নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৬ নভেম্বর, ২০২১
হঠাৎ করে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পরপর দু’দিন দু’টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দু’টি সড়ক দুর্ঘটনাই ঘটেছে সিটি কর্পোরেশনের গাড়িতে। একটিতে মারা গেছেন নটরডেম কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী, আরেকটিতে মারা গেছেন গণমাধ্যমকর্মী। অর্থাৎ নিরাপদ সড়কের আন্দোলন উস্কে দেওয়ার জন্য যে দু’টি শ্রেণীর মানুষকে সবচেয়ে উত্যক্ত করা দরকার সেই দু’টি শ্রেণীর মানুষকে উত্যক্ত করা হয়েছে। দু’টি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা কাকতালীয় নাকি এর পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে। যে সময়ে হাফ-পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন সেই সময়ে হঠাৎ করে কেন সড়কে প্রাণ ঝরলো, সে নিয়েও প্রশ্ন। আবার এই প্রাণ ঝরার ক্ষেত্রে দুই সিটি করপোরেশনের গাড়িই বা কেন ব্যবহৃত হলো সেটিও এক বড় ধরনের রহস্য। একদিকে যখন বিএনপি ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এবং সেই কর্মসূচিতে ধাপে ধাপে লোকসমাগম বেড়েছে, ঠিক সেই সময় নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছে। অথচ সরকার নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্য নূন্যতম যে উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার তা নেয়ারও চেষ্টা করছে না। আর এর ফলে নতুন করে একটি প্রশ্ন উঠেছে যে, এই নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আন্দোলন, দু’টি কি একই সূত্রে গাঁথা কিনা?
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, আগামী ডিসেম্বর মাসকে ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার একটি নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এবার ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য অন্যরকম তাৎপর্য বহন করে আনছে। বিশেষ করে এবারের ডিসেম্বরেই বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। সে জন্যই এই বিজয়ের মাসে বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকীকে অন্যরকমভাবে চিত্রিত করার জন্য কোন কোন মহল ষড়যন্ত্র করছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। বিশেষ করে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় হেফাজত ইসলাম সারাদেশে যে তাণ্ডব করেছিল সেই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের বিজয়, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সবসময় স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ষড়যন্ত্র করে। এবার সেরকম ষড়যন্ত্রের আলামত পাওয়া যাচ্ছে নভেম্বর থেকেই।
নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে এর আগে যখন শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল এবং তারা সবকিছু কার্যত অচল করে দিয়েছিল। যদি আগামীকালের মধ্যে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে না করে তাহলে রোববার থেকে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে যদি খালেদা জিয়ার মুক্তি বা তার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে আন্দোলন যুক্ত হয় তাহলে পুরো পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যেতে পারে। হঠাৎ করেই রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। সেরকম কিছু সৃষ্টি করার জন্যই কি পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা গুলো ঘটানো হচ্ছে? হাফ-পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কেন সাতদিন ধরে আন্দোলন করবে এবং বিআরটিএ কেন বাস মালিকদের কাছে নতি স্বীকার করবে এই প্রশ্নের উত্তর মেলে না। বর্তমান সরকার ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং যেকোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। সরকার বারবার কেন পরিবহন মালিকদের কাছে অসহায় হয়ে যাচ্ছে, সরকারের মধ্যে কি তাহলে পরিবহন মালিকদের সিন্ডিকেটের ভূত রয়েছে? আবার খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি কেন রাজনৈতিক মাঠে নিয়ে আসা হচ্ছে সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। সবকিছু মিলিয়ে দেশে একটি অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি করার নীলনকশার বাস্তবায়ন চলছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।