নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নেই ১৪ দলের। ১৪ দলের একাধিক নেতা ওবায়দুল কাদেরকে ১৪ দলের প্রতিপক্ষ মনে করছেন। তারা মনে করছেন ওবায়দুল কাদেরের জন্যই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৪ দলের দূরত্ব বেড়েছে। এই জোটকে কাদের অকার্যকর করার চেষ্টা করছেন বলেও অনেকের অভিযোগ।
যদিও ওবায়দুল কাদের এসব অভিযোগ আমলে নিতে রাজী নন। বরং ওবায়দুল কাদের মনে করেন ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ১৪ দলের ঐক্য আরো প্রগাঢ় হয়েছে।’ ১৪ দলের একাধিক শীর্ষ নেতা মনে করছেন, ১৪ দলকে নিস্ক্রিয় করা হলে আওয়ামী লীগই সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
আওয়ামী লীগের সাথে ১৪ দলের মনোমালিন্যের সূচনা একাদশ জাতীয় সংসদের মনোনয়ন নিয়ে। ঐ মনোনয়নে আওয়ামী লীগ শরিকদের জন্য আসন ছেড়ে দিয়েছিল তাতে সন্তুষ্ট হয়নি জাসদ এবং ওয়াকার্স পাটি। এই দুই দলই বেশ কিছু আসনে নিজস্ব দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দাড় করায়। আসন বন্টনে শরিকদের বঞ্চনার জন্য ১৪ দলের শরিকরা দায়ী করেন ওবায়দুল কাদেরকে। ১৪ দলের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন ‘আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চাইলেও শরিকদের আরো ৪/৫টি আসন ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি দেননি।’
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিপুল বিজয় অর্জন করে। ৭ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। এই মন্ত্রসভায় ১৪ দলের শরিকদের বাদ দেয়া হয়। এখানেও শরিকদের চোখে ভিলেন কাদের। ১৪ দলের একজন নেতা বলেছেন ‘আওয়ামীলীগের একক মন্ত্রিসভার ধারণাটি ওবায়দুল কাদেরের মস্তিস্ক প্রসূত।’ আওয়ামী লীগ সভাপতিকে তিনি এটা বুঝিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগে কাদের বিরোধিরাই এই মতের সঙ্গে একমত নন। তারা মনে করেন ‘মন্ত্রিসভা থেকে ১৪ দল এবং সিনিয়র নেতাদের বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তটি শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্ত।’
কিন্তু মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়ায় ১৪ দলের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক। তিনি বলেন ‘আওয়ামী লীগের শরিকদের বিরোধি দলেই থাকা উচিত। ’ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যে ১৪ দলে তোলপাড় শুরু হয়। ১৪ দলের অন্যতম নেতা রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন ‘একই প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে শরিকরা বিরোধি দল হতে পারে না।’ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেও মেনন তার অবস্থান এবং ভ‚মিকা নিয়ে ‘বিব্রত’ বলে মন্তব্য করেন। প্রকাশ্যে ১৪ দলের নেতারা তাদের অস্বস্তির কথা বলছেন, আর নিজেদের মধ্যে আলোচনায় তারা ওবায়দুল কাদেরকেই দূষছেন।
১৪ দলের একজন নেতা না প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন ‘ওবায়দুল কাদের সব সময়ই ১৪ দলের প্রতি অনাগ্রহী ছিলেন। ১৪ দলের বৈঠকেও তার উৎসাহ ছিলো না। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৪ দলের দূরত্ব তৈরী করছেন।’
তবে, আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেছেন ১৪ দলের মধ্যে কোন সংকট নেই। ১৪ দল আছে থাকবে-এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। মন্ত্রিসভায় না থাকলেই কষ্ট পেতে হবে কেন? ওবায়দুল কাদের বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।