নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ১৩ জুলাই, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি, সঠিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ যখন উর্ধ্ব গতিতে উন্নয়নের মহাসড়কে অগ্রসর হচ্ছে, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ প্রকল্প সম্পর্কে সাম্প্রতিককালে অপপ্রচার শুরু করেছে একটি মহল। গত ২দিন আগে এরূপ একটি অশনি সংকেতের কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের। দেখা গেল অপপ্রচার সম্পর্র্কে তার ধারনা সঠিক। পরদিনই র্যাব পদ্মা সেতু নিয়ে অপপ্রচার চালানোর দয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর কোন স্বপ্ন নয়। ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে অনেক অংশ। নিজ অর্থায়নে এত বড় অংকের পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বক্ষমতার একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত। স্বাধীনতা লাভের পরপরই এ দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল শূন্য, এখন প্রায় ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থনীতির আকার ছিল ৮ বিলিয়ন ডলার, এখন প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগের হার ছিল জিডিপির প্রায় ৯ভাগ, এখন ৩২ ভাগের বেশী এবং রপ্তানী আয় ছিল ০.৭ বিলিয়ন ডলার, এখন তা ৪৭ বিলিয়ন ডলার। জিডিপি প্রবৃদ্ধি (৭.৮৬), গড় আয়ু (৭২.৮ বছর), শিক্ষার হার (৭২.৮%), নবজাতক মৃত্যু প্রতি হাজারে (২৮.২ জন), নারীর ক্ষমতায়ণসহ মানব উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ এখন প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের উপরে। কর্মক্ষম জনশক্তির প্রাপ্যতা, দক্ষতা, প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং উন্নয়নের অন্যান্য উপাদানের উপর ভিত্তি করে লন্ডনের প্রখ্যাত অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Pricewaterhousecoopers(Pwc) আগামী দিনের বিশ্ব কেমন হবে এ বিষয়ে `World in 2050’ শীর্ষক প্রতিবেদনে পেশ করেছে, সেখানে উল্লেখ্য করা হয়েছে যে আগামী বছরগুলোতে পৃথিবীতে যে ০৩টি দেশ দ্রুত গতিতে উন্নতি করবে, তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ।
উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুত গতিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বহুমুখী বিভিন্ন কর্মসূচী/প্রকল্পের মধ্যে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প অন্যতম। বর্তমান নাম আমার বাড়ী আমার প্রকল্প। প্রায় ৬০ লক্ষ দরিদ্র পরিবারের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা সৃষ্টি, স্বল্প সুদে মৌসুমী ঋণ প্রদান, কৃষি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতি বাড়ীকে আধুনিক কৃষি খামারে রূপান্তর ও দারিদ্র বিমোচন হচ্ছে প্রকল্পের লক্ষ্য। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের গতি এসছে। সদস্যবৃন্দ প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা সঞ্চয় করেছেন। পকল্পের কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। প্রকল্পের কার্যক্রমের পাশাপাশি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক পরিচালনার জন্য জুন/২০১৬ সালের পূর্বে গঠিত ৪০২১৫ টি সমিতি, জনবল ও সম্পদ ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাংক ৪৮৫ টি শাখায় অন-লাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তৃণমূল পর্যায়ে ডিজিটাল লেনদেন পরিচালনার জন্য প্রত্যেক সমিতিতে ২ জন করে লেনদেন ম্যানেজার (সমিতির সদস্য) নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে। জনবলের ঘাটতি থাকায় খেলাপী ঋণের হার বেড়েছিল। জনবল সমস্য সমাধান হওয়ায় সে হারও নামছে সন্তোষজনক গতিতে। স্থানান্তরিত জনবলের পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্যাংকের ও প্রকল্পের এ উন্নয়নের সময়ে হঠাৎ করে কিছু কর্মকর্তা ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করে ঢাকায় এসে স্থায়ী হওয়ার দাবীসহ ৭ টি দাবী নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছে। ফেসবুকে আবার এ আন্দোলনে গতি প্রদানের জন্য কর্মকর্তা/কর্মচারী পাশাপাশি কিছু অনাকাঙ্খিত ব্যাক্তি সংযুক্ত, যা সঙ্গত কারনেই প্রশ্নের সৃষ্টি করে।
দাবীর মধ্যে আছে ব্যাংকে জনবলের স্থায়ী নিয়োগ। ব্যাংক সূত্রে জানা যায় জুন/২০১৬ মাসের পূর্বে নিয়োগকৃত ৫৩৬৮ জন জনবলের মধ্যে ৪৭৫৬ জন ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়ে স্থায়ী নিয়োগ হয়েছে। অবশিষ্ট ৬১২ জনের শৃঙ্খলাজনিক কারণে ও লো-পারফরমেন্সে কারণে স্থানান্তরিত হয়নি। তারা পর্যায়ক্রমে স্থানান্তরিত হবেন। পদোন্নতির কার্যক্রমও বাস্তবায়ন পর্যায়ে। পদোন্নতি নীতিমালা মন্ত্রণালয়ে চুড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অন্য দাবীসমূহের মধ্যে প্রধান হচ্ছে চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদারের পদত্যাগ বা অপসারণ। আন্দোলনকারীগণের প্রতিনিধিবৃন্দ গত ১০/০৭/১৯ তারিখ এসব দাবী নিয়ে ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এম.ডি জনাব আকবর হোসেনের সাথে আলোচনা করেছেন। তাদের দাবী চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবী মানা হলে তাদের অন্য দাবীর প্রতি আগ্রহ নেই।
অর্থাৎ দাবী হচ্ছে, চেয়ারম্যানের অপসারণ বা পদত্যাগ। কিন্তু কি কারনে তা বোধগম্য নয়। ফেসবুকে এ আন্দোলন বেগবান করার জন্য কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে যাদের পোষ্ট দেখা যায়, এর মধ্যে একজন হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, যিনি এ প্রকল্প ও ব্যাংকের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার একাধিক পোষ্টে এ আন্দোলনকে বেগবান করার আহবান আছে। সাথে আছে এ্যডভোকেট সিদ্দিক নামের একজন। প্রকল্প সূত্রে জানা যায় এ্যডভোকেট সিদ্দিকের প্রযোজনায় প্রকল্পের নামে “কিস্তির জ¦ালা” নামে একটি পূর্নদৈর্ঘ চলচ্চিত্র তৈরী করা হয়েছিল। তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া প্রকল্প থেকে কোন অর্থ না নিয়ে কিভাবে এ চলচ্চিত্র তৈরী করেছেন তা অজানা। চলচ্চিত্র মাঠ পর্যায়ে সিনেমা হলে মুক্তি প্রদানের পূর্বক্ষণে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে বাধা দেওয়া হয় বলে জানা যায়। কিস্তির জ¦ালা সিনেমার কিছু অংশ ইউটিউবে আছে। দেখা যায় সেখানে এনজিওদের কার্যক্রম সম্পর্কে অনেক নেতিবাচর কথা বলা হয়েছে এবং পুলিশ দরিদ্র মানুষের বাড়ীঘর ভেঙ্গে এনজিওদের ঋণ আদায় করছে। প্রকৃতপক্ষে পুলিশ এসব কাজ করেনা এবং এনজিওদের উন্নয়ন কার্যক্রমে দৃশ্যমান অবদান আছে। কাজেই এই সিনেমা প্রচার করতে না দেওয়াই যৌক্তিক ছিল। প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত এ সিনেমার আর্থিক উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন আছে, আর এসব কারণেই এ আন্দোলনে এ্যডভোকেট সিদ্দিক সম্পৃক্ত হয়েছেন।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা আন্দোলন করতে পারেন না বা ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারেন না। কিন্তু গত ০৮/০৭/১৯ তারিখের ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যাংকের ৪৮৫ টি শাখার মধ্যে ১৬৬ টি শাখার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং খোলা হয়নি। অন-লাইনে ব্যাংকিং খোলার পাসওয়ার্ড আছে শুধুমাত্র শাখা ব্যাবস্থাপকের কাছে। তিনি অন-লাইন কার্যক্রম খোলেননি বলে এসব শাখায় কোন লেনদেন করা সম্ভব হয়নি বা হচ্ছেনা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দরিদ্র মানুষ যাদের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। কাজেই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও আমার বাড়ী আমার খামার প্রকল্পসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বিশেষ উদ্যেগ বিঘ্নিত করার জন্য কারা কি কারনে কাজ করছেন তা জরুরী ভিত্তিতে সনাক্ত করে এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।
তবে সৌদি আরবের প্রবাসী বিএনপির নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন যে, যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরব সফরে গেছেন এবং যেহেতু তিনি মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠ পূর্বপরিচিত ও রাজনৈতিক সহকর্মী, সে কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সপরিবারে নৈশভোজে দাওয়াত দিয়েছিলেন। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ফালুর বৈঠক লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। তারেক জিয়ার সঙ্গে ফালুর বিরোধের খবর বিএনপিতে অজানা নয়। বিশেষ করে তারেক জিয়ার অনাগ্রহ এবং আপত্তির কারণেই মোসাদ্দেক আলী ফালু রাজনীতি ছেড়েছেন বলেই অনেকে মনে করেন।
মোসাদ্দেক আলী ফালু ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার দেহরক্ষী। পরে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় এবং সেই ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরেই ১৯৯১ সালে বেগম জিয়া ক্ষমতায় আসার পর তাকে একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন। একান্ত সচিব হলেও ক্ষমতাকেন্দ্রে মোসাদ্দেক আলী ফালু তখন থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।
অনেকেরই ধারণা যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে অবৈধ সম্পদ তার একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে মোসাদ্দেক আলী ফালু। মোসাদ্দেক আলী ফালু বাংলাদেশে এনটিভির মালিক। আইএফআইসি ব্যাংকে তার শেয়ার রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু শিল্প কলকারখানায় তার বিনিয়োগ রয়েছে। এই সমস্ত বিনিয়োগের অর্থ বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বলে একাধিক সূত্র দাবি করে। যদিও এ ব্যাপারে মোসাদ্দেক আলী ফালু সবসময় অস্বীকার করে আসছিলেন।
এক এগারোর সময় দুর্নীতির অভিযোগে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং এই মামলাগুলো যখন বিচারিক আদালতে ওঠে তখন ফালু পালিয়ে সৌদি আরবে যান। এখনও তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
এর মধ্যে বিএনপিতেও তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়। তারেক জিয়া যখন বিএনপিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন মোসাদ্দেক আলী ফালুকে অপাংক্তেয় করা হয়। তাকে একটি অসম্মানজনক পদ দেওয়া হয়েছিল সর্বশেষ কাউন্সিলে। এই পদ প্রাপ্তির পর মোসাদ্দেক আলী ফালু অভিমান করেন এবং তিনি বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাগ করেন। যদিও ফালুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখনও খালেদা জিয়ার সমর্থকরা এবং তারেক জিয়া বিরোধীরা নিয়মিত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন নেতা কর্মীদের বিপদে আপদে তিনি সহযোগিতা করেন বলেও জানা গেছে।
ফালুর একটি আলাদা প্রভাব বলয় রয়েছে বিএনপিতে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যখন বিএনপির অনেকেই সোচ্চার, বিশেষ করে তার অদূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন, তখন অনেকেই নতুন করে ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যয় ছাড়াও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ মোসাদ্দেক আলী ফালুই করে থাকেন বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে।
আর এই কারণেই বিএনপিতে ফালু না থেকেও আছেন। ফালু এখনও বিএনপিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই অনেকে মনে করেন। আর এ কারণেই তারেক জিয়ার চক্ষুশূল মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক নতুন করে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন তারেক জিয়ার উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। আর একারণেই ফালুর সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠতা তিনি ঝালাই করে নিলেন।
তবে অনেকেই মনে করেন যে, এটি একটি স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাৎ। বিদেশে গেলে নিকটজনের সাথে সাক্ষাৎ করলে একটা অন্যরকম আমেজ পাওয়া যায়। সেজন্যই ফালুর সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হয়েছিলেন মির্জা ফখরুল।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন ছাড়া অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই নির্দেশনা শোনেননি।
এরপর গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আত্মীয় স্বজনের বিষয়টি ব্যাখ্যা দেন এবং এ ব্যাপারে তার অবস্থান তিনি জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় দেখা যায় যে, আত্মীয় স্বজন বলতে তিনি মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের কথাই বুঝিয়েছেন এবং তারা যেন একই পরিবার থেকে সবগুলো জায়গায় প্রার্থী না হন সেরকম একটি বার্তা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। এটি একটি সতর্কবার্তার মত, কোন নিষেধাজ্ঞা নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কেন ইস্যুটিকে জমিয়ে তুলেছিলেন এবং এ নিয়ে তিনি কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এর পিছনে নোয়াখালীর রাজনীতি কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওবায়দুল কাদেরকে এই আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- এ বিষয়ে অত্যন্ত সরব এবং সক্রিয় দেখা গেছে। এটির নেপথ্যের কারণ জাতীয় রাজনীতির চেয়ে নোয়াখালীর রাজনীতি বেশি বলেই বিভিন্ন মহলের ধারণা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই কোণঠাসা। নোয়াখালীর রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী একরামুল করিম চৌধুরী। একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে এবার নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন। তার ছেলে যদি উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাহলে একরামুল করিম চৌধুরীর পরিবারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হবে নোয়াখালীতে। এরকম একটি শঙ্কা থেকে ওবায়দুল কাদের চাননি যে, একরামুল করিম চৌধুরীর পুত্র উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হোক। তার প্রার্থীতার ঠেকানোর জন্যই কি আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী না করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উদ্যোগী হয়েছিলেন, অনেকেই এখন এই প্রশ্নটাই করছেন।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, বিষয়টি তেমন নয়। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে মাই ম্যানদেরকে প্রার্থী করছেন। আবার কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তাদের নিজের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করে এলাকায় নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এর বিরোধীতার জন্যই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
তবে নোয়াখালীর রাজনীতির জটিল সমীকরণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, একরামুল করিম চৌধুরী প্রার্থী হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং তার আরেকজন নিকটতম আত্মীয় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যদিও তার ভাইয়ের মনোনয়ন ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে।
কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদের এবং একরামুল করিম চৌধুরীর বিরোধ নতুন নয়। এর আগেও ২০০১ সালে এ বিরোধ প্রকাশ্য ছিল এবং সেই সময় একরামুল করিমের বিরোধীতার কারণে ২০০১ এর নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আমাদের কাছে পরাজিত হন। এখনও ওবায়দুল কাদেরের জন্য একরামুল করিম একটা বড় ফ্যাক্টর।
তাহলে কি একরামুল করিমের নোয়াখালীতে আধিপত্য ঠেকানোর জন্যই আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে দাঁড়ানো যাবে না এমন একটা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছিল? অবশ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোন ব্যক্তিকে ঠেকানোর জন্য নয়, এটি আওয়ামী লীগের একটি নৈতিক এবং নীতিগত অবস্থান।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগ একরামুল করিম চৌধুরী
মন্তব্য করুন
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন ছাড়া অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই নির্দেশনা শোনেননি।