নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে কাউন্সিল অধিবেশনের সিদ্ধান্ত নিলেও লন্ডন থেকে সবুজ সংকেত না আসায় কাউন্সিলের কোন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে না। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিএনপি তৃনমূলের কাছ থেকে নেতৃত্বের পরিবর্তন করে নতুন নেতৃত্ব এবং কাউন্সিল অধিবেশনের একটা তাগড়া দেওয়া হয়েছে। কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়াও কারাগার থেকে দ্রুত কাউন্সিল করে নেতৃত্ব পুনর্গঠনের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এনিয়ে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা করেছিলেন, চলতি বছরই বিএনপির কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকের অনাগ্রহের কারণে কাউন্সিল থমকে গেছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, কাউন্সিল অধিবেশন হলেই তারেকের একক কর্তৃত্ব খর্ব হতে পারে। তৃনূমলের ক্ষোভ প্রকাশ হতে পারে। বিএনপিতে তারেকের বদলে খালেদার কর্তৃত্ব পুন:প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এ কারণেই কাউন্সিল থেকে তারেক জিয়া দূরে সরে এসেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, দুটি দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ রয়েছেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং অন্যদের মাধ্যমে দলের নিয়মিত বার্তা পাঠাচ্ছেন। অন্যদিকে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে বিএনপি পরিচালনার জন্য নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেছেন যে, খালেদা জিয়ার নির্দেশনা এবং তারেকের নির্দেশনার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। দুইজনের কৌশল সম্পূর্ণ দুই মেরুতে। যার ফলে দলের নেতারা বিভ্রত এবং এ কারণে দলের নেতারা কোনদিকে যাবেন তা নিয়ে একটা বিভ্রান্তিতে ভুগছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, গত সপ্তাহে কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলনের নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন যে, তার কারান্তরীণ (বেগম খালেদা জিয়া) ইস্যুকে ঘিরে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ধাপে ধাপে আন্দোলনকে চুড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে বেগম খালেদা জিয়ার ওই বার্তায় এটা স্পষ্ট করে বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ যেন সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় আন্দোলন গড়ে তোলা যায় তার প্রস্ততি নিতে হবে। এই আলোকেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের কিছু কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে এই ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, এখন আন্দোলন করার সময় নয়। বরং ঐক্যফ্রন্টকে ঘিরে একটি শক্তিশালি মোর্চা গঠন করার ব্যাপারে তিনি নেতাকে নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে রংপুর উপনির্বাচনসহ সমস্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় তারেক জিয়ার এই নির্দেশনা গৃহীত হয় এবং দল আসন্ন সাতটি উপজেলা নির্বাচন, রংপুর উপনির্বাচনসহ ঢাকা তিন সিটি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। এই বার্তা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে পৌঁছানো মাত্র বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এই সমস্ত অর্থহীন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার কি মানে তা তিনি জিজ্ঞেস করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসককে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে, যখন আমরা এই সরকারকে অবৈধ বলছি। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন মানছি না, তখন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে তা তার বোধগম্য নয়।
মা-ছেলের এই দ্বন্দ্বে এখন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এখন মোটামুটি ভিরমি খাওয়ার মতো অবস্থা। তারা বুঝতে পারছেন না তারা কোনদিকে যাবেন। সম্প্রতি গত বুধবার বেগম খালেদা জিয়া অনতিবিলম্বে দলের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা এবং জেলা পর্যায়গুলোতে কাউন্সিল করা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থাকবেন, যারা জেলা নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না-সহ বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। কিন্তু এই নির্দেশনা পাওয়ার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারেক জিয়া আপাতত কাউন্সিলের কোন দিন তারিখ না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একাধিক সূত্র বলছে যে, নির্বাচনের পর থেকে তারেক জিয়া তৃণমূলের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে স্কাইপিতে যোগাযোগ করছেন। তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। কিন্তু এসব বৈঠকে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব এবং বিচক্ষণতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তারেক জিয়ার একের পর এক বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
দুই বছর আগেও তারেক জিয়ার যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব বিএনপিতে ছিল তা আলগা হয়ে গেছে। বরং বিএনপির তৃণমূলের নেতৃত্ব মনে করছে যে, বিএনপির একমাত্র নেতা তারেক জিয়া নয়। এই অবস্থায় বিএনপির তৃণমূলের কর্তৃত্ব খর্ব হওয়ার প্রেক্ষিতে তারেক জিয়া এখনি কাউন্সিল করার পক্ষপাতি নয়। ফলে তারেক জিয়া- খালেদা জিয়ার দ্বন্দ্ব এখন বিএনপির নেতৃবৃন্দকে এক মহা বিভ্রান্তিতে ফেলেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।