নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনি ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করেননি। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন হলো তিক্ত বিরক্ত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কেন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো! আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল মহলের সঙ্গে কথা বলে এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, এর পেছনে রয়েছে সুনির্দিষ্ট ৭টি কারণ। এই কারণগুলো হলো:
১. ছাত্রলীগের কমিটি এখনি যদি বাতিল করা হতো তাহলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যে সমালোচনাগুলো বিভিন্ন মহল থেকে, বিশেষ করে বিরোধী শিবির থেকে করা হচ্ছিল তা সত্য বলে প্রমাণিত হতো। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ওপর তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতো। আওয়ামী লীগ এই নেতিবাচক সমালোচনাগুলো গায়ে মাখতে চায়নি বলে এই মুহূর্তেই ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করা হয়নি।
২. ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করলে সারাদেশে ছাত্রলীগের নামে যে চাঁদাবাজি, মাস্তানির অভিযোগ রয়েছে তা আরো বাড়তো। স্থানীয় পর্যায়ে ছাত্রলীগের কোন জবাবদিহিতা থাকতো না। তারা যে যার মতো স্থানীয় এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতো। ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যেত।
৩. ছাত্রলীগের নামধারীদের দৌড়ত্ব বাড়তো। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বাদ দিলে ছাত্রলীগ অনুপ্রবেশের কোন ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেঞ্চ’ থাকতো না। যে কেউ নিজেকে ছাত্রলীগের বলে জাহির করতো। এরফলে ছাত্র শিবির ছাত্র দল থেকে অনুপ্রবেশের সংখ্যা বেড়ে যেত।
৪. সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি তার ছাত্রদলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে এবং এই কাউন্সিল অনুষ্ঠানকে ছাত্রদলকে চাঙ্গা করার একটি কৌশল নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ছাত্রলীগৈর কমিটি বাদ দিলে দুর্বল হয়ে পড়তো। তা ছাত্রলীগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতো।
৫. ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্থান, বিভিন্ন জেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে যে নেতৃত্বের কোন্দল এবং নেতৃত্বের কোন্দলের কারণে যে বিভিন্ন সংঘাতের ঘটনা ঘটছে। এ সংঘাতের ঘটনা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করলে আরো বেড়ে যেত। ফলে সারাদেশে ছাত্রলীগ তথা আওয়ামী লীগ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরী হতো।
৬. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বিশ্বাস করেন যে, মাথা ব্যাথার ওষুধ কখনো মাথা কেটে ফেলা নয়। বরং মাথা ব্যাথা সাড়ানো। ছাত্রলীগ থেকেই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা এবং বিকাশ। তিনি সবসময় ছাত্রলীগকে তার নিজের সংগঠন হিসেবে মনে করেন। তার রাজনীতির আতুর ঘর মনে করেন। এজন্য তিনি বর্তমান নেতৃত্বের ব্যর্থতার জন্য কমিটি বাতিল করার মতো কঠোর ব্যবস্থায় যেতে চাননি। বরং এই সময়ের মধ্যে তিনি ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব খুঁজে বের করা এবং ছাত্রলীগের মধ্যে যারা কাজ করছে ভালো মেধাবী কর্মী তাদেরকে খুঁজে বের করার কাজটি করতে চান।
৭. ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা মুষ্টিমেয় হাতেগোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এই অভিযোগের জন্য পুরো ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করে ছাত্রলীগের বদনাম করার নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্যই তিনি চাননি ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করতে। কারণ ছাত্রলীগে বহু নিবেদিত কর্মী আছে যারা আগামী দিনে আওয়ামী লীগের হাল ধরবে। এ কারণে এই বিবেচনা থেকেই তিনি ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করেননি।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করছে, ছাত্রলীগ কঠোর নজড়দারিতে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সমস্ত ব্যাপারগুলো সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অতীতে যে সমস্ত চাঁদাবাজি, দলীয় মতবিরোধের কারণে ভাঙচুরসহ নানা অভিযোগ উঠেছে, সেইসব অভিযোগের ব্যাপারে এখন শুন্য সহিষ্ণুতা গ্রহণ করা হবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা হবে। এর মাধ্যমে ছাত্রলীগকে আস্তে আস্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন
মন্তব্য করুন
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায়
নেওয়া হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরবেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন,
‘ম্যাডামকে আজকে বাসায় আনার কথা রয়েছে। তবে এখনও সময় নির্ধারণ হয়নি’।
এর আগে, বুধবার (০১ মে) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া
হয়। সেখানে সিসিইউতে রেখে তার বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়।
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।