নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০২১
একজন প্রবীণ মানুষ বার্ধক্যে এসে প্রিয়জনের সঙ্গ চান, তার আত্মীয়-স্বজন সন্তান নাতি-নাতনিরা যেন তার পাশে থাকে তার সেবা করে এটিই একজন মানুষের শেষ বয়সের চাওয়া-পাওয়া। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার দুর্ভাগ্য তার অসুস্থতার সময় কেউ তার পাশে নেই। তারেক জিয়া একাধিক মামলায় দণ্ডিত তিনি লন্ডনের পলাতক, তিনি তার মায়ের চেয়ে নিজেকে বেশি ভালবাসেন। যদি মাকে তিনি বেশি ভালোবাসতেন তাহলে হয়তো তিনি কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে হলেও দেশে আসতেন, দেশে এসে তিনি আত্মসমর্পণ করে মায়ের সেবার জন্য খোঁজ খবর নিতে পারতেন। তারেকের বিষয়টি আইনগত, তাই অনেকেই বলেন যে তিনি নিজেকে আইনে সোপর্দ করতে চান না এ কারণেই হয়তো তিনি দেশে আসছেন না।
তারেক জিয়ার স্ত্রী জোবাইদার ঘটনাটা কি এ নিয়ে বিএনপির মধ্যেই এখন নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জোবাইদা একজন চিকিৎসক, তিনি লন্ডনে আছেন তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই কোনো মামলা ও নেই। তিনি একসময় সরকারি চাকরিও করতেন। তিনি দেশে এসে শাশুড়ির সেবা শুশ্রূষা বা চিকিৎসার তদারকি করেন না কেন এই প্রশ্ন এখন এভার কেয়ারে বিএনপি নেতাকর্মীরাই আলোচনা করছেন। জোবায়দা ২০০৭ সালের পর থেকে এক বারও দেশে আসেন নি। এমনকি বেগম খালেদা জিয়া যখন দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারান্তরীণ ছিলেন তখনও জোবায়দা দেশে আসেন নি। কেন, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। জোবাইদা যদি দেশে আসতেন তাহলে সবচেয়ে উপকৃত হতেন বেগম খালেদা জিয়া। কারণ এর ফলে তার চিকিৎসার বিষয়টি তদারকি করার সুবিধা হতো বলে বিএনপি নেতারা মনে করেন।
বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা সিঁথি বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর কয়েক দফায় এসেছিলেন কারাগারে এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি আর দেশে আসেন নি। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া যখন করোনাই আক্রান্ত হলেন, হাসপাতালে ভর্তি হলেন সেই সময় দলের নেতাকর্মীরা প্রত্যাশা করেছিলেন যে বেগম জিয়ার চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য তিনি হয়তো আসবেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি। আর এ নিয়ে এখন বিএনপি`র মধ্যে নানামুখী কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। বিএনপি’র অনেক নেতাই বলছেন সে সময় তিনি এসেছিলেন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা করার জন্য, এখন যেহেতু তিনি বিএনপিতে ভূমিকা রাখতে পারছেন না সেজন্যই হয়ত তিনি আসছেন না। বিএনপির একজন নেতা বলছিলেন যে এদের কাছে মা বা শাশুড়ির সেবা মুখ্য বিষয় না, শাশুড়ির সম্পদের ভাগ পাওয়াই হল প্রধান বিষয় এজন্যই হয়তো সিঁথি আসছেন না।
বেগম খালেদা জিয়ার নাতি এবং তারেক ও জোবাইদার কন্যা জাইমা এখন ব্যারিস্টার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো রকম মামলা নেই কোন রকম অভিযোগ নেই। তিনি নিজে এখন একজন পরিণত বয়স্ক, কাজেই যেকোনো সময় দাদিকে দেখার জন্য তিনি আসতেই পারেন, কিন্তু জাইমারো নীরবতা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
তাহলে এই এই সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের কাজ কি। তারা কি নিজের প্রিয়জনের সেবার জন্যও পাশে দাঁড়াতে পারেন না। অথচ বেগম খালেদা জিয়া এদের জন্যই বিতর্কিত হয়েছেন, এদের জন্যই দুর্নীতিবাজ হয়েছেন, এদের জন্যই অনেক অন্যায় করেছেন। এখন তারা তার দুঃসময়ে কেউ তাঁর পাশে নেই।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।
তবে সৌদি আরবের প্রবাসী বিএনপির নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন যে, যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরব সফরে গেছেন এবং যেহেতু তিনি মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠ পূর্বপরিচিত ও রাজনৈতিক সহকর্মী, সে কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সপরিবারে নৈশভোজে দাওয়াত দিয়েছিলেন। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ফালুর বৈঠক লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। তারেক জিয়ার সঙ্গে ফালুর বিরোধের খবর বিএনপিতে অজানা নয়। বিশেষ করে তারেক জিয়ার অনাগ্রহ এবং আপত্তির কারণেই মোসাদ্দেক আলী ফালু রাজনীতি ছেড়েছেন বলেই অনেকে মনে করেন।
মোসাদ্দেক আলী ফালু ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার দেহরক্ষী। পরে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় এবং সেই ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরেই ১৯৯১ সালে বেগম জিয়া ক্ষমতায় আসার পর তাকে একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন। একান্ত সচিব হলেও ক্ষমতাকেন্দ্রে মোসাদ্দেক আলী ফালু তখন থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।
অনেকেরই ধারণা যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে অবৈধ সম্পদ তার একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে মোসাদ্দেক আলী ফালু। মোসাদ্দেক আলী ফালু বাংলাদেশে এনটিভির মালিক। আইএফআইসি ব্যাংকে তার শেয়ার রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু শিল্প কলকারখানায় তার বিনিয়োগ রয়েছে। এই সমস্ত বিনিয়োগের অর্থ বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বলে একাধিক সূত্র দাবি করে। যদিও এ ব্যাপারে মোসাদ্দেক আলী ফালু সবসময় অস্বীকার করে আসছিলেন।
এক এগারোর সময় দুর্নীতির অভিযোগে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং এই মামলাগুলো যখন বিচারিক আদালতে ওঠে তখন ফালু পালিয়ে সৌদি আরবে যান। এখনও তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
এর মধ্যে বিএনপিতেও তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়। তারেক জিয়া যখন বিএনপিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন মোসাদ্দেক আলী ফালুকে অপাংক্তেয় করা হয়। তাকে একটি অসম্মানজনক পদ দেওয়া হয়েছিল সর্বশেষ কাউন্সিলে। এই পদ প্রাপ্তির পর মোসাদ্দেক আলী ফালু অভিমান করেন এবং তিনি বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাগ করেন। যদিও ফালুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখনও খালেদা জিয়ার সমর্থকরা এবং তারেক জিয়া বিরোধীরা নিয়মিত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন নেতা কর্মীদের বিপদে আপদে তিনি সহযোগিতা করেন বলেও জানা গেছে।
ফালুর একটি আলাদা প্রভাব বলয় রয়েছে বিএনপিতে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যখন বিএনপির অনেকেই সোচ্চার, বিশেষ করে তার অদূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন, তখন অনেকেই নতুন করে ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যয় ছাড়াও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ মোসাদ্দেক আলী ফালুই করে থাকেন বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে।
আর এই কারণেই বিএনপিতে ফালু না থেকেও আছেন। ফালু এখনও বিএনপিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই অনেকে মনে করেন। আর এ কারণেই তারেক জিয়ার চক্ষুশূল মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক নতুন করে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন তারেক জিয়ার উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। আর একারণেই ফালুর সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠতা তিনি ঝালাই করে নিলেন।
তবে অনেকেই মনে করেন যে, এটি একটি স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাৎ। বিদেশে গেলে নিকটজনের সাথে সাক্ষাৎ করলে একটা অন্যরকম আমেজ পাওয়া যায়। সেজন্যই ফালুর সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হয়েছিলেন মির্জা ফখরুল।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।