ইনসাইড টক

‘‘নূর হোসেনদের আত্মত্যাগ কি বৃথা যাবে?’’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১০ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail

কবি, সাহিত্যিক ও ৯০ দশকের তুখোড়, সাহসী ছাত্রনেতা মোহন রায়হান। স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনের সংগ্রাম ও তৎপরবর্তী সামরিক শাসনবিরোধী লড়াইয়ের গর্ভ থেকে অভ্যুদয় তার। সমাজ-পরিবর্তনেও অঙ্গীকারবদ্ধ তিনি। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ সামরিক শাসন জারি করা মাত্র মধুর ক্যান্টিন থেকে প্রথম প্রতিবাদী মিছিল বের হয় মোহন রায়হানের নেতৃত্বে। ১৯৮৩-এর ১১ জানুয়ারি সামরিক স্বৈরশাহীর বিরুদ্ধে প্রথম ছাত্রবিদ্রোহের নেতৃত্বও দেন তিনি। ৯০ দশকের তুখোড়, সাহসী এই ছাত্রনেতার সঙ্গে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘ আলাপ হয় বাংলা ইনসাইডারের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক মো. অলিউল ইসলাম

বাংলা ইনসাইডার: শহীদ নূর হোসেনের জীবন উৎসর্গের তাৎপর্য জানতে চাই? এটি কি সত্যি নয় যে, তার আত্মদানের মধ্য দিয়েই নয় বছরব্যাপী এরশাদ সামরিক স্বৈরাচারের পতন অবিশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল?

মোহন রায়হান: আজ ১০ নভেম্বর। শহীদ নূর হোসেন দিবস। দিবসটিকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। নূর হোসেন দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বস্তুত নূর হোসেনের জীবন দানের মধ্য দিয়েই নয় বছরব্যাপী এরশাদ সামরিক স্বৈরাচারের পতন অবিশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল।

বাংলা ইনসাইডার: একজন অটোরিক্সা চালকের গণতন্ত্রের প্রতি এমন তীব্র আকাঙ্খার নেপথ্যে কী ছিল বলে মনে করেন?

মোহন রায়হান: নূর হোসেন ব্যক্তিজীবনে একজন অটোরিক্সা চালক ছিলেন। সে বুকের সামনে ‘স্বেরাচার নিপাত যাক’ ও পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাধারণ মানুষের  গণতান্ত্রিক চেতনা ও আকাঙ্খা কত তীব্র। আমাদের দেশের সকল সামরিক, বেসামরিক, স্বৈরতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল অনিবার্য এবং সাধারণ শ্রমিক, কৃষক, রিক্সাওয়ালা, মুটে-মজুরদের অংশগ্রহণের কারণেই আমাদের ৫২- এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, এরশাদ সামরিক স্বৈরাচারসহ সমস্ত সামরিক, বেসামরিক  স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনগুলো সফলতা পেয়েছে। তেমনি শহীদ নূর হোসেনসহ অসংখ্য শহীদের রক্ত আর আত্মাহুতির মধ্য দিয়ে সামরিক স্বৈরশাহী এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতি লাভ করেছিল। 

বাংলা ইনসাইডার: এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শুরুটা আপনাদের নেতৃত্বেই হয়েছিল। এ সম্পর্কে একটু বলবেন?

মোহন রায়হান: ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। তার পরের দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর কেন্টিন থেকে আমার নেতৃত্বে ১৫-২০জনের একটি মিছিল বেরিয়েছিল। পাশাপাশি তৎকালীন ছাত্র মৈত্রীর নেতা, বর্তমানে ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সম্পাদক নূরুল কবীরের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বেরিয়েছিল।  ‘সামরিক শাসন মানি না, মানবো না’ স্লোগান দিয়ে। সেই মিছিল শেষে আমরা যখন মধুর কেন্টিনে ফিরে এসেছিলাম, সমস্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর শীর্ষ  নেতারা আমাদেরকে হঠকারী বলে তিরস্কার করে এবং ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে  দ্রুত মধুর কেন্টিন ছেড়ে পালিয়ে যায়। এমনকি আমি যে ছাত্র সংগঠন করতাম, জাসদ ছাত্রলীগ, আমার নেতারাও বলেছিলেন, দেশে  সামরিক শাসন জারি হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিলাম না, কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়া তুমি আগেই মিছিল বের করে ফেললে?" আমি বলেছিলাম, রাজনীতি করে এটাই শিখেছি, দেশে মার্শাল ল জারি হয়েছে এর প্রতিবাদ করতে হবে, রাস্তায় নামতে হবে। সে জন্য কারো পারমিশনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। যাক এভাবেই আন্দোলন শুরু হয়। 

বাংলা ইনসাইডার: মজিদ খানের শিক্ষানীতি বিরুদ্ধেও আপনারা প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলেন, যা সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। এ সম্পর্কে একটু বলবেন?

মোহন রায়হান: এরশাদ শুধু অবৈধভাবে ক্ষমতাই দখল করেনি, একটি বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতিও ঘোষণা করে যা দেশব্যাপী মজিদ খানের শিক্ষানীতি বলে পরিচিত। সেই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আমরা ছাত্ররা প্রতিবাদ করি এবং এই শিক্ষানীতি বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি  সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনও গড়ে তোলার চেষ্টা করি। আমরা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করি। ১৯৮২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌন মিছিল করি। সে সময়  আমরা কয়েকটি ছাত্র সংগঠন মিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন চত্বরে একটি মৌন মিছিল করি। এর মধ্য দিয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেই। 

বাংলা ইনসাইডার: `ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ`কীভাবে গঠিত হয়েছিল? 

মোহন রায়হান: ১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান দিবসে শুক্রবার হওয়ায় ৮ নভেম্বর জাসদ ছাত্রলীগ একটি মিছিল বের করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ঢুকে পড়ে এবং ব্যাপক নিপীড়ন চালায়। ছাত্র, ছাত্রী এমনকি শিক্ষকও রেহায় পায়নি সেই নির্যাতন থেকে। ক্লাসে ক্লাসে ঢুকে বেধড়ক পিটায়। সেই সময় নূরুল আলম ব্যাপারী নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে প্রচণ্ড প্রহার করা হয়। জাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা শরীফ খানসহ আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমরা ১৪টি ছাত্র সংগঠন একত্রিত হয়ে `ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ` গঠন করি এবং ১১ জানুয়ারি রাস্তায় প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক শাসন ভাঙ্গার দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করি। 

বাংলা ইনসাইডার: `ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ`র ব্যানারে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে আপনাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, বিএনপি’র মতো প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোরও মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। এর কারণ কী ছিল?

মোহন রায়হান: আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মজিদ খানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে একটি গণসাক্ষর কর্মসূচি গ্রহণ করি। এক মাসে লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর সাক্ষর করে। ১১ জানুয়ারি ছাত্র-বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজপথে প্রথম সামরিক শাসন ভঙ্গ করে ১০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর মিছিল নিয়ে শিক্ষাভবন ঘেরাও করি। এর আগের দিন সামরিক জান্তার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, যদি ছাত্ররা রাস্তায় নামে, মিছিল বের করে, তাহলে মিছিলে গুলি চলবে। এবং এই প্রাণহানির জন্য জান্তা সরকার দায়ী থাকবে না। তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতাদের নিয়ে মিটিং বসে। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষ সামরিক জান্তার হুমকি সম্পর্কে হুশিয়ার করে। রাজনৈতিক দলগুলো, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া ও অন্যান্য দলের নেতারা ছাত্রনেতাদের ডেকে বলেন যে, আমরা প্রস্তুত নই। তোমরা কর্মসূচি পিছিয়ে দাও। সিদ্ধান্ত হয় ১১ই জানুয়ারি বটতলা থেকে মিছিল যাবে শহীদ মিনার পর্যন্ত, শিক্ষা ভবনে যাবে না। কিন্তু সাধারণ ছাত্ররা এই ঘোষণা মেনে নেয় না।  ১৯৮২ সালের ১১ই জানুয়ারি ১৪টি ছাত্র সংগঠনের মাত্র ২৮জন নেতার মিছিল শহীদ মিনারে যায় আর সব সংগঠনের সব নেতা কর্মীরা সবাই আমার নেতৃত্বে শিক্ষা ভবন ঘেরাও করে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক শাসন ভঙ্গ করি। এখন সবাই বিকৃত ইতিহাস লেখে, সেদিন আমরা সবাই আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক শাসন ভেঙ্গে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসি। সামরিক জান্তার সকল প্রস্ততি থাকা সত্বেও ব্যাপক ছাত্রছাত্রীর সমাবেশ দেখে গুলি চালানোর সাহস পায় না। তার দুদিন পর ১৩ জানুয়ারি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী ইস্কাটন থেকে আমাকে চোখ হাত বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। ২১ দিন আমাকে ক্যান্টনমেন্টে গুম করে রেখে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়ে। আমার মুক্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে আমাকে মুক্তি দেয়া হয়। সেদিন সাধারণ ছাত্ররা ডাকসু ভবন ভাংচুর করে,  কারণ সকল সংগ্রামের পাদপীঠ ডাকসু কেনো আপোসকামী হলো? পরবর্তীতে আমরা সব ছাত্র সংগঠন মিলে বসে সব কিছু মিটমাট করে নতুন করে আন্দোলনের নতুন পরিকল্পনা করি।

বাংলা ইনসাইডার: ১৪ই ফেব্রুয়ারির ঘটনা আন্দোলনে কেমন প্রভাব রেখেছিল? 

মোহন রায়হান: ১১ই জানুয়ারি কর্মসূচি এক মাস পিছিয়ে ১৪ই ফেব্রুয়ারি করা হয়েছিল। সেই হিসেবে আমরা আবার নতুন করে ১৪ই ফেব্রুয়ারির জন্য প্রস্তুতি নেই এবং সারা দেশে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। ১৪ই ফেব্রুয়ারির ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের শিক্ষা ভবন ঘেরাও কর্মসূচি উপলক্ষে  আমরা মিছিল নিয়ে শিক্ষা ভবনের দিকে যেতে শিশু একাডেমির সামনে মিছিল যেতেই বর্বর এরশাদের নির্দেশে  সেই মিছিলে গুলি চলে, গুলিতে মারা যায় জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, মোজাম্মেল দীপালিসহ অনেক ছাত্রছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করে জয়নালের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়, অনেক ছাত্র ছাত্রীদের গ্রেফতার করা হয়, নির্যাতন চালানো হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আমরা আবার নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময় হরতাল ডাকা হয়,  বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করি, সারা বাংলাদেশের সকল স্কুল-কলেজগুলোতে আমরা ব্যাপক প্রচারপ্রচারনা চালাই। শ্রমিক কর্মচারীদের হরতালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের  ছাত্রনেতা শাহজাহান সিরাজকে গুলি করে হত্যা করা হয়, হত্যা করা হয় কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তাজুল ইসলাম, ময়েজউদ্দিনকে। পরবর্তীতে গুলি করে হত্যা করা হয় জাতীয় ছাত্রলীগ নেতা রাউফুন বসুনিয়াকে, ট্রাকচাপা দিয়ে মারা হয় ছাত্রলীগ নেতা সেলিম-দেলওয়ারকে। এরকম অনেক ছাত্র ছাত্রীর রক্তের স্রোতে ভেসে ভেসে আন্দোলনটা এগুচ্ছিলো। আন্দোলনে লেখক, কবি, সাহিত্যক, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের একত্রিত করতে  আমরা `জাতীয় কবিতা পরিষদ` এবং `সম্মিলিত সাংস্কৃতিক` জোট গঠন করি। সাংস্কৃতিক কর্মীরা, শ্রমিকরা, ছাত্ররা, সাধারণ জনগণ আস্তে আস্তে আন্দোলনের সাথে জড়ো হয়। 

বাংলা ইনসাইডার: এরশাদীয় স্বৈরশাসনের শেষটা কীভাবে হয়েছিল?

মোহন রায়হান: আন্দোলন যত বেগবান হয় স্বৈরাচারী নিপীড়ন আরও নিষ্ঠুর ও নির্মানবিক হয়ে ওঠে। ১৯৮৭ সালে ১০ই নভেম্বর মিছিলে নূর হোসেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো ১১ ও ১২ নভেম্বর দেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। আন্দোলন আরও তীব্র গতি লাভ করে তারই ধারাবাহিকতায় ২৭ নভেম্বর ডা. মিলনের হত্যা, জেহাদের খুন জনতার প্রচণ্ড ক্ষোভ-বিক্ষোভে ফেটে পড়ার মাধ্যমে ব্যাপক গণজাগরণ সৃষ্টি ও গণ অভ্যুত্থানের মুখে ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হয়। পতন হয় পৃথিবীর অন্যতম ঘৃণ্য এরশাদীয় স্বৈরশাসনের প্রায় এক দশক। 

বাংলা ইনসাইডার: এতো জীবনদানের প্রতিদান কি আমরা দিতে পারছি?

মোহন রায়হান: এই যে এতো রক্ত, এতো জীবনদান এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা- একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শোষণমুক্ত বাংলাদেশ, আজকে কি আমরা সেখানে পৌঁছাতে পেরেছি? আমরা পৌঁছাতে পারি নাই। আমাদের শহীদদের যে স্বপ্ন ছিল, আমরা যারা আন্দোলনটা রচনা করেছিলাম, ত্যাগ তিতীক্ষা করেছিলাম, গ্রেফতার হয়েছিলাম, নিপীড়ন সহ্য করেছিলাম। সেসময় সাংবাদিকদের একটা ভূমিকা ছিল, সাংবাদিক সৈয়দ বোরহান কবীরকে লেখার জন্য এরশাদ গ্রেফতার করেছিল। আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বোরহান কবীরের মুক্তির দাবিতে পোস্টার বের করে ঢাকা শহরে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। আরও অন্যান্য সাংবাদিকদের ওপরও নির্যাতন ছিল, হুলিয়া ছিল, হুমকি ছিল। এই যে এতো মানুষের জীবনদান, এতো মানুষের রক্তপাত, এর মধ্যে দিয়ে আমাদের যে স্বপ্নের গণতন্ত্র সেই গণতন্ত্রকে আমরা কি অর্জন করতে পেরেছি?  

বাংলা ইনসাইডার: সার্বিকভাবে আপনার দৃষ্টিতে  আমাদের গণতন্ত্রের অবস্থা এখন কেমন? 

মোহন রায়হান: আজকে কি দেশে কারো কথা বলার অধিকার আছে? আজকে কি ভোটের নিরাপত্তা আছ? আজকে সারা দেশ লুটপাট, দুর্নীতির মহাস্বর্গে পরিণত হয়েছে। আজকে আমাদের পার্লামেন্টে প্রায় ৭০ ভাগ হচ্ছে ব্যবসায়ী তাদের অনেকেই লুটেরা, কালো টাকার মালিক। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। মৌলবাদী, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে গোপন আঁতাত, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ  আজ কোথায়?  

বাংলা ইনসাইডার: নূর হোসেনদের আত্মত্যাগ কি তাহলে বৃথা যাবে?

মোহন রায়হান: স্বাভাবিকভাবে আজ প্রশ্ন আসে নূর হোসেনদের আত্মত্যাগ কি বৃথা যাবে? এ প্রশ্ন আজকে আমাদের বিবেকের কাছে আমাদের প্রত্যেকের করতে হবে। আজকে আমাদের দলকানা হয়ে থাকলে চলবে না। আজকে আমাদের অন্ধ হয়ে থাকলে চলবে না। আমি বুঝি না যে শেখ হাসিনাকে কারা ঘিরে আছে? দেশে এই যে লুটপাট চলছে, এই যে দুর্নীতি চলছে, এই যে একটা ভয়ের ও আতঙ্কের রাজত্ব কায়েম হয়েছে এটা কি উনি জানেন না? উনি শোনেন না? 

বাংলা ইনসাইডার: বর্তমানের প্রচলিত রাজনীতিতে আপনাকে দেখা যায় না কেন?

মোহন রায়হান: আমি এখন রাজনীতি থেকে দূরে আছি। কারণ আমাদের সময় রাজনীতির যে আদর্শ, নীতি, চরিত্র ছিল তা এখন নেই। আজকে রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। আজকে সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের হাতে নেই। আজকে মিডিয়া মাফিয়ারা কিনে নিয়েছে। আজকে রেডিও, সংবাদপত্র, টেলিভিশন এগুলোর মালিক আজ মাফিয়ারা। সাংবাদিক হিসেবে যাদের শ্রদ্ধা করতাম, ভালবাসতাম, স্নেহ করতাম আজকে আর সেই শ্রদ্ধা, ভালোবাসা নেই। দুঃখ হয়, কষ্ট হয়। আজকে ১০ ই নভেম্বর নুর হোসেন দিবস। নুর হোসেন একজন অটো রিকশাচালক। আজকের দিনে সে জীবন দিয়েছিলেন । তার জীবনে কি চাওয়া পাওয়া ছিল? আজকে আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে। আজকে আমাদের আবার প্রত্যকেকই কথা বলতে হবে। যারা স্বাধীনতার পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, একাত্তরের চেতনা ধারণ করেন তাদের প্রত্যেকের সোচ্চার হওয়ার দরকার। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, স্বাধীনতার যে ডিক্লারেশন- সমতা, সামাজিক ন্যায় বিচার, মর্যাদাবোধ  সেই চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য ১০ই নভেম্বর নূর হোসেন দিবসে আমাদের নতুন করে শপথ নেয়া দরকার। আমাদেরকে নতুন করে নতুন চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। 

বাংলা ইনসাইডার: বর্তমান তরুণ সমাজের কাছে আপনার কোনো বার্তা দেওয়ার আছে?

মোহন রায়হান: আজকে সারা বিশ্বে যে পুঁজিবাদ, সাম্রজ্যবাদ, স্বৈরতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে তার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের প্রতিবাদী তরুণ সমাজকে গর্জে উঠতে হবে। অর্থ-বিত্ত সম্পদের ভোগবাদী সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্বব্যাপী তরুণ সমাজকে আজ ভোগবাদে লালায়িত করে তাদের চেতনাকে ভোতা করে দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে পড়তে এসে ভাবতাম, আমরাই শিক্ষিত,আমাদেরই কথা বলতে হবে। আর এখন ছেলে মেয়েরা কী করে অর্থ-বিত্তের মালিক হবে, বড় চাকরি পাবে, অনেক টাকার মালিক হবে, কীভাবে বাড়ি গাড়ির মালিক হবে, কী করে বিদেশে পাড়ি জমাবে এই স্বপ্নে তারা বিভোর! আর এটা পরিকল্পিত ভাবেই করা হচ্ছে। এটা পুঁজিবাদী সমাজের ক্যারেক্টার। সমস্ত মানুষকে ভোগবাদী করা। আজ ছাত্রদেরকে অন্যদিকে ধাবিত করা হয়েছে। এটা জাতির জন্য খুব ভয়ঙ্কর একটা ব্যাপার। এ দেশের সামরিক-বেসামরিক সকল স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলন সূচনা করেছে ছাত্ররা। অথচ সেই ছাত্র সমাজ আজ নীরব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেলে মেয়েরা ভাবা যায় না, তারা এভাবে সবকিছুতে চুপ আছে। এটা সমগ্রটাই একটা ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আজকে যুব সমাজকে, ছাত্র সমাজকে তার চেতনাশূণ্য করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘নতুন কারিকুলাম অনুসারে তীব্র তাপদাহেও স্কুল খোলা না রেখে উপায় নাই’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। 

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের নতুন যে কারিকুলাম সেটা বাস্তবমুখী শিক্ষা। সে অনুযায়ী স্কুলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্কুলে না গিয়ে শেখার উপায় নেই। এছাড়াও করোনার সময় এমনতেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটা বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া কিছুদিন আগে ঈদের ছুটি, পয়লা বৈশাখের ছুটি সব মিলিয়ে একটা বড় সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই দেশের তাপমাত্রা কমে আসবে। এখন যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা মনিং স্কুল চালু করতে পারি। এখন হয়ত সকাল ৮টায় ক্লাস শুরু হয় সেখানে আমরা এখন থেকে সকাল ৭টায় ক্লাস শুরু করতে পারি এবং ১১ টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যেমন, আজকে সকালে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তাছাড়া দেশের সব জাগয়ায় তাপমাত্রা একই রকম না। যেমন সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে তুলনামূলক তাপমাত্রা কম এবং এই অঞ্চলগুলো গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে। এরকম অবস্থায় স্কুল বন্ধ রাখলেও তো আবার তাদের জন্য ক্ষতি।

তীব্র তাপপ্রবাহের বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের পাঠ্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ্য করে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান  বলেন, যেহেতু তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে সেজন্য আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি। যেমন, এ সময় আমাদের স্কুলগুলোতে পযাপ্ত আলো-বাতাস বিশেষ করে এ সময় যেন লোডশেডিং না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রামের স্কুলগুলোতে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে সে ব্যাপারে আমাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি’

প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।

কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি কোন কোন এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনেরা। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

তিনি বলেন, দল করলে আপনাকে দলের সিদ্ধান্ত, গঠনতন্ত্র, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়গুলো মানতেই হবে। সেটা না করলে আপনি রাজনীতিতে কখনও ভালো করতে পারবেন না। এটা শুধু রাজনীতিতে নয়, যে কোন সেক্টরে এটা প্রযোজ্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিলেন তখন সেটা অমান্য করার প্রশ্নই আসে না। এরপরও যারা দলের সিদ্ধান্তকে মানলেন না তাদের আদর্শ নিয়ে তো বড় প্রশ্ন আছে। কারণ নির্দেশ অমান্য করা দলের নীতি আদর্শের সাথে যায় না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের মধ্যে কতটুকু আছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন। তবে এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। যারা এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তাদের উচিত হবে অনতিবিলম্বে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া।

নির্দেশনা অমান্য করা ক্ষেত্রে দলের কৌশলের ভুল আছে কিনা বিশেষ করে এর আগে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার বহিষ্কার করে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা থেকে যদি কেউ অনুপ্রাণিত হয় তাহলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ভালো হবে না এটা নিশ্চিত। আমি বলব তারা ভুল রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। কিন্তু যারা এর ব্যতিক্রম করেছেন তারা সেই স্বাদ পাননি।

তিনি আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ হয়তো সাময়িক ভাবে লাভবান হতে পারেন কিন্তু একটা সময়ের পর রাজনীতিতে থেকে জীবনের জন্য হারিয়েছে যাবেন। রাজনীতিতে তারা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়বেন। জনগণের কাছে তাদের মযার্দার আসন হারাবেন, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখান হবেন। কেউ যদি সে পথে পা বাড়ান সেটার দায়-দায়িত্ব তার নিজের।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ত্যাগী কর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে’

প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশের যৌক্তিকতা এবং দলের অবস্থান সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে আলাপচারিতায় জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের অনেকে আছেন যারা উত্তরাধিকারে সূত্রে রাজনীতিতে এসেছেন এবং তারা স্ব স্ব অবস্থানে ভালো অবদান রাখছেন তাহলে এখন কেন আওয়ামী লীগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো—এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, রাজনীতির বিষয়টি ধন-সম্পদের মত বিষয় নয়। কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান উপজেলা নির্বাচন করছে সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন তিনি নির্বাচন করতেই পারেন। নির্বাচন করা তার অধিকার। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোন কোন এমপি বা মন্ত্রীর সন্তান কিংবা স্বজনেরা সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও তাদের সন্তান, শ্যালক, ভাগ্নে বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছে। অথচ তিনি হয়তো কোনদিনই একবারের জন্যেও জয় বাংলা স্লোগান দেননি কিংবা দলের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেননি। এরকম যাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতি করা বা আসা সেটা মূখ্য নিষয় নয়। কারও পরিবারতন্ত্রের কারণে যেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত না হন সেটার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা। 

কোন কোন উপজেলায় এমপিরা একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন সেটি দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, এটি অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কারণ উপজেলা নির্বাচনে দল থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি যে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি অমান্য করার কোন প্রশ্নই আসে না। কারও অধিকারও নেই এই নির্দেশ অমান্য করার। এমনকি এ ধরনের মনোবৃত্তি দেখানোরও কোন সুযোগ নেই। আমি মনে করি যিনি নেত্রীর সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করবে না তিনি এই দলের জন্য কোন ভাবেই মঙ্গলজনক হতে পারে না।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে’

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশের ওপর বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। আবহাওয়া নিয়ে সহসাই কোনো সুসংবাদ নেই। এরকম তাপদাহ আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ রকম এক অস্বস্তির মধ্যে কীভাবে নারী পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু কিশোর সুস্থ্ থাকতে পারে সে ব্যাপারে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, রোদে যারা কাজ করেন, তাদের একটানা দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করা যাবে না। এতে মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা থেকে হিটস্ট্রোক হয়। হিটস্ট্রোক হলে যে কেউ মারাও যেতে পারেন। হিট স্ট্রোকের মূল ঝুঁকি মূলত যারা অনেকক্ষণ রোদে কাজ করে তাদের। মানব দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ১০৫-এর উপর উঠলে ঘাম হয় না, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়, ক্লান্তি, অবসাদ হয়। এক সময় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়, অজ্ঞানও হয়ে যায় অনেকে। এটি বিপজ্জনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, দেশে বর্তমানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এ তাপমাত্রা শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সুস্থ থাকতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। অপ্রোয়জনে একদম বাইরে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। যারা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, তাদের ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দিতে হবে। কাজের ফাঁকে এক-দুই ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে বসবেন। একটানা রোদের মধ্যে থাকা যাবে না। লবণ মিশ্রিত পানি খেলে ভালো হয়, স্যালাইন খেতে পারেন। ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

আরেকটা জরুরী বিষয় হলো, ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। জিন্স না পরাই ভালো। 

বয়স্ক এবং যারা ডায়বেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভোগেন, তাদের জন্য ঝুঁকিটা বেশি। তারা অপ্রয়োজনে বাইরে যাবেন না। 

শিশুদের বিষয়ে ডা. আবদুল্লাহ বলেন, গরমে বাচ্চাদের জন্যও ঝুঁকি বেশি। এখন স্কুল বন্ধ তাই বাচ্চাদের বাইরে বের না করাই ভালো। বাচ্চাদের বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে। তারা যেন রোদের মধ্যে অনেক বেশি দৌড়ঝাঁপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হিট স্ট্রোকের পাশাপাশি গরমে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস বাড়ছে। অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের আছে, গরমের কারণে তাদের শ্বাসকষ্ট ওঠানামা করছে। তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।

পানিশূন্যতা গরমে সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ্য করে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এই অধ্যাপক বলেন, এই গরমে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ওরাল স্যালাইন খাওয়া ভালো। এছাড়া পানিতে লবন মিশিয়েও খাওয়া যাবে। তবে রাস্তায় বিক্রি হওয়া লেবু পানি, আখের জুস খাওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর, বাসি কোনো খাবারও পরিহার করতে হবে। শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঘরে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিশু, নারী ও বয়স্কদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এসব রোগীর হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড টক

‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রশাসনের এখতিয়ারে নেই’

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ছাত্ররাজনীতি আবার ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ইসহাক আলী খান পান্না এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ইসহাক আলী খান পান্না এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, যারা প্রগতির কথা বলেন না, মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদের কথা চিন্তা করে তারাই তো আজ ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে চায়। আপনি দেখেন, একটি জলালয়ে যদি পানির কোন ঢেউ না হয়, সেটা যদি কোন কারণে ব্যবহার না হয় তাহলে সেখানে মশা মাছি আর্বজনা জন্মায়। সেখানে থেকে এক সময় দুর্গন্ধ ছাড়ায়। ঠিক তেমনি ভাবে বুয়েটে যদি আপনি মুক্ত চিন্তার চর্চা না করতে দেন তাহলে এর অন্তরালে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে, ধর্মান্ধের উত্থান ঘটবে। যারা স্বাধীনতাকে এখনও মেনে নেননি আপনি তাদেরকে শক্তিশালী করবেন। অথচ প্রগতির কথা যারা বলে সেটা  ছাত্রলীগ হোক কিংবা ছাত্র ইউনিয়ন হোক এমনকি ছাত্রদলও যদি হয় তাহলে তারা সেখানে কথা বলতে পারবে না কেন।

তিনি বলেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা পড়াশুনা করেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ছাত্ররাজনীতি করেছি, এই ক্যাম্পাসে আমরা আমাদের অধিকারের কথা বলেছি, স্বাধীনতার কথা বলেছি, গণতন্ত্রের কথা বলেছি, স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। সেখানে শিবির কোন দিন স্লোগান মিছিল কিছু পরিচালনা করতে পারেনি, করেনি। তারা বুয়েট এবং ঢাকা মেডিকেলে তাদের কার্যক্রম করেছে। একই ভাবে সেই বুয়েটে এখনও তাদের কর্মকাণ্ড চলে। আর ছাত্রলীগ সহ অন্যান্য সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড চলবে না সেটা তো হতে পারে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনার শুধু ছাত্রলীগ টার্গেট কেন? ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা ছাত্ররাজনীতি করে তারাও তো বুয়েটের ছাত্রছাত্রী। তাহলে বুয়েটের শিক্ষার্থীদেরও তো কথা বলার অধিকার রয়েছে, তারও হলে থাকার অধিকার রয়েছে। তাহলে কেন আপনি তাকে এসব থেকে বঞ্চিত করছেন। বাংলাদেশের সকল অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক, স্বৈরচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সব সময় কথা বলেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে বাংলাদেশে স্বৈর শাসনের পতন, মৌলবাদের পতন এবং সকল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ। সেই ছাত্রলীগ বুয়েটে মৌলবাদের যে চর্চা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। সুতরাং এবং অবশ্যই সেটা সঠিক করেছে। অনতিবিলম্বে বুয়েটের সকল ছাত্রছাত্রীদের সবার মুক্ত বিচরণের সুযোগ করে দেয়া দরকার। তারা যেন প্রগতির কথা বলতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারে, গণতন্ত্রের কথা বলতে পারে সেই পরিবেশ তাদের দিতে হবে। এখন বুয়েটকে নিয়ে যে খেলা চলছে প্রকারন্তে বাংলাদেশে এরা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির পালন করছে। এটা হতে পারে না। আপনি বুয়েট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করেন আমাদের স্বাধীনতা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, পহেলা বৈশাখ, বুদ্ধিজীবী দিবস তারা এগুলো পালন করে কিনা। এগুলো অবশ্যই তাদের করতে হবে। বুয়েট স্বাধীনতা বাংলা ভূখন্ডে বাইরে কোন প্রতিষ্ঠান না। অতএব ছাত্রলীগ যে দাবি তুলেছে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে এটা যুক্তি যুক্ত।

সাবেক ছাত্রলীগ এই নেতা বলেন, বুয়েটে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর আমরা অবশ্যই নিন্দা জানাই। এর সঙ্গে যারা জড়িত আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার হবে, একাডেমিক কাউন্সিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে বুয়েটকে অন্ধকারে রেখে মৌলবাদী শক্তিকে পৃষ্টপোষকতা করার কোন সুযোগ নাই বুয়েট কর্তৃপক্ষের। অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বুয়েটকে সকলের জন্য উন্মূক্ত এবং সুন্দর একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ব্যানারে যারা অপকর্ম করেছে তাদের দায় সংগঠন নিবে না উল্লেখ্য করে ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, কোন ব্যক্তি, কোন ছাত্র যদি কোন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে থাকে এটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ। কারণ ছাত্রলীগ কোন ধরনের অপরাধকেই সমর্থন করে না। যারা ইতোমধ্যে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েয়ে সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। সুতরাং এগুলোকে অজুহাত দেখিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। 



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন