ইনসাইড থট

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে আবারও ‘মিডিয়া ক্যু’

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মন্তব্যকে বিকৃত করে আবারও মিডিয়া ক্যু হয়েছে।একাধিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ায় একটি সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রচারিত হয়েছে। পত্রিকার শিরোনাম-‘নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে সরকার’ (প্রথম আলো, ১৭ এপ্রিল)।প্রথম আলোর মতো আরো অনেক পত্রিকা এবং টিভি ও অনলাইন নিউজে মন্ত্রী মহোদয়ের মন্তব্যকে বিকৃত করে মিথ্যাচার করা হয়েছে এবং হচ্ছে। ড. এ কে আব্দুল মোমেন সেদিন কি কথা বলেছিলেন তার ভয়েজ রেকর্ড আমাদের কাছে আছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিঙ্কেনের মতামতও সকলের কাছে পরিষ্কার করেছেন। তবু মিডিয়া ক্যু করে সজ্জন এই মন্ত্রীকে বিব্রত করা হচ্ছে বারবার।এ ধরনের অপতৎপরতা বন্ধ হওয়া দরকার।

প্রকৃতপক্ষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিঙ্কেন সেদিন বলেছিলেন, বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে মুখিয়ে বিশ্ব।অন্যদিকে ড. মোমেন তাঁর বক্তব্যে উপস্থাপন করেন অনেকগুলো গুরুত্ববহ বিষয়।প্রকাশ্রিত সংবাদটি এরকম- ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য তথা মডেল বা আদর্শ নির্বাচন দেখতে চায়। জবাবে আমি বলেছি, আমরাও তাই চাই। তিনি বলেন, আমি বলেছি গণতন্ত্র আমাদের রক্তে মিশে আছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে মানুষ রক্ত দিয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মোমেন স্বাধীন নির্বাচন কমিশন এবং স্বচ্ছভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গৃহীত সরকারি পদক্ষেপের বিস্তারিত তুলে ধরেন। বলেন, আমি বলেছি, বাংলাদেশ মার্কিন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানায় কিন্তু বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো পক্ষপাতিত্বমূলক পর্যবেক্ষককে নয়। মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমি বলেছি- একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলকেও এগিয়ে আসতে হবে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ও শ্রমিকদের অধিকার সমুন্নত রাখা এবং সন্ত্রাসবাদ দূর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান মোমেন। বলেন, তিনি মার্কিন মন্ত্রীকে খোলাসা করেই বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। সেই সঙ্গে সরকার ও দল আশা করে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে সাহায্য-সহায়তাসহ নানাভাবে তারা খুশি রাখতে পেরেছেন। ফলে আগামী নির্বাচনে সব দল এলেও তারা বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ফের ক্ষমতায় ফিরতে পারবে বলে বিশ্বাস করেন। মন্ত্রী বলেন, এ জন্য আমার সরকার সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য তথা মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এই বক্তব্যে কোথাও ‘নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে সরকার’ প্রভৃতি প্রসঙ্গ নেই। অথচ হঠাৎ করে মিডিয়া আবিষ্কার করেছে মাননীয় মন্ত্রীর বক্তব্যে ভিন্নতর অনুষঙ্গ। উপস্থাপন করেছেন মিথ্যা সংবাদ।পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিডিয়ায় অপপ্রচার চলছে অনেকদিন যাবৎ।এজন্য ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, আমাদের দেশে সাংবাদিকতা যারা করেন তাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। এদের পরিপক্বতা দরকার। ওইদিন (শনিবার)দুপুরে সাবেক রাষ্ট্রদূতদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার বিসিএস (এফএ) অ্যাম্বাসেডর্স (এওফা) এর সদস্যদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে  শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।আসলে ড. এ কে আব্দুল মোমেন সেদিন বলেছিলেন, ‘গত ২৬ অক্টোবর(২০২২) প্রেসক্লাবে ‘‘বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামে’’র একটি সেমিনারে আমি বক্তব্য দেই। ১৭টি গণমাধ্যম তা নিয়ে যে হেডলাইন করেছে তার সাথে আমার বক্তব্যের কোনো ধরনের সম্পর্ক নাই। সেখানে আমি নাকি আমেরিকাকে যুদ্ধবাজ বলেছি। ১৭টি গণমাধ্যমই মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক তথ্য দিয়েছে। মঞ্চে যারা সেদিন উপস্থিত ছিলেন তারা কাছ থেকে আমার বক্তব্য শুনেছেন। তারাও সাক্ষ্য দেবেন যে আমি সেরকম কোনো কথা বলিনি।অডিও-ভিডিও রেকর্ড চেক করলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে।’

অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল, আমাদের দেশে সাংবাদিকতা যারা করেন তাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। এদের পরিপক্বতা দরকার। যে সাংবাদিকরা এটা করেছেন, এটা তাদের জন্য লজ্জার বিষয়। আর আপনাদের (গোপালগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিক) জন্য দুঃখের বিষয় যে আপনাদের সহকর্মীরা এই ধরনের বানোয়াট জিনিস প্রকাশ করেছেন। আমি অনেক সাংবাদিকদের বলেছি আপনাদের এই নিয়ে গবেষণা করা উচিত। কেন এতো নিম্নমানের এই সাংবাদিকতা। এটা আপনাদের জন্য দুঃখের বিষয়।...যে জিনিসগুলোর ধারে কাছে বলিনি সেগুলো সাংবাদিকরা প্রকাশ করেছেন। তারা কোন উদ্দেশ্যে মিথ্যা প্রচারণা করছেন? তাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করবে আমরা বোধ হয় তাদের শত্রু। এমনভাবে প্রচারণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে শত্রু বানানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছে যা খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।’

অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রকে একবার শত্রু বানায় মিডিয়া আবার সহযোগিতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে মিডিয়া। এভাবে নানান মিথ্যাচারে ভরা সংবাদে সত্যিই পাঠকসমাজ হতভম্ব।

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিডিয়া ক্যু’-এর পুরানো ইস্যু তুলে ধরা দরকার। জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষ্যে ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম ‘‘জাতিসংঘের আঙিনায় শেখ হাসিনা” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনুষ্ঠানের সমস্ত কাজের তদারকি আমাকে করতে হয়েছে। আর সেমিনারে প্রথম থেকে শেষ অবধি আমি উপস্থিত ছিলাম। আমাদের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের বক্তৃতা কিছু মিডিয়া ভুলভাবে উদ্ধৃত করে অসত্য সংবাদ এবং টিভি স্ক্রল প্রচার করেছে- যা অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ যে সমস্ত বিষয় তাঁকে উদ্ধৃত করে প্রচার করা হয়েছে তা অসত্য।আমি নিজে মন্ত্রী মহোদয়ের পাশে বসে সবটুকু কথা নিজের কানে স্পষ্টত শুনেছি। অথচ যা তিনি বলেননি তাকেই গুরুত্ব দিয়ে শিরোনাম তৈরি এবং টিভিতে স্ক্রল করে প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে মিডিয়ার দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে আমাদের মনে।

মন্ত্রী মহোদয়ের পুরো বক্তৃতা মনোযোগ সহকারে শুনলে দেখা যাবে সাংবাদিকদের প্রচারিত হেডলাইন-এ কোনো মিল ছিল না। সংবাদ মাধ্যমগুলোয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে উদ্ধৃত মিথ্যা হেডলাইনগুলো হলো-(১) “ড. মোমেন বলেছেন  “আমেরিকার কাজই যুদ্ধ করা, নয়তো তাদের অর্থনীতি চলবে না” (এনটিভি), (২) “যুদ্ধ ছাড়া আমেরিকার অর্থনীতি চলবে না” (ডিবিসি নিউজ),(৩) “ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হলে তাইওয়ানে যাবে আমেরিকা” (সময় টিভি), (৪)  “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যুদ্ধনির্ভর” (সময় টিভি), (৫) “যুদ্ধ ছাড়া মার্কিন অর্থনীতি সচল নয়” (যমুনা টিভি), (৬)  “যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধপ্রিয় দেশ, যুদ্ধ ছাড়া দেশটির অর্থনীতি সচল থাকে না” (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি), (৭) "যুদ্ধেই সচল থাকে যুদ্ধপ্রিয় আমেরিকার অর্থনীতি” (দেশ টিভি), (৮) “ড. মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধপ্রিয় দেশ” (এটিএন নিউজ), (৯) “সব দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করাই তাদের মূল কাজ” (চ্যানেল ২৪), (১০) “যুদ্ধের জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল থাকে” (এসএ টিভি), (১১) “যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যুদ্ধ ছাড়া চলবে না” (রেডিও টুডে), (১২)  “যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করাই হল যুক্তরাষ্ট্রের মূল কাজ” (আমাদের সময় ডটকম),(১৩)  “যুক্তরাষ্ট্রের কাজই হলো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করা” (ইনকিলাব), (১৪) “আমেরিকা যুদ্ধপ্রিয় দেশ, যুদ্ধ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি অচল” (দেশ রূপান্তর), (১৫) “যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করাই হলো যুক্তরাষ্ট্রের মূলকাজ” (মানব জমিন), (১৬)  “আমেরিকার অর্থনীতি যুদ্ধ ছাড়া চলবে না” (দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর) ইত্যাদি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের কোথাও ‘‘যুদ্ধবাজ আমেরিকা’’ না থাকলেও তা হয়েছে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম।এজন্যই মন্ত্রী মহোদয় সংবাদ মাধ্যমের নৈতিকতা ও পরিপক্বতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।যে প্রশ্ন ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এসে আবারও তুলতে হলো।

উল্লেখ্য, সেদিন  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চমৎকার একটি বক্তব্য প্রদান করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তাঁর কথায় ছিল অভিজ্ঞতার বয়ান। দেশপ্রেমিক সত্তার উন্মোচন এবং বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের পরিচয়ে সমৃদ্ধ।হতাশার বিষয় হলো এরপর কিছু কিছু মিডিয়া ও টেলিভিশন চ্যানেল পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রচার করে। উল্লিখিত ওধরনের সংবাদ শিরোনাম দিয়ে এবং টিভি স্ক্রলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে জনসাধারণ এবং বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে বিভ্রান্তিকর বার্তা দেওয়া হয়েছে- যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর নামে তাঁকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করে এধরনের বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারকারী মিডিয়া ও টিভি চ্যানেলগুলোকে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারের জন্য ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশসহ সঠিক সংবাদ প্রচারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে।এবং প্রতিবাদলিপিটি কয়েকটি পত্রিকায় ছাপানোও হয়।

প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার পরে গত ৫৩ বছরে মিডিয়ার ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হলেও সাংবাদিকদের দায়িত্ববোধ ততটা উন্নত হয়নি। এজন্য পরিতাপের সঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিকরা এসব নিয়ে অনেক কথা বলে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পিছনে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের গুরুত্ববহ ভূমিকা ছিল। কেবল চাকরি করা নয় বরং দেশ ও জাতির বিবেক হিসেবে সংবাদকর্মীরা বিবেচিত হতেন। বলা হয়ে থাকে সাংবাদিকতা ও শিক্ষকতা সবচেয়ে সম্মানের বিষয় ছিল। একুশ শতকে নানাকারণে সেই সম্মানের জায়গাটা দখল করেছে পুঁজিপতিরা।তবু মিডিয়া বিশ্বব্যাপী মানুষের অধিকারের কথা বলে চলেছে।

মিডিয়াকে বঙ্গবন্ধু নিজের সাধ্যের মধ্যে রেখে প্রসারিত করেন তাঁর শাসনামলে। মুক্তিসংগ্রামে ইত্তেফাক, সংবাদ প্রভৃতি পত্রিকার প্রগতিশীল ভূমিকা তিনি ভালো করেই জানতেন। এজন্য ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু দেশের সংবাদপত্রকে স্বাধীন মতপ্রকাশে সুযোগ তৈরি করে দেন।এমনকি সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণমূলক কাজে সরকারি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা তৈরি করেন। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন পাস হওয়া ‘নিউজ পেপার ডিক্লারেশন এনালমেন্ট অর্ডিন্যান্স’ নামে আইনটি করা হয়েছিল তখনকার সাংবাদিক নেতাদের পরামর্শে। এর আগ পর্যন্ত সাংবাদিকদের কোনো বেতন কাঠামো ছিল না। মালিকরা সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন দিতেন না। বঙ্গবন্ধু এসব জানতেন। এজন্য ৭৫ সালের ১৬ জুনের পর যেসব পত্রিকা বন্ধ করা হয় তিনি সেসব সাংবাদিক-কর্মচারীর বেতন নিশ্চিত করেছিলেন। তারা এক তারিখ ট্রেজারিতে গিয়ে বেতন নিয়ে আসতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘নেশন মাস্ট বি ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট করাপশন। পাবলিক ওপিনিয়ন মবিলাইজ না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যাবে না।’ গণসচেতনতা তৈরিতে মিডিয়ার ভূমিকা বঙ্গবন্ধুর আমল থেকেই গুরুত্বের সঙ্গে স্বীকৃত।

এই গণসচেতনতা তৈরিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তিনি নিজে একজন লেখক। জনপ্রিয় কলামিস্ট। তাঁর রয়েছে দশের অধিক গ্রন্থ। দেশ-বিদেশে যোগাযোগের দিক থেকেও তিনি পররাষ্ট্রনীতিকে সমুন্নত করেছেন।দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জাতিসংঘের আঙিনায় আমাদের অধিকার আদায়ে তাঁর সদা তৎপরতা লক্ষণীয়।

বলা হয়ে থাকে, গণমাধ্যম জনগণের মতামতকে ঠিক করে দেয়। অর্থাৎ গণমাধ্যমের এজেন্ডা পাবলিক এজেন্ডায় পরিণত হয়। সমাজে নানা ঘটনার মধ্যে কোনটি বেশি আলোচিত হবে বা গুরুত্ব পাবে গণমাধ্যমই তা নির্ধারণ করে দেয়। এর মধ্যে সহজবোধ্য ও দ্রুততম তথ্য প্রাপ্তির উৎস হিসেবে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া একধাপ এগিয়ে। অতীত এবং বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যম বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর জন্য গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা যেমন নিশ্চিত করতে হয়েছে তেমনি স্বাধীনভাবে কাজ করার যাবতীয় দিক উন্মোচিত।সুশাসন প্রতিষ্ঠার গতি আরও ত্বরান্বিত এখন। আর সুশাসন সুমন্নত অবস্থানে আছে বলেই বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও ভাল হবে।  

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মিডিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা তৈরি হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সত্যনিষ্ঠ প্রিন্ট ও টিভি চ্যানেল এবং সামাজিক ন্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনলাইন গড়ে ওঠে। অপরদিকে ২০০৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত গণমাধ্যমে কর্পোরেট মালিকানার প্রাধান্য পরিলক্ষিত হলেও তথ্য পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সাংবাদিকতায় উৎকর্ষ অর্জিত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত ও সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০১ থেকে ২০০৮ অবধি সেই অগ্রগতি থমকে দাঁড়ালেও এখন পরিস্থিতি মিডিয়ার জন্য অনেক ভালো।

এই ভালো সময়ে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের ঝোঁক মারাত্মকভাবে পিছিয়ে দিচ্ছে দেশকে। মিডিয়া যদি মনে করে থাকে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করলে জনপ্রিয় হবে তাদের হাউজ- তাহলে বোকার বেহেশতে বসবাস করছে তারা।

গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনার শাসনামলে এদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক সাফল্য লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত আমলে গণমাধ্যমের করুণ দশা সকলেরই জানা।অবশ্য কর্পোরেট সুবিধার কথা ভেবে গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করা শুরু করেছে। অর্থাৎ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এ সময়েও দেখা যায় বিশ্বের প্রায় ৭৭টি দেশে এখনও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া হচ্ছে।বাংলাদেশে ভিন্ন চিত্র। এখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রচুর। আর এই স্বাধীনতা লালন করার জন্য দরকার দায়িত্বশীল আচরণ। কারণ এখানে সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হন না। বরং মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের সু সম্পর্ক রয়েছে।তারা জানেন কোন মন্ত্রী দেশপ্রেমিক, উদার ও সজ্জন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে মিডিয়া ক্যু সম্পর্কে বলা দরকার, কোনো কোনো গণমাধ্যমকর্মী নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য স্বেচ্ছাচারীর ভূমিকা পালন করেন। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অপব্যবহার করে ক্ষেত্রবিশেষে গ্রহণযোগ্যতা ও অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে কেউ কেউ বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে দেশদ্রোহী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। আজ বিশ্বব্যাপী একথা স্বীকৃত যে, গণমাধ্যমের মাধ্যমেই নিজেদের পরিশীলিত করা যায়। এসব কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করলে তা দেশ ও জনতার ক্ষতি হিসেবে গণ্য হবে- এটা মনে রাখা দরকার মিডিয়া সংশ্লিষ্ট সবার।সাধারণ মানুষের তথ্য প্রাপ্তির অন্যতম উৎস হল গণমাধ্যম। তা যেন নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনে ব্যস্ত না থাকে। বরং দেশপ্রেমিক পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কথা ও বক্তব্যকে নিজের দেশের জন্য যথার্থ বিবেচনা করে বিকৃত না করে প্রচার করতে হবে।

(লেখক : ড. মিল্টন বিশ্বাস,  বঙ্গবন্ধু গবেষক এবং বিশিষ্ট লেখক, কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ এবং অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, email-drmiltonbiswas1971@gmail.com)




মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগে খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন


Thumbnail

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।

খুনি মোশতাকের কথা আমাদের নিশ্চিয় মনে আছে। বঙ্গবন্ধু তাকে অনেক ভালোবাসতেন, বিশ্বস্ত মনে করতেন। খুনি মোশতাকেরও এমন অবস্থা যেন তিনি যে কোন মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছেন। এমনও হয়েছিল যে, খুনি মোশতাকের মা মারা যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুই তাকে সান্ত্বনা দিয়ে তার কান্না থামিয়েছেন। কিন্তু সেই মোশতাকই বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আজকে আওয়ামী লীগে। দার্শনিক শেখ হাসিনা আপনাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমপি বানিয়েছেন, তার অনুকম্পায় আপনি রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেয়েছেন কিন্তু আপনার স্বার্থের জন্য আপনি তারই (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা অমান্য করলেন। আপনি উপজেলায় আপনার মত করে প্রার্থী দিলেন। সুতরাং আপনি খুনি মোশতাকের চেয়ে কম কিসে? জেলায় জেলায় আজ খুনি মোশতাক জন্ম নিয়েছে। এমনকি উপজেলা গুলোতে একই অবস্থা। ফলে এটা স্পষ্ট যে, খুনি মোশতাকের বাম্পার ফলন হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি যে কোন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত চিন্তা ভাবনা করে নেন এবং দর্শন ভিত্তিতে নেন। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবে আমরা আন্দাজ করতে পারব না যে, তিনি কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে আমরা অনুমান করতে পারি যে, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে নিশ্চিয় তিনি বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।

দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে সেটি হল ‘ফর গিভেন বাট নট ফরগটেন’(forgiven but not forgotten) অর্থাৎ তিনি ক্ষমা করে দেন কিন্তু সেটা ভুলে যান না। সুতরাং যারা এখন নতুন করে খুনি মোশতাক হয়েছেন এবং যাদের বাম্পার ফলন হয়েছে তাদের এটা মনে রাখতে হবে। আগামীকাল আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হল দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঠিক মতই জানেন কিভাবে এই সকল খুনি মোশতাকদের কিভাবে ধরতে হবে। খুনি মোশতাক খুব ভাগ্যবান যে তিনি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

কিছুদিন আগে বাংলা ইনসাইডারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি।’ উনার এই বক্তব্য ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লেগেছে। তিনি চিরন্তন একটি সত্য তুলে ধরেছেন। সুতরাং দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের এই বিষয়টি মনে রাখা উচিত।

আমি মনে করি, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারী এই নতুন খুনি মোশতাকরা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে স্থান করে নিয়েছে। কেউ নিজে থেকে বা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ করলেও তিনি আসলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নয়, খুনি মোশতাকের আদর্শে দীক্ষিত হয়েছেন। যেমন জার্মানিতে এখনও হিটলারের সমর্থক কিছু লোক পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি ভাবে এখন আওয়ামী লীগের ভেতর এখনও খুনি মোশতাক এর দোসররা রয়ে গেছেন। এই সমস্ত খুনি মোশতাকদের যদি এখনই প্রতিহত না করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে তাদের জন্য সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা সেই কঠিন সময় আসার আগেই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যেন এই খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন যে ভাবেই হোক ধ্বংস করে দিবেন।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশই দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ


Thumbnail

দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।

কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায় না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয় এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন। যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মিত হবে।

কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।


দ্য শেখ হাসিনা   ইনিশিয়েটিভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন