প্রকাশ: ০৬:০৬ পিএম, ২৪ জুন, ২০২৩
আগত বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে আলাপ-আলোচনার কোনো শেষ নেই- এটা অবশ্য খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যখন নির্বাচনের মাত্র পাঁচ মাস বাকি, তখন আলাপ-আলোচনা হবে-এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। বিশেষ করে বাঙালিরা সকলেই অত্যন্ত রাজনৈতিক সচেতন এবং রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতে যতো আনন্দ পান, আমার মনে হয়- সিনেমা দেখেও ততো আনন্দ পান না। এর প্রমাণ হলো- রাস্তার পাশে সামান্য পানের দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় অফিসে, বড় বড় রাজনীতিবিদদের অফিসসহ সব জায়গায় মূলত রাজনীতিকেন্দ্রিক আলাপ-আলোচনা। আপনারা যদি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দিকে লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন- যে সকল ইলেকট্রনিক মিডিয়া আছে, শুধু খবরের উপরেই একটি টেলিভিশন চলতে পারে, কিন্তু শুধু বিনোদন দিয়ে কোনো টেলিভিশন বাংলাদেশে চলবে না। কারণ আমরা মানসিকভাবে সেইভাবে প্রস্তুত না। সুতরাং সেই কারণে নির্বাচন নিয়ে এতো আলাপ-আলোচনা হয়। এতে আমিও ব্যতিক্রম নই।
গত তিন-চার বছর ধরে আমি একটি কথাই বলে যাচ্ছি, বাংলাদেশের নির্বাচন জনগণের দ্বারা নির্বাচিত বর্তমান সরকার প্রধান দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অধীনেই হবে এবং সংবিধানের দাড়ি, কমাসহ কোনো ধরনের পরিবর্তন বা কোনো প্রকার অন্যথা হওয়ার সুযোগও নেই- হবেও না এবং জনগণও এটা চায় না। এখন অনেকে রাজনীতি করার জন্য, অনেকে বিদেশিদের বুদ্ধিতে, অনেকে নিজেদের বুদ্ধির দৈন্যতার জন্য- এসব করছে। তারা বুঝেও না যে, তাদের বুদ্ধির দৈন্যতা আছে। এর প্রমাণ হচ্ছে এদেশে এক-এগারো। ঝানু ঝানু রাজনীতিবিদরা বুঝতে পারলো না, দেশ কোন দিকে যাইতে পারে? তারা জীবন সায়াহ্নে এসে মারাত্মক ভুল করেন এবং কবরে যাওয়ার আগে তার সে ভুল সংশোধনের কোনো সুযোগ পাবেন না। কারণ রাজনীতিতে এই সুযোগ কাউকে দেওয়া হয় না। এখন সেই কারণের জন্যই আমার ধারণা, যে সকল এইসব তথাকথিত- যারা নিজেদের বুদ্ধিজীবী হিসেবে দাবি করেন, তাদের সবকিছুই আছে, শুধু কমতি আছে বুদ্ধির। মনে রাখতে হবে- একজন বুদ্ধিমান এবং আরেকজন কানিং আমরা যাকে বলি ধূর্ত- এক বিষয় নয়। আমাদের অনেক ধূর্ত লোক আছে, যারা নিজেদেরকে বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচয় দেন। আসলে তারা ধূর্ত, তারা বুদ্ধিজীবী নয়।- এই বিষয়টি আমরা অনেক সময় সাধারণ মানুষরা বুঝতে পারি না।
এই ধূর্ত লোকরাই বিএনপিকে বুদ্ধি দিয়েছে, নির্বাচন নিয়ে এইসব কথা বলো এবং এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না, যেটা সংবিধানে নেই, সংবিধান পরিবর্তন করে করতে হবে। তারা কত বুদ্ধিহীন হতে পারে, যখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে গেছেন, তখন তারা বলে, এই রাষ্ট্রপতিকে-তো আমরা মানিই না, তার সঙ্গে কি আলাপ করবো! তাহলে তো তাদের উচিৎ ছিল সরাসরি বাংলাদেশ ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়া, তাতো তারা কেউ করে নাই। এরকম কোনো আবেদনও পাওয়া গেছে, এরকমও শোনা যায় নাই। বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক বুদ্ধিজীবীরা টিকিট করে রেখেছেন, অথচ তারা আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে বলেন- এরা বিদেশে যাবে। কিন্তু নির্বাচনের পরে তার ঠিক বিপরীত ফল হবে। নির্বাচনের পরে দেখবেন, কত লোক বিদেশে। যেমন ভিয়েতনামে হয়েছিল- যারা আমেরিকার দালালি করেছিল- তারা যেরকম আমেরিকায় গিয়েছিল, এ রকম সব দেশেই দালালির ইতিহাস একই। বাংলাদেশেও তাই হবে। উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই, এখানে প্রাসঙ্গিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে, যেহেতু অনেকেই এই ব্যাপারে আগ্রহী। সে কারণে আমিও এই ব্যাপারে আগ্রহী।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং আমার যতটুক বিবেক-বুদ্ধি রয়েছে, তা দিয়ে ভাবছি যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকায় গেলেন, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের সাথে আলাপ-আলোচনা করলেন। সেখানে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসবে কি না? একজন অপদার্থ লোকও বোঝে- অবশ্যই সেখানে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসবে, আলাপ-আলোচনা হবে। কিন্তু আমার সাধারণ জ্ঞান বলে, এটা পাবলিক ইস্যু হিসেবে, জনগণের ইস্যু হিসেবে সেইভাবে কোনো একটা সংবাদপত্রে ছাপা হবে বা বাইরে কোথাও এ বিষয়টি প্রকাশ পাবে- এটা আমার মনে হয় না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কি জন্য এই এ বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে? আমি এতো নিশ্চিতভাবে কি জন্য বলছি? কারণ হচ্ছে, ভারত তার প্রতিবেশি পরিবর্তন করতে পারবে না। এখানে তার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশি হচ্ছে বাংলাদেশ। একমাত্র বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কই রক্তের অক্ষরে লেখা। মনে রাখতে হবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়, আমরা বাঙালিরা- যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি, ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন, চার লাখ মা-বোন ইজ্জত দিয়েছেন। এখানে কিন্তু ভারতীয়দেরও রক্ত আছে।
সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু- যার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করলাম, একটি স্বাধীন দেশ পেলাম- তারও রক্ত এই মাটিতে। মিত্র বাহিনীর রক্ত, জাতির পিতার রক্ত, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের রক্ত, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের রক্ত- এই সকল রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এবার দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা নির্বাচন করছেন। সুতরাং মনে রাখবেন, যিনি এই পবিত্র রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন করছেন, তার কাছে আপনি দেশ চাইলেন, দেশ দিয়ে তিনি নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবেন! তিনি বলে দিয়েছেন-তো, কোনো কিছু দিয়েই কিছু হবে না। সুতরাং নির্বাচন হবে। এখন ভারত তাদের দায়িত্ব হিসেবে, যেহেতু তাদের এই পূর্বাঞ্চল- শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য দৈনিক যত কোটি টাকা তাদের খরচ হয় এবং অন্য দল ক্ষমতায় আসলে তাদের যে খরচ হয়, সেই খরচটা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাদের হয় না।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের বায়োডাটা যদি আপনারা দেখেন, তাহলে দেখবেন তার শিক্ষা, যোগ্যতা, বিদ্যা-বুদ্ধি কোন পর্যায়ের- তা আপনাদের বুঝতে হবে। এরা কিন্তু হঠাৎ করে আকাশ থেকে নাজিল হয় নাই । তারা সবকিছু বুঝেই এক একটা বক্তব্য দেন। যেহেতু তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত রক্তের বাঁধনে যাদের সাথে বাঁধা- সেই বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ থাকবেই। তারা পাবলিকলি বলুক আর না বলুক- এটা স্বভাবিক প্রক্রিয়া। যে পাগল সে-ও তো খাইতে চায়, না খেয়ে থাকতে চায় না। যখন ভারত বলবে, আমাদের বাংলাদেশের সাথে যেহেতু বন্ধুত্ব স্থায়ী ব্যাপার, আমরা আমাদের প্রতিবেশি পরিবর্তন করতে পারবো না। এই কারণেই আমাদেরকে দেখতে হবে- যাতে অসাম্প্রদায়িক একটি সরকার ক্ষমতায় না আসে এবং এমন কোনো সরকার যেন না আসে- যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে এবং বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার হবে ভারতের বিরুদ্ধে। এই সমস্ত বিষয়গুলো যেন না হয়, তা আওয়ামী লীগ সরকার তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করেছে। এখানে তা ৯৯ ভাগেরও চান্স নিবে না ভারত। কারণ তাদের অতীত অভিজ্ঞতা আছে।
ভারত অত্যন্ত পরিষ্কাভাবে জো বাইডেনকে বুঝিয়ে দিবে, আমেরিকা যদি চায়- বাংলাদেশতো প্রথম হচ্ছে, ব্রিকস-এ জয়েন করলো, একটি ম্যাসেজ দিয়ে দিলো যে, শুধু ডলারের অধীনে তারা থাকতে চায় না। জো বাইডেনকে এটা অবশ্যই বলবেন নরেন্দ্র মোদি- পরবর্তীতে আপনারা যদি চান, তারা চায়না ব্লকে যাক এবং সেন্ট মার্টিনে দুই বছর বা এক বছরের জন্য নৌঘাঁটি করার অনুমতি দিক- যেখানে শুধু যুদ্ধ নৌ জাহাজ থাকবে। তাহলে ভূ-রাজনীতির যে অবস্থা হবে, তাতে আমেরকিার কিছু আসে যায় না, কিন্তু ভারতের-তো সেই দিন থেকেই খবর হয়ে যাবে। সুতরাং ভারত-তো তার স্বার্থের বাইরে যাবে না। সতরাং ভারতের স্বার্থ যদি আমেরিকা রক্ষা করতে না পারে, প্রয়োজনে আমেরিকার সাথেই ভারতের সম্পর্কের অবনতি হবে। আমেরিকার বর্তমান বিশ্বে যে অবস্থান, তাতে ভারতকে বাদ দিয়ে আমেরিকার টিকে থাকাই সম্ভব না- অন্য কথা বাদ দিলাম।
এটা ঠিক যে, ভারতের সাথে চায়নার সীমান্ত নিয়ে সমস্যা আছে। ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস বলে, তাদের কখন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে- সেটা তারা ঠিকই জানে। তারা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে- তার জন্য তাদের আমেরিকার সাহায্য লাগবে না। কিন্ত আমেরিকার ভারতের সাহায্য ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব হবে না। কারণ তারা বিশ্বে কোনো জায়গায় নেই। মধ্যপ্রাচ্যে চায়না চলে গেছে, আফ্রিকায় চায়না চলে যাচ্ছে। এখন তাদের নিজের গরজে- ভারতকে যার জন্য এতো সম্মান দিচ্ছে। আমি অবাক হবো না যে, এই নির্বাচনের পরেই আবার শেখ হাসিনাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমেরিকার একই সম্মান দিতে হয়। তারা যে ধরনের ভয় দেখায়, আর্মিদের জাতিসংঘ মিশন বাদ হয়ে যাবে- এগুলো সম্পূর্ণ বাখোয়াজ, মিথ্যা কথা।
মৌীলকভাবে যদি বলি, আমেরিকা যেমন বিশ্বাস করে- অবশ্যই মানবাধিকার থাকবে। মানবাধিকারে বাংলাদেশের সাথে সমকক্ষ কয়টি দেশ আছে? আমেরিকার তো ভুলে গেলে হবে না যে, নরেন্দ্র মোদির পাসপোর্টর উপরে কি সিল দেওয়া ছিল? আর এখন তাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হচ্ছে। এই হচ্ছে আমেরিকা- এদের চরিত্র বদলাতে সময় লাগে না। মোটামুটিভাবে ওরা কার সাথে বিছানায় যেতে হবে-সেটাও তারা অনেক সময় বুঝতে পারে না। এখন ইতিমধ্যেই বিএনপি পেছনে পড়ে গেছে। যারা সুবিধাবাদি লোক, যাদেরকে আমি বলবো- ধান্ধাবাজ। আমরা ভদ্রভাবে তাদের বলি ধূর্ত- এদের পাল্লায় পড়ে বিএনপি সেখান থেকে বের হতে পারছে না। পরিশেষে কিন্তু নির্বাচন হবে, জাতীয় পার্টির সাথে আওয়ামী লীগের বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির নির্বাচন হবে।
আমেরিকা চরিত্র বদল ভারত নরেন্দ্র মোদি সফর
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।