নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আওয়ামী লীগের প্রধান নেতৃত্ব হলো সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও বিভিন্ন সময় প্রভাবশালী নেতারা থাকেন, তাদেরকে বলা হয় ‘এলিট’ নেতা। যেমন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন আওয়ামী লীগ ছিল তখন বঙ্গবন্ধু এবং দলের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদের বাইরেও একটি বিরাট ‘এলিট’ শ্রেনীর নেতা ছিলেন। যাদের মধ্যে ছিলেন ক্যাপ্টেন (অব:) মনসুর আলী, কামরুজ্জামান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে জাতির পিতা যখন গ্রেপ্তার হন তখনও প্রভাবশালী এলিট শ্রেনীর আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। তাদের মধ্যে জাতীয় ৪ নেতা ছাড়াও ছিলেন খন্দকার মুশতাক আহমেদের মত কিছু নেতা।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর যখন আওয়ামী লীগ লণ্ডভণ্ড, তখনও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কিছু ‘এলিট’ নেতা ছিল। এদের মধ্যে ছিলেন জোহরা তাজউদ্দীন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন প্রমুখ।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করার পর আওয়ামী লীগে একটি প্রভাবশালী গ্রুপ তৈরী হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের ‘এলিট’ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের বাইরে কিছু নেতা থাকেন যারা দলটির নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দলের মধ্যে তাদের অপরিসীম প্রভাব থাকে। সাম্প্রতিক সময় আওয়ামী লীগের নতুন ‘এলিট’ নেতৃত্ব তৈরী হয়েছে। আওয়ামী লীগে এর আগে যারা হেভিওয়েট নেতা ছিলে সাজেদা চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মোহাম্মদ নাসিম তারা এখন প্রায় ম্রিয়মান। এখন নতুন এলিট নেতা কারা দেখে নেওয়া যাক;
কাজী জাফরউল্লাহ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। আওয়ামী লীগ সভাপতির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠও তিনি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
কর্ণেল (অব.) ফারুক খান
কর্ণেল (অব.) ফারুক খানও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন রাজনৈতিক নেতা। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার ওপর নির্ভর করেন বলে জানা যায়।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী যদিও আওয়ামী লীগের বড় কোনো নেতা নন, তিনি স্পিকার। তারপরেও তিনি আওয়ামী লীগের এলিট নেতাদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন তিনি। দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে শেখ হাসিনা তার সঙ্গে পরামর্শ করেন বলেও জানা যায়।
ড. আব্দুর রাজ্জাক
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হলেও দলের অন্যসব প্রেসিডিয়াম সদস্যের মতো তিনি নিস্ক্রিয় নন। বরং দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দলের সভাপতির নির্দেশে অনেক দায়িত্বও পালন করেন।
নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন
বর্তমান চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনও আওয়ামী লীগের নতুন এলিট নেতা। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন বলেই জানা যায়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।