ইনসাইড পলিটিক্স

নিখোঁজ সংবাদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ অগাস্ট, ২০১৯


Thumbnail

একসময় তারা দাপুটে মন্ত্রী ছিলেন। সরকারের নীতি নির্ধারকও ছিলেন। কিন্তু গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি তারা। এখন তারা নিখোঁজ সংবাদে পরিণত হয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীরাও জানেন না যে, তারা কোথায় কী করছেন। দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও তাদের অনুপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। যখন ডেঙ্গু মোকাবেলায় সারাদেশে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, তখনও তারা নিখোঁজ। এই সমস্ত কয়েকজন সাবেক প্রভাবশালী নেতাদের নিয়েই আমাদের এই প্রতিবেদন।

মোফাজ্জেল হায়দার চৌধুরী মায়া

মোফাজ্জেল হায়দার চৌধুরী মায়া আওয়ামী লীগের গত মেয়াদে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী ছিলেন। এবার নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। মন্ত্রী হওয়ার আগেও তিনি একজন দাপুটে এবং প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। ঢাকা মহানগরের আওয়ামী লীগের প্রাণভোমরা বলা হতো মায়াকে। কিন্তু সেই মায়াই গত নির্বাচনে চাঁদপুর থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হন। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর তাকে দু একটি কর্মসূচিতে নামমাত্র দেখা গেলেও এখন তিনি একেবারেই নিখোঁজ। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের থেকে দূরে থাকছেন। দলের কোনো কর্মসূচিতে কোনো কর্মকাণ্ডে তাকয়ে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে ডেঙ্গু মোকাবেলায় সারা ঢাকায় যখন বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে, তখন মায়ার অনুপস্থিতি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। মায়া এখন রাজণীতি করছেন কী করছেন না, সে প্রশ্নও অনেকে করেছেন। তবে মায়া এখনও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

রেজাউল করিম হীরা

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ বিপুল জয় নিয়ে সরকার গঠন করে। সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় একটা চমক এনেছিলেন। সেই চমক হিসেবে তিনি জামালপুর থেকে নির্বাচিত রেজাউল করিম হীরাকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। পাঁচবারের এমপি রাহাউল করিম হীরা ছিলেন জামালপুরের অপরিহার্য একজন এমপি। কিন্তু গত নির্বাচনে নাটকীয়ভাবে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হন। এরপর দলের কর্মকাণ্ড থেকে তিনি নিজেকে গুঁটিয়ে নিয়েছেন। দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডেই তার উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। রেজাউল করিম হীরার এই নিরুদ্দেশ যাত্রা কেন সে নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

তারানা হালিম

তারানা হালিম দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের দুর্দিনে সাংস্কৃতিক জগতে যে গুঁটিকয়েক ব্যক্তি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিতেন বা আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতেন, তাদের মধ্যে তারানা হালিম ছিলেন অন্যতম। গত মেয়াদে তারানা হালিমকে সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তারপর তিনি প্রথমে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী, পরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু এবার তিনি না পেয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন, না পেয়েছেন মন্ত্রিত্ব। মন্ত্রী এবং এমপি না হওয়ার পর থেকেই তারানা হালিম যেন নিখোঁজ সংবাদ। তাকে দলের কোনো কর্মকাণ্ডে দেখা যায় না। যদিও তাকে জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীর উদযাপন কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই কমিটির বৈঠকগুলোতেও তিনি প্রায়ই অনুপস্থিত থাকছেন বলে জানা গেছে। তার এই অনুপস্থিতি অভিমান নাকি দূরে সরে যাওয়া সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় নি।

আব্দুল মান্নান খান

ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার পক্ষে সোচ্চার হওয়া আবদুল মান্নান খান ২০০৯ সালে পুরষ্কৃত হন। তিনি ঢাকা-১ আসন থেকে মনোনয়ন পান। তারপর তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ২০১৪ তে তিনি মন্ত্রিত্ব তো দূরের কথা, মনোনয়নও পাননি। বরং তার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজের জন্য দুর্নীতির অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হন। তারপরও তাকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়। কিন্তু প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পরও দলীয় কর্মকাণ্ডে তিনি নেই বললেই চলে। একমকাত্র প্রেসিডিয়ামের বৈঠক ছাড়া তাকে দেখা যায় না। তার উপস্থিতিও চোখে পড়ে না। আবদুল মান্নান খান কি রাজনীতি থেকে নিজেকে ক্রমশ গুঁটিয়ে ফেলছেন?

এ কে এম শাহজাহান কামাল

গত মেয়াদে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় একটা বড় চমক ছিলেন একেএম শাহজাহান কামাল। বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেছিলেন যে, বিমানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি প্রয়োজনে তিনি বুকের রক্ত ঝরিয়ে দেবেন। কিন্তু তিনি বুকের রক্তও দেননি, বিমানের শৃঙ্খলাও ফেরেনি। এই মেয়াদে তিনি না পেয়েছেন মনোয়ন, না পেয়েছেন মন্ত্রিত্ব। এরপরেই তিনি গুঁটিয়ে নিয়েছেন। তাকে কোনো রাজণিতিক কর্মকাণ্ডে আর দেখা যায় না। নীরবে নিভৃতেই নিখোঁজ হয়ে গেছেন শাহজাহান কামাল।

এরকম আরও অনেক নেতা আছেন আওয়ামী লীগে, যারা মন্ত্রিত্ব এবং সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে দলের কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের গুঁটিয়ে নিয়েছেন। এর ফলে আওয়ামী লীগ লাভবান হয়েছে নাকি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা সময়ই বলে দেবে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

হাসপাতালে থেকে আজই বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২:২৮ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় নেওয়া হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরবেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘ম্যাডামকে আজকে বাসায় আনার কথা রয়েছে। তবে এখনও সময় নির্ধারণ হয়নি’।

এর আগে, বুধবার (০১ মে) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সিসিইউতে রেখে তার বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়। 


খালেদা জিয়া   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওমরাহ পালনে আজ সস্ত্রীক সৌদি আরব যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০১:৩১ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্য সৌদি আরব যাচ্ছেন। সঙ্গে থাকছেন তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম। 

বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুর সোয়া ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে তাদের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে আগামী ৮ মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


মির্জা ফখরুল   ওমরাহ হজ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের প্রস্তুতি-প্রচারণা দেখতে বিজেপির আমন্ত্রণ পেল আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে, বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।

বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে অনুরোধ করেছে।

এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে মনোনীত করেছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।

ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।


ভারত নির্বাচন   বিজেপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানি ও শরবত বিতরণ

প্রকাশ: ০৯:১৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপদাহ বিপর্যস্থ জনজীবনে পরিশ্রান্ত ও তৃষ্ণার্ত জনসাধারণের মাঝে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে সুপেয় পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

বুধবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্পট ঘুরে বেলা সাড়ে তিনটায় জিগাতলায় এসে শরবত ও সুপেয় পানি বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ- সভাপতি কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ইসহাক মিয়া, কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, প্রতিবন্ধী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ টিংকু, মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সহ সভাপতি শাহ আলম মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ হান্নান হাওলাদার শাওন প্রমুখ।


স্বেচ্ছাসেবক লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়া কি তারেকের ভুল কৌশলের শিকার?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ আবার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে দলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। 

কয়েক দিন পর পর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই নড়বড়ে বলেই মনে করছেন বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা। বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুখ, সেই অসুস্থতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সা দরকার এবং সেই চিকিৎসা দেশের সম্ভব নয়। এজন্য তারা মনে করেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নেওয়া দরকার। তবে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। বরং তারেক জিয়ার অনাগ্রহের কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রলম্বিত হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি উপায় রয়েছে। প্রথম উপায় হল, তিনি যদি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে রাষ্ট্রপতি তার অপরাধের দণ্ড মওকুফ করতে পারে বা দণ্ড হ্রাস করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি একজন মুক্ত মানুষ হতে পারেন। তখন তার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা থাকবে না।

বিএনপির অধিকাংশ নেতাই এই মতের বিরোধী। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ তার ভাই এবং বোন তার জীবনের প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করতে চান। তারা মনে করেন যে, বেগম জিয়ার এখন যে অবস্থা তাতে রাজনীতির চেয়ে তার চিকিত্সাই সবচেয়ে জরুরি। আর এই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন তাহলে এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তার তারেক জিয়া মনে করছে যদি বেগম জিয়া তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান তাহলে সেটি হবে রাজনৈতিক আত্মহত্যার সামিল। এর ফলে বিএনপির রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারেক জিয়ার ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার। নিজের স্বার্থে তিনি তার মায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করছেন জিয়া পরিবারের দুই সদস্য। 

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দ্বিতীয় উপায় হল আদালতের আশ্রয় নেওয়া। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেরকম তা নিয়ে যদি আদালতে আবেদন করা হয়, আদালত সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করে যদি রায় দেয় যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে সরকার কোন বাধা হবে না। কারণ আদালতের রায় চূড়ান্ত। এভাবে বহুবার উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতের রায়ে বিদেশ যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের। এটি কোন নতুন প্রক্রিয়া নয়। কিন্তু তারেক জিয়া বিএনপির আইনজীবীদেরকে এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য বাধা দিচ্ছেন।

বিএনপি নেতারাও এই ধরনের বাধা বিস্মিত। তারা জানেন না তারেক জিয়া কেন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা দিচ্ছেন এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন না। এ নিয়ে বিএনপির কারোরই কোন ব্যাখ্যা নেই। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, বেগম জিয়ার আইনি প্রক্রিয়া তারেক জিয়ার নির্দেশে থমকে গেছে এবং সেই থমকে যাওয়ার কারণ অজানা। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় দেশের তিলে তিলে মৃত্যুবরণ করুক- এটিই হয়তো তারেক জিয়া চান। কারণ তারেক জিয়া যদি তার মার প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা দেখাতেন সে ক্ষেত্রে তিনি সরকারের সাথে সমঝোতা না করুন কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু সেটি তিনি গ্রহণ না করাতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে,বেগম জিয়াকে এই অবস্থায় রেখে তারেক জিয়া পূর্ণ ক্ষমতা গ্রহণ করতে চান। 

অনেকে মনে করেন যে, বেগম জিয়া যদি না থাকেন, সে ক্ষেত্রে তারেক জিয়ার একক কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বেগম জিয়া সুস্থ হলে তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ কারণেই কি তিনি বেগম জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশে নিতে অনাগ্রহী? এই প্রশ্নটি এখন উঠেছে। 

বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার তৃতীয় পথ হলো সরকারের সাথে সমঝোতা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সেটির কোন সুযোগ নেই। কারণ ইতোমধ্যে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার মাধ্যমে জামিন নিয়েছেন। একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে সরকারের দুটি সুবিধা দেওয়ার কোন বিধান নেই। আর বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যদি বেগম জিয়াকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করানো যায় এবং তিনি যদি বিএনপি সঙ্গে সকল সম্পর্ক ত্যাগ করেন তাহলে হয়তো সরকারের সাথে একটা সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু সেটাতেও তারেক জিয়ার সায় নেই। তারেক জিয়ার কারণেই যেমন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন তারেক জিয়ার কারণেই হয়তো বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসাও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।




খালেদা জিয়া   বিএনপি   এভারকেয়ার হাসপাতাল   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন