নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৬ নভেম্বর, ২০২১
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি, একই সাথে সড়ক, যোগাযোগ এবং সেতুমন্ত্রীও বটে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হচ্ছে, মেট্রোরেল এবং কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এতকিছুর পরও দল এবং সরকারের ওবায়দুল কাদের যেন নিষ্প্রভ। একের পর এক সমস্যাগুলোতে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অনেকেই বিস্মিত হচ্ছেন। ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক হলো দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ। সাধারণ সম্পাদকই দলের সাংগঠনিক বিষয়গুলো দেখভাল করেন এবং তিনি দল পরিচালনার ক্ষেত্রে দলের সভাপতির পরামর্শে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এখন যেন নিষ্প্রভ। দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপট, দলে চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়ে যাওয়া, একের পর এক বিভিন্ন নেতার দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। আর এ অস্থিরতার ক্ষেত্রে দলের সাধারণ সম্পাদকের যেরকম সক্রিয়, বুদ্ধিদীপ্ত এবং তড়িৎ পদক্ষেপের দরকার ছিল সেটি লক্ষণীয় নয়।
সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কার এবং মেয়র পদ থেকে তার বরখাস্তের ব্যাপারটি আওয়ামী লীগ সভাপতি করেছেন। এখানে ওবায়দুল কাদেরের আরও সক্রিয় ভূমিকা থাকা উচিত ছিল বলে অনেকে মনে করেন। সারাদেশে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপট এবং নৌকার প্রতিপক্ষ হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিজয় আওয়ামী লীগকে নতুন সংকটের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, অথচ এ ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা নিয়ে দলের ভিতরে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর এ ব্যাপারে নিঃস্পৃহতা এবং নির্লিপ্ততা দলের ভেতর সমালোচনা তৈরি করেছে। অনেক বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না বা যে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করা দরকার ছিল সেটি দলের সাধারণ সম্পাদক পারছেন না বলে অনেকে মনে করেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জায়গায় অন্তঃকলহ, কোন্দল দানা বেঁধে উঠেছে। সেই অন্তঃকলহ, কোন্দল দূর করার ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া এবার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এই মনোনয়ন বাণিজ্যের উন্মোচনের ক্ষেত্রেও তিনি ব্যর্থ বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহল মনে করেন। শুধুমাত্র দলের সাংগঠনিক তৎপরতা ক্ষেত্রেই নয়, মন্ত্রণালয়ের কাজেও তিনি আগের মত গতিশীল নন বলেই অনেকে মনে করছেন।
ওবায়দুল কাদের যখন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন তিনি তৎপর ছিলেন, ছুটে বেড়াতেন। বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দেখতেন। এমনকি ঝটিকা সফরে যেতেন বিআরটিএ বা বিভিন্ন স্থানে। এখন যেন সেই ওবায়দুল কাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র অনলাইনে যুক্ত হয়ে কিছু লিখিত বক্তব্য পাঠ করা ছাড়া তার কার্যক্রম চোখে পড়ে না। এর ফলে সড়কে এক নৈরাজ্য চলছে, গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকরা দেশের জনগণকে জিম্মি করে ধর্মঘট করলো, তাদের কাছে সরকার নতি স্বীকার করল। এখন শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত হচ্ছে, সড়কে আবার নতুন করে প্রাণ ঝরছে। এই সবকিছু বিষয়ে ওবায়দুল কাদের নির্লিপ্ত এবং এবং নিষ্ক্রিয় বলে অনেকে মনে করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে আক্রমণ করে লিখিত বক্তব্য দেখে দেখে পাঠ করায় যতটা মনযোগী দেশে বিরাজমান সংকট গুলো বিশেষ করে তার মন্ত্রণালয়ের সঙ্কটগুলো সমাধানে ততটাই উদাসীন। এটি আওয়ামী লীগের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করছে। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে গণপরিবহনে যে নৈরাজ্য চলছে তার ঢেউ আছড়ে পড়বে সরকারের জনপ্রিয়তা উপরে। আর এ কারণেই ওবায়দুল কাদেরের আরো সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করেন দল এবং সরকার।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎভাবে লাগাতার আন্দোলনে নামে বিএনপি। মূলত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে একদফা দাবিতে টানা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যায় বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোটগুলো। এ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি তারা। একপর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক দল। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন করে বিএনপি। নানামুখী তৎপরতার পরও নির্বাচন ঠেকাতে না পারা বিএনপির আন্দোলনে ভাটা পড়ে। সেই থেকে ধীরে চলছে বিএনপি। নেই রাজপথের কঠোর কোনো কর্মসূচি। সম্প্রতি দলীয় কিছু কর্মসূচিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে বলে দলটির অভিযোগ। বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজপথে জোরালো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও পুরোনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজার ঘটনা দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলছে জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য হামলা-মামলা ও গুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। এটা সবাই জানেন যে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সরকার কিন্তু বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। মামলা-মোকদ্দমা আজও শেষ হয়নি। এখনো প্রতিদিন হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত মামলা আছে। গভীর রাতেও গ্রামে-গঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির মকবুল ইসলাম টিপু, ওমর নবি বাবু, মাহবুবুর রহমান টিপু, রফিকুল ইসলাম ময়না, মোহাম্মদ রবিন, মোহাম্মদ সালেহ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিনে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (ভিপি মিজান), জেলা বিএনপি নেতা মোহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর জুরাইন থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মনির মুন্সী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব বাবুসহ গাড়ি চালককে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক আটকের পরও অস্বীকার এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহেদকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
গত ২৪ এপ্রিল খুলনা জেলা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা খান জুলফিকার আলী জুলু, রুপসার থানার মোল্লা সাইফুর রহমান, পাইকগাছার এনামুল হক, মো. সাহাবুদ্দিন ইজাদার, মো. সাইফুল ইসলাম পাইক, স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. জাকির হোসেন তালুকদার, মো. লায়েকুজ্জামান লাকু, মো. কামাল উদ্দিন, মো. ফরহাদ হোসন, জাসাসের মো. খালিদ লস্কর, ছাত্রদলের জাকারিয়া, মো. তরিকুল ইসলাম রনি, মো. আলমগীর শেখ, যুবদলের ইমরান হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সোহেল গাজী, মো. সোহেল গাজী, মো. ফারুক হোসেন, আমিনুল মল্লিক, মো. শিহাব সরদার, বাদশাহ সরকার, মো. আল আমিন শেখ প্রমুখ।
গত ২১ এপ্রিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ নেতাকর্মীর জামিন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গোলাম হোসেন, মো. মোরসালিন, আবদুল আজিজ, সাবের হোসেন, কালাম, হান্নান খান, আবু কাউসার ভূঁইয়া, হুমায়ুন, আনিসুর রহমান শিপলু, সানি ও ইয়াসিন, মোস্তাক আহমেদ, মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন সিরাজ, সেন্টু আহমেদ সাকি, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, মোহাম্মদ মঈন, যুবদলের ওমর ফারুক, রাজু বল্লম রাজু, মো. রকি, বিএনপি নেতা মো. বিল্লাল, মো. ফালান, মোহাম্মদ রনি, মামুন, সাগর ও শাওন। ১৭ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা সেলিম আহম্মেদ সালেম, কুতুব উদ্দিন এবং রেজাউর রহমান রাজুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তার আগে গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য লতিফুল্লাহ জাফরু, বংশাল থানার মো. মাকসুদ হোসেন এবং মোহাম্মদ আরিফ হাসানের জামিন নামঞ্জুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলার আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদলের মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলার মো. মমিনুল ইসলাম, মো. আরমান আলী, মো. মমিন, মো. হাসিনুর রহমান পায়েল এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবুল মনছুর খান দিপক। এর আগে গত ১ মার্চ বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর সদর ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির ৫২ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৮ মার্চ তারা ছাড়া পেয়েছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিনা কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে যেতে হচ্ছে। কারাগার যেন তাদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দীর্ঘ তিন-চার মাস কারাগারে থেকে বেরোলেন। এখনো কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। তাদের জন্য দিনের আলো ও মুক্ত বাতাস গ্রহণ যেন নিষিদ্ধ। এদের প্রায়ই কারাগারের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এভাবে নেতাকর্মীদের কারাগারে ঢুকানো, গুম ও খুন করা এই কর্মসূচি যেন সরকারের শেষ হচ্ছে না। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। কারণ তিনি জানেন তার জনসমর্থন নেই। সরকার যতই বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন করুক না কেন, একদিন এর বিচার হবেই। সব অন্যায়ের রেকর্ড আছে। তাদের শেষ রক্ষা হবে না।
জানা গেছে, ঈদের আগে সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তফা কামাল হৃদয়, এসএ খোকন, উত্তরা থানার আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান আত্মসমর্পণের পর কিছুদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ অনেকে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, গত বছরের ২৬ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় তার স্বামী খোকনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। একই মামলায় এ পর্যন্ত অনেক আসামির জামিন হলেও খোকনকে জামিন না দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ খোকন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, পায়ে পানি ধরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। অবিলম্বে স্বামী খোকেনর মুক্তি দাবি করেন শিরিন সুলতানা।
সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ বলেন, মিথ্যা মামলায় পুলিশি হয়রানির কারণে আমি তো ঘরে থাকি না। তবু কেউ কেউ আমার বাসার সামনে ও বিল্ডিংয়ের ছাদে, কেউ আবার ভাঙাড়ি সেজে, মনিটরিং করে। আমি তো চোর বা ডাকাত নই। আমার দল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং জুলুমের বিপক্ষে লড়ছে। আমি সেই দলেরই (বিএনপি) একজন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া মাহমুদুর রহমান মান্না
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল বিএনপি শামীম ইস্কান্দার ডা. জাহিদ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।
উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।