নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ এপ্রিল, ২০১৯
বেগম খালেদা জিয়ার সম্মতি পেলেই সংসদে যাবে বিএনপির নির্বাচিত ছয় সংসদ সদস্য। কারাবন্দী বেগম জিয়ার মতামত নিতে খুব শিগগিরই বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যাচ্ছেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছেন বিএনপি নেতারা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই একদিনের মধ্যেই তাদের বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বেগম জিয়াকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়। সেখানে ৬২১ নম্বর কেবিনে তিনি অবস্থান করছেন। সরকার এবং বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সমঝোতার অংশ হিসেবেই বেগম জিয়াকে বঙ্গবন্ধুতে আনা হয়েছে। বেগম জিয়ার প্যারোলের শর্তগুলোর মধ্যে একটি হলো বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়া এবং সংসদে যোগ দেওয়া। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি থেকে যারা শপথ নেননি, তাদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শপথ নিতে হবে, না হলে তাদের আসন শূন্য ঘোষিত হবে। ইতিমধ্যেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুজন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এবং মোকাব্বির খান শপথ নিয়েছেন। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আজ বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ‘আমি আশা করছি খুব শিগগির জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাকিরাও শপথ নেবে। এই প্রক্রিয়া চলছে।’
জানা গেছে, বিএনপির নির্বাচিত এমপিরা শপথ নেবেন, এই শর্তেই বেগম জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়েছে। বেগম জিয়ার প্যারোলের ব্যাপারে যে পাঁচ শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো-
১. বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন এবং সংসদীয় কার্যক্রমে যোগদান করবেন।
২. তারেক জিয়া দলের দায়িত্ব থেকে সরে দাড়াবেন।
৩. বিএনপি আনুষ্ঠানিক ভাবে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করবে।
৪. প্যারোলে মুক্ত হয়ে বেগম জিয়া কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন না।
৫. বেগম জিয়া বিদেশে যাবেন না।
জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের সঙ্গে সমঝোতার কাজটি করছেন। তার অনুরোধেই সমঝোতা আলোচনাকে এগিয়ে নিতে, বেগম জিয়া শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুতে আসতে রাজী হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির বেশ ক’জন শীর্ষ নেতাই প্যারোলে সমঝোতার শর্তগুলো সম্পর্কে জানেন। তবে, এদের অনেকেই এই শর্ত শেষ পর্যন্ত বেগম জিয়া মানবেন না বলে মনে করছেন বিএনপির অনেক নেতা। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন, দ্বিতীয় শর্তেই আটকে যাবে সমঝোতা। কারণ, তারেক জিয়াকে বিএনপি থেকে বাদ দেয়ার ক্ষমতা এখন বেগম জিয়ারও নেই। তবে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এনিয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের কয়েক দফা কথা হয়েছে। বেগম জিয়াও এখন তারেক জিয়াকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরাতে চান। বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে যে সিনিয়র নেতারা যাবেন, তারাও আপাতত: তারেক জিয়া মুক্ত বিএনপি চান। কিন্তু এসব সমঝোতায় বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সমস্যা হলো তিনি শেষ পর্যন্ত হঠাৎ করে মত বদলে অনড় হয়ে যান।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।