নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৪ এএম, ০৯ জুলাই, ২০১৮
গাজীপুর সিটির নির্বাচনের পর সকলের চোখ এখন রাজশাহী, সিলেট আর বরিশালে। আগামী ৩০ জুলাই এ তিন সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণের পরই শুরু হয়ে যাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল। সব ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে নানামুখি জল্পনা-কল্পনা এবং হিসাব-নিকাশ। রাজনৈতিক দলগুলো ঘর গোছানোর চেষ্টা করছে। ছোট দলগুলো বড় দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সংসদে যাওয়ার কৌশল খুঁজছে।
নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে জোট-মহাজোটের রাজনীতিতেও। বিএনপির নেতৃত্বে ২০- দলীয় জোট থাকবে, না ভাঙবে সে আলোচনা যেমন আছে, তেমনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের কলেবর বাড়া বা কমার বিষয়েও আলোচনা আছে। নামসর্বস্ব দলগুলো নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য ঘুর ঘুর করছে । উপায় খুঁজছে আগামী নির্বাচনে কিভাবে অংশ নেওয়া যায়, কীভাবে থাকা যায় আগামী সরকারে। তিন সিটি নির্বাচন শেষ হলেই দেশে নির্বাচনী রাজনীতির পালে হাওয়া লাগবে।
বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতি গত তিন দশক ধরেই আটকে গেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি – এই দুই দলের মধ্যে। হয় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে নতুবা বিএনপি। ১৯৯১ সালের নির্বাচন থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই ধারাই চলছিল। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড আওয়ামী লীগ তৈরি করল ২০১৪ সালে। যদিও বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। নিয়ম রক্ষার নির্বাচনে ক্ষমতায় বসে সরকার মেয়াদ পূরণ করতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে অনেকের মধ্যেই সংশয় ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল তথাকথিত গণতান্ত্রিক দুনিয়া এটা ভালো ভাবে নেবে না, সরকারের ওপর নানা ধরনের চাপ থাকবে। তাই তাদের পক্ষে মেয়াদ পূর্ণ করা সম্ভব হবে না।
যারা সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন তারা এখন সরকারের মেয়াদ শেষে এসে বলছেন, আগের বার যেটা সম্ভব হয়েছে, এবার সেটা হবে না। আগামী নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয় তাহলে দেশ বড়ো ধরনের সংকটের মধ্যে পড়বে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব বিষয়টি ভালোভাবে নেবে না।
তবে এ নিয়ে ভিন্নমত ও আছে। অনেকেই মনে করেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলেও দেশে মারাত্মক কোনো সংকট তৈরি হবে। তবে নির্বাচন অবশ্যই বিতর্কমুক্ত হওয়া ভালো।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সকলেই চায়। এর সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে এয নির্বাচনটি হতে হবে অংশগ্রহনমূলক। একই সাথে সকলেই চায়, তার পছন্দের দলটি যেন নির্বাচনে জেতে । আমরা কেউ নিজেদের পরাজিতের দলে দেখতে চাই না। অথচ জয়-পরাজয় গণতন্ত্রের স্বাভাবিক রীতি।
তাছাড়া আমাদের দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান এতোটাই বিপরীতমুখি যে এখানে একমত হওয়ার রাজনীতি আদৌ সম্ভব হবে কি না বলা মুশকিল। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির জনসমর্থন বা জনপ্রিয়তা যতোদিন কাছাকাছি থাকবে, ততোদিন অন্তত দেশের রাজনীতিতে সংঘাত-সংঘর্ষের ধারাও অব্যাহত থাকবে। দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে আর একটি বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠলে ভালো হতো। কিন্তু তেমন সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত বাস্তবে দৃশ্যমান নয়।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যেমন জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদী, তেমনি বিএনপিও মনে করে জয় তাদের হাতের মুঠোয়। দেশের আইন-আদালতের প্রতি বিএনপির আস্থা কম। বিশেষ করে দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শাস্তি এবং জেলে যাওয়ার পর থেকে আদালতবিরোধী মনোভাব বিএনপির মধ্যে আরও প্রবল হয়েছে। একদিকে তারা আদালতের বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করছেন, অন্যদিকে দেশের আদলতকে ক্রমাগত সরকারের আজ্ঞাবহ বলে প্রচার করছেন। এই প্রচারণার পরিণতির কথা বিএনপির নেতারা একবারও ভাবছেন না। দেশের মানুষকে আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল করে তোলা কি খুব ভালো ব্যাপার? বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার দল। অর্থাৎ দুদিন আগে হোক আর দুদিন পরে হোক এই দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই আজ বিরোধী দলে থেকে এমন কিছু বলা বা করা উচিত নয়, যা তারা ক্ষমতায় গেলে বুমেরাং হয়ে তাদেরই ঘায়েল করতে পারে।
আওয়ামী লীগ টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে সরকারবিরোধী মনোভাব আছে। বিএনপি এটাকে পুঁজি করেই রাজনীতিতে বাজি মাত করতে চাচ্ছে। বিএনপি ইতিবাচক ধারায় রাজনীতি করছে না। সর্বত্রই তারা বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দেখছে। বিএনপির আশা আওয়ামী লীগের নেগেটিভ ভোটে জিতে যাবে বিএনপি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশ যে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, মানবউন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে যে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে যে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অতিক্রম করেছে, সেসব বিএনপি দেখতে চায় না, স্বীকার করতে চায় না।
মানুষ বিরোধিতা পছন্দ করে, নেতিবাচক কথাবার্তা মানুষকে বেশি করে আকর্ষণ করে। তবে পরিবর্তনের সুফল যেহেতু মানুষ যতোটুকুই হোক পাচ্ছে, সেজন্য সরকারবিরোধী আন্দোলনেও মানুষ নামছে না।
আমাদের দেশের বড়ো সমস্যা হলো দুর্নীতি ও পুঁজি- লুন্ঠন বা সম্পদ পাচার। আজ যারা প্রচার করছেন তারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি ও পুঁজি-লুন্ঠন প্রক্রিয়া বন্ধ হবে? বিএনপি শাসনের রেকর্ড এতো বছরে হয়তো মানুষের মন থেকে একটু বিবর্ণ হয়েছে। কিন্তু একেবারে কি মুছে গেছে?
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মানুষ সরকারের জুলুম-অবিচারের বিরুদ্ধে ভোট দেবে। মানুষ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের হারিয়ে বিএনপির প্রার্থীদের জিতিয়ে দিল। তাহলে কি জুলুম-অবিচার বন্ধ হবে? গত নির্বাচনেও তো কয়েকটি সিটি করপোরেশনে বিএনপির মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাতে কি লাভ হয়েছে? সরকার বদল হয়েছে, নাকি নগরবাসী উন্নয়নবঞ্চিত হয়েছেন?
রাজনৈতিক দলের উচিত সাধারণ মানুষের সামনে এমন বক্তব্য তুলে ধরা যাতে তারা রাজনৈতিকভাবে আরো অধিক সচেতন হয়ে উঠতে পারে। ভুলবার্তা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ভোটে জেতার রাজনীতি যে একটি দলের প্রকৃত জনপ্রিয়তার প্রমাণ নয় – সেটা আমরা অতীতে একাধিকবার দেখেছি।
নির্বাচনই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তা মাপার উপায়। কিন্তু আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধামতো অবস্থায় এই পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়। আর এখানেই বিরোধ, এখানেই বিতর্ক। এই বিরোধ-বিতর্কের আশু অবসান আশা করা যায় না।
আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। যারা ক্ষমতায় থাকে এবং যারা ক্ষমতার বাইরে থাকে তাদের স্বার্থ একবিন্দুতে মেলানোর চেষ্টা সহজ নয়।
সবদিক বিবেচনাতেই আওয়ামী লীগই আছে সুবিধাজনক অবস্থানে। আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বলে মনে হয় না। অন্যদিকে বিএনপি আছে ব্যাকফুটে। দলের প্রধান খালেদা জিয়া জেলে। তিনি জামিনে বের হয়ে আসতে পারলেও শারীরিক কারণেই আগামী নির্বাচনে সারাদেশে ছুটে বেড়িয়ে বিএনপির পক্ষে ভোট সংগ্রহ করতে পারবেন বলে মনে হয় না। বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমান দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকতে তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম।
সব বিবেচনায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অবস্থান নড়বড়ে ভাবার কারণ দেখা যায় না। আওয়ামী লীগের একশ্রেণির নেতা-মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বাড়াবাড়ি এবং প্রচন্ড দলাদলি হলো আওয়ামী লীগের বড়ো সমস্যা। আবার তার বিপরীতে আছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাশচুম্বী ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা। তার সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো সংশয় নেই। আগামী নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হন তাহলে ভোটের বাক্সে নিঃসন্দেহে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যা ঠেকানো খুবই কঠিন হতে পারে বিএনপির জন্য।
লেখক: সাংবাদিক
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।