ইনসাইড টক

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ হোক সুপরিকল্পিত’

প্রকাশ: ০৩:৫৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর, ২০২২


Thumbnail

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দেশের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।’ এটি দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও স্বীকৃত। তবে, র‍্যাগিং, বিতর্কিত মাস্টারপ্ল্যান, প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন, অন্তঃকোন্দল ও আভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ, উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দে ভাগ বসানোর অভিযোগ ও ছাত্র রাজনীতির নানা উপাখ্যানে প্রায়ই আলোচনা-সমালোচনায় দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমে উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম, যা নিয়ে জনমানসেও যেনো কৌতুহলের অন্ত নেই!

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট এসব সমসাময়িক প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি, বিদ্যমান উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে পরিকল্পনার সম্পর্ক এবং পরিষেবা সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় নগর পরিকল্পনাবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সম্মানিত অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ড. গোলাম মইনুদ্দিন এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান ।

বাংলা ইনসাইডার: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে বর্তমান যে মাস্টারপ্ল্যান হাতে নেয়া হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে চলমান পরিকল্পনায় পরিকল্পনাবিদদের বাদ দিয়ে স্থাপত্যবিদদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য?  

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: আপনার প্রশ্নটি যৌক্তিক এবং সঙ্গত। আমি অন্তত এতটুকু বলতে পারি যে, পরিকল্পনাবিদ হিসেবে এখানে মন্তব্য দেওয়ার সুযোগ আমি পাইনি। এখানে মাস্টারপ্ল্যানে যেটা হয়েছে, সেটাতে আমাকে ডাকা হয়নি। তবে এখানে আমার বিভাগের অন্য কাউকে ডাকা হয়েছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।
 
বাংলা ইনসাইডার: ক্যাম্পাসে বর্তমানে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ছোট করে স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরীর বিষয়টি খুবই চর্চিত। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ বিকল্প খেলার মাঠ/স্টেডিয়াম তৈরীর কথা জানালেও, বিদ্যমান মাঠ ও কেন্দ্রীয় মন্দিরের জায়গা নষ্ট করে রাস্তা তৈরীর বিষয়টি নিয়ে আপনার মতামত কী?  

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: আমাদের স্পোর্টস কমপ্লেক্সের দরকার আছে। এতো বড় একটা বিশ্ববিদ্যালয়, এটার তো একটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স থাকতেই হবে। ইনডোর গেইমগুলো সময় মতো হয় না। সেন্ট্রাল ফিল্ডের সাথেই স্পোর্টস কমপ্লেক্স করতে হবে, সেটিও বোধগম্য। তবে, এটা করার জন্য কি ধরনের ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছে কিংবা আদৌ করা হয়েছে কী না, সেটা আমরা এখনো পর্যন্ত দেখিনি।

যেহেতু এটা একটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স, তাই এটা এমন এক জায়গাতে কিংবা ক্লাস্টারে হওয়া উচিৎ, যেনো এর অবস্থান থেকে সকল হল, শিক্ষকদের আবাসিক স্থাপনা এবং ক্ষেত্রবিশেষে একাডেমিক ভবনগুলো থেকে এর যাতায়াতের দূরত্ব সমান হয়। অর্থাৎ এটা একটা সেন্ট্রাল লোকেশনে থাকা দরকার। আমাদের ক্যাম্পাসের আঙ্গিকে দেখলে বলতে হবে, সেন্ট্রাল ফিল্ড পাশে হওয়ার মানে কিন্তু সেন্ট্রাল লোকেশান না। এটা একেবারেই একটা সাইডে হয়ে গিয়েছে। ভেতরের দিকের হলগুলো কিংবা শিক্ষকদের আবাসন থেকে কেউ আসতে চাইলে, তাদের জন্য এটা বেশ দূরবর্তী।
 
বাংলা ইনসাইডার: একইভাবে, মসজিদের পাশে মেয়েদের খেলার জন্য যে মাঠ তৈরীর পরিকল্পনা চলছে, কিংবা বিকল্প আরও একটি রেজিস্ট্রার ভবন নির্মাণের যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য?  

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: মেয়েদের খেলার মাঠ তৈরীর পরিকল্পনা করা হয়েছে, এটা সম্পর্কে এই প্রথম আপনার মাধ্যমেই জানলাম। এটা সম্পর্কে কতদূর কি স্টাডি করা হয়েছে, এটা আমাদের জানানো হয়নি বা আমাদের কাছে এর সম্পর্কে কোন উপাত্ত নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি তা আমাদেরকে দেয় কিংবা আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়, তবে আমরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। বিকল্প আরও একটি রেজিস্ট্রার ভবন তৈরীর ক্ষেত্রে বিবেচনা করা দরকার এখনকার রেজিস্ট্রার ভবনটি অপর্যাপ্ত কিনা! যদি অপর্যাপ্ত হয়, তাহলেই কেবল আরেকটি রেজিস্ট্রার ভবন করা যেতে পারে। যদি অপর্যাপ্ত না হয়, তবে কেন করা হবে, তার জন্য বিস্তর আলোচনা এবং যুক্তিযুক্ত অবস্থান তৈরীর প্রয়োজন আছে।
 
বাংলা ইনসাইডার: বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশাধিকার এর বিষয়টি তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশাধিকারের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে একজন পরিকল্পনাবিদ ও শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য গুণগত পরিষেবা নিশ্চায়নে আপনার পরামর্শ?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: এই বিষয়ে আমার সুনির্দিষ্ট অবস্থান রয়েছে। আপনাকে মনে রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় মানে কিন্তু বিশ্বের বিদ্যালয়। আমরা যারা এখানকার ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছি, আমরা কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অংশ। ক্যাম্পাসের সবকিছুতে আমাদের যেমন অধিকার রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে, ক্যাম্পাসের বাইরের জনসাধারণেরও অধিকার রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানার, তা দেখার।

একটা বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে চলে, বিশ্ববিদ্যালয় মানে আসলে কী, এটা দেখার জন্য অনেকেরই আগ্রহ জাগতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের প্রবেশগম্যতার বিষয়টা থাকা উচিৎ। তবে, যেহেতু জাহাঙ্গীরনগর একটি সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্নটা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বড় বলে মনে করি আমি। সেক্ষেত্রে, যারা ভিজিটর হিসেবে আসবেন, তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত বা অন্ততপক্ষে পরিচয় লিপিবদ্ধ করে এরপর তাদেরকে ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার দেয়া যেতে পারে বলে মনে করি।
 
বাংলা ইনসাইডার: বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধিত্ব না থাকার বিষয়টি কী এসব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোন ভূমিকা পালন করছে? কিংবা, আপনার মতে আসলে গলদ কীসে?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: বিশ্ববিদ্যালয় স্ট্রাকচারে আসলে যেকোনো বডিরই ফুল রিপ্রেজেন্টেশন নিশ্চিত করা জরুরী। কিন্তু মূল গলদ যে এখানেই, সেটা বলাটা মুশকিল। মুশকিল কেননা, আমি বিগত ২৫ বছর যাবত ক্যাম্পাসে দেখে আসছি, বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন রকম সিদ্ধান্ত আসে। ক্যাম্পাসের ভেতর বা বাহির থেকে যখনই যে সিদ্ধান্তই আসুক না কেন, এগুলোর উপরে যদি একধরনের আলোচনার সুযোগ থাকে, তাহলে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক যেকোনো সিদ্ধান্তে আমরা সবাই-ই আরো অনেক বাস্তবসম্মত বা বিতর্ক এড়ানোর মতো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো।
 
বাংলা ইনসাইডার: বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে সম্প্রতি রাস্তায় ব্যারিকেড নির্মাণ করা হয়েছে। বারংবার প্রতিবাদ সত্ত্বেও তা মানছে না সংশ্লিষ্ট অনুষদ। শব্দ দূষণের অযুহাত দেয়া হলেও দেখা যাচ্ছে এখন তারা নিজেরাই শব্দ দূষণ করছে যথেচ্ছভাবে। এক্ষেত্রে, একজন পরিকল্পনাবিদ ও ক্যাম্পাসের শিক্ষক হিসেবে এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: এটা ঠিক যে শব্দ দূষণ হয়। বিশেষ করে ব্যাটারি চালিত ইজি বাইকগুলোর জন্য কিংবা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলন-মানববন্ধন কর্মসূচি, মিছিল ইত্যাদির কারণেও নতুন কলার সামনে শব্দ দূষণ হয়। কিন্তু অন্য একাডেমিক ভবনগুলোর তুলনায় নতুন কলা ভবনের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটা রাস্তা ঘেষে তৈরী করা।

তাই, শব্দ দূষণ দূর করতে গেলে একটা অপশন হয়তোবা এরকম হতে পারে যে, রাস্তা ঘেষে যে ক্লাসরুম বা শিক্ষকদের রুম গুলো আছে, সেই রুমগুলোর ভেতরে ‘সাউন্ড এবজরবার’ লাগানো। এটা খুব বেশী কস্টলি না। এটা থাকলে যেটা হয়ে যে, যেকোনো ধরনের নয়েজ এভজরব করে নিতে পারে।
 
বাংলা ইনসাইডার: জাবি ক্যাম্পাস শীতকালীন পাখির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু, চারদিকে শব্দ দূষণ, মানুষের সমাগম, উচ্চস্বরে গান-বাজনা সহ নানাবিধ কারণে এই বিষয়টি কী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না? কীভাবে এই সমস্যার পরিত্রাণ করা যেতে পারে?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ ঘন্টাতে নানা ধরনের শব্দ হবে। যখন ক্লাস চলবে, প্রাণচাঞ্চল্যতা থাকবে, তখন একধরনের শব্দ হবে। আবার রাতের বেলা অন্য ধরনের শব্দ হবে। উচ্চ শব্দে গান বাজনার ব্যাপারে আমার মনে হয় এটা নিয়ে আরেকটু গবেষণার প্রয়োজন আছে। আমরা যে ধরনের পরিযায়ী পাখি দেখছি, শব্দের প্রতি এদের আচরণ কেমন, তা দেখতে হবে। এরা শব্দে ভয় পাচ্ছে কি না? বা শব্দ তাদের জন্য ক্ষতিকর কি না! এ ধরনের গবেষণার প্রয়োজন আছে। এখন সারা বিশ্বেই এ ধরনের গবেষণা হচ্ছে। আমাদের লাইফ সায়েন্স ফ্যাকাল্টিও এ ধরনের গবেষণা করতে পারে।

আমি যেটা দেখেছি বিগত বছরগুলোতে, এখানে অনেক ভিজিটর আসেন পাখি দেখার জন্য। তারা সেখানে বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবার নিয়ে আসেন। সেখানে ডাস্টবিন থাকলেও তারা উচ্ছিষ্ট প্যাকেট লেকের পানিতে ফেলে দেন। তো এসব প্লাস্টিক বর্জ্য কখনো তো বিলীন হয়ে যাবে না কিংবা অটোমেটিক এভজরব হয়ে যাবেনা। ফলে এগুলো আসলে জীববৈচিত্র্য, পানি, মাটির গঠনগত চরিত্রের জন্য ক্ষতিকর। এটা আমার কাছে বড় সমস্যা বলে মনে হয়।
 
বাংলা ইনসাইডার: সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা দেখা যায়। ক্যাম্পাসের শিক্ষক হিসেবে নিজ ছাত্রদের এভাবে লড়তে দেখে আপনি কতটা ব্যথিত?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: ক্যাম্পাসে যারা আছে, তারা সবাই ম্যাচিউরড। পরিপক্ব মানুষদের এমন অপরিপক্ব আচরণ সবাইকে ব্যথিত করে।
 
বাংলা ইনসাইডার: একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, ঢাকা শহরের সাথে জাহাঙ্গীরনগরের সংযোগ একমাত্র সড়কপথে দেখতে পাই আমরা। নদীপথ বিদ্যমান থাকলেও তা ব্যবহৃত হচ্ছে না। এক্ষেত্রে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনেককেই শাটল রেল বা একটি বিকল্প রেল ব্যবস্থার দাবি জানাতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে আপনার মতামত?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: আমি যতদূর জানি, মেট্রোরেলের একটা এক্সটেনশন সম্ভবত ২০৩৫ সাল নাগাদ হেমায়েতপুর থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত আসবে। আমি জানি না বিষয়টি কতখানি সত্য। যদি এমনই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তবে তো সমস্যার সমাধান হয়েই গেলো। আমি মনে করি না এখানে যে নদীপথটা আছে, সেটা আদৌ ব্যবহারের উপযুক্ত। নদীপথের নামে আমরা ঢাকার আশেপাশে যা দেখি, এগুলো একটু বড় সাইজের ড্রেনেজ ছাড়া আর কিছুই না।
 
বাংলা ইনসাইডার: পরিকল্পনাবিদ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে দশ বছর পর কীভাবে দেখতে চাইবেন? নির্দিষ্ট করে বলতে, সবুজঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক কোন গুণগত পরিবর্তনটি আপনার কাঙ্ক্ষিত বা কাম্য?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: আমি পরিকল্পনাবিদ হিসেবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এক ধরনের পরিকল্পনার ছাপ দেখতে চাই। পরিকল্পনা মানে হচ্ছে, এখানে উপযুক্ত যুক্তি ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। যেটা জনপ্রিয়, সেটাকেই গ্রহণ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আমার যুক্তি কি বলে, আমার কন্টেক্সট কি বলে, সেটা আমাকে জানতে হবে। সেটা যদি আমি জানতে পারি, বুঝতে পারি এবং জাজ করতে পারি, তাহলে সেটাই আমার কাছে কাম্য। সিদ্ধান্ত গ্রহণ হওয়া উচিৎ আমাদের দৃষ্টির সম্মুখে।
 
বাংলা ইনসাইডার: সর্বশেষ প্রশ্ন, একজন পরিকল্পনাবিদ হিসেবে আপনি বাংলাদেশকে আগামী দশ বছর পর কোন অবস্থানে দেখতে চান?

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: আমি বাংলাদেশকে অবশ্যই একটি উন্নত দেশের কাতারে দেখতে চাই। যেখানে আমাদের বৈষম্য থাকবে না। আয়ের বৃদ্ধি সামগ্রিকভাবে আমাদের সকলেরই হবে। সবচাইতে বেশি চাইবো, আমরা সবাই যেনো প্রকৃত শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারি। লিখতে-পড়তে পারার শিক্ষিত না, আমাদের বুঝতে পারার শিক্ষিত হওয়া দরকার। এটাই একজন পরিকল্পনাবিদ হিসেবে আমার চাওয়া।
 
বাংলা ইনসাইডার: ধন্যবাদ আপনাকে।

অধ্যাপক ড. গোলাম মইনুদ্দিন: আপনাকেও ধন্যবাদ।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘নতুন কারিকুলাম অনুসারে তীব্র তাপদাহেও স্কুল খোলা না রেখে উপায় নাই’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। 

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের নতুন যে কারিকুলাম সেটা বাস্তবমুখী শিক্ষা। সে অনুযায়ী স্কুলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্কুলে না গিয়ে শেখার উপায় নেই। এছাড়াও করোনার সময় এমনতেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটা বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া কিছুদিন আগে ঈদের ছুটি, পয়লা বৈশাখের ছুটি সব মিলিয়ে একটা বড় সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই দেশের তাপমাত্রা কমে আসবে। এখন যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা মনিং স্কুল চালু করতে পারি। এখন হয়ত সকাল ৮টায় ক্লাস শুরু হয় সেখানে আমরা এখন থেকে সকাল ৭টায় ক্লাস শুরু করতে পারি এবং ১১ টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যেমন, আজকে সকালে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তাছাড়া দেশের সব জাগয়ায় তাপমাত্রা একই রকম না। যেমন সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে তুলনামূলক তাপমাত্রা কম এবং এই অঞ্চলগুলো গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে। এরকম অবস্থায় স্কুল বন্ধ রাখলেও তো আবার তাদের জন্য ক্ষতি।

তীব্র তাপপ্রবাহের বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের পাঠ্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ্য করে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান  বলেন, যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি। যেমন, এ সময় আমাদের স্কুলগুলোতে পযাপ্ত আলো-বাতাস বিশেষ করে এ সময় যেন লোডশেডিং না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রামের স্কুলগুলোতে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে সে ব্যাপারে আমাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।

কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি কোন কোন এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

তিনি বলেন, দল করলে আপনাকে দলের সিদ্ধান্ত, গঠনতন্ত্র, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়গুলো মানতেই হবে। সেটা না করলে আপনি রাজনীতিতে কখনও ভালো করতে পারবেন না। এটা শুধু রাজনীতিতে নয়, যে কোন সেক্টরে এটা প্রযোজ্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিলেন তখন সেটা অমান্য করার প্রশ্নই আসে না। এরপরও যারা দলের সিদ্ধান্তকে মানলেন না তাদের আদর্শ নিয়ে তো বড় প্রশ্ন আছে। কারণ নির্দেশ অমান্য করা দলের নীতি আদর্শের সাথে যায় না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের মধ্যে কতটুকু আছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। তবে এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। যারা এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তাদের উচিত হবে অনতিবিলম্বে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া।

নির্দেশনা অমান্য করা ক্ষেত্রে দলের কৌশলের ভুল আছে কিনা বিশেষ করে এর আগে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার বহিষ্কার করে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা থেকে যদি কেউ অনুপ্রাণিত হয় তাহলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভালো হবে না এটা নিশ্চিত। আমি বলব তারা ভুল রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। কিন্তু যারা এর ব্যতিক্রম করেছেন তারা সেই স্বাদ পাননি।

তিনি আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ হয়তো সাময়িক ভাবে লাভবান হতে পারেন কিন্তু একটা সময়ের পর রাজনীতিতে থেকে জীবনের জন্য হারিয়েছে যাবেন। রাজনীতিতে তারা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়বেন। জনগণের কাছে তাদের মযার্দার আসন হারাবেন, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখান হবেন। কেউ যদি সে পথে পা বাড়ান সেটার দায়-দায়িত্ব তার নিজের।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ত্যাগী কর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে’

প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশের যৌক্তিকতা এবং দলের অবস্থান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের অনেকে আছেন যারা উত্তরাধিকারে সূত্রে রাজনীতিতে এসেছেন এবং তারা স্ব স্ব অবস্থানে ভালো অবদান রাখছেন তাহলে এখন কেন আওয়ামী লীগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, রাজনীতির বিষয়টি ধন-সম্পদের মত বিষয় নয়। কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান উপজেলা নির্বাচন করছে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তিনি নির্বাচন করতেই পারেন। নির্বাচন করা তার অধিকার। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোন কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান কিংবা স্বজনেরা সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাদের সন্তান, শ্যালক, ভাগ্নে বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ তিনি হয়তো কোনদিনই একবারের জন্যেও জয় বাংলা স্লোগান দেননি কিংবা দলের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেননি। এরকম যাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতি করা বা আসা সেটা মূখ্য নিষয় নয়। কারও পরিবারতন্ত্রের কারণে যেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত না হন সেটার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা। 

কোন কোন উপজেলায় এমপিরা একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন সেটি দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, এটি অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কারণ উপজেলা নির্বাচনে দল থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি যে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি অমান্য করার কোন প্রশ্নই আসে না। কারও অধিকারও নেই এই নির্দেশ অমান্য করার। এমনকি এ ধরনের মনোবৃত্তি দেখানোরও কোন সুযোগ নেই। আমি মনে করি যিনি নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করবে না তিনি এই দলের জন্য কোন ভাবেই মঙ্গলজনক হতে পারে না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশের ওপর বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। আবহাওয়া নিয়ে সহসাই কোনো সুসংবাদ নেই। এরকম তাপদাহ আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ রকম এক অস্বস্তির মধ্যে কীভাবে নারী পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু কিশোর সুস্থ্ থাকতে পারে সে ব্যাপারে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, রোদে যারা কাজ করেন, তাদের একটানা দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করা যাবে না। এতে মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা থেকে হিটস্ট্রোক হয়। হিটস্ট্রোক হলে যে কেউ মারাও যেতে পারেন। হিট স্ট্রোকের মূল ঝুঁকি মূলত যারা অনেকক্ষণ রোদে কাজ করে তাদের। মানব দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ১০৫-এর উপর উঠলে ঘাম হয় না, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, ক্লান্তি, অবসাদ হয়। এক সময় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়, অজ্ঞানও হয়ে যায় অনেকে। এটি বিপজ্জনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, দেশে বর্তমানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এ তাপমাত্রা শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সুস্থ থাকতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপ্রোয়জনে একদম বাইরে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। যারা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, তাদের ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দিতে হবে। কাজের ফাঁকে এক-দুই ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে বসবেন। একটানা রোদের মধ্যে থাকা যাবে না। লবণ মিশ্রিত পানি খেলে ভালো হয়, স্যালাইন খেতে পারেন। ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

আরেকটা জরুরী বিষয় হলো, ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। জিন্স না পরাই ভালো। 

বয়স্ক এবং যারা ডায়বেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভোগেন, তাদের জন্য ঝুঁকিটা বেশি। তারা অপ্রয়োজনে বাইরে যাবেন না। 

শিশুদের বিষয়ে ডা. আবদুল্লাহ বলেন, গরমে বাচ্চাদের জন্যও ঝুঁকি বেশি। এখন স্কুল বন্ধ তাই বাচ্চাদের বাইরে বের না করাই ভালো। বাচ্চাদের বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে। তারা যেন রোদের মধ্যে অনেক বেশি দৌড়ঝাঁপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হিট স্ট্রোকের পাশাপাশি গরমে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস বাড়ছে। অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের আছে, গরমের কারণে তাদের শ্বাসকষ্ট ওঠানামা করছে। তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।

পানিশূন্যতা গরমে সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ্য করে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, এই গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ওরাল স্যালাইন খাওয়া ভালো। এছাড়া পানিতে লবন মিশিয়েও খাওয়া যাবে। তবে রাস্তায় বিক্রি হওয়া লেবু পানি, আখের জুস খাওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর, বাসি কোনো খাবারও পরিহার করতে হবে। শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঘরে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিশু, নারী ও বয়স্কদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এসব রোগীর হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রশাসনের এখতিয়ারে নেই’

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ছাত্ররাজনীতি আবার ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ইসহাক আলী খান পান্না এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ইসহাক আলী খান পান্না এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, যারা প্রগতির কথা বলেন না, মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদের কথা চিন্তা করে তারাই তো আজ ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে চায়। আপনি দেখেন, একটি জলালয়ে যদি পানির কোন ঢেউ না হয়, সেটা যদি কোন কারণে ব্যবহার না হয় তাহলে সেখানে মশা মাছি আর্বজনা জন্মায়। সেখানে থেকে এক সময় দুর্গন্ধ ছাড়ায়। ঠিক তেমনি ভাবে বুয়েটে যদি আপনি মুক্ত চিন্তার চর্চা না করতে দেন তাহলে এর অন্তরালে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে, ধর্মান্ধের উত্থান ঘটবে। যারা স্বাধীনতাকে এখনও মেনে নেননি আপনি তাদেরকে শক্তিশালী করবেন। অথচ প্রগতির কথা যারা বলে সেটা  ছাত্রলীগ হোক কিংবা ছাত্র ইউনিয়ন হোক এমনকি ছাত্রদলও যদি হয় তাহলে তারা সেখানে কথা বলতে পারবে না কেন।

তিনি বলেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা পড়াশুনা করেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ছাত্ররাজনীতি করেছি, এই ক্যাম্পাসে আমরা আমাদের অধিকারের কথা বলেছি, স্বাধীনতার কথা বলেছি, গণতন্ত্রের কথা বলেছি, স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। সেখানে শিবির কোন দিন স্লোগান মিছিল কিছু পরিচালনা করতে পারেনি, করেনি। তারা বুয়েট এবং ঢাকা মেডিকেলে তাদের কার্যক্রম করেছে। একই ভাবে সেই বুয়েটে এখনও তাদের কর্মকাণ্ড চলে। আর ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড চলবে না সেটা তো হতে পারে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনার শুধু ছাত্রলীগ টার্গেট কেন? ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা ছাত্ররাজনীতি করে তারাও তো বুয়েটের ছাত্রছাত্রী। তাহলে বুয়েটের শিক্ষার্থীদেরও তো কথা বলার অধিকার রয়েছে, তারও হলে থাকার অধিকার রয়েছে। তাহলে কেন আপনি তাকে এসব থেকে বঞ্চিত করছেন। বাংলাদেশের সকল অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক, স্বৈরচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সব সময় কথা বলেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে বাংলাদেশে স্বৈর শাসনের পতন, মৌলবাদের পতন এবং সকল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ। সেই ছাত্রলীগ বুয়েটে মৌলবাদের যে চর্চা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। সুতরাং এবং অবশ্যই সেটা সঠিক করেছে। অনতিবিলম্বে বুয়েটের সকল ছাত্রছাত্রীদের সবার মুক্ত বিচরণের সুযোগ করে দেয়া দরকার। তারা যেন প্রগতির কথা বলতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারে, গণতন্ত্রের কথা বলতে পারে সেই পরিবেশ তাদের দিতে হবে। এখন বুয়েটকে নিয়ে যে খেলা চলছে প্রকারন্তে বাংলাদেশে এরা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির পালন করছে। এটা হতে পারে না। আপনি বুয়েট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করেন আমাদের স্বাধীনতা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা বৈশাখ, বুদ্ধিজীবী দিবস তারা এগুলো পালন করে কিনা। এগুলো অবশ্যই তাদের করতে হবে। বুয়েট স্বাধীনতা বাংলা ভূখন্ডে বাইরে কোন প্রতিষ্ঠান না। অতএব ছাত্রলীগ যে দাবি তুলেছে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে এটা যুক্তি যুক্ত।

সাবেক ছাত্রলীগ এই নেতা বলেন, বুয়েটে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর আমরা অবশ্যই নিন্দা জানাই। এর সঙ্গে যারা জড়িত আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার হবে, একাডেমিক কাউন্সিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে বুয়েটকে অন্ধকারে রেখে মৌলবাদী শক্তিকে পৃষ্টপোষকতা করার কোন সুযোগ নাই বুয়েট কর্তৃপক্ষের। অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বুয়েটকে সকলের জন্য উন্মূক্ত এবং সুন্দর একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা অপকর্ম করেছে তাদের দায় সংগঠন নিবে না উল্লেখ্য করে ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, কোন ব্যক্তি, কোন ছাত্র যদি কোন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে থাকে এটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ। কারণ ছাত্রলীগ কোন ধরনের অপরাধকেই সমর্থন করে না। যারা ইতোমধ্যে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েয়ে সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। সুতরাং এগুলোকে অজুহাত দেখিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। 



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন