নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০৩ জুন, ২০২০
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগ যেন নিষ্প্রভ হয়ে গেছে। দলের হাতেগোনা নেতার বিবৃতি এবং অনলাইন সংবাদ সম্মেলন ছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ছে না। যদিও আওয়ামী লীগের তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে, তৃণমূলের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে তাঁরা সক্রিয় রয়েছে, ধান কাঁটার সঙ্গে অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো যুক্ত ছিল। তারপরেও আওয়ামী লীগের সবকাজই হচ্ছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের কোন ছন্দ নেই। বেসুরো হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ, কিন্তু কেন? আওয়ামী লীগের ভেতরে কি কোন অস্বস্তি কাজ করছে? আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের মধ্যে কি সমন্বয়ের অভাব? এরকম প্রশ্নগুলো রাজনৈতিক মহলে উঠছে। তবে এই সংকটকালীন সময়ে আওয়ামী লীগকেই সবথেকে সরব থাকার কথা ছিল। কারণ টানা তিন মেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরাই সর্বত্র। কাজেই জনগণের কাছে যেমন তাঁদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, পাশাপাশি তাঁদের সাংগঠনিক শক্তিমত্তা প্রদর্শন এবং জনগণের কাছে যাওয়ার এটাই সবথেকে বড় সুযোগ। তারপরেও সেই সুযোগকে আওয়ামী লীগ হেলায় নষ্ট করছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগের এই ছন্দপতনের কারণগুলো বিশ্লেষণ করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণগুলো হলো এরকম-
১. সাধারণ সম্পাদক ঘরবন্দি
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ঘিরেই আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন সবকিছুর উর্ধ্বে, তিনি দলের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক, দলের ঐক্যের প্রতীক। সাধারণ সম্পাদক হলেন দলের চালিকাশক্তি, তাঁকে ঘিরেই দল পরিচালিত হয় এবং তৃণমূলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মাঠে নামানো ইত্যাদি কাজগুলো করতে হয় সাধারণ সম্পাদককে। কিন্তু করোনার জন্য যৌক্তিক কারণেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন, ঘরে বসেই তিনি বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ সম্মেলন করছেন। কিন্তু মাঠে ঘোরাফেরা করার নেতা যখন ঘরে থেকে বিবৃতি দিবেন, সেই বিবৃতি কতটা চিত্তাকর্ষক হবে বা কতটুকু আবেদন বহন করবে তা বলাই বাহুল্য। আর এই কারণেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের অবাধ বিচরণের অভাব বোধ করছে আওয়ামী লীগ।
২. উদ্যমহীন নেতৃবৃন্দ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের অধিকাংশই অনুপস্থিত। বেগম মতিয়া চৌধুরীকে মাঝে মাঝে দলের কর্মকাণ্ডে দেখা যায়, বাকি সদস্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান কিছুটা সক্রিয়। কিন্তু অন্যরা কোথায় আছেন বা কি করছেন তা নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্ন। শাজাহান খান যতটা না আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাঁর থেকে বেশি তিনি পরিবহন শ্রমিক নেতা। পরিবহন বিষয় ছাড়া তাঁকে খুব একটা দেখা যায় না। আর ড. আব্দুর রাজ্জাক সক্রিয় থাকলেও মন্ত্রণালয়ের কাজকে ঘিরেই তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে সরব রয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। সারাক্ষণই তিনি কথা বলছেন। এখন পর্যন্ত দলের কণ্ঠস্বর হয়েই আছেন তিনি। কিন্তু অন্য যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকরা রুটিন কাজেই ব্যস্ত। দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল হানিফ মোটেও সক্রিয় নন। আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম দলীয় কর্মকাণ্ডে আছেন কিন্তু তিনি ঘরোয়া রাজনীতিতে যতটা পারঙ্গম, মাঠের রাজনীতিতে তিনি ততটাই নিঃস্পৃহ। অন্য যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ডা. দীপু মনি এখন মন্ত্রণালয়ের কাজ নিয়েই ব্যস্ত। ফলে দলের প্রেসিডিয়াম এবং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে যেমন নেই সঙ্গবদ্ধ প্রয়াস, তেমনি এই সঙ্কটে তাঁরা জনগণকে আশ্বস্ত করবেন বা জনগণের বিষয়গুলো নিয়ে কথাবার্তা বলবেন এমনটা তাঁদেরকে খুব একটা দেখা যাচ্ছেনা। দলের হেভিওয়েট নেতারা, যেমন তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মোহাম্মদ নাসিম- তাঁরা নিঃস্পৃহ এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে তাঁদেরকে খুব একটা দেখা যায়না। এদের মধ্যে মোহাম্মদ নাসিম এখন অসুস্থ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অন্য দুই নেতাও দুরত্ব বজায় রেখেই কাজ করছেন।
৩. অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোতে প্রাণ নেই
আওয়ামী লীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো ছিল অত্যন্ত সরব এবং কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর। কিন্তু ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোর উপরে যে ঝড় এসেছে, তাতে সব লণ্ডভণ্ড। কার্যত কর্মকাণ্ডহীন অঙ্গসহযোগী সংগঠগুলো। করোনা সঙ্কটকালে এই সংগঠগুলোর তৎপরতা চোখে পড়ছে না। হাতেগোনা দু-একটি অঙ্গসহযোগী সংগঠন টুকটাক দু-একটি কাজ ছাড়া বাকি সবাই যেন হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে।
৪. অর্ধেক এমপি এলাকায় নেই
আওয়ামী লীগ তৃণমূলের সংগঠন, তৃণমূল হলো আওয়ামী লীগের রক্তপ্রবাহের মতো। কিন্তু তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে উঠছে দুর্নীতি, ত্রাণ আত্মসাতের অভিযোগ। আর দলের এমপিদের কেউ কেউ ভালো কাজ করলেও অর্ধেক এমপি এলাকাতেই যাচ্ছেন না। আর সবমিলিয়ে সঙ্কটকালে আওয়ামী লীগকে যেভাবে দেখা যায়, এবারের সঙ্কটে আওয়ামী লীগ সেভাবে নেই।
৫. ছন্দহীন আওয়ামী লীগ
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা রাজনীতির চেয়ে এখন সঙ্কট মোকাবেলা এবং রাষ্ট্রপরিচালনায় গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশনা পেলে আওয়ামী লীগের ছন্দে ফেরা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া লবিস্ট ফার্ম বিএনপি
মন্তব্য করুন
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় টিম সরাসরি কাজ করেছে এবং তারা প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত সবগুলো উপজেলার নির্বাচন মনিটরিং করেছে। যেখানে তারা খোঁজখবর নিয়েছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে তারা কতটা বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করেছে এবং তাদের কারণে নির্বাচনে কী কী ধরনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আর এক্ষেত্রে যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক এবং স্বতস্ফূর্ত পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, এই উপনির্বাচনগুলোতে যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। যারা নির্বাচনে তাদের নিজস্ব প্রার্থী বা আত্মীয়স্বজনকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইবে বা নির্বাচনের পেশি শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে তারা দলের পদ হারাবেন। উপজেলা নির্বাচনের সবগুলো ধাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন- একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর এক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বানেকে যারা কলুষিত করতে চাইবে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকা রাখা হবে না, তারা যে পর্যায়ে বা যে পদেই থাকুন না কেন।
বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাই ম্যান হিসাবে প্রার্থীদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তারা যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে তাহলে যারা প্রার্থী এবং যারা প্রার্থীদেরকে মদত দিচ্ছেন তারা উভয়ে দলের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, এই সব উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য পেশিশক্তি প্রয়োগ করবেন ভবিষ্যতে মনোনয়নের খাতা থেকে খাতা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদের অনেককেই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি বিএনপির দীর্ঘদিনের। শুধু দাবি নয়, এ নিয়ে বিএনপির তদবিরও করছে। সরকারের সাথে পর্দার আড়ালে নানা রকম আলাপ আলোচনাও চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। আর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যেন সরকার দেয় এ জন্য দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই লবিস্ট ফার্মের একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক। এই লবিস্ট ফার্মগুলো যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর যেন এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য চেষ্টা করবে।
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।