নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৭ জুন, ২০১৯
টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারে ক্রমাগতই আমলাদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই দৃশ্যমান হচ্ছে। আমলাদের কাছে ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়া উপদেষ্টারা এখন কর্তৃত্ব ফিরে পেতে প্রানন্ত চেষ্টা করছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরে উপদেষ্টা মন্ডলী গঠন করে। প্রথম মেয়াদে উপদেষ্টা মন্ডলী ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং মন্ত্রী পরিষদের চেয়েও উপদেষ্টামণ্ডলীর ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব অনেক বেশি ছিল। উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যরা কেবিনেট মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতেন। পরে এনিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেন মন্ত্রী পরিষদে থাকা দলের হেভিওয়েট নেতারা। উপদেষ্টারা মন্ত্রিসভায় থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে সমালোচনা করেন। তারা বলেন যে, উপদেষ্টারা যেহেতু শপথ গ্রহণ করেন না। গোপনীয়তার শপথ পাঠ করেন না। সেজন্য তাদের মন্ত্রিসভায় থাকার যৌক্তিকতা নেই। এই বাস্তবতায় মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়া হয়। বাদ দেওয়া হলেও সে সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মণ্ডলী। দ্বিতীয় মেয়াদে হেভিওয়েট নেতারা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্তি হলে উপদেষ্টা মণ্ডলীর ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব কিছুটা হলেও খর্ব হয়। তারপরও উপদেষ্টা মণ্ডলী কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারনী বিষয়ে আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। তৃতীয় মেয়াদে এসে উপদেষ্টা মণ্ডলীর ক্ষমতা খর্ব করছেন মন্ত্রীরা নয়, বরং আমলারা। জানা গেছে, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সামরিক বিষয়ক উপদেষ্টা জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দীকি ছাড়া অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে আমলাদের নীতি নির্ধারণী বিষয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় মত ভিন্নতা তৈরী হচ্ছে। এক্ষেত্রে কয়েকজন আমলার নাম উঠে আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদরা এখন প্রধানমন্ত্রীকে এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং নীতি নির্ধারনী বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এদের ক্ষমতা মন্ত্রীদের চেয়ে বেশি বলেও সরকারের মধ্যে গুঞ্জন শোনা যায়। প্রধানমন্ত্রী অনেক নীতি নির্ধারনী বিষয়ে মন্ত্রীদেরকে আড়ালে রেখে এই গুটিকয়েক আমলার সঙ্গে পরামর্শ করেন বলেও বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। এর ফলে উপদেষ্টারা উপেক্ষিত হচ্ছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে।
উপদেষ্টাদের মধ্যে রাজনৈতিক এবং নীতি নির্ধারণী বিষয়ে যিনি সম্পৃক্ত তিনি হলেন এইচ টি ইমাম। এইচ টি ইমাম এই মেয়াদে এসে আমলাদের কাছে প্রায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও এইচ টি ইমামের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে না বলেও একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
অন্যদিকে অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান গত মেয়াদেও প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শদাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসে তিনিও আমালাদের সঙ্গে দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে।
অন্যদিকে ড. গওহর রিজভীর ভূমিকা আগের মত থাকলেও নীতি নির্ধারনী ক্ষমতার দৌড়ে পররাষ্ট্র সচিব অনেকটা এগিয়ে গেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায়। এরফলে সরকারে আমলা এবং উপদেষ্টাদের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য বিভিন্ন মহল মনে করছে এটা আমলা এবং উপদেষ্টাদের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই না, এটা সাবেক আমলাদের সঙ্গে বর্তমান আমলাদের লড়াই। এই লড়াইটি সবসময় ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে একটি চিরন্তন বিষয়। কারণ সাবেকরা সমসময় নীতি নির্ধারনী ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে চান কিন্তু নতুনরা একটি পরিমন্ডল তৈরি করে থাকনে যে পরিমণ্ডলে তাঁদের প্রবেশগমতা ক্রমশ হ্রাস পায়। টানা ক্ষমতায় থাকার ফলে বর্তমান আমলাদের কৌশলের কাছে হেরে যাচ্ছে সাবেক আমলারা।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।