ইনসাইড পলিটিক্স

হতাশায় ভরপুর এরশাদের জাপা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:৫৫ পিএম, ১১ মার্চ, ২০১৯


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে চলছে বন্ধ্যাত্ব।  জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলের আসনে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থাকলেও বর্তমানে এর সাংগঠনিক কোন কার্যক্রম কোথাও নেই। আগের মত সরগরম নেই কাকরাইলের দলীয় কার্যালয় কিংবা দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়। সবখানেই সুনশান নীরবতা। 

১ জানুয়ারি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনেকটা নীরবে-নিভৃতে চলে গেল। সেটা নিয়েও দলের কোন স্তরের নেতার মাথাব্যথা ছিলনা। ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্রাজেডি নিয়ে প্রতিবছরই জাতীয় পার্টি শোক দিবস কিংবা বনানীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠান রাখলেও এবার তা উপেক্ষিত। সবকিছু মিলিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বে রদবদলের কারণেই নাকি পার্টিতে কোন শৃঙ্খলা নেই। পার্টি চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ অসুস্থ থাকায় তাঁর সহোদর জিএম কাদের পার্টির সাংগঠনিক বিষয়গুলো দেখভাল করছেন। কিন্তু জিএম কাদেরের নেতৃত্ব কোনভাবেই মানছেন না দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতা। আর এ না মানার মূল কারণ পার্টিতে বেগম রওশন এরশাদের নিষ্ক্রিয়তা বলে জানা গেছে। বেগম রওশন এরশাদকে কোনভাবেই পার্টির সাংগঠনিক কর্মকান্ডে যুক্ত করা যাচ্ছে না। তবে বেগম রওশন এরশাদ নিয়মিত সংসদে অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন।

জাপার একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমানে জাতীয় পার্টির মূল সমস্যা হলো এরশাদ-রওশন এরশাদ এবং জিএম কাদেরের নেতৃত্ব। কার নেতৃত্বে জাপা চলবে এটাই এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়। এরশাদের  শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলের সাংগঠনিক কোন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন না সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। দলের নেতারা তার সাথে বারংবার যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাচ্ছেন না।  তাছাড়া জিএম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় বর্তমানে  রওশন এরশাদের সেক্ষেত্রে পার্টিতে কোন ক্ষমতাও নেই।  জিএম কাদেরকে কেউ জাপার নেতৃত্বে মানতে চাচ্ছেন না। তারা বলেন, এ সমস্যার সমাধান না হলে অচিরেই জাপা প্যাডসর্বস্ব দলে পরিণত হবে।

 সূত্রগুলো জানায়, জাপার আরেকটি বড় বাধা মহাসচিব! বর্তমান মহাসচিবকে সিনিয়র কেউ পাত্তা দিচ্ছেন না। কারণ প্রেসিডিয়াম সদস্য যারা আছেন তাদের থেকে অপেক্ষাকৃত অনেক জুনিয়র মশিউর রহমান রাঙা। সাংগঠনিক দক্ষতাও তার কম। সেক্ষেত্রে সবাইকে একত্রিত করে জাপাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে মশিউর রহমান রাঙ্গা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মনে করেন জাপার নেতারা। সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের একটি  গ্রুপও কোনভাবেই রাঙাকে সামনে এগুতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বর্তমানে কুয়াকাটায় তার হোটেল ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। জাপার রাজনীতির সাথে তার তেমন কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। জাতীয় সংসদেও চলছে মনোমালিন্য। সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে মশিউর রহমান রাঙাকে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ নিযুক্ত করায় কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু এবং ফখরুল ইমামরা কোনভাবেই এরশাদের নেতৃত্বকে মানতে পারছেন না। তাদের মতে এখনও বিজ্ঞ সাংসদরা রয়েছেন তাদের উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত দলের জন্য ক্ষতিকর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপার সিনিয়র এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, জাপা এখন ফ্যামিলি পার্টি। ফ্যামিলি পার্টি নিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। তাছাড়া জাতীয় সংসদেও জী হুজুর পার্টির ভূমিকায় আছে। ঐ প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে দল বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

বাংলা ইনসাইডার/এমআর



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার পতনে বিরোধী দলগুলো একাত্ম : ড. মঈন খান

প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ষড়যন্ত্র করছে না। বরং আন্দোলনে একাত্ম। ডান-বাম সবাই তারা প্রকাশ্যে বলছে এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা প্রহসনের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হয়েছে।

 শনিবার (৪ মে) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধি জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিশেষ মোনাজাত করেন নেতারা।

 ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বিএনপির এই আন্দোলন ক্ষমতায় যেতে নয়, ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তনের জন্য। বিএনপি সেই লক্ষ্যে রাজপথে আছে এবং রাজপথে থাকবে।

 এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড রিয়াজ উদ্দিন খান নসু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, ওলামা দলের সাবেক আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, ওলামা দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা আবুল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা ক্বারী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেইনসহ সাবেক কমিটির শতাধিক নেতাকর্মী।

 প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

 আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নতুন প্রজন্মের মন থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকারের সেই অপচেষ্টা সফল হবে না। কারণ জিয়াউর রহমান এদেশের সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের একটি পরিচিত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন করেছিলেন।

 

তিনি বলেন, আবারও ১৯৭৫ সালে সিপাহী জনতার বিপ্লবে দেশের জনগণ দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কখনো ক্ষমতার জন্য লড়াই করেননি। আমরা শুধু নই গোটা দেশের মানুষ তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন।

 

মঈন খান বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে ফের নতুন বাকশাল কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এখানে গণতন্ত্র নেই, মানুষের বাকস্বাধীনতা ও নারীর স্বাধীনতা নিরাপত্তা নেই। আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ সামনে রেখে এগিয়ে যাব এটাই হোক আমাদের প্রত্যয়।


বিএপি   সরকার   পতন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফের বাড়ছে বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মী

প্রকাশ: ০৯:১৬ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎভাবে লাগাতার আন্দোলনে নামে বিএনপি। মূলত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে একদফা দাবিতে টানা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যায় বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোটগুলো। এ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি তারা। একপর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক দল। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন করে বিএনপি। নানামুখী তৎপরতার পরও নির্বাচন ঠেকাতে না পারা বিএনপির আন্দোলনে ভাটা পড়ে। সেই থেকে ধীরে চলছে বিএনপি। নেই রাজপথের কঠোর কোনো কর্মসূচি। সম্প্রতি দলীয় কিছু কর্মসূচিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে বলে দলটির অভিযোগ। বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজপথে জোরালো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও পুরোনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজার ঘটনা দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলছে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য হামলা-মামলা ও গুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। এটা সবাই জানেন যে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সরকার কিন্তু বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। মামলা-মোকদ্দমা আজও শেষ হয়নি। এখনো প্রতিদিন হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত মামলা আছে। গভীর রাতেও গ্রামে-গঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির মকবুল ইসলাম টিপু, ওমর নবি বাবু, মাহবুবুর রহমান টিপু, রফিকুল ইসলাম ময়না, মোহাম্মদ রবিন, মোহাম্মদ সালেহ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিনে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (ভিপি মিজান), জেলা বিএনপি নেতা মোহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর জুরাইন থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মনির মুন্সী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব বাবুসহ গাড়ি চালককে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক আটকের পরও অস্বীকার এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহেদকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।

গত ২৪ এপ্রিল খুলনা জেলা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা খান জুলফিকার আলী জুলু, রুপসার থানার মোল্লা সাইফুর রহমান, পাইকগাছার এনামুল হক, মো. সাহাবুদ্দিন ইজাদার, মো. সাইফুল ইসলাম পাইক, স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. জাকির হোসেন তালুকদার, মো. লায়েকুজ্জামান লাকু, মো. কামাল উদ্দিন, মো. ফরহাদ হোসন, জাসাসের মো. খালিদ লস্কর, ছাত্রদলের জাকারিয়া, মো. তরিকুল ইসলাম রনি, মো. আলমগীর শেখ, যুবদলের ইমরান হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সোহেল গাজী, মো. সোহেল গাজী, মো. ফারুক হোসেন, আমিনুল মল্লিক, মো. শিহাব সরদার, বাদশাহ সরকার, মো. আল আমিন শেখ প্রমুখ।

গত ২১ এপ্রিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ নেতাকর্মীর জামিন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গোলাম হোসেন, মো. মোরসালিন, আবদুল আজিজ, সাবের হোসেন, কালাম, হান্নান খান, আবু কাউসার ভূঁইয়া, হুমায়ুন, আনিসুর রহমান শিপলু, সানি ও ইয়াসিন, মোস্তাক আহমেদ, মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন সিরাজ, সেন্টু আহমেদ সাকি, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, মোহাম্মদ মঈন, যুবদলের ওমর ফারুক, রাজু বল্লম রাজু, মো. রকি, বিএনপি নেতা মো. বিল্লাল, মো. ফালান, মোহাম্মদ রনি, মামুন, সাগর ও শাওন। ১৭ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা সেলিম আহম্মেদ সালেম, কুতুব উদ্দিন এবং রেজাউর রহমান রাজুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তার আগে গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য লতিফুল্লাহ জাফরু, বংশাল থানার মো. মাকসুদ হোসেন এবং মোহাম্মদ আরিফ হাসানের জামিন নামঞ্জুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলার আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদলের মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলার মো. মমিনুল ইসলাম, মো. আরমান আলী, মো. মমিন, মো. হাসিনুর রহমান পায়েল এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবুল মনছুর খান দিপক। এর আগে গত ১ মার্চ বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর সদর ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির ৫২ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৮ মার্চ তারা ছাড়া পেয়েছেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিনা কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে যেতে হচ্ছে। কারাগার যেন তাদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দীর্ঘ তিন-চার মাস কারাগারে থেকে বেরোলেন। এখনো কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। তাদের জন্য দিনের আলো ও মুক্ত বাতাস গ্রহণ যেন নিষিদ্ধ। এদের প্রায়ই কারাগারের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এভাবে নেতাকর্মীদের কারাগারে ঢুকানো, গুম ও খুন করা এই কর্মসূচি যেন সরকারের শেষ হচ্ছে না। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। কারণ তিনি জানেন তার জনসমর্থন নেই। সরকার যতই বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন করুক না কেন, একদিন এর বিচার হবেই। সব অন্যায়ের রেকর্ড আছে। তাদের শেষ রক্ষা হবে না।

জানা গেছে, ঈদের আগে সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তফা কামাল হৃদয়, এসএ খোকন, উত্তরা থানার আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান আত্মসমর্পণের পর কিছুদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ অনেকে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, গত বছরের ২৬ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় তার স্বামী খোকনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। একই মামলায় এ পর্যন্ত অনেক আসামির জামিন হলেও খোকনকে জামিন না দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ খোকন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, পায়ে পানি ধরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। অবিলম্বে স্বামী খোকেনর মুক্তি দাবি করেন শিরিন সুলতানা।

সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ বলেন, মিথ্যা মামলায় পুলিশি হয়রানির কারণে আমি তো ঘরে থাকি না। তবু কেউ কেউ আমার বাসার সামনে ও বিল্ডিংয়ের ছাদে, কেউ আবার ভাঙাড়ি সেজে, মনিটরিং করে। আমি তো চোর বা ডাকাত নই। আমার দল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং জুলুমের বিপক্ষে লড়ছে। আমি সেই দলেরই (বিএনপি) একজন।


বিএনপি   কারাবন্দি   নেতাকর্মী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরাও তারেকের ওপর বিরক্ত

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের জন্য বিএনপি কমবেশি অন্তত ৫০ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় বৈঠক করেছিল। এই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। 

২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপি তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন ভালোই জমিয়ে তুলেছিল। এই সময় এই দলগুলোকে নিয়ে একটি জোটবদ্ধ আন্দোলন করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত জোটবদ্ধ আন্দোলন হয়নি। বরং সবাই তাদের নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির হঠকারিতা এবং ভুল রাজনীতির কারণে আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। 

নির্বাচনের পর শরিকদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে নির্বাচনের পরও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছিলেন শরিকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আন্দোলনের সঙ্গীদের বিশ্বাস করতে পারেননি। আর এই অবিশ্বাসের কারণে এখন শরিক দলগুলো মোটামুটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। বিএনপির সাথে তাদের যোগাযোগ আলগা হয়ে গেছে। আর সে কারণেই এখন বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে তাদের উৎসাহ নেই। অনেকেই এখন ঘরে উঠেছেন এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে তারা বিরক্ত হয়েছেন। এবং বিএনপির সঙ্গে নতুন করে যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই আন্দোলনের অন্যতম অংশী ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি অত্যন্ত সরব ছিলেন এবং এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তিনি বিএনপির অন্যতম পরামর্শক হিসেবে বিবেচিত হতেন। কিন্তু এখন তিনি লাপাত্তা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, মাহমুদুর রহমান মান্না তারেক জিয়ার ওপর অত্যন্ত বিরক্ত এবং বিএনপির কৌশল নিয়েও তিনি হতাশ। আর এ কারণেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। একই অবস্থা জেএসডির নেতা আ স ম আবদুর রবের। আবদুর রব মনে করছেন যে, বিএনপির রাজনীতির কৌশলই ভুল ছিল এবং এখন এই কৌশলের মাসুল দিতে হচ্ছে গোটা দেশকে। বিএনপি একদিকে যেমন সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না, অন্যদিকে শরিকদেরকেও বিশ্বাস করছে না। আর এ কারণে বিএনপির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন এই নেতা।

শরিকদের মধ্যে অন্যতম ছিল ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ। তারাও এখন নিজের আলাদা অবস্থান থেকে রাজনীতি করছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তারা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে নুর বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। 

শরিকদের যারা বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছিল তাদের মধ্যে একমাত্র জোনায়েদ সাকি ছাড়া কেউই বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছেন না। বরং বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। 

অন্যদিকে বিএনপির আদর্শিক জোট জামায়াত মাঝখানে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কিন্তু আবার ঘনিষ্ঠতায় ছেদ ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান অভিযোগ হলো তারেকের উদ্ভদ বিভ্রান্তিমূলক এবং অরাজনৈতিক সূলভ সিদ্ধান্ত। শরিকদের মধ্য থেকে একাধিক নেতা বলেছেন, তারেক জিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক পরিপক্কতার অভাব রয়েছে। হুটহাট তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিণতি এবং সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নেন। একজন রাজনৈতিক নেতার যে গুণাবলি থাকা উচিত তা কিছুই তার মধ্যে নেই। আর এ কারণেই শরিকরা এখন বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। একদিকে যেমন বিএনপির দলের মধ্যে হতাশা অন্যদিকে শরিকরাও এখন বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছে না।


বিএনপি   তারেক জিয়া   মাহমুদুর রহমান মান্না  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির সরব নেতারাও এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির আন্দোলন এখন হতাশার চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা। আর এই হতাশা এখন সংক্রমিত হয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে। স্থায়ী কমিটির নেতারা এখন নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন এবং হতাশায় তারা আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন;

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে যাচ্ছেন ওমরাহ পালন করতেন। তিনি দুদিন আগেই পয়লা মে জনসভায় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মে দিবসের জনসভায়। আর সেই ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সৌদি আরবে চলে গেলেন। দলের মূল চালিকাশক্তি যখন বিদেশে চলে যান তখন দলে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং হতাশা তৈরি হয় এটাই স্বাভাবিক। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা স্বীকার করেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন মানসিক ভাবে দলের নেতৃত্ব এগিয়ে নিতে প্রস্তুত নন। তিনি বারবার নেতাকর্মীদের কাছে বলছেন, আমি থাকতে চাচ্ছি না। আমাকে জোর করে রাখা হচ্ছে। অনীহা সত্ত্বেও বিকল্প কোন মহাসচিব না করার কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এখনও রাখা হয়েছে। আর তিনি দলে যতটা না সময় দিচ্ছেন তার চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে।

বিএনপির বিভিন্ন নেতা মনে করেন যে, আন্দোলনের ব্যর্থতা এবং ভুল নেতৃত্ব, তারেক জিয়ার বাড়াবাড়ি ইত্যাদি কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম হতাশ এবং এ কারণেই তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। নির্বাচনের আগেও ২৮ অক্টোবর আগ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যেভাবে সরব এবং সক্রিয় দেখা গিয়েছিল এখন তার ছিঁটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না এবং এটি বিএনপির মধ্যে একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: কারাগার থেকে বের হওয়ার পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। বিভিন্ন দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগদান ছাড়া আনুষ্ঠানিক বিভিন্ন কর্মসূচি ছাড়া তাকে খুব একটা দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে চলে গেছেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, তিনি দলের কার্যক্রমে বিরক্ত হতাশ। এ কারণে তিনি তার সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনি কারাগার থেকে বেরোনোর পর খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না। 

নজরুল ইসলাম খান: নজরুল ইসলাম খান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই সময় নজরুল ইসলাম খানকেও খুব একটা পাদপ্রদীপে দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তিনি থাকছেন না। নজরুল ইসলাম খান অবশ্য বলছেন, শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ। যতটুকু তার পক্ষে সম্ভব ততটুকু চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিএনপির নেতারাই বলছেন, নজরুল ইসলাম খানকে তারা যে অবস্থায় দেখেছেন অতীতে তার ধারেকাছেও এখন তিনি নেই। 

মির্জা আব্বাস: মির্জা আব্বাস বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা এবং ঢাকা মহানগরীর অন্যতম চালিকাশক্তি মনে করা হয় মির্জা আব্বাসকে। কিন্তু মির্জা আব্বাসও এখন নিষ্ক্রিয়। কারাগার থেকে বেরোনোর পর তার কর্মসূচি তিনি সীমিত করেছেন। এখন দলের কার্যক্রমে তাকে উদ্যোগী দেখা যায় না। উদ্যোগ নিয়ে তিনি কোন কিছু করেনও না। দলের যে সমস্ত কর্মসূচি গুলো ঘোষিত হয় সেখানে রুটিন উপস্থিতির মাধ্যমে তিনি তার দায়িত্ব সম্পন্ন করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক জন সদস্য। কিছু দিন আগ পর্যন্ত তাকে অত্যন্ত সরব দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন তিনি আস্তে আস্তে যেন পর্দার আড়ালে চলে যাচ্ছেন। তাকে কোন আগ বাড়িয়ে কর্মসূচি পালনের জন্য দেখা যাচ্ছে না। কোন বিবৃতি দিতেও তিনি আগ্রহী নন। এক ধরনের হতাশা থেকে তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।

স্থায়ী কমিটির পাঁচ জন সদস্য অনুপস্থিতি। আর পাঁচ জনের অবস্থা এ রকম। কয়েকজন একেবারেই অসুস্থ। এই অবস্থায় বিএনপি এখন স্থায়ী কমিটি শূন্য হয়ে পড়ছে। 

বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বেপরোয়া মন্ত্রী-এমপিরা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

আগামী ৮ মে যে ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে সেখানে প্রায় ৭০ টিতেই মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তি রয়েছেন। সেই পছন্দের ব্যক্তিদেরকে জেতাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশনও এদের নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং নির্বাচন কমিশন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকানোর জন্য করণীয় নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে। 

একাধিক উপজেলার খবর নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে জেতানোর জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। যেমন, তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নানা রকম পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে নির্বাচনে যারা প্রতিপক্ষ রয়েছে তাদেরকে নানা রকম হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ভোটারদের ভীতি দেখানোর জন্য সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সমস্ত প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্র-এমপিদের স্বজন এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে জেতানোর জন্য নির্বাচনের উৎসবমুখর আমেজ ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। 

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে একটি নমনীয় এবং সহনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের বহু মন্ত্রী-এমপির আত্মীয় স্বজনরা আগে থেকেই রাজনৈতিক দল করে এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন কমিটিতে আছে। তাদেরকে আমরা কীভাবে নির্বাচন করতে বাধা দেব। তার এই বক্তব্যের পর চাপে থাকা মন্ত্রী-এমপিরা এখন যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। 

তারা মনে করছেন যে, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচনে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আপাতত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, সেহেতু এখন তাদেরকে জিতিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা যেতে পারে। আর এই কারণেই তারা একের পর এক উপজেলাগুলোতে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। নিজস্ব প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা এলাকায় নানারকম কৌশল গ্রহণ করছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে তাদের পক্ষে আনার জন্য প্রলুদ্ধ করছেন। যা তাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে উপজেলা নির্বাচন এখন কার্যত আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। 

তবে আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা বলছেন, এটা আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ নেতার লড়াই না। উপজেলা নির্বাচন এখন আসলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপির পছন্দের প্রার্থীর সাথে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীর লড়াইয়ের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যেখানে তৃণমূল শক্তিশালী সেখানে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবোধ করতে পারছেন। যেখানে তারা শক্তিশালী নন সেখানে মন্ত্রী-এমপিদের কাছে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন