নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০২ এএম, ০৬ মার্চ, ২০২১
দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় এমনিতেই বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। অন্যদিকে দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে খালেদা জিয়া ঘরে আবদ্ধ এবং লন্ডনে থেকে তারেক জিয়া বিএনপির একটি অংশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে কথা উঠছে যে বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতা এবং বিদেশে যাওয়ার সুবিধা পাওয়ার জন্য রজনীতি থেকে অবসর নিতে পারেন। আর এই গুঞ্জনে বিএনপির একটি অংশের নেতারা হতাশ এবং বিএনপির রাজনীতিতে তারা যে কোণঠাসা হবেন সেটা তারা অনুমান করতে পারছেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার রজনীতিতে থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের কারণে তারা কোনঠাসা হয়েছেন আর এখন বেগম খালেদা জিয়া না থাকলে তাদের রাজনীতিতে মূল্যায়ন বা অবস্থান কোনোটাই থাকবে না বলে মনে করছেন অনেকে।
বিএনপির একজন নেতা বলেন, তারেক রহমান এমনিতেই দলের মধ্যে এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা চালায় এবং তার পক্ষের লোকদের প্রাধান্য দিয়ে একটি বলয় তৈরি করছে। এই অবস্থায় যদি খালেদা জিয়া রাজনীতিতে না থাকেন তাহলে বিএনপি অভিভাবকহীন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে দলের সিনিয়র নেতা হিসেবে ড. এমাজউদ্দীন আহমদ নেই, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান রাজনীতি থেকে সরে গেছেন, সাদেক হোসেন খোকা নেই ফলে তারেক জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের সমঝোতা বা সমন্বয় করার মতো কেউ নেই। অন্যদিকে তারেক রহমান নিজেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মেনে নিতে পারেন না ফলে তার জন্যও রাজনীতিতে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। ফলে আমাদের দলের মধ্যে শঙ্কা ও ভাঙনের এক নতুন জল্পনা-কল্পনা দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়া যদি রাজনীতি থেকে অবসরে যান তাহলে দলের মধ্যে একটি বড় ধরনের ঝড় উঠবে এবং এতে দলের একটি বড় অংশ বিএনপির রজানীতি থেকে সরে যাবে। কারণ অনেক সিনিয়র নেতাই তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মানতে পারবেন না। ফলে এই অংশটি শেষ বয়সে হয়তো নতুন করে কোনো দলে না গেলেও বিএনপির রাজনীতি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার একটা সম্ভবান রয়েছে। তবে তারেক রহমান যদি সবার সাথে সমন্বয় করার চেষ্টা করে তাহলে হয়তো পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেত কিন্তু লন্ডনে বসে ফোনো অথবা অন্য লোকের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেয়া আদেও সম্ভব হবে না। ফলে সামনের দিনগুলোতে বিএনপিতে নতুন করে ভাঙনের পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।