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।