নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ১২ জুলাই, ২০১৯
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর সরকারের ওপর তেমন কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই। কিন্তু একাধিক গোয়েন্দা সূত্র সরকারকে জানিয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে নিত্যনতুন ষড়যন্ত্র চলছে এবং দেশের চেয়ে দেশের বাইরে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট, সরকারকে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার হিসেবে প্রতিপন্ন করার জন্য সক্রিয় একটি মহল কাজ করছে।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এরকম ৯জনের একটি নামের তালিকা সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে দিয়েছেন। যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারের ইমেজ এবং ভাবমূর্তি নষ্ট, সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার এবং কুৎসা রটানোর জন্য কাজ করছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
এ তালিকার মধ্যে যাদের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ড. কামাল হোসেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকায় সুজনের উদ্যোগে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সংলাপে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে এই নির্বাচনে সুস্পষ্টভাবে কারচুপি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে এই আলোচনাগুলোকে বহির্বিশ্বে, বিশেষ করে প্রভাবশালী দেশগুলোতে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছেন ড. কামাল হোসেন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা গেছে যে, মার্কিন সিনেট এবং কংগ্রেসের কাছে এই গোলটেবিল বৈঠকের ক্লিপিংসগুলো পাঠানো হয়েছে। এই পাঠানোর কাজে সহায়তা করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সূত্রমতে, ইউনূস সেন্টারের অন্তত দুইজন কর্মকর্তা সরকারের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলে দেনদরবার করছেন। যেন তারা এই নির্বাচনের ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
ড. কামাল হোসেনও নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। তাদের কাছে এই নির্বাচনের ব্যাপারে নানা নেতিবাচক তথ্য তুলে ধরছেন। সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার পর তিনিও তৎপর হয়ে উঠেছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতে সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম অভিযোগ উত্থাপন করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারতের একাধিক প্রভাবশালীর কাছে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি চিঠি লিখেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে তিনি মানবতা লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।
ড. বদিউল আলম মজুমদার তার সুজনের তত্ত্বাবধানে সারাদেশে সরকারের বিরুদ্ধে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে ব্যস্ত। আন্তর্জাতিক মহলে তিনি এই তথ্য উপাত্তগুলো সরবরাহ করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সরকারের উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে বাংলাদেশের উন্নয়ন টেকসই নয় এবং অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে যে বৈষম্য বাড়ছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতার ব্যাপারে নেতিবাচক কুৎসা রটনা করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একই অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। মাহফুজ আনামও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যম বিষয়ক সংস্থায় নিয়মিত লবিং করছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে টিআইবি সরাসরি সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতির ব্যাপারে গবেষণার নামে তদন্ত এবং সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য কাজ করছে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই ব্যক্তিদের ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য যে প্রচারণাগুলো চলছে সেই ব্যাপারে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।