নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২০ মে, ২০১৯
দলের অনেক সিনিয়র এবং ত্যাগীদের পিছনে ফেলে সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন রুমিন ফারহানা। বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠ সেলিমা রহমান, বিএনপির রাজনীতিতে জনপ্রিয় শামা ওবায়েদ কিংবা রাজপথের লড়াকু নিপুণ রায় চৌধুরীকে হটিয়ে টকশো করেই পরিচিতি পাওয়া রুমিনের মনোনয়ন বিএনপিতেও বিস্ময় ছড়িয়েছে। জানা গেছে, লন্ডন থেকে তারেক জিয়াই রুমিনের মনোনয়ন চুড়ান্ত করেন। রুমিনের রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভাষাসৈনিক অলি আহাদের কন্যা, ব্যাস এতটুকুই। তিনি পরিচিতি পান টকশো করে।
এখন দেশের রাজনীতি নেই। নেতা হওয়ার জন্য এখন সংগঠনের জন্য কাজ করতে হয় না। সারাদেশ চষে বেড়াতেও হয় না। নেতা হতে এখন জনগণের কাছে যেতেও হয় না। নেতা হতে চাই কয়েকটি টকশোতে অংশগ্রহণ করা। টকশো করেই মন্ত্রী বা এমপি হওয়ার সংখ্যা কম নয়। টকশো করেই আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের মতো দলের মনোনয়ন পান অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম। এমপি হওয়ার পর প্রথম ধাক্কাতেই হয়েছেন পূর্ণমন্ত্রী। বর্তমানে গৃহায়ন এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা এই মন্ত্রী সুপ্রীম কোর্টে আওয়ামী ঘারানার রাজনীতির সঙ্গেই শুধু খানিকটা জড়িত ছিলেন। এছাড়াও চট্টগ্রামের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী আলোচনায় আসেন টকশো করে। টকশোর বদৌলতেই তিনি চটজলদি উপমন্ত্রী হয়েছেন বলে ধারণা অনেকের।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম পেশায় ব্যবসায়ী। ২০০৮ সালে এমপি হন বটে কিন্তু পরিচিতি পাননি। ২০১৪-র পর তিনি টেলিভিশন মুখী হন। বিভিন্ন টকশোতে তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এবার তার পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন। প্রথম ধাক্কাতেই পূর্ণমন্ত্রী। তাও আবার স্থানীয় সরকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়।
নিউইয়র্ক জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির, চাকরি শেষ করে দেশে ফেরেন বর্তমান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ.কে আবদুল মোমেন। এরপর তিনি বসে থাকেননি। এলাকায় যান আর না যান, টকশোতে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন বিরামহীন। আর তার পুরস্কার তো পেলেন নগদ নগদ।
২০০৮ সালের নির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন শাহরিয়ার আলম। এরপর বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশনে নিয়মিত সরব ছিলেন। ২০১৪তে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। অবশ্য শুধু মন্ত্রী এমপি নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সরকারি ভালোপদ কিংবা ভালো পোস্টিং এর জন্যও অনেক টকশোতে অংশ নেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য একজন সাবেক ভিসিকে টেলিভিশন পর্দায় সরব দেখা যাচ্ছে। তবে টকশো করে যে সবার ভাগ্য খোলে এমন নয়, এমন অনেকে আছেন (দুই দলেই) যারা টকশোতে গলা ফাটিয়েই দলের নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ লাভ করতে পারেননি।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।