ইনসাইড টক

সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগের কারণে প্রবাসী আয় বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ০৫ অক্টোবর, ২০২০


Thumbnail

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসীদের কর্মস্থলে ফেরত যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ও কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। তাই প্রবাসী আয় নিয়েও শঙ্কা জেগেছে অনেকের মনে। এসব বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজম্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ

বাংলা ইনসাইডার: সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে কি কারণ আছে বলে মনে করেন?

ড.আতিউর রহমান: সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় আশাতীত হারে বাড়তে দেখছি। এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত: সরকার গতবছর রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। সেটা খুব কাজে দিয়েছে। 
দ্বিতীয়ত: প্যানডেমিকের কারণে বিদেশ থেকে লোকজনের আসা যাওয়া কমে গিয়েছিলো। এর ফলে হুন্ডি কমে গিয়েছে। হুন্ডি কমে যাওয়ার কারণে অনেকে আনুষ্ঠানিক পথে এখন টাকা পাঠাচ্ছেন। 
তৃতীয়ত: অগ্রণী ব্যাংকসহ কোন কোন ব্যাংক সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনার ওপর অতিরিক্ত আরও এক শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। এই কারণে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রবাস আয়ের ক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যাংক এখন এক নম্বর অবস্থানে আছে। এছাড়াও প্রবাসীরা যাতে কর্মস্থল থেকেই টাকা পাঠাতে পারেন এজন্য অগ্রণী ব্যাংক একটি আধুনিক অ্যাপস চালু করেছে। অনেক দেশ থেকেই এখন অবশ্য ডিজিটাল অ্যাপস ব্যবহার করে প্রবাস আয় বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।
মালয়েশিয়া থেকে টাকা পাঠানো আরও সহজ করতে স্ট্যানচার্ট ব্যাংক ও বিকাশের আর্থিক সেবার মাধ্যমে  প্রবাস আয় সংগ্রহের একটি ডিজিটাল উদ্যোগ সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন পেয়েছে। এটিও অ্যাপভিত্তিক একটি উদ্যোগ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকেও নানা ধরনের অ্যাপের ব্যবহার বাড়িয়ে অর্থ লেনদেনকারি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাস আয় পাঠাচ্ছে। এই অর্থ আবার আমাদের প্রান্তে মোবাইল ব্যাংকিং ও এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে খুব দ্রুত প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ডিজিটাল অর্থ লেনদেনের যে বিপ্লব ঘটিয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার তার সুফল পাচ্ছেন পুরো দেশের মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংক গত দশক ধরেই এ কাজে সম্পূরক ভূমিকা পালন করে আসছে।
চতুর্থত; বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারগুলো বাজার থেকে কিনে নিচ্ছে। যার ফলে একদিকে যেমন বাজারে তারল্য বাড়ছে;অন্যদিকে টাকার মূল্যও স্থিতিশীল থাকছে। বিনিময় হারটা স্থিতিশীল থাকছে বলেই প্রবাসীদের দু:শ্চিন্তা কমেছে।
পঞ্চমত;যারা বিদেশে আছেন তারা সব সময় দেশের কথা ভাবেন। দেশের মানুষের তথা আত্মীয়-স্বজনের কস্টের কথা ভাবেন। এজন্য বন্যা এবং করোনার সময়টাতে দেশে থাকা স্বজনদের জন্য তারা বেশি বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন।নিজেরা কম খরচ করে কম খেয়ে তারা তা করছেন।


প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম নীতিও করোনাকালে অনেক সহজ করেছে। ৫০০০ ডলার পাঠালে এখন বাড়তি কোন কাগজপত্র চাইছে না ব্যাংকগুলো। জাতীয় পরিচয়পত্র বা এমএফএস হিসেবের পিন নাম্বার দিয়েই টাকা তুলে নিতে পারছেন উপকারভোগীরা। পাঁচ হজার ডলারের ওপরে পাঠাতে হলে চাকরির কাগজপত্র বা আয়ের উৎস’র কাগজপত্র তাদের উপকারভোগীদের মাধ্যমে ব্যাংকের কাছে প্রর্দশন করতে হয়। কাগজপত্র জমা দেয়ার প্রক্রিয়াও সহজ করা হয়েছে। সময় সীমাও বাড়ানো হয়েছে। আগে এক সপ্তাহের মধ্যে কাগজপত্র দেখাতে হতো। এখন দুমাসের মধ্যে করলেই হয়। আসলে নিয়ম নীতি সহজ করাও যে এক ধরণের প্রণোদনা তা বাংলাদেশ ব্যাংক বুঝতে পেরেছে।


এছাড়াও আগামী ১৬ তারিখ থেকে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে অনলাইনে ট্রেজারী বন্ড কিনতে পারবেন। সরকারী বন্ডে যে পরিমাণ ইন্টারেস্ট প্রবাসীরা পাবেন বিদেশের কোন ব্যাংকে তার কিয়দাংশও পাবেন না। সেখানে এত ইন্টারেস্ট দেয়া হয়না। যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যে থাকা স্বচ্ছল প্রবাসীরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এখন এই বন্ডগুলো অনেক বেশি কিনবেন।
প্রতিটি ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন হয় এমন শাখাগুলোতে ( এড শাখা) যাতে প্রবাসীরা ফরেন একচেঞ্জ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন এবং বন্ডসহ অন্যান্য লেনদেন করতে পারেন সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম-নীতি এরই মধ্যে অনেকটাই সহজ করেছে। সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব ইতিবাচক উদ্যোগের কারণে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ হালে বেশ বাড়ছে। 
অনেকেই ধারণা করেছিলো করোনাকালে প্রবাসী আয় কমে যাবে। সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়ার কারণে উল্টো প্রবাসী আয় আরও বেড়ে গেছে। গত তিন মাসে এই আয় গত বছরের ঐ সময় থেকে ৪৮ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।

বাংলা ইনসাইডার: প্রবাসীদের কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেয়া দিয়েছে। এই অনিশ্চয়তা রেমিট্যান্স প্রবাহে কোন প্রভাব ফেলবে কী?

ড.আতিউর রহমান: প্যানডেমিকের কারণে প্রবাসীদের কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। যারা বিদেশ থেকে এসেছিলেন তারা এখন  ফিরে যেতে খানিকটা সমস্যায় পড়েছেন। ভিসা মিলছে তো টিকেট মিলছে না। টিকেট মিলছে তো ভিসা মিলছে না ।এ ধরনের কিছু সমন্বয়হীনতা আমরা দেখতে পারছি। একটা সংকটকালে এরকম সমস্যা হতেই পারে। 
সমস্যাটার উৎস চিহ্নিত করে কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। সরকার বসে নেই। নানা ভাবে চেষ্টা করছে। তবে অস্বাভাবিক সময়ে ‘আউট অব বক্স’ ব্যবস্হা গ্রহন করাটা দোষের নয়। 

দরকার হলে দেশি বিদেশি ফ্লাইট বাড়িয়ে প্রবাসীদের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো যেতে পারে। করোনা পরীক্ষা সহ যেখানেই সংকট সেখানেই সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।আমাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে রাখেন যারা সেই মানুষগুলো কেন এত হয়রানির শিকার হবেন সে প্রশ্নের মুখোমুখি আমাদের হতেই হবে। যারা এত কষ্টের মধ্যে আমাদের জন্য অর্থ পাঠান তাদের জন্য অবশ্যই আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। পুরো বিষয়টাকে দ্রুত একটা শৃংঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। 
৮০ শতাংশ প্রবাসীই গ্রামের সাধারন মানুষ। তাদের দিকে আমাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে। 

তবে এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে। আর তা হচ্ছে-বাংলাদেশের মানুষ আসলেই লড়াকু।

এমন সংকট কালেও তারা কাজে যোগদানের জন্য মরিয়া। নিজের আত্মীয় স্বজন ও দেশের জন্য কিছু করার আগ্রহ তাদের প্রবল। একেই বলে দেশপ্রেম। এরা আমাদের অর্থনেতিক মুক্তিযোদ্ধা। তাদের ইচ্ছে শক্তির জোরেই বাংলাদেশ শত চ্যালেন্জ পায়ে দলে তরতর করে এই করোনাকালেও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আর সেজন্যেই তাদের দিকে সরকারের বিশেষ নজর দেবার প্রয়োজন রয়েছে।তাদের কষ্ট লাঘবে যা যা দরকার তাই করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখা চাই প্রবাস আয় আমাদের অর্থনীতির শিকড়কে শক্তিশালী করছে। তাই সেই শিকড়ে পানি ঢালতে আমাদের গড়িমসির কোনো সুযোগ নেই।

প্যান্ডেমিকের কারণে যেসব প্রবাসী চাকরি-বাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা যেন দেশে এসে বিপাকে না পড়েন এজন্য সরকার দুই হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে। তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করার জন্য তা করা হয়েছে। তাছাড়া যারা কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলে আবার যাতে ফেরত পাঠানো যায় সেই সুযোগগুলো তৈরি করাও এই কর্মসূচির আরেকটি উদ্দেশ্য।
যারা সম্পদশালি প্রবাসী তাদের দেশে বিনিয়োগ করতে আহবান করতে হবে। আমাদের স্পেশাল ইকোনমিক জোন হচ্ছে, বিনিয়োগবান্ধব নানা ধরনের কর্মকান্ড হচ্ছে। একটু ঝুঁকি নিয়ে হলেও তাদের মাতৃভূমিতে বিনিয়োগের  উদ্যোগ নেবার আহবান জানাচ্ছি। চীনে কিন্তু এধরনের বিনিয়োগই বেশি হয়েছে। এমন কি তাইওয়ান থেকেও চীনে প্রচুর বিনিয়োগ এসেছে। নাড়ির টান বলে কথা।

এছাড়াও প্রবাসী প্রফেশনালস যারা আছেন,বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ার যারা আছেন তাদেরকেও বাংলাদেশে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। আমরা এখনও বিদেশ (ভারত থেকে শ্রীলংকা ) থেকে অনেক পেশাজীবী আমাদের আমদানী করতে হয়। আমরা যদি নিজেদের পেশাজীবী প্রবাসীদের কাজের সুযোগ করে দেই তাহলে তারা কিন্তু আরও বেশি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পারবেন। 

রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রভাব পড়বে কিনা সেটা নির্ভর করছে প্রবাসীরা যেসব দেশে কাজ করছেন সেসব দেশে অর্থনৈতিক মন্দা বাড়ছে কি না তার ওপর। যদি মন্দা বেড়ে যায় তাহলে খানিকটা সমস্যা হতেই পারে। সেই সমস্যার বেশ খানিকটা সামাল দেয়া গেছে উন্নত দেশগুলো থেকে বাড়তি রেমিট্যান্স প্রবাহের মাধ্যমে। আমরা প্রবাসীদের বিনিয়োগ করার নানা সুযোগ করে দিচ্ছি। এই বিনিয়োগ করার সুযোগ যদি বজায় থাকে তাহলে খুব বড় সমস্যা হবে বলে আমার কাছে মনে হয় না। 
তবে যারা বিদেশে আছেন তাদের প্রতি সরকারের বিশেষ নজর দেয়া উচিত। আমাদের অনেক নারী কর্মী বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তারা নিরাপদে বিদেশে আছে কি না সেটাও দেখা উচিত। এ ক্ষেত্রে অনেক দু:খজনক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এই জায়গাগুলোতে কাজ করার আমাদের অনেক সুযোগ আছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে আমাদের প্রবাস আয় বাড়াতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

বাংলা ইনসাইডার: যদি কোন কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে বিঘ্ন ঘটে তাহলে সরকারের কাছে এর কী বিকল্প আছে?


ড.আতিউর রহমান: আমার মনে হয় না সাময়িক এসব কারনে এক্ষুনি রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাবে। সরকার প্রবাসীদের অর্থ পাঠাতে যে সমস্ত উদ্যোগ নিয়েছে এগুলো চালু থাকাতে আমার খুব আশস্কা হচ্ছে না যে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাবে। তবে ভবিষ্যতে যদি কমে যায় তাহলে দেশের অর্থনীতিতে আমরা প্রবাসীদের কার্যকরিভাবে ব্যবহার করবো তেমন পরিকল্পনা থাকা ভালো। তারা কাজ করতে করতে অনেকটাই  স্বপ্রশিক্ষিত হয়ে গেছেন। তাই নতুন করে খুব বেশি প্রশিক্ষন তাদের দিতে হবে বলে মনে হয় না। অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজে নিশ্চয় তাদের কাজে লাগানো যাবে। তাদেরকে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসতে হবে। 

প্রবাসীদের অর্জিত দক্ষতা আমরা আমাদের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে  নিশ্চয় ব্যবহার করতে পারবো। আমাদের অন্যান্য অবকাঠামোগত কাজেও তাদের ব্যবহার করা সম্ভব। তাদের কাজে লাগানোর  মতো ইতিবাচক মানসিকতা আমাদের নীতি নির্ধারকদের এবং উদ্যোক্তাদের অবশ্যই থাকতে হবে। তবেই না দেশটার দ্রুত উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘নতুন কারিকুলাম অনুসারে তীব্র তাপদাহেও স্কুল খোলা না রেখে উপায় নাই’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। 

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের নতুন যে কারিকুলাম সেটা বাস্তবমুখী শিক্ষা। সে অনুযায়ী স্কুলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্কুলে না গিয়ে শেখার উপায় নেই। এছাড়াও করোনার সময় এমনতেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটা বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া কিছুদিন আগে ঈদের ছুটি, পয়লা বৈশাখের ছুটি সব মিলিয়ে একটা বড় সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই দেশের তাপমাত্রা কমে আসবে। এখন যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা মনিং স্কুল চালু করতে পারি। এখন হয়ত সকাল ৮টায় ক্লাস শুরু হয় সেখানে আমরা এখন থেকে সকাল ৭টায় ক্লাস শুরু করতে পারি এবং ১১ টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যেমন, আজকে সকালে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তাছাড়া দেশের সব জাগয়ায় তাপমাত্রা একই রকম না। যেমন সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে তুলনামূলক তাপমাত্রা কম এবং এই অঞ্চলগুলো গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে। এরকম অবস্থায় স্কুল বন্ধ রাখলেও তো আবার তাদের জন্য ক্ষতি।

তীব্র তাপপ্রবাহের বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের পাঠ্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ্য করে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান  বলেন, যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি। যেমন, এ সময় আমাদের স্কুলগুলোতে পযাপ্ত আলো-বাতাস বিশেষ করে এ সময় যেন লোডশেডিং না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রামের স্কুলগুলোতে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে সে ব্যাপারে আমাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।

কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি কোন কোন এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

তিনি বলেন, দল করলে আপনাকে দলের সিদ্ধান্ত, গঠনতন্ত্র, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়গুলো মানতেই হবে। সেটা না করলে আপনি রাজনীতিতে কখনও ভালো করতে পারবেন না। এটা শুধু রাজনীতিতে নয়, যে কোন সেক্টরে এটা প্রযোজ্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিলেন তখন সেটা অমান্য করার প্রশ্নই আসে না। এরপরও যারা দলের সিদ্ধান্তকে মানলেন না তাদের আদর্শ নিয়ে তো বড় প্রশ্ন আছে। কারণ নির্দেশ অমান্য করা দলের নীতি আদর্শের সাথে যায় না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের মধ্যে কতটুকু আছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। তবে এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। যারা এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তাদের উচিত হবে অনতিবিলম্বে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া।

নির্দেশনা অমান্য করা ক্ষেত্রে দলের কৌশলের ভুল আছে কিনা বিশেষ করে এর আগে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার বহিষ্কার করে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা থেকে যদি কেউ অনুপ্রাণিত হয় তাহলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভালো হবে না এটা নিশ্চিত। আমি বলব তারা ভুল রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। কিন্তু যারা এর ব্যতিক্রম করেছেন তারা সেই স্বাদ পাননি।

তিনি আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ হয়তো সাময়িক ভাবে লাভবান হতে পারেন কিন্তু একটা সময়ের পর রাজনীতিতে থেকে জীবনের জন্য হারিয়েছে যাবেন। রাজনীতিতে তারা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়বেন। জনগণের কাছে তাদের মযার্দার আসন হারাবেন, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখান হবেন। কেউ যদি সে পথে পা বাড়ান সেটার দায়-দায়িত্ব তার নিজের।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ত্যাগী কর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে’

প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশের যৌক্তিকতা এবং দলের অবস্থান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের অনেকে আছেন যারা উত্তরাধিকারে সূত্রে রাজনীতিতে এসেছেন এবং তারা স্ব স্ব অবস্থানে ভালো অবদান রাখছেন তাহলে এখন কেন আওয়ামী লীগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, রাজনীতির বিষয়টি ধন-সম্পদের মত বিষয় নয়। কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান উপজেলা নির্বাচন করছে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তিনি নির্বাচন করতেই পারেন। নির্বাচন করা তার অধিকার। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোন কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান কিংবা স্বজনেরা সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাদের সন্তান, শ্যালক, ভাগ্নে বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ তিনি হয়তো কোনদিনই একবারের জন্যেও জয় বাংলা স্লোগান দেননি কিংবা দলের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেননি। এরকম যাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতি করা বা আসা সেটা মূখ্য নিষয় নয়। কারও পরিবারতন্ত্রের কারণে যেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত না হন সেটার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা। 

কোন কোন উপজেলায় এমপিরা একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন সেটি দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, এটি অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কারণ উপজেলা নির্বাচনে দল থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি যে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি অমান্য করার কোন প্রশ্নই আসে না। কারও অধিকারও নেই এই নির্দেশ অমান্য করার। এমনকি এ ধরনের মনোবৃত্তি দেখানোরও কোন সুযোগ নেই। আমি মনে করি যিনি নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করবে না তিনি এই দলের জন্য কোন ভাবেই মঙ্গলজনক হতে পারে না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশের ওপর বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। আবহাওয়া নিয়ে সহসাই কোনো সুসংবাদ নেই। এরকম তাপদাহ আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ রকম এক অস্বস্তির মধ্যে কীভাবে নারী পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু কিশোর সুস্থ্ থাকতে পারে সে ব্যাপারে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, রোদে যারা কাজ করেন, তাদের একটানা দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করা যাবে না। এতে মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা থেকে হিটস্ট্রোক হয়। হিটস্ট্রোক হলে যে কেউ মারাও যেতে পারেন। হিট স্ট্রোকের মূল ঝুঁকি মূলত যারা অনেকক্ষণ রোদে কাজ করে তাদের। মানব দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ১০৫-এর উপর উঠলে ঘাম হয় না, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, ক্লান্তি, অবসাদ হয়। এক সময় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়, অজ্ঞানও হয়ে যায় অনেকে। এটি বিপজ্জনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, দেশে বর্তমানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এ তাপমাত্রা শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সুস্থ থাকতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপ্রোয়জনে একদম বাইরে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। যারা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, তাদের ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দিতে হবে। কাজের ফাঁকে এক-দুই ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে বসবেন। একটানা রোদের মধ্যে থাকা যাবে না। লবণ মিশ্রিত পানি খেলে ভালো হয়, স্যালাইন খেতে পারেন। ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

আরেকটা জরুরী বিষয় হলো, ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। জিন্স না পরাই ভালো। 

বয়স্ক এবং যারা ডায়বেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভোগেন, তাদের জন্য ঝুঁকিটা বেশি। তারা অপ্রয়োজনে বাইরে যাবেন না। 

শিশুদের বিষয়ে ডা. আবদুল্লাহ বলেন, গরমে বাচ্চাদের জন্যও ঝুঁকি বেশি। এখন স্কুল বন্ধ তাই বাচ্চাদের বাইরে বের না করাই ভালো। বাচ্চাদের বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে। তারা যেন রোদের মধ্যে অনেক বেশি দৌড়ঝাঁপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হিট স্ট্রোকের পাশাপাশি গরমে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস বাড়ছে। অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের আছে, গরমের কারণে তাদের শ্বাসকষ্ট ওঠানামা করছে। তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।

পানিশূন্যতা গরমে সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ্য করে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, এই গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ওরাল স্যালাইন খাওয়া ভালো। এছাড়া পানিতে লবন মিশিয়েও খাওয়া যাবে। তবে রাস্তায় বিক্রি হওয়া লেবু পানি, আখের জুস খাওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর, বাসি কোনো খাবারও পরিহার করতে হবে। শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঘরে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিশু, নারী ও বয়স্কদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এসব রোগীর হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রশাসনের এখতিয়ারে নেই’

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ছাত্ররাজনীতি আবার ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ইসহাক আলী খান পান্না এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ইসহাক আলী খান পান্না এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, যারা প্রগতির কথা বলেন না, মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদের কথা চিন্তা করে তারাই তো আজ ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে চায়। আপনি দেখেন, একটি জলালয়ে যদি পানির কোন ঢেউ না হয়, সেটা যদি কোন কারণে ব্যবহার না হয় তাহলে সেখানে মশা মাছি আর্বজনা জন্মায়। সেখানে থেকে এক সময় দুর্গন্ধ ছাড়ায়। ঠিক তেমনি ভাবে বুয়েটে যদি আপনি মুক্ত চিন্তার চর্চা না করতে দেন তাহলে এর অন্তরালে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে, ধর্মান্ধের উত্থান ঘটবে। যারা স্বাধীনতাকে এখনও মেনে নেননি আপনি তাদেরকে শক্তিশালী করবেন। অথচ প্রগতির কথা যারা বলে সেটা  ছাত্রলীগ হোক কিংবা ছাত্র ইউনিয়ন হোক এমনকি ছাত্রদলও যদি হয় তাহলে তারা সেখানে কথা বলতে পারবে না কেন।

তিনি বলেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা পড়াশুনা করেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ছাত্ররাজনীতি করেছি, এই ক্যাম্পাসে আমরা আমাদের অধিকারের কথা বলেছি, স্বাধীনতার কথা বলেছি, গণতন্ত্রের কথা বলেছি, স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। সেখানে শিবির কোন দিন স্লোগান মিছিল কিছু পরিচালনা করতে পারেনি, করেনি। তারা বুয়েট এবং ঢাকা মেডিকেলে তাদের কার্যক্রম করেছে। একই ভাবে সেই বুয়েটে এখনও তাদের কর্মকাণ্ড চলে। আর ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড চলবে না সেটা তো হতে পারে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনার শুধু ছাত্রলীগ টার্গেট কেন? ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা ছাত্ররাজনীতি করে তারাও তো বুয়েটের ছাত্রছাত্রী। তাহলে বুয়েটের শিক্ষার্থীদেরও তো কথা বলার অধিকার রয়েছে, তারও হলে থাকার অধিকার রয়েছে। তাহলে কেন আপনি তাকে এসব থেকে বঞ্চিত করছেন। বাংলাদেশের সকল অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক, স্বৈরচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সব সময় কথা বলেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে বাংলাদেশে স্বৈর শাসনের পতন, মৌলবাদের পতন এবং সকল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ। সেই ছাত্রলীগ বুয়েটে মৌলবাদের যে চর্চা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। সুতরাং এবং অবশ্যই সেটা সঠিক করেছে। অনতিবিলম্বে বুয়েটের সকল ছাত্রছাত্রীদের সবার মুক্ত বিচরণের সুযোগ করে দেয়া দরকার। তারা যেন প্রগতির কথা বলতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারে, গণতন্ত্রের কথা বলতে পারে সেই পরিবেশ তাদের দিতে হবে। এখন বুয়েটকে নিয়ে যে খেলা চলছে প্রকারন্তে বাংলাদেশে এরা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির পালন করছে। এটা হতে পারে না। আপনি বুয়েট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করেন আমাদের স্বাধীনতা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা বৈশাখ, বুদ্ধিজীবী দিবস তারা এগুলো পালন করে কিনা। এগুলো অবশ্যই তাদের করতে হবে। বুয়েট স্বাধীনতা বাংলা ভূখন্ডে বাইরে কোন প্রতিষ্ঠান না। অতএব ছাত্রলীগ যে দাবি তুলেছে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে এটা যুক্তি যুক্ত।

সাবেক ছাত্রলীগ এই নেতা বলেন, বুয়েটে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর আমরা অবশ্যই নিন্দা জানাই। এর সঙ্গে যারা জড়িত আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার হবে, একাডেমিক কাউন্সিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে বুয়েটকে অন্ধকারে রেখে মৌলবাদী শক্তিকে পৃষ্টপোষকতা করার কোন সুযোগ নাই বুয়েট কর্তৃপক্ষের। অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বুয়েটকে সকলের জন্য উন্মূক্ত এবং সুন্দর একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা অপকর্ম করেছে তাদের দায় সংগঠন নিবে না উল্লেখ্য করে ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, কোন ব্যক্তি, কোন ছাত্র যদি কোন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে থাকে এটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ। কারণ ছাত্রলীগ কোন ধরনের অপরাধকেই সমর্থন করে না। যারা ইতোমধ্যে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েয়ে সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। সুতরাং এগুলোকে অজুহাত দেখিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। 



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন