নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৬ মার্চ, ২০২১
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বক্তৃতা বিবৃতি সবই বিএনপির প্রতি সমালোচনা সূচক। বিএনপিকে আক্রমণ করেই আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন। যদিও রাজনীতির মাঠে বিএনপি এখন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শক্তি মাত্র। জাতীয় সংসদে বিএনপি`র অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। সেই বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্যবস্তু কেন? কেন আওয়ামী লীগের সমস্ত সমালোচনা, নিশানা শুধুমাত্র বিএনপি? আজ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে সম্পাদকমন্ডলীর যৌথ সভাতেও উদ্বোধনী বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রশ্ন হলো, যখন বিএনপি রাজনৈতিকভাবে অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রায় নেতৃত্ব শূন্য, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিভক্ত এবং একে অন্যকে আক্রমণ করছেন। এই সময় আওয়ামী লীগের প্রধান টার্গেট বিএনপিকে করা ঠিক হচ্ছে কিনা এবং এর ফলে তা বিএনপির জন্য শাপে বর হচ্ছে কিনা। কারণ বিএনপি নিজেদেরকে যতটুকু না স্মরণ করছে, আওয়ামী লীগ সমালোচনার মাধ্যমে বিএনপিকে জনগণের কাছে বেশি পরিচিত করে দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এই মুহূর্তে বিএনপি নয় আওয়ামী লীগের মূল শত্রু হলো তৃতীয় পক্ষ। যে পক্ষ গণতন্ত্রকে বিনাশ করতে চায়, যারা ১/১১ মত আরেকটি পরিস্থিতি দেশে তৈরি করতে চায়। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হলো বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ, যারা সরকারের বিভিন্ন সাফল্যকে আড়াল করে শুধুমাত্র ব্যর্থতাগুলোকে সামনে তুলে আনছে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হলো এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী চাটুকার যারা সরকারের বিভিন্ন দুর্বল দিকগুলোকে আড়াল করছে। অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হল দলের ভেতর থাকা অনুপ্রবেশকারী এবং সুবিধাবাদীরা যারা দলের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন রকম অনিয়ম, অপকর্ম করছে।
আর এই সমস্ত প্রতিপক্ষগুলোকে আড়াল করে, প্রতিপক্ষকে দমন না করে আওয়ামী লীগ যখন শুধুমাত্র বিএনপিকে আক্রমণ করে, সমালোচনা করে তখন সাধারণ মানুষ মনে করে যে বিএনপি বোধহয় এখনও একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। সাধারণ মানুষ তখন ভুলে যাওয়া বিএনপিকে স্মরণ করে। বিএনপি পুনর্জীবিত হয় এ ধরনের সমালোচনাগুলোতে। আওয়ামী লীগের যখন নিজেদের রাজনৈতিক কৌশলের পরিবর্তন আনা দরকার, বিশেষ করে যারা গণতন্ত্র বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী এবং সুশাসন বিরোধী সেই অপশক্তিগুলোকে টার্গেট না করে শুধুমাত্র বিএনপিকে টার্গেট করে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা আওয়ামী লীগের ভুল কৌশল কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।