নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ১৩ মার্চ, ২০২১
ঢাকার লালবাগের এমপি হাজী সেলিম। সম্প্রতি একটি দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট হাজী সেলিমের দণ্ড বহাল রেখেছে। নিম্ন আদালতের রায়ে হাজী সেলিমকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। হাইকোর্ট সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেছে। হাইকোর্ট আগামী ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করতে বলেছে। এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কমিশন রায়ের সত্যায়িত কপি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। রায়ের এই কপি পেলেই তারা নির্বাচন কমিশনে হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ বাতিলের জন্য পাঠাবে। অন্যদিকে হাজী সেলিমের আইনজীবীরা বলছেন, তারা চলতি সপ্তাহেই হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। আপিল বিভাগে তারা হাজী সেলিমের দণ্ড স্থগিত করার আবেদন করবে। হাজী সেলিমের আইনজীবীরা বলছেন, আপিল বিভাগ দণ্ড স্থগিত করলে হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না। হাজী সেলিমের এই অনিশ্চয়তায় ভরা রাজনৈতিক জীবনে, বড় প্রশ্ন হলো হাজী সেলিমের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি? আওয়ামী লীগ কি হাজী সেলিমকে রক্ষার কোনো চেষ্টা করবে?
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, সেলিমের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ‘উদাসীন’। অনেক নেতাই মনে করছেন ‘হাজী সেলিম এখন আওয়ামী লীগের জন্য অপ্রয়োজনীয়।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আদালত এবং আইন হাজী সেলিমের ব্যাপারে যা নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগ সেটিই প্রতিপালন করবে।’ তিনি বলেন ‘হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ রাখা না রাখা নিয়ে আওয়ামী লীগ কিছুই করবে না।’ আওয়ামী লীগের অন্য একজন নেতা বলেন ‘হাজী সেলিম বিএনপি করতেন। লালবাগের আসনটি পাওয়ার জন্য তাকে আওয়ামী লীগে নেয়া হয়। সে সময় এটা ছিলো বাস্তবতা। কিন্তু এখন লালবাগে জেতার জন্য আওয়ামী লীগকে হাজী সেলিমের ওপর নির্ভর করতে হবে না। গত ১২ বছরে আওয়ামী লীগের কর্মকান্ড এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইমেজই আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করবে।’ তার মতে ‘হাজী সেলিমের মতো অনুপ্রবেশকারীরা ভূমি দখল করে, নানা রকম সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন এবং করছে।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির দায়ে সর্বোচ্চ আদালতে দন্ডিত একজন ব্যক্তির ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোন ভূমিকা নেই।’ আর তাই আওয়ামী লীগে অনাহুত হাজী সেলিমের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে পুরোটাই আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।