নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের রাজনীতি দেখে বিএনপিকে শিক্ষা নিতে হবে। এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। বেগম খালেদা জিয়ার কারাবরণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবি এবং সুশীলরা বলেছেন, বিএনপি যেভাবে এগুচ্ছে। সেই পথে এগুলে বিএনপি ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে পৌছে যাবে। সংগঠন হিসেবে বিএনপির অস্তীত্ব বিলীন হয়ে যাবে। এখান থেকে বাঁচার উপায় কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবিরা বলেছেন,বাঁচার উপায় একটাই। ৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পর আওয়ামী লীগ যেভাবে তার সংগঠনের অস্তীত্ব রক্ষা করেছিল। ঠিক একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে বিএনপিকে। বিএনপিপন্থী একাধিক বুদ্ধিজীবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এরকম মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপিপন্থী অন্যতম বুদ্ধিজীবি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ মনে করেন, বিএনপির বর্তমান যে রাজনৈতিক সংকট এবং সিদ্ধান্তহীনতা। সেই জায়গা থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসতে হবে সাংগঠনিক শক্তির বলেই। এবং নিজস্ব আদর্শ এবং নীতির মাধ্যমেই। বিএনপি যদি তার আদর্শের সঙ্গে সমঝোতা করে বা আপোস করে তাহলে সংকট আরো ঘনিভূত হবে। তিনি এ প্রসঙ্গে উদাহরণ দিয়ে বলেন , ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ এরকম অস্তীত্ব সংকটে পড়েছিল। কিন্তু সেই সময় আওয়ামী লীগ তার অস্তীত্ব সংকট রক্ষার জন্য তাদের শীর্ষ নেতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শেকেই ধারণ করেছিল এবং সেই আদর্শ চর্চার মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগ পুনরজ্জীবিত হয়েছে। আজকে বিএনপিকে নতুন জীবন পেতে হলে সেই আদর্শই অনুসরণ করতে হবে।’
বিএনপিপন্থী অন্যতম বুদ্ধিজীবি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, ‘একটা রাজনৈতিক দলে যখন সংকট তৈরী হয়। তখন সে সংকট থেকে উত্তরনের জন্য তাকে একটা নতুন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে হয়। নেতৃত্বের নির্দেশনায় দলকে পুন:ঘটিত করতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও বিএনপিতে ওরকম নেতৃত্ব নেই।’ তিনি আবারও মনে করেন, বর্তমান সংকট থেকে বিএনপিকে নিজের ভিতর থেকে নেতৃত্ব খুঁজতে হবে। তারেক জিয়াকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও রাজনীতি থেকে অবসরে যেতে হবে। নতুন নেতৃত্বের উন্মেষ না ঘটলে বিএনপির দিক নির্দেশনাহীন এবং দিকভ্রান্ত রাজনৈতিক দল হিসেবেই কালেরগর্ভের বিলীন হয়ে যাবে। ‘
বিএনপিপন্থী আরেকজন বুদ্ধিজীবি ড. এমাজউদ্দীন আহমদ মনে করেন, জিয়ার আদর্শের ভিত্তিতেই হবে বিএনপির পুনরুত্থান পর্ব। বিএনপিকে যদি আজকে আবার একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে সক্রিয় এবং শক্তিশালী হয়ে উঠতে হয়, তাহলে অবশ্যই বিএনপিকে তার নীতি এবং আদর্শের প্রতি অটল থাকতে হবে। তিনি বলেন যে, বিএনপির জনপ্রিয়তা কমেনি। সমস্যা হচ্ছে বিএনপির সাংঠনিক কাজে এবং নেতৃত্বে। বিএনপি জিয়ার রাজনীতির বদলে বিভিন্ন সস্তা রাজনীতির কাছে নিজেদেরকে বিলীন করে দিয়েছে। সেখান থেকে যদি বিএনপি উত্তরণ না করতে পারে। তাহলে এই সংকট মোকাবিলা করা যাবে না। তিনি বলেন যে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এমন সংকট আসে। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর বিএনপি এমন সংকটে পরেছিল। সেই সংকট থেকে আওয়ামী লীগের যে উত্তরন তা থেকেই বিএনপিকে শিক্ষা নিতে হবে। এই শিক্ষা নিতে সবচেয়ে আগে যা দরকার তা হলো দলের আদর্শ এবং নীতিকে সামনে রাখা। বিএনপিপন্থী এই বুদ্ধিজীবি মনে করেন, বিএনপির যে রাজনীতি। সেই রাজনীতি এখন দিকভ্রান্ত। বিএনপি এখন জিয়ার আদর্শ অনুসরণ করছে না। যে কারণে খালেদা জিয়ার বন্দীর পর থেকে বিএনপি যে সংকটে পড়েছে। সেই সংগঠন থেকে উত্তরনের পথ পাচ্ছে না। বিএনপি যখন তার নিজের নীতি এবং আদর্শের পথ অনুসরণ করবে। তখনই তারা সংকটের পথ খুঁজে যাবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।