নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৮ পিএম, ০৬ এপ্রিল, ২০২০
করোনা মোকাবেলা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এ কথা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই যে শেখ হাসিনা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সেই চ্যালেঞ্জে জয়ী হয়েই রাজনীতির এই পর্যায়ে এসেছেন। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই টানা তিনবারসহ মোট চারবারের প্রধানমন্ত্রী, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই তিনি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু প্রতিটি চ্যালেঞ্জের সময়ই দেখা গেছে যে শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টিতা, প্রত্যুৎপন্নমতিতা, বিচক্ষণতার পাশাপাশি তার একটি দক্ষ টিম ছিল। যেই টিম তাকে সহযোগীতা করেছে, যেই টিম তার ভাষা এবং অভিপ্রায় বুঝেছে, তার অভিপ্রায় অনুযায়ী কাজ করেছে নিঃস্বার্থভাবে।
আমরা যদি দেখি যে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে তিনি যখন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন, তখন রাজনীতিতে তিনি একটি প্রতিকূল সময় অতিবাহিত করেছিলেন। সেসময় শুধুমাত্র বিএনপির ভ্রুকুটি এবং মিথ্যাচার নয়, দলের ভেতরেও ষড়যন্ত্রকারীরা তার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। কিন্তু সেসময় শেখ হাসিনা একটি চমৎকার টিম তৈরি করেছিলেন। জোহরা তাজউদ্দিন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমুর মতো নেতারা শেখ হাসিনার পাশে ছিলেন। তারা পাশে থাকার কারণেই শেখ হাসিনা দলের মধ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের যেমন পরাজিত করতে পেরেছেন, তেমনি আওয়ামী লীগকেও শক্তিশালী করতে পেরেছিলেন।
আমরা দেখি যে ১৯৯৬ সালে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে, তখনও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, নেতৃত্ব, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উপস্থাপনের মতো সাহস দিনি দেখিয়েছিলেন। সেসময়েও তার সঙ্গে একটি বিচক্ষণ রাজনীতিবিদদের টিম ছিল। আমরা বলতে পারি যে তৎকালীন বিরোধী দলের উপনেতা প্রয়াত আব্দুস সামাদ আজাদ, তৎকালীন চিফ হুইপ মোহাম্মদ নাসিম, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ আরও কয়েকজন নেতাদের টিম সেসময় সংসদের ভেতরে এবং বাইরে আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করেছিলেন।
আমরা ওয়ান ইলেভেনের সময়ে দেখি যখন সেনাসমর্থিত ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে অনির্বাচিত সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং তাকে মাইনাস করার ষড়যন্ত করেছিল। ঠিক সেসময়েও শেখ হাসিনার পাশে কিছু বিশ্বস্ত মানুষ ছিল, যারা শেখ হাসিনার পাশে দাড়িয়েছিল এবং শেখ হাসিনাকে বিজয়ী হতে সহযোগীতা করেছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত জিল্লুর রহমান, প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী সহ আরও অনেকে।
মনে করা হয়, শেখ হাসিনার পাশে যারা ছিল তাদের নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টা এবং ত্যাগের কারণেই ওয়ান ইলেভেনের অনির্বাচিত সরকারকে পরাস্ত করে শেখ হাসিনা একটি নির্বাচনের জন্য দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন।
আমরা দেখি যে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ২০০৯ সালে যখন শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন, এর পরপরই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাটি ঘটে। সেই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাও ছিল তার জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা। সেসময়েও শেখ হাসিনার পাশে ছিল বিশ্বস্ত কিছু মানুষ, যারা শেখ হাসিনাকে সার্বক্ষণিকভাবে সহযোগীতা করেছেন, তার রাজনৈতিক অভিপ্রায় এবং প্রজ্ঞাকে সঞ্চারিত করার জন্য নির্ভীকভাবে কাজ করেছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী, জেনারেল তারেক সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আযমের মতো নেতৃবৃন্দ।
এখন শেখ হাসিনা আরেকটি সংকটকালীন সময় পার করছেন, আরেকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তিনি। আমরা জানি যে শেখ হাসিনার যে রাজনৈতিক দৃঢ়তা, তার যে সততা এবং বিচক্ষণতা- সবমিলিয়ে তিনি সব সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন। কিন্তু এবার শেখ হাসিনার পাশে কে আছে? শেখ হাসিনার টিম কারা? কারা শেখ হাসিনার সবকিছু উজাড় করে দিয়ে নির্ভীকভাবে কাজ করবে? কারা শেখ হাসিনার অস্তিত্ব বাস্তবায়নের জন্য নিঃস্বার্থভাবে সবকিছু উজাড় করে দেবে? আমরা কি সেরকম টিম দেখতে পাই?
আমরা জানি রাজনীতিতে ব্যক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, রাজনীতিতে নেতার ভূমিকা প্রধান। কিন্তু নেতার পাশাপাশি নেতার জন্যই কিছু সুযোগ্য, বিশ্বস্ত সহযাত্রী লাগে। সেই সহযাত্রীর অভাব কি শেখ হাসিনা বোধ করছেন?
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।