নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আইনি প্রক্রিয়ায় যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না তা আগেই নিশ্চিত ছিল। তারপরও বিএনপি নেতাদের অনুরোধে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার আইনী লড়াইয়ের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার ইতিমধ্যেই বিশেষ বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এবং বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, প্যারোলে মুক্তি নিলে বেগম জিয়ার রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। জনগনের মধ্যে একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরী হবে। এ কারণেই বিএনপি এবং তারেক জিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমেই তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে, শেষ চেষ্টা করতে চান। আর এই শেষ চেষ্টার জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীশ ইস্কান্দার বিএনপি নেতৃবৃন্দকে সময় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আইনি লড়াইয়ে খালেদা জিয়া যদি শেষ পর্যন্ত মুক্ত না হয়, তাঁরা যেন বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আর কোন পদক্ষেপ না নেয়। এরপর তাঁরা তাদের মতো করে কাজ করবেন।
আজ যখন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়, যেটা বেগম জিয়ার পরিবারের কাছে পূর্ব অনুমিত ছিল, তখন তাঁরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে টেলিফোন করে শামীম এস্কান্দার বলেন, আপনারা যা যা করার করেছেন, আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। এখন আমরা বেগম জিয়াকে মুক্ত করার ব্যাপারে আমাদের যা করার আছে তা করবো।
ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এখন বেগম জিয়ার পরিবার যেকোন শর্তেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার ব্যাপারে নতুন করে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে চায়। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার প্যারোলের ব্যাপার নিয়ে সরকারের সঙ্গে দেন-সরবার প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারেক এবং বিএনপির একটি অংশের আপত্তির জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এখন সেটা পুনরায় চালু করতে হবে। আর এই প্যারোলের শর্ত হিসেবে খালেদা জিয়াকেই প্রথমেই রাজনীতি থেকে সরে যাবার ঘোষণা দিতে হবে। অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। এর পরপরই খালেদা জিয়ার কাছে জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি প্যারোলের আবেদনের খসড়া পাঠানো হবে এবং এটিতে জেল কর্তিপক্ষের মাধ্যমে বেগম জিয়া স্বাক্ষর করবেন। স্বাক্ষরের পরপরই এই প্যারোলের আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে যাবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সেখানে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
কিন্তু সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, সরকার এখন প্যারোলের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করেছে । কারণ তাঁরা বলছেন, পারোল আবেদনের জন্য যে সময় এবং সুযোগ ছিল, সেই সময় এবং সুযোগ বেগম জিয়া এবং তাঁর পরিবার নষ্ট করেছে। কারণ এখন হাইকোর্টে জামিন আবেদন বাতিল হয়ে যাবার পর নতুন করে প্যারোল দেবার সুযোগ নেই। এবং সরকারের তরফ থেকে আরো বলা হচ্ছে যে, এই মামলায় সরকার বাদী নয়, বাদী হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তাই দুর্নীতি দমন কমিশনের অনাপত্তি ছাড়া প্যারোল সম্ভব না। সরকারের তরফ থেকে এখন বলা হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়া দণ্ড মওকূফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দণ্ড মার্জনার আবেদন করা ছাড়া উপায় নেই এবং এমন আবেদন করতে হলে বেগম জিয়াকে নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে।
সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্যারোল নয়, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ছাড়া বিকল্প নেই। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে শেষ পর্যন্ত বেগম জিয়া ক্ষমা প্রার্থনা করবেন কিনা তা নিয়ে বেগম জিয়ার পরিবারের সংশয় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেগম জিয়ার পরবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, যদি শেষ পর্যন্ত বেগম জিয়ার প্যারোলও না হয়, তাহলে বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিবেন যে তাঁরা কি করবেন।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।